Ajker Patrika

নদীভাঙনের কবলে মাদ্রাসা, খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
মাদ্রাসার জমি নদীভাঙনে বিলীন হয়ে পড়ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাদ্রাসার জমি নদীভাঙনে বিলীন হয়ে পড়ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নদীর একের পর এক ঢেউ ক্রমাগত গ্রাস করে নিচ্ছে মাদ্রাসার ভূমি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় দুটি টিনশেড ঘরের বেড়া ও চাল খুলে রাখা হয়েছে রাস্তার পাশে। বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে শিশুদের পড়ালেখা করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। এই দৃশ্য নোয়াখালী হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের ইসলামপুর দাখিল মাদ্রাসার।

সম্প্রতি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ইসলামপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে মাদ্রাসাপ্রধান মাওলানা আব্দুল আহাদের বাড়িতে চলছে শিশুদের পাঠদান। ১০-১২টি বেঞ্চে অর্ধশতাধিক শিশুকে পাঠদানে ব্যস্ত দুজন শিক্ষক। প্রচণ্ড গরমে ঘামছে শিশুরা। নদীতে ভেঙে পড়ার মুখে মাদ্রাসার ভিটার অবশিষ্ট অংশ। দু-একদিনের মধ্যে হয়তো মাদ্রাসার কোনো চিহ্ন আর পাওয়া যাবে না। পাশেই আধা পাকা মসজিদটি ভাঙনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার ওপর মাদ্রাসার টিনশেডের ঘরগুলো খুলে রাখা হয়েছে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে।

মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক এ টি এম আমিরুল ইসলাম জানান, ৩০০ ছাত্র-ছাত্রী ছিল এই মাদ্রাসায়। মাদ্রাসার সঙ্গে অনেকে ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হওয়ায় অনেকে অন্যত্র চলে গেছেন। এখনো প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী আসেন অস্থায়ী ভিত্তিতে চলা এই পাঠদান ক্লাসে। সবাইকে জায়গা দেওয়া যায় না। দু-তিন ভাগে ভাগ করে পড়াতে হয়। রোধের মধ্যে তারা বেশি সময় থাকতে পারে না। আবার খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টি এলে সবাইকে চলে যেতে হয়। এখন আর কেউ বেতন-ভাতা দেয় না। নিজেরা মাদ্রাসাকে টিকিয়ে রাখার জন্য অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

ইসলামপুর বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল খালেক জানান, স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ২০০১ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই অঞ্চলে ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না। এ জন্য এখানে ছাত্র-ছাত্রীও ছিল অনেক। সবাই সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু নদীভাঙনে এখন সব শেষ। তিনি আরও জানান, গত ১০ বছরে চানন্দী ইউনিয়নের অব্যাহত ভাঙনে অর্ধশতাধিক মসজিদ, মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ভাঙন অব্যাহত আছে।

গাছতলায় বসে পড়ছে শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাছতলায় বসে পড়ছে শিশুরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদ্রাসার প্রধান মাওলানা আব্দুল আহাদ বলেন, নদী একেবারে কাছে চলে আসায় দুই মাস আগে মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনো মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রী ছিল ২৮৫ জন। এরপর মাদ্রাসার ঘরের বেড়া ও চাল খুলে ফেলা হয়। এর পর থেকে অনেক দিন পাঠদান বন্ধ। অনেক শিক্ষার্থী অন্য কাজে ঢুকে গেছে। অনেকে পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছে। নদীভাঙনে এই অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ