Ajker Patrika

বন্য প্রাণী পোষাই তাঁর নেশা 

আরিফুর রহমান মিঠু, শাজাহানপুর (বগুড়া)
বন্য প্রাণী পোষাই তাঁর নেশা 

ডানা মেলে নীল আকাশের বুকে উড়ে বেড়ানো ইগলের আশ্রয় জুটেছে মানুষের ঘরে। দেড় বছর আগে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পর তার আবাস কেড়ে নিয়েছিলেন বৃক্ষের মালিক। এরপর ইগল ছানাটির দায়িত্ব নেন সেই গাছ কাটতে আসা শ্রমিক জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা (৬৫)। 

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের কাটাবাড়িয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে দিনমজুর জাহাঙ্গীর। তাঁর বাড়িতেই মমতায় এখন ইগলটি বাস করছে। হয়ে উঠেছে পরিবারের এক সদস্য। নিজেদের খাবার না থাকলেও ঋণ করে ইগলের খাবার জোগাড় করেন জাহাঙ্গীর। 

শুধু ইগল নয়। গাছ কাটতে গিয়ে উদ্ধার করেছেন দুটি বনবিড়াল শাবক। ১৫ দিন ধরে নিজ বাড়িতে রেখেই যত্নে লালন পালন করছেন জাহাঙ্গীর। স্ত্রী, সন্তান, নাতি–নাতনি নিয়ে জাঙ্গীরের পাঁচ সদস্যের পরিবার তারাসহ আটজন। ইগল এবং বনবিড়াল লালন পালনে জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সন্তানরাও সহায়তা করেন তাঁকে। 

জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মূলত আমি একজন গাছ কাটা শ্রমিক। ছোট বেলা থেকেই আমার পশুপাখির ওপরে ভালোবাসা রয়েছে। দেড় বছর আগে আমি আড়িয়া ইউনিয়নের মানিকদিপা গ্রামে ইউক্যালিপটাস গাছ কাটতে যাই। বড় একটি গাছ কাটার সময় গাছের মগডাল থেকে ইগলের সদ্যোজাত বাচ্চাটি মাটিতে পড়ে যায়। আমি সেই বাচ্চাটিকে সঙ্গে করে বাড়িতে নিয়ে আসি। বাজার থেকে প্রতিদিন মাছ কিনে এনে বাচ্চাটিকে খাওয়াতে থাকি।’ 

জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা আরও বলেন, ‘দেখতে দেখতে দেড় বছর কেটে গেছে। ইগল এখন বড় হয়ে গেছে। মাছের পাশাপাশি এখন তো মুরগির মাংস খায়। এখন ওর প্রতিদিন প্রায় আধা কেজি মাছ অথবা মাংস লাগে। আমি ওকে (ইগল) ছেড়ে দিয়ে রাখি। বাহিরে উড়ে সে আবারও আমার বাড়িতেই ফিরে আসে। বাহিরে কোথাও খাবার খায় না। ইগলটি আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে গেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘১৭ দিন আগে গাছ কাটতে গিয়ে দুটি সদ্যোজাত বনবিড়ালের বাচ্চা পেয়েছিলাম। দেখে ফেলে আসতে পারিনাই। বনবিড়ালের বাচ্চাদেরও বাড়িতে রেখে লালন পালন করছি। ওদের প্রতিদিন আধা লিটার করে দুধ লাগে।’ 

জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা বলেন, ‘৫ বছর আগে আড়িয়া ইউনিয়নের রহিমাবাদ সি ব্লক এলাকায় মহাসড়কের পাশ থেকে বিদ্যুৎ এর খুঁটি সরানো কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। আমি সে সময় খুঁটির পাশে একটি গাছ কাটছিলাম। বিদ্যুৎ এর খুঁটির নিচে একটি বেজির সদ্যজাত শাবক দেখতে পাই। পরে সেটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে এসে পালতে থাকি। দুধ, মাছ, মাংস খাইয়ে বড় করি।’

জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বেজিটি ছেড়ে দেওয়া থাকতো। আমার আর ছেলে জুয়েলের সঙ্গে ঘুরত। বড় হলে ওকে একদিন আমার বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে ছেড়ে দিয়ে এসেছিলাম। পাঁচদিন পরেই দেখি বেজিটি আমার বাড়িতে চলে এসেছে। প্রায় ২ বছর আগে আমার প্রতিবেশি কেউ খাবারের মধ্যে বিষ দিয়ে বেজিটিকে খাইয়ে ছিল। পরে বাড়িতে এসে সে মারা যায়।’

জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লার পোষা ইগল। ছবি: আজকের পত্রিকা জাহাঙ্গীরের স্ত্রী জরিনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী প্রতিদিন কাজ করতে পারেন না, তাই প্রতিদিন আয় হয় না। ইগল এবং বনবিড়াল দুটির জন্য প্রতিদিন প্রায় একশত টাকা খরচ হয়। যেদিন আমার স্বামীর কাছে ওদের খাবার কেনার টাকা থাকে না, সেদিন মন খারাপ করে বসে থাকে। তখন কারও কাছ থেকে ঋণ করে টাকা নিয়ে ওদের জন্য খাবার কিনে আনি। আমাদের খাবারের আগে ওদের খাবারের চিন্তা করি।’ 

জানতে চাইলে পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ) বগুড়ার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরাফাত রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বড় বৃক্ষ ছাড়া ইগল বা শিকারি প্রাণীগুলো প্রজনন করে না। বড় বৃক্ষ কমে যাওয়ায় এখন বেশ কিছু প্রজাতির বন্য প্রাণী বিলুপ্ত প্রায়। 

গাছ কাটতে গিয়ে পাওয়া বন্য প্রাণী উদ্ধার করে জীবন ফিরিয়ে দেওয়া অবশ্যই ভালো উদাহরণ। তবে বন্য প্রাণী পালনে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। ইগলকে খুব বেশি খাবার দিলে সে নিজে শিকার করে খেতে পারবে না। পাখিটি যখন নিজে শিকার করে খেতে পারবে, তখন সে তার সঙ্গী জোগাড় করে প্রজনন করতে পারবে। না হলে পাখি বা বন্য প্রাণী মানুষের দাসে পরিণত হবে। 

তিনি বলেন, বন্য প্রাণী বাড়িতে না পোষাই ভালো। বেশি সংস্পর্শে থাকলে মানুষের মধ্যে রোগ ছড়ানোর সুযোগ থাকে। 

বনবিড়ালের দুটি শাবক। ছবি: আজকের পত্রিকা জানতে চাইলে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক প্রভাষক আবু সাঈদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত বৃক্ষনিধন করে পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি করছি। প্রাকৃতিক আবাসস্থল আমরা ধ্বংস করছি, তাতে হুমকির মুখে পড়ছে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী। অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে, আরও অনেক বিলুপ্তপ্রায়। এসব উদ্ভিদ-প্রাণী বা এদের আবাসস্থল বিলুপ্ত হলে আমরা অনেকেই ভাবি, এতে আমার ক্ষতি নেই। কিন্তু এসব কারণেই আজকের বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ঘটেছে আর আবাসস্থল হিসেবে পুরো পৃথিবীই হুমকির মুখে পরতে যাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
জেসমিন আরা রুমা। ছবি: সংগৃহীত
জেসমিন আরা রুমা। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহসভাপতি জেসমিন আরা রুমাকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা দিকে নগরীর মালগুদাম এলাকার নিজ বাস থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার রুমা নগরীর মালগুদাম এলাকার অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী আবু তাহেলের মেয়ে। তাঁর স্বামী সুলতান মাহমুদ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেসমিন আরা রুমা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে গত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ রয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় আদালতের নির্দেশে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নালিতাবাড়ীতে মসজিদে ঢুকে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ২

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি 
উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা ও ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা ও ফরহাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় একটি মসজিদে ঢুকে ইমাম ও মুসল্লিদের ওপর হামলা এবং মসজিদের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে শেরপুর শহরের নয়ানী বাজার এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের জহিরুল ইসলামের দুই ছেলে উমর ফারুক ওরফে ফারুক পাগলা (৩৫) ও ফরহাদ হোসেন (২৭)।

পুলিশ জানায়, ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার বারোমারী বাজার এলাকার চেল্লাখালী নদীর পশ্চিমপাড়ে উত্তর বাতকুচি ফরেস্ট অফিসসংলগ্ন বাইতুল নূর জামে মসজিদে ওই হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সেদিন ফরহাদ, উমর ফারুক ও রুবেল নামে তিনজন মদ্যপ অবস্থায় মসজিদে ঢুকে ইমাম শফিকুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ থেকে এই মসজিদে আজান দেওয়া যাবে না, আমাদের অনুমতি ছাড়া আর আজান হবে না।’

ইমাম প্রতিবাদ করলে তাঁরা তাঁকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। একপর্যায়ে ইমাম পালিয়ে গেলে হামলাকারীরা মসজিদে ঢুকে মাইক সেট, বৈদ্যুতিক বোর্ড, টিনের বেড়া ও অন্য সামগ্রী ভাঙচুর করেন।

এ সময় মুসল্লি হাবিবুর রহমান ও কাজল মিয়া বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। পরে গ্রামবাসী আহতদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

ঘটনার পর মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফ আলী বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা করেন।

নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘মসজিদে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ত্র নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ঘোরাফেরা, প্রতিবাদ করায় ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে যুবক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে আজ মঙ্গলবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুরে যুবক খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে আজ মঙ্গলবার সকালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগরীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত যুবকের নাম মারুফ (২২)। তিনি মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া তারগাছ এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। আহত যুবকের নাম জামিল (২৪)। তাঁরা পরস্পর বন্ধু।

পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল অভিযুক্ত ব্যক্তিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবি (২৪) ও ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেন (১৮)। তাঁরা এলাকায় কিশোর গ্যাং হিসেবে পরিচিত হলেও সবাই তরুণ বয়সী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে গাছা থানার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুনিয়া তারগাছ এলাকার আক্তারের বাড়ির সামনে এলাকার চিহ্নিত কিশোর গ্যাং সদস্য রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ আরও চার থেকে পাঁচজন দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। এ সময় এক দোকানের ক্রেতা জামিল কিশোর গ্যাং সদস্যদের বেপরোয়া আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গে রবির বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। উভয় পক্ষের বাগ্‌বিতণ্ডা থামাতে জামিলের বন্ধু মারুফ ঘটনাস্থলে যান। এ সময় কিশোর গ্যাং সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই বন্ধুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে তারুন্নেসা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মারুফ মারা গেছেন। প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে জামিলকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আহত জামিলের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ ৮-১০ জনের একটি সংঘবদ্ধ কিশোর গ্যাং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত যুবকের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, আহত জামিলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রবি, রনি, সাগর, সাব্বিরসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে একাধিক টিম মাঠে নেমেছে।

জিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান আজকের পত্রিকাকে জানান, মারুফ হত্যাকাণ্ডে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। এজাহারে মো. রবিউল ইসলাম ওরফে সিগমা রবিকে প্রধান আসামি করা হয়।

জাহিদুল হাসান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করে জিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিম পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে আজ সকালে রবিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর একটি টিম ২ নম্বর আসামি মো. সাব্বির হোসেনকে গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উল্টোপথে অটোরিকশা, বাসচাপায় চালক ও যাত্রী নিহত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
ঘটনাস্থল পরিদর্শন পুলিশের। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থল পরিদর্শন পুলিশের। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে যাত্রীবাহী বাসের চাপায় অটোরিকশার চালক ও যাত্রী দুজনই নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার দেওহাটা আন্ডারপাসের সামনে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার রশিদ দেওহাটা গ্রামের আব্দুল হামিদ (৬০) ও রানাশাল গ্রামের অটোরিকশাচালক রহিজ সিকদার (৪৬)।

মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল সারোয়ার জানান, অটোরিকশাচালক মহাসড়কে উল্টোপথে দেওহাটা আন্ডারপাসের ওপরে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী যাত্রীবাহী বাস চাপা দিলে এই প্রাণহানি ঘটে। লাশ আইনিপ্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যাত্রীবাহী বাসটি আটকের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত