মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর সব দাপটের মূলে ছিলেন বড় ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নয়, নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও দমিয়ে রাখতে তিনি সব অপকৌশল প্রয়োগ করেছেন। ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করার জন্য তাঁর ছিল হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী। প্রশাসন ও পুলিশ—সবই ছিল কাদের মির্জার নিয়ন্ত্রণে। কোনো কর্মকর্তা তাঁর মতের বিপরীতে অবস্থান নিলেই বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে তাঁকে বদলি করিয়ে দিতেন।
হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী
দুই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা, বসুরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মো. রাসেল, হামিদ উল্যাহ ওরফে কালা হামিদ, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আউয়াল মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আইনুল মারুফ, সাধারণ সম্পাদক মো. তন্ময়, বসুরহাট পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিসান আহমেদ, সানিম, বোরহান উদ্দিন, শহিদ উল্যা ওরফে কেচ্ছা রাসেল, বাংলাবাজারের পিচ্চি মাসুদ ওরফে ডাকাত মাসুদ।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ১৩ মে বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুরের অনুসারীদের দিকে গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গ্রেপ্তার হলেও কাদের মির্জার দাপটে কিছুদিন পরই কেচ্ছা রাসেল জামিনে ছাড়া পান।
দুই বাহিনীর অস্ত্রধারীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জায়েদুল হক কচি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহাজান সাজু, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, জামায়াত নেতা ইয়াকুব নবীসহ অনেকে।
২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মির্জা বাহিনীর সদস্যরা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক নাজিম উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে কাদের মির্জার এক অনুসারী বাদী হয়ে নাজিমের বিরুদ্ধে উল্টো মাদক আইনে মামলা করেন।
হত্যায় অভিযুক্ত কাদের মির্জার বাহিনী
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অর্থ উপার্জনের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি ইসরাতুন্নেসার মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে বড় ভাই ও ভাবির বিরুদ্ধে কাদের মির্জা ফেসবুকে লাইভে এসে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতে থাকেন। এর প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিল আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চাপরাশির হাটে প্রতিপক্ষের মিছিলে হামলা চালায় কাদের মির্জার বাহিনী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্থানীয় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। এ ঘটনায় মামলা হলেও কারও নাম উল্লেখ করার সাহস পায়নি মুজাক্কিরের পরিবার। একই ঘটনায় শ্রমিক লীগ কর্মী আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
আওয়ামী লীগও জিম্মি ছিল
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৬ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র অনুমোদিত কোনো কমিটি ছিল না। কাদের মির্জা নিজেই একই দিন একাধিক কমিটি ঘোষণা করতেন। তিনি সকালে একটি কমিটি দিয়ে বিকেলে আবার আরেকটি কমিটি ঘোষণা দিতেন। কাদের মির্জার পরিবারের কাছে জিম্মি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ ছিল কাদের মির্জার কাছে জিম্মি। তাঁরা দুই ভাই মিলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অবৈধ টাকা উপার্জনে দলকে ব্যবহার করে আসছিলেন। আমরা আওয়ামী লীগ করেও সব সময় আতঙ্কে ছিলাম। দুই ভাই মিলে পুরো এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছেন।
ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা, প্রতিষ্ঠান দখল
কাদের মির্জা তাঁর বাহিনী দিয়ে এলাকার বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এর মধ্যে সাত্তার ব্রাদার্স (সাত্তার বেকারি), ফখরুল ক্লথ স্টোর, হুমায়ূন টিম্বার, ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্স, ফেন্সী হোটেল, আজমীর হোটেল, গাজী অ্যান্ড সন্স, ছায়েদ ম্যানশন (ছয়তলা বিপণিবিতান ও আবাসিক ভবন), কাউন্সিলর ছায়েদল হক বাবুলের আলেয়া টাওয়ার, মাওলা শপিং সেন্টার, মডার্ন হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হেলাল হার্ডওয়্যার, সেলিম স্টোর, মেহরাজ প্লাজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে চাঁদা নিয়ে খুলে দেওয়া হয় সেগুলো।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, বসুরহাট বাজারে মেইন রোডে লন্ডনপ্রবাসী আবু ছায়েদের ছয়তলার ছায়েদ ম্যানশন ও হাসপাতাল গেটে জাহান মঞ্জিল নামে চারতলা ভবন দখল করে নেন কাদের মির্জা। ছায়েদ ম্যানশনের ছয়তলা ভবনটি থেকে পৌরসভার কর্মচারীদের দিয়ে ভাড়া তুলতেন। জাহান মঞ্জিলের মালিক আবু ছায়েদকে নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা দিয়ে বিক্রি করে দেন নিজ দলের নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীমের কাছে। তবে ৫ আগস্টের পর ভবনটি দখলমুক্ত হয়ে আবু ছায়েদের মালিকানায় যায় বলে জানা গেছে। বসুরহাট রূপালী চত্বরে কাউন্সিলর ছায়েদুল হক বাবুলের স্ত্রী আলেয়া বেগমের মালিকানাধীন আলেয়া টাওয়ার নামে চারতলা ভবনটি নিজ স্ত্রী আক্তার জাহান বকুলের নামে লিখে নেন কাদের মির্জা। পৌরসভা টর্চার সেলে বাবুল ও তাঁর স্ত্রী আলেয়াকে আটক করে এটি করেন তিনি।
বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কাদের মির্জা নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। তাঁর অত্যাচারে জেলার অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা অনেকটা পথে বসার উপক্রম হয়েছিলেন, যা এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বসুরহাট বাজারের আমিন মার্কেটের মালিক আশিক-ই-রসুলকে কাগজপত্র নিয়ে পৌরসভা কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। কাদের মির্জার নির্দেশে পৌর সচিব ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন কাদের মির্জা। আশিক-ই-রসুল বলেন, ‘টাকা দেওয়ার পর আমার মার্কেটের তালা খুলে দেওয়া হয়।’
প্রশাসন ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ
স্থানীয়রা জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ছাড়াও ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন কাদের মির্জা। বিশেষ করে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি (ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী) ইসরাতুন্নেসা কাদেরের দুটি আলাদা সিন্ডিকেট ছিল। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ বক্তব্য দিতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় যেকোনো উন্নয়নকাজ করতে গেলে কাদের মির্জাকে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো ঠিকাদারদের। না দিলে কাজ বন্ধ করে দিতেন তাঁর বাহিনী দিয়ে। আবার এসব কাজের বেশির ভাগ পেতেন তাঁর ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারেরা। গত ১৫ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় মোট উন্নয়নকাজ যা হয়েছে, প্রতিটি কাজে ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নিতেন কাদের মির্জা। একাধিক ঠিকাদার এ তথ্য দিয়েছেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে আছেন কাদের মির্জা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর সব দাপটের মূলে ছিলেন বড় ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নয়, নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও দমিয়ে রাখতে তিনি সব অপকৌশল প্রয়োগ করেছেন। ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করার জন্য তাঁর ছিল হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী। প্রশাসন ও পুলিশ—সবই ছিল কাদের মির্জার নিয়ন্ত্রণে। কোনো কর্মকর্তা তাঁর মতের বিপরীতে অবস্থান নিলেই বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে তাঁকে বদলি করিয়ে দিতেন।
হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী
দুই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা, বসুরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মো. রাসেল, হামিদ উল্যাহ ওরফে কালা হামিদ, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আউয়াল মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আইনুল মারুফ, সাধারণ সম্পাদক মো. তন্ময়, বসুরহাট পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিসান আহমেদ, সানিম, বোরহান উদ্দিন, শহিদ উল্যা ওরফে কেচ্ছা রাসেল, বাংলাবাজারের পিচ্চি মাসুদ ওরফে ডাকাত মাসুদ।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ১৩ মে বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুরের অনুসারীদের দিকে গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গ্রেপ্তার হলেও কাদের মির্জার দাপটে কিছুদিন পরই কেচ্ছা রাসেল জামিনে ছাড়া পান।
দুই বাহিনীর অস্ত্রধারীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জায়েদুল হক কচি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহাজান সাজু, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, জামায়াত নেতা ইয়াকুব নবীসহ অনেকে।
২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মির্জা বাহিনীর সদস্যরা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক নাজিম উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে কাদের মির্জার এক অনুসারী বাদী হয়ে নাজিমের বিরুদ্ধে উল্টো মাদক আইনে মামলা করেন।
হত্যায় অভিযুক্ত কাদের মির্জার বাহিনী
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অর্থ উপার্জনের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি ইসরাতুন্নেসার মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে বড় ভাই ও ভাবির বিরুদ্ধে কাদের মির্জা ফেসবুকে লাইভে এসে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতে থাকেন। এর প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিল আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চাপরাশির হাটে প্রতিপক্ষের মিছিলে হামলা চালায় কাদের মির্জার বাহিনী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্থানীয় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। এ ঘটনায় মামলা হলেও কারও নাম উল্লেখ করার সাহস পায়নি মুজাক্কিরের পরিবার। একই ঘটনায় শ্রমিক লীগ কর্মী আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
আওয়ামী লীগও জিম্মি ছিল
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৬ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র অনুমোদিত কোনো কমিটি ছিল না। কাদের মির্জা নিজেই একই দিন একাধিক কমিটি ঘোষণা করতেন। তিনি সকালে একটি কমিটি দিয়ে বিকেলে আবার আরেকটি কমিটি ঘোষণা দিতেন। কাদের মির্জার পরিবারের কাছে জিম্মি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ ছিল কাদের মির্জার কাছে জিম্মি। তাঁরা দুই ভাই মিলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অবৈধ টাকা উপার্জনে দলকে ব্যবহার করে আসছিলেন। আমরা আওয়ামী লীগ করেও সব সময় আতঙ্কে ছিলাম। দুই ভাই মিলে পুরো এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছেন।
ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা, প্রতিষ্ঠান দখল
কাদের মির্জা তাঁর বাহিনী দিয়ে এলাকার বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এর মধ্যে সাত্তার ব্রাদার্স (সাত্তার বেকারি), ফখরুল ক্লথ স্টোর, হুমায়ূন টিম্বার, ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্স, ফেন্সী হোটেল, আজমীর হোটেল, গাজী অ্যান্ড সন্স, ছায়েদ ম্যানশন (ছয়তলা বিপণিবিতান ও আবাসিক ভবন), কাউন্সিলর ছায়েদল হক বাবুলের আলেয়া টাওয়ার, মাওলা শপিং সেন্টার, মডার্ন হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হেলাল হার্ডওয়্যার, সেলিম স্টোর, মেহরাজ প্লাজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে চাঁদা নিয়ে খুলে দেওয়া হয় সেগুলো।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, বসুরহাট বাজারে মেইন রোডে লন্ডনপ্রবাসী আবু ছায়েদের ছয়তলার ছায়েদ ম্যানশন ও হাসপাতাল গেটে জাহান মঞ্জিল নামে চারতলা ভবন দখল করে নেন কাদের মির্জা। ছায়েদ ম্যানশনের ছয়তলা ভবনটি থেকে পৌরসভার কর্মচারীদের দিয়ে ভাড়া তুলতেন। জাহান মঞ্জিলের মালিক আবু ছায়েদকে নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা দিয়ে বিক্রি করে দেন নিজ দলের নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীমের কাছে। তবে ৫ আগস্টের পর ভবনটি দখলমুক্ত হয়ে আবু ছায়েদের মালিকানায় যায় বলে জানা গেছে। বসুরহাট রূপালী চত্বরে কাউন্সিলর ছায়েদুল হক বাবুলের স্ত্রী আলেয়া বেগমের মালিকানাধীন আলেয়া টাওয়ার নামে চারতলা ভবনটি নিজ স্ত্রী আক্তার জাহান বকুলের নামে লিখে নেন কাদের মির্জা। পৌরসভা টর্চার সেলে বাবুল ও তাঁর স্ত্রী আলেয়াকে আটক করে এটি করেন তিনি।
বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কাদের মির্জা নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। তাঁর অত্যাচারে জেলার অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা অনেকটা পথে বসার উপক্রম হয়েছিলেন, যা এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বসুরহাট বাজারের আমিন মার্কেটের মালিক আশিক-ই-রসুলকে কাগজপত্র নিয়ে পৌরসভা কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। কাদের মির্জার নির্দেশে পৌর সচিব ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন কাদের মির্জা। আশিক-ই-রসুল বলেন, ‘টাকা দেওয়ার পর আমার মার্কেটের তালা খুলে দেওয়া হয়।’
প্রশাসন ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ
স্থানীয়রা জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ছাড়াও ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন কাদের মির্জা। বিশেষ করে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি (ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী) ইসরাতুন্নেসা কাদেরের দুটি আলাদা সিন্ডিকেট ছিল। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ বক্তব্য দিতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় যেকোনো উন্নয়নকাজ করতে গেলে কাদের মির্জাকে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো ঠিকাদারদের। না দিলে কাজ বন্ধ করে দিতেন তাঁর বাহিনী দিয়ে। আবার এসব কাজের বেশির ভাগ পেতেন তাঁর ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারেরা। গত ১৫ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় মোট উন্নয়নকাজ যা হয়েছে, প্রতিটি কাজে ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নিতেন কাদের মির্জা। একাধিক ঠিকাদার এ তথ্য দিয়েছেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে আছেন কাদের মির্জা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
মিজানুর রহমান রিয়াদ, নোয়াখালী

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর সব দাপটের মূলে ছিলেন বড় ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নয়, নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও দমিয়ে রাখতে তিনি সব অপকৌশল প্রয়োগ করেছেন। ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করার জন্য তাঁর ছিল হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী। প্রশাসন ও পুলিশ—সবই ছিল কাদের মির্জার নিয়ন্ত্রণে। কোনো কর্মকর্তা তাঁর মতের বিপরীতে অবস্থান নিলেই বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে তাঁকে বদলি করিয়ে দিতেন।
হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী
দুই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা, বসুরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মো. রাসেল, হামিদ উল্যাহ ওরফে কালা হামিদ, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আউয়াল মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আইনুল মারুফ, সাধারণ সম্পাদক মো. তন্ময়, বসুরহাট পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিসান আহমেদ, সানিম, বোরহান উদ্দিন, শহিদ উল্যা ওরফে কেচ্ছা রাসেল, বাংলাবাজারের পিচ্চি মাসুদ ওরফে ডাকাত মাসুদ।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ১৩ মে বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুরের অনুসারীদের দিকে গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গ্রেপ্তার হলেও কাদের মির্জার দাপটে কিছুদিন পরই কেচ্ছা রাসেল জামিনে ছাড়া পান।
দুই বাহিনীর অস্ত্রধারীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জায়েদুল হক কচি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহাজান সাজু, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, জামায়াত নেতা ইয়াকুব নবীসহ অনেকে।
২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মির্জা বাহিনীর সদস্যরা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক নাজিম উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে কাদের মির্জার এক অনুসারী বাদী হয়ে নাজিমের বিরুদ্ধে উল্টো মাদক আইনে মামলা করেন।
হত্যায় অভিযুক্ত কাদের মির্জার বাহিনী
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অর্থ উপার্জনের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি ইসরাতুন্নেসার মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে বড় ভাই ও ভাবির বিরুদ্ধে কাদের মির্জা ফেসবুকে লাইভে এসে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতে থাকেন। এর প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিল আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চাপরাশির হাটে প্রতিপক্ষের মিছিলে হামলা চালায় কাদের মির্জার বাহিনী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্থানীয় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। এ ঘটনায় মামলা হলেও কারও নাম উল্লেখ করার সাহস পায়নি মুজাক্কিরের পরিবার। একই ঘটনায় শ্রমিক লীগ কর্মী আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
আওয়ামী লীগও জিম্মি ছিল
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৬ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র অনুমোদিত কোনো কমিটি ছিল না। কাদের মির্জা নিজেই একই দিন একাধিক কমিটি ঘোষণা করতেন। তিনি সকালে একটি কমিটি দিয়ে বিকেলে আবার আরেকটি কমিটি ঘোষণা দিতেন। কাদের মির্জার পরিবারের কাছে জিম্মি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ ছিল কাদের মির্জার কাছে জিম্মি। তাঁরা দুই ভাই মিলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অবৈধ টাকা উপার্জনে দলকে ব্যবহার করে আসছিলেন। আমরা আওয়ামী লীগ করেও সব সময় আতঙ্কে ছিলাম। দুই ভাই মিলে পুরো এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছেন।
ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা, প্রতিষ্ঠান দখল
কাদের মির্জা তাঁর বাহিনী দিয়ে এলাকার বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এর মধ্যে সাত্তার ব্রাদার্স (সাত্তার বেকারি), ফখরুল ক্লথ স্টোর, হুমায়ূন টিম্বার, ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্স, ফেন্সী হোটেল, আজমীর হোটেল, গাজী অ্যান্ড সন্স, ছায়েদ ম্যানশন (ছয়তলা বিপণিবিতান ও আবাসিক ভবন), কাউন্সিলর ছায়েদল হক বাবুলের আলেয়া টাওয়ার, মাওলা শপিং সেন্টার, মডার্ন হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হেলাল হার্ডওয়্যার, সেলিম স্টোর, মেহরাজ প্লাজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে চাঁদা নিয়ে খুলে দেওয়া হয় সেগুলো।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, বসুরহাট বাজারে মেইন রোডে লন্ডনপ্রবাসী আবু ছায়েদের ছয়তলার ছায়েদ ম্যানশন ও হাসপাতাল গেটে জাহান মঞ্জিল নামে চারতলা ভবন দখল করে নেন কাদের মির্জা। ছায়েদ ম্যানশনের ছয়তলা ভবনটি থেকে পৌরসভার কর্মচারীদের দিয়ে ভাড়া তুলতেন। জাহান মঞ্জিলের মালিক আবু ছায়েদকে নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা দিয়ে বিক্রি করে দেন নিজ দলের নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীমের কাছে। তবে ৫ আগস্টের পর ভবনটি দখলমুক্ত হয়ে আবু ছায়েদের মালিকানায় যায় বলে জানা গেছে। বসুরহাট রূপালী চত্বরে কাউন্সিলর ছায়েদুল হক বাবুলের স্ত্রী আলেয়া বেগমের মালিকানাধীন আলেয়া টাওয়ার নামে চারতলা ভবনটি নিজ স্ত্রী আক্তার জাহান বকুলের নামে লিখে নেন কাদের মির্জা। পৌরসভা টর্চার সেলে বাবুল ও তাঁর স্ত্রী আলেয়াকে আটক করে এটি করেন তিনি।
বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কাদের মির্জা নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। তাঁর অত্যাচারে জেলার অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা অনেকটা পথে বসার উপক্রম হয়েছিলেন, যা এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বসুরহাট বাজারের আমিন মার্কেটের মালিক আশিক-ই-রসুলকে কাগজপত্র নিয়ে পৌরসভা কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। কাদের মির্জার নির্দেশে পৌর সচিব ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন কাদের মির্জা। আশিক-ই-রসুল বলেন, ‘টাকা দেওয়ার পর আমার মার্কেটের তালা খুলে দেওয়া হয়।’
প্রশাসন ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ
স্থানীয়রা জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ছাড়াও ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন কাদের মির্জা। বিশেষ করে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি (ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী) ইসরাতুন্নেসা কাদেরের দুটি আলাদা সিন্ডিকেট ছিল। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ বক্তব্য দিতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় যেকোনো উন্নয়নকাজ করতে গেলে কাদের মির্জাকে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো ঠিকাদারদের। না দিলে কাজ বন্ধ করে দিতেন তাঁর বাহিনী দিয়ে। আবার এসব কাজের বেশির ভাগ পেতেন তাঁর ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারেরা। গত ১৫ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় মোট উন্নয়নকাজ যা হয়েছে, প্রতিটি কাজে ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নিতেন কাদের মির্জা। একাধিক ঠিকাদার এ তথ্য দিয়েছেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে আছেন কাদের মির্জা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর সব দাপটের মূলে ছিলেন বড় ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নয়, নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও দমিয়ে রাখতে তিনি সব অপকৌশল প্রয়োগ করেছেন। ক্ষমতাকে একচ্ছত্র করার জন্য তাঁর ছিল হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী। প্রশাসন ও পুলিশ—সবই ছিল কাদের মির্জার নিয়ন্ত্রণে। কোনো কর্মকর্তা তাঁর মতের বিপরীতে অবস্থান নিলেই বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে তাঁকে বদলি করিয়ে দিতেন।
হেলমেট ও হাতুড়ি বাহিনী
দুই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা, বসুরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা মো. রাসেল, হামিদ উল্যাহ ওরফে কালা হামিদ, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল আউয়াল মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আইনুল মারুফ, সাধারণ সম্পাদক মো. তন্ময়, বসুরহাট পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিসান আহমেদ, সানিম, বোরহান উদ্দিন, শহিদ উল্যা ওরফে কেচ্ছা রাসেল, বাংলাবাজারের পিচ্চি মাসুদ ওরফে ডাকাত মাসুদ।
এর মধ্যে ২০২১ সালের ১৩ মে বসুরহাট পৌরসভার করালিয়া এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুরের অনুসারীদের দিকে গুলি ছোড়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে গ্রেপ্তার হলেও কাদের মির্জার দাপটে কিছুদিন পরই কেচ্ছা রাসেল জামিনে ছাড়া পান।
দুই বাহিনীর অস্ত্রধারীদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর নবী চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জায়েদুল হক কচি, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহাজান সাজু, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান রিপন, জামায়াত নেতা ইয়াকুব নবীসহ অনেকে।
২০২৩ সালের ১১ ডিসেম্বর মির্জা বাহিনীর সদস্যরা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক নাজিম উদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে কাদের মির্জার এক অনুসারী বাদী হয়ে নাজিমের বিরুদ্ধে উল্টো মাদক আইনে মামলা করেন।
হত্যায় অভিযুক্ত কাদের মির্জার বাহিনী
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অর্থ উপার্জনের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি ইসরাতুন্নেসার মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে বড় ভাই ও ভাবির বিরুদ্ধে কাদের মির্জা ফেসবুকে লাইভে এসে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিতে থাকেন। এর প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিল আওয়ামী লীগেরই একটি অংশ। ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চাপরাশির হাটে প্রতিপক্ষের মিছিলে হামলা চালায় কাদের মির্জার বাহিনী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্থানীয় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। এ ঘটনায় মামলা হলেও কারও নাম উল্লেখ করার সাহস পায়নি মুজাক্কিরের পরিবার। একই ঘটনায় শ্রমিক লীগ কর্মী আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
আওয়ামী লীগও জিম্মি ছিল
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ১৬ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র অনুমোদিত কোনো কমিটি ছিল না। কাদের মির্জা নিজেই একই দিন একাধিক কমিটি ঘোষণা করতেন। তিনি সকালে একটি কমিটি দিয়ে বিকেলে আবার আরেকটি কমিটি ঘোষণা দিতেন। কাদের মির্জার পরিবারের কাছে জিম্মি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ ছিল কাদের মির্জার কাছে জিম্মি। তাঁরা দুই ভাই মিলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অবৈধ টাকা উপার্জনে দলকে ব্যবহার করে আসছিলেন। আমরা আওয়ামী লীগ করেও সব সময় আতঙ্কে ছিলাম। দুই ভাই মিলে পুরো এলাকাকে আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছেন।
ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা, প্রতিষ্ঠান দখল
কাদের মির্জা তাঁর বাহিনী দিয়ে এলাকার বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এর মধ্যে সাত্তার ব্রাদার্স (সাত্তার বেকারি), ফখরুল ক্লথ স্টোর, হুমায়ূন টিম্বার, ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্স, ফেন্সী হোটেল, আজমীর হোটেল, গাজী অ্যান্ড সন্স, ছায়েদ ম্যানশন (ছয়তলা বিপণিবিতান ও আবাসিক ভবন), কাউন্সিলর ছায়েদল হক বাবুলের আলেয়া টাওয়ার, মাওলা শপিং সেন্টার, মডার্ন হাসপাতাল, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হেলাল হার্ডওয়্যার, সেলিম স্টোর, মেহরাজ প্লাজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে চাঁদা নিয়ে খুলে দেওয়া হয় সেগুলো।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, বসুরহাট বাজারে মেইন রোডে লন্ডনপ্রবাসী আবু ছায়েদের ছয়তলার ছায়েদ ম্যানশন ও হাসপাতাল গেটে জাহান মঞ্জিল নামে চারতলা ভবন দখল করে নেন কাদের মির্জা। ছায়েদ ম্যানশনের ছয়তলা ভবনটি থেকে পৌরসভার কর্মচারীদের দিয়ে ভাড়া তুলতেন। জাহান মঞ্জিলের মালিক আবু ছায়েদকে নামকাওয়াস্তে কিছু টাকা দিয়ে বিক্রি করে দেন নিজ দলের নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীমের কাছে। তবে ৫ আগস্টের পর ভবনটি দখলমুক্ত হয়ে আবু ছায়েদের মালিকানায় যায় বলে জানা গেছে। বসুরহাট রূপালী চত্বরে কাউন্সিলর ছায়েদুল হক বাবুলের স্ত্রী আলেয়া বেগমের মালিকানাধীন আলেয়া টাওয়ার নামে চারতলা ভবনটি নিজ স্ত্রী আক্তার জাহান বকুলের নামে লিখে নেন কাদের মির্জা। পৌরসভা টর্চার সেলে বাবুল ও তাঁর স্ত্রী আলেয়াকে আটক করে এটি করেন তিনি।
বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মতিন লিটন বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে কাদের মির্জা নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নিতেন। তাঁর অত্যাচারে জেলার অন্যতম ব্যবসাকেন্দ্রের ব্যবসায়ীরা অনেকটা পথে বসার উপক্রম হয়েছিলেন, যা এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরেনি।
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বসুরহাট বাজারের আমিন মার্কেটের মালিক আশিক-ই-রসুলকে কাগজপত্র নিয়ে পৌরসভা কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। কাদের মির্জার নির্দেশে পৌর সচিব ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন কাদের মির্জা। আশিক-ই-রসুল বলেন, ‘টাকা দেওয়ার পর আমার মার্কেটের তালা খুলে দেওয়া হয়।’
প্রশাসন ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ
স্থানীয়রা জানান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ছাড়াও ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে কয়েকটি মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন কাদের মির্জা। বিশেষ করে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে কাদের মির্জা ও তাঁর ভাবি (ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী) ইসরাতুন্নেসা কাদেরের দুটি আলাদা সিন্ডিকেট ছিল। তবে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ বক্তব্য দিতে চাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় যেকোনো উন্নয়নকাজ করতে গেলে কাদের মির্জাকে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো ঠিকাদারদের। না দিলে কাজ বন্ধ করে দিতেন তাঁর বাহিনী দিয়ে। আবার এসব কাজের বেশির ভাগ পেতেন তাঁর ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারেরা। গত ১৫ বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ও বসুরহাট পৌরসভায় মোট উন্নয়নকাজ যা হয়েছে, প্রতিটি কাজে ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নিতেন কাদের মির্জা। একাধিক ঠিকাদার এ তথ্য দিয়েছেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে আছেন কাদের মির্জা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগের বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁর সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা (সেরিব্রাল ইডেমা) আগের তুলনায় বেড়েছে।
৯ মিনিট আগে
সুদান থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে যখন কথা বলতেন, তখন অনাগত সন্তান নিয়ে কত শত স্বপ্ন বুনতেন শান্তিরক্ষী শান্ত মণ্ডল। সন্তান যেন একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ পায়, সে জন্য পরিবারের সবাইকে ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে থাকার কষ্ট হাসিমুখে মেনে...
১৩ মিনিট আগে
নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট—উভয় বিভাগের এজলাস কক্ষে আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থী বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত ব্যক্তির প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
৩৪ মিনিট আগে
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবকেরা বলেন, তাঁদের বাচ্চার জীবনের মূল্য কি ২০ লাখ টাকা? আহতদের ভবিষ্যতের মূল্য কি পাঁচ লাখ টাকা? এ দেশে একটি কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো বাচ্চাদের জীবনের মূল্য নেই। তারা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁর সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা (সেরিব্রাল ইডেমা) আগের তুলনায় বেড়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ওসমান হাদির চিকিৎসায় গঠিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল বোর্ড আজ রোববার বিকেলে বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ওই হাসপাতালের আইসিইউ ও এইচডিইউ সমন্বয়ক এবং জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে, তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা আগের তুলনায় বেড়েছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ক্লিনিক্যাল পরিস্থিতি। ১২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আজ আবার তাঁর শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করা হলে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ ও ফোলাজনিত ঝুঁকি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, ব্রেন স্টেমে আঘাত এবং বাড়তি সেরিব্রাল ইডেমার কারণে রোগীর রক্তচাপে ওঠানামা হচ্ছে। এদিন তাঁর হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি লক্ষ করা গেছে। তবে রক্তচাপ ও হৃদযন্ত্রের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় মেডিকেল সাপোর্ট অব্যাহত রয়েছে। ফুসফুসের কার্যকারিতা ও ভেন্টিলেটর সাপোর্ট বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি বা অবনতি হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওসমান হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা আপাতত বজায় আছে এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে শরীরের হরমোনগত ভারসাম্যহীনতা দেখা দেওয়ায় প্রতি ঘণ্টায় ইউরিন উৎপাদনে তারতম্য হচ্ছে। এ কারণে অ্যাসিড-বেস ব্যালেন্স, ফ্লুইড ও ইলেকট্রোলাইট নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্লাড সুগার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, যা এ ধরনের সংকটাপন্ন রোগীর ক্ষেত্রে একটি বড় ক্লিনিক্যাল চ্যালেঞ্জ।
মেডিকেল বোর্ড আরও বলেছে, ওসমান হাদির সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তবে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব ও সমন্বয়ের মাধ্যমে তাঁকে সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পরিবার অথবা পরিবারের মাধ্যমে সরকার চাইলে তাঁকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মেডিকেল বোর্ড সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
ওসমান হাদির প্রথম অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আব্দুল আহাদ আজ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবারের মতো আজও মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্যের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়েছে। রোগীর কেস সামারি প্রস্তুত করে ইতিমধ্যে বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে। আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বেলা সোয়া ২টার দিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করে।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁর সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা (সেরিব্রাল ইডেমা) আগের তুলনায় বেড়েছে।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি ওসমান হাদির চিকিৎসায় গঠিত মাল্টিডিসিপ্লিনারি মেডিকেল বোর্ড আজ রোববার বিকেলে বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ওই হাসপাতালের আইসিইউ ও এইচডিইউ সমন্বয়ক এবং জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে দেখা গেছে, তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা আগের তুলনায় বেড়েছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ক্লিনিক্যাল পরিস্থিতি। ১২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আজ আবার তাঁর শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করা হলে মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ ও ফোলাজনিত ঝুঁকি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, ব্রেন স্টেমে আঘাত এবং বাড়তি সেরিব্রাল ইডেমার কারণে রোগীর রক্তচাপে ওঠানামা হচ্ছে। এদিন তাঁর হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি লক্ষ করা গেছে। তবে রক্তচাপ ও হৃদযন্ত্রের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় মেডিকেল সাপোর্ট অব্যাহত রয়েছে। ফুসফুসের কার্যকারিতা ও ভেন্টিলেটর সাপোর্ট বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নতি বা অবনতি হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওসমান হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা আপাতত বজায় আছে এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা কিছুটা কমেছে। তবে মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে শরীরের হরমোনগত ভারসাম্যহীনতা দেখা দেওয়ায় প্রতি ঘণ্টায় ইউরিন উৎপাদনে তারতম্য হচ্ছে। এ কারণে অ্যাসিড-বেস ব্যালেন্স, ফ্লুইড ও ইলেকট্রোলাইট নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্লাড সুগার সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, যা এ ধরনের সংকটাপন্ন রোগীর ক্ষেত্রে একটি বড় ক্লিনিক্যাল চ্যালেঞ্জ।
মেডিকেল বোর্ড আরও বলেছে, ওসমান হাদির সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। তবে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব ও সমন্বয়ের মাধ্যমে তাঁকে সর্বোত্তম চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পরিবার অথবা পরিবারের মাধ্যমে সরকার চাইলে তাঁকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও মেডিকেল বোর্ড সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
ওসমান হাদির প্রথম অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. আব্দুল আহাদ আজ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গণমাধ্যমকে বলেন, শনিবারের মতো আজও মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্যের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়েছে। রোগীর কেস সামারি প্রস্তুত করে ইতিমধ্যে বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, হাদিকে আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে। আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বেলা সোয়া ২টার দিকে পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত চলন্ত রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করে।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
২৩ নভেম্বর ২০২৪
সুদান থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে যখন কথা বলতেন, তখন অনাগত সন্তান নিয়ে কত শত স্বপ্ন বুনতেন শান্তিরক্ষী শান্ত মণ্ডল। সন্তান যেন একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ পায়, সে জন্য পরিবারের সবাইকে ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে থাকার কষ্ট হাসিমুখে মেনে...
১৩ মিনিট আগে
নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট—উভয় বিভাগের এজলাস কক্ষে আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থী বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত ব্যক্তির প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
৩৪ মিনিট আগে
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবকেরা বলেন, তাঁদের বাচ্চার জীবনের মূল্য কি ২০ লাখ টাকা? আহতদের ভবিষ্যতের মূল্য কি পাঁচ লাখ টাকা? এ দেশে একটি কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো বাচ্চাদের জীবনের মূল্য নেই। তারা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
১ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

সুদান থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে যখন কথা বলতেন, তখন অনাগত সন্তান নিয়ে কত শত স্বপ্ন বুনতেন শান্তিরক্ষী শান্ত মণ্ডল। সন্তান যেন একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ পায়, সে জন্য পরিবারের সবাইকে ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে থাকার কষ্ট হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সন্তানের মুখ দেখার আশা তাঁর আর পূরণ হলো না। সন্তান ভূমিষ্ঠের আগেই এই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হলো তাঁকে।
গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের একজন কুড়িগ্রামের শান্ত মণ্ডল (২৬)। তাঁর বাড়ি রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাটমাধাই ডারারপাড় গ্রামে। তাঁর বাবা সাবেক সেনাসদস্য (মৃত) নূর ইসলাম মণ্ডল এবং মা সাহেরা বেগম। শান্তর বড় ভাই সোহাগ মণ্ডল সেনাবাহিনীতে কর্মরত। তিনি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে ল্যান্স করপোরাল পদে রয়েছেন।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) নিহত শান্তর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাঁর মা সাহেরা বেগম শোকে স্তব্ধ হয়ে বিছানায় বসে রয়েছেন। বড় ভাই সোহাগ মণ্ডলের চোখ কান্নায় লাল হয়ে আছে। স্বজন ও প্রতিবেশীরা বাড়িতে গিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করছেন।
সোহাগ মণ্ডল বলেন, শান্ত ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদান করেন। তিনি সর্বশেষ বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে সৈনিক পদে ছিলেন। গত ৭ নভেম্বর তিনি শান্তিরক্ষী মিশনে সুদানে যান। সোহাগ মণ্ডল আরও বলেন, ‘মাত্র এক বছর আগে শান্ত বিয়ে করেছে। তার স্ত্রী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সে তার বাবার বাড়িতে আছে। সেও খবর পেয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় শান্ত ভিডিও কলে বাড়ির সবার সঙ্গে কথা বলেছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে খবর পাই, ওদের ক্যাম্পে হামলা হয়েছে। হামলায় শান্ত মারা গেছে। হামলার সময় সে অস্ত্র পরিষ্কার করতে ছিল। তার এমন মৃত্যুতে আমরা দিশেহারা। আমরা এখন তার লাশের অপেক্ষায় আছি। বাড়িতে বাবার কবরের পাশে তাকে কবর দিতে চাই।’
পরিবার থেকে জানানো হয়, স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিতই কথা হতো শান্তর। গতকাল শান্তর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শোকে বিহ্বল হয়ে গেছেন। কারও সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় এখন তিনি নেই।
শান্তর বাল্যবন্ধু সুমন বলেন, ‘শান্তর মৃত্যুর খবরে এলাকার মানুষ শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। নামের মতোই সে শান্ত ছিল। কোনো দিন কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ বা কটু কথা বলেনি। এমন বন্ধুর মৃত্যুতে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত।’

সুদান থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে যখন কথা বলতেন, তখন অনাগত সন্তান নিয়ে কত শত স্বপ্ন বুনতেন শান্তিরক্ষী শান্ত মণ্ডল। সন্তান যেন একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ পায়, সে জন্য পরিবারের সবাইকে ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে থাকার কষ্ট হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সন্তানের মুখ দেখার আশা তাঁর আর পূরণ হলো না। সন্তান ভূমিষ্ঠের আগেই এই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হলো তাঁকে।
গতকাল শনিবার সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের একজন কুড়িগ্রামের শান্ত মণ্ডল (২৬)। তাঁর বাড়ি রাজারহাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাটমাধাই ডারারপাড় গ্রামে। তাঁর বাবা সাবেক সেনাসদস্য (মৃত) নূর ইসলাম মণ্ডল এবং মা সাহেরা বেগম। শান্তর বড় ভাই সোহাগ মণ্ডল সেনাবাহিনীতে কর্মরত। তিনি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে ল্যান্স করপোরাল পদে রয়েছেন।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) নিহত শান্তর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাঁর মা সাহেরা বেগম শোকে স্তব্ধ হয়ে বিছানায় বসে রয়েছেন। বড় ভাই সোহাগ মণ্ডলের চোখ কান্নায় লাল হয়ে আছে। স্বজন ও প্রতিবেশীরা বাড়িতে গিয়ে সহমর্মিতা প্রকাশ করছেন।
সোহাগ মণ্ডল বলেন, শান্ত ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদান করেন। তিনি সর্বশেষ বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে সৈনিক পদে ছিলেন। গত ৭ নভেম্বর তিনি শান্তিরক্ষী মিশনে সুদানে যান। সোহাগ মণ্ডল আরও বলেন, ‘মাত্র এক বছর আগে শান্ত বিয়ে করেছে। তার স্ত্রী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সে তার বাবার বাড়িতে আছে। সেও খবর পেয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় শান্ত ভিডিও কলে বাড়ির সবার সঙ্গে কথা বলেছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে খবর পাই, ওদের ক্যাম্পে হামলা হয়েছে। হামলায় শান্ত মারা গেছে। হামলার সময় সে অস্ত্র পরিষ্কার করতে ছিল। তার এমন মৃত্যুতে আমরা দিশেহারা। আমরা এখন তার লাশের অপেক্ষায় আছি। বাড়িতে বাবার কবরের পাশে তাকে কবর দিতে চাই।’
পরিবার থেকে জানানো হয়, স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিতই কথা হতো শান্তর। গতকাল শান্তর মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শোকে বিহ্বল হয়ে গেছেন। কারও সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় এখন তিনি নেই।
শান্তর বাল্যবন্ধু সুমন বলেন, ‘শান্তর মৃত্যুর খবরে এলাকার মানুষ শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। নামের মতোই সে শান্ত ছিল। কোনো দিন কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ বা কটু কথা বলেনি। এমন বন্ধুর মৃত্যুতে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত।’

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
২৩ নভেম্বর ২০২৪
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁর সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা (সেরিব্রাল ইডেমা) আগের তুলনায় বেড়েছে।
৯ মিনিট আগে
নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট—উভয় বিভাগের এজলাস কক্ষে আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থী বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত ব্যক্তির প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
৩৪ মিনিট আগে
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবকেরা বলেন, তাঁদের বাচ্চার জীবনের মূল্য কি ২০ লাখ টাকা? আহতদের ভবিষ্যতের মূল্য কি পাঁচ লাখ টাকা? এ দেশে একটি কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো বাচ্চাদের জীবনের মূল্য নেই। তারা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট—উভয় বিভাগের এজলাস কক্ষে আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থী বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত ব্যক্তির প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্থান এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত। প্রধান বিচারপতি ও উভয় বিভাগের বিচারপতিরা এখানে বিচারকার্য পরিচালনা করেন, তাই সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে, আদালতে আগত কিছু বিচারপ্রার্থী, মামলাসংশ্লিষ্ট ও অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি এজলাসে প্রবেশ করছেন, যা আদালতের নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও বিচারকার্য পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
নিরাপত্তাজনিত কারণে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের আইনজীবী বাদে বিচারপ্রার্থী কিংবা অপ্রত্যাশিত যেকোনো ব্যক্তির এজলাস কক্ষে প্রবেশাধিকার সীমিত অথবা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে যেকোনো সমাবেশ ও মিছিল, বৈধ ও অবৈধ যেকোনো প্রকার অস্ত্র, মারণাস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকদ্রব্য বহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হলো। এই আদেশ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট—উভয় বিভাগের এজলাস কক্ষে আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থী বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত ব্যক্তির প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট দেশের বিচার অঙ্গনের সর্বোচ্চ স্থান এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত। প্রধান বিচারপতি ও উভয় বিভাগের বিচারপতিরা এখানে বিচারকার্য পরিচালনা করেন, তাই সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে, আদালতে আগত কিছু বিচারপ্রার্থী, মামলাসংশ্লিষ্ট ও অপ্রত্যাশিত ব্যক্তি এজলাসে প্রবেশ করছেন, যা আদালতের নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও বিচারকার্য পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
নিরাপত্তাজনিত কারণে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের আইনজীবী বাদে বিচারপ্রার্থী কিংবা অপ্রত্যাশিত যেকোনো ব্যক্তির এজলাস কক্ষে প্রবেশাধিকার সীমিত অথবা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে যেকোনো সমাবেশ ও মিছিল, বৈধ ও অবৈধ যেকোনো প্রকার অস্ত্র, মারণাস্ত্র, বিস্ফোরক ও মাদকদ্রব্য বহন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হলো। এই আদেশ ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
২৩ নভেম্বর ২০২৪
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁর সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা (সেরিব্রাল ইডেমা) আগের তুলনায় বেড়েছে।
৯ মিনিট আগে
সুদান থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে যখন কথা বলতেন, তখন অনাগত সন্তান নিয়ে কত শত স্বপ্ন বুনতেন শান্তিরক্ষী শান্ত মণ্ডল। সন্তান যেন একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ পায়, সে জন্য পরিবারের সবাইকে ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে থাকার কষ্ট হাসিমুখে মেনে...
১৩ মিনিট আগে
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবকেরা বলেন, তাঁদের বাচ্চার জীবনের মূল্য কি ২০ লাখ টাকা? আহতদের ভবিষ্যতের মূল্য কি পাঁচ লাখ টাকা? এ দেশে একটি কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো বাচ্চাদের জীবনের মূল্য নেই। তারা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
১ ঘণ্টা আগেউত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি

দেশে কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো এতগুলো নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু এত দিনেও বিচার পায় না। মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির প্রায় পাঁচ মাস পর নিহত ও আহত শিক্ষার্থীর পরিবারগুলো এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণও প্রত্যাখ্যান করেছে।
আজ রোববার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে ‘বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান’ শীর্ষক মানববন্ধনে অভিভাবকেরা এই ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবকেরা বলেন, তাঁদের বাচ্চার জীবনের মূল্য কি ২০ লাখ টাকা? আহতদের ভবিষ্যতের মূল্য কি পাঁচ লাখ টাকা? এ দেশে একটি কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো বাচ্চাদের জীবনের মূল্য নেই। তাঁরা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
১২ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নিহতদের পরিবারকে ২০ লাখ এবং আহতদের পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেন। এ সময় আহতদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথাও বলা হয়।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান করেছে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীর পরিবারগুলো।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিল বিমান দুর্ঘটনায় আহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম নাবিল রোহান। দুই মাস চিকিৎসা নিয়ে সে এখন মোটামুটি সুস্থ। রোহানের বাবা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘উপদেষ্টা বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমাদের ৩৬টা বাচ্চা মারা গেছে, ৫০-৬০ জন আহত হয়েছে। আমরা চাই বিচার। ৫ লাখ টাকা দিয়ে কী হবে? আমরা চাই, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হোক।’
নিহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিফ ফারহানের মা রাশিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বর্তমান সরকার আমাদের খোঁজখবর নেয়নি। আমরা আমাদের দাবি জানাতে এখানে দাঁড়িয়েছি। ক্ষতিপূরণের ঘোষণা আমাদের কাছে অসম্মানজনক।’
আহত ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ হোসেন নিলয়ের মা আইভি হোসেন নিঝুম জানান, তাঁর সন্তান ২৫ শতাংশ দগ্ধ। আরও তিনটি অপারেশন বাকি। বুক থেকে হাড় নিয়ে কান বানাতে হবে। হাত শক্ত হয়ে যাচ্ছে। নতুন চামড়া লাগাতে হবে। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকারের ৫ লাখ টাকা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেন, হতাহতদের সারা জীবনের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড ও নিহতদের পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণসহ শহীদের মর্যাদা দেওয়া হোক।
মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘জীবনের মূল্য পাঁচ কোটি টাকাও না, ৫০০ কোটিও টাকাও না। জীবন, জীবনই। জীবনের মূল্য ২০ লাখ টাকা হয়, এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা এবং সরকারের আগের ঘোষণার সমন্বয় করে সরকার একটি নতুন ঘোষণা দেবে।

দেশে কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো এতগুলো নিষ্পাপ শিশুর মৃত্যু এত দিনেও বিচার পায় না। মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির প্রায় পাঁচ মাস পর নিহত ও আহত শিক্ষার্থীর পরিবারগুলো এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণও প্রত্যাখ্যান করেছে।
আজ রোববার দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে গোলচত্বরে ‘বিমান দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের পক্ষ থেকে সরকার কর্তৃক ঘোষিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান’ শীর্ষক মানববন্ধনে অভিভাবকেরা এই ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অভিভাবকেরা বলেন, তাঁদের বাচ্চার জীবনের মূল্য কি ২০ লাখ টাকা? আহতদের ভবিষ্যতের মূল্য কি পাঁচ লাখ টাকা? এ দেশে একটি কুকুরের বাচ্চা হত্যার বিচার হয়, অথচ ফুলের মতো বাচ্চাদের জীবনের মূল্য নেই। তাঁরা অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেওয়া হয়নি।
১২ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নিহতদের পরিবারকে ২০ লাখ এবং আহতদের পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেন। এ সময় আহতদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার কথাও বলা হয়।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান করেছে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীর পরিবারগুলো।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিল বিমান দুর্ঘটনায় আহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম নাবিল রোহান। দুই মাস চিকিৎসা নিয়ে সে এখন মোটামুটি সুস্থ। রোহানের বাবা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘উপদেষ্টা বা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমাদের ৩৬টা বাচ্চা মারা গেছে, ৫০-৬০ জন আহত হয়েছে। আমরা চাই বিচার। ৫ লাখ টাকা দিয়ে কী হবে? আমরা চাই, ন্যায়বিচার নিশ্চিত হোক।’
নিহত সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিফ ফারহানের মা রাশিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বর্তমান সরকার আমাদের খোঁজখবর নেয়নি। আমরা আমাদের দাবি জানাতে এখানে দাঁড়িয়েছি। ক্ষতিপূরণের ঘোষণা আমাদের কাছে অসম্মানজনক।’
আহত ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহনাফ হোসেন নিলয়ের মা আইভি হোসেন নিঝুম জানান, তাঁর সন্তান ২৫ শতাংশ দগ্ধ। আরও তিনটি অপারেশন বাকি। বুক থেকে হাড় নিয়ে কান বানাতে হবে। হাত শক্ত হয়ে যাচ্ছে। নতুন চামড়া লাগাতে হবে। তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকারের ৫ লাখ টাকা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেন, হতাহতদের সারা জীবনের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড ও নিহতদের পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণসহ শহীদের মর্যাদা দেওয়া হোক।
মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন ঢাকা-১৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ‘জীবনের মূল্য পাঁচ কোটি টাকাও না, ৫০০ কোটিও টাকাও না। জীবন, জীবনই। জীবনের মূল্য ২০ লাখ টাকা হয়, এটা আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা এবং সরকারের আগের ঘোষণার সমন্বয় করে সরকার একটি নতুন ঘোষণা দেবে।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এলাকার সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া ছিলেন তিনি। সন্ত্রাস, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ ও বদলি-বাণিজ্য, রাজনৈতিক মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
২৩ নভেম্বর ২০২৪
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তাঁর সার্বিক অবস্থা এখনো অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। সর্বশেষ সিটি স্ক্যানে তাঁর মস্তিষ্কের ফোলা (সেরিব্রাল ইডেমা) আগের তুলনায় বেড়েছে।
৯ মিনিট আগে
সুদান থেকে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কলে যখন কথা বলতেন, তখন অনাগত সন্তান নিয়ে কত শত স্বপ্ন বুনতেন শান্তিরক্ষী শান্ত মণ্ডল। সন্তান যেন একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ পায়, সে জন্য পরিবারের সবাইকে ছেড়ে বিদেশ বিভুঁইয়ে থাকার কষ্ট হাসিমুখে মেনে...
১৩ মিনিট আগে
নিরাপত্তার স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট—উভয় বিভাগের এজলাস কক্ষে আইনজীবী ছাড়া বিচারপ্রার্থী বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত ব্যক্তির প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ রোববার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
৩৪ মিনিট আগে