Ajker Patrika

ঈদে ঘরমুখী যাত্রীবাহী গাড়ি আটকে চাঁদাবাজি, থানায় মামলা

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬: ১৮
ঈদে ঘরমুখী যাত্রীবাহী গাড়ি আটকে চাঁদাবাজি, থানায় মামলা

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীবাহী পিকআপ আটকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এ সময় চাঁদাবাজদের ছুরিকাঘাতে দুই যাত্রী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। এ ছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। 

আজ বুধবার মোহনগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে গতকাল সকালে উপজেলার সামাইকোনা এলাকায় কংশ নদের সেতুর ঢালে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে। সেতুটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের ধর্মপাশাকে সংযুক্ত করেছে। 

মামলার আসামি হলেন মোহনগঞ্জ উপজেলার কলুংকা গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে মো. সাইকুল ইসলাম (২২), একই গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া (২১), জানু মিয়ার ছেলে মো. বিজয় মিয়া (২০), আ. ওয়াহাবের ছেলে মো. রফিক মিয়া (২২) ও রঙ্গু মিয়ার ছেলে মো. রাসেল মিয়া (২২)। এ ছাড়া মামলায় আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। 

এদিকে অভিযোগকারী গাড়িচালক তোফায়েল আহম্মেদ পরাণের বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার ভাবনীকোনা গ্রামে। 

মামলার অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে পরাণ তাঁর ব্যক্তিগত পিকআপে করে যাত্রী পরিবহন করছিলেন। গতকাল সকালে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে ধর্মপাশার উদ্দেশে রওনা হন। পথে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের সামাইকোনা সেতুর ওপর পৌঁছালে কয়েকজন যুবক তাঁর গাড়ি থামায়। তাঁরা ১০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। 

চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চালকের আসনে থাকা পরাণকে গাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে মারধর করে তারা। এ সময় যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাঁদের ওপর হামলা চালায় ওই চাঁদাবাজেরা। এতে দুই যাত্রী জখম হন। 

আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার বারঘর নোয়াগাঁও গ্রামের মো. পবিন মিয়া (২৫) এবং সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো. রিয়াজিবুর রহমান (৩৩)। পরে তাঁদের উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। 

পিকআপ আটকে চাঁদা করা হয়। ছবি: সংগৃহীতএদিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশের সহায়তা চাইলে ধর্মপাশা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় গতকাল রাতে পিকআপের চালক পরাণ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। 

পিকআপের চালক পরাণ বলেন, ‘ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে মঙ্গলবার সকালে মোহনগঞ্জের সামাইকোনা সেতুর ওপর উঠতেই ১০-১২ জন যুবক গাড়ি থামায়। তারা আগে থেকেই এই সড়কে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে আসা গাড়ি আটকে চাঁদা তুলছিল। তারা ১০০ টাকা চাঁদা চাইলে আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। কিসের টাকা জানতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন ভাষায় গালাগাল শুরু করে। একপর্যায়ে চালকের আসান থেকে টেনে বের করে আমাকে মারধর করে। এতে যাত্রীরা প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর হামলা চালায় চাঁদাবাজেরা। হামলায় ছুরিকাঘাতে দুই যাত্রীর মাথা কেটে জখম হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।’ 

মোহনগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে। তবে তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চুরি ঠেকাতে রাতে চাতাল পাহারা, ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভুট্টা ও ধানের বস্তা চুরি ঠেকাতে রাতে নিজের চাতালে পাহারা দিতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে এক প্রবীণ ব্যবসায়ীর। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর মাস্টারপাড়ার কাদের চাতালে আজ শুক্রবার ভোরে ওই ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত ব্যবসায়ীর নাম খায়রুল ইসলাম (৭২)। তিনি ওই এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে। তিনি চাতালটি ভাড়া নিয়ে ভুট্টা ও ধানের ব্যবসা করতেন।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি গোডাউন থেকে নিয়মিতভাবে ভুট্টা ও ধানের বস্তা চুরি হচ্ছিল। এতে অতিষ্ঠ হয়ে খাইরুল ইসলাম নিজেই চোর ধরার জন্য রাত্রিকালীন পাহারাদারের কাজ শুরু করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তিনি চাতালে আসেন।

আজ ভোর ৩টা নাগাদ কাদের চাতালের দায়িত্বে থাকা নাইট গার্ড চাতালে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অন্যান্য নাইট গার্ডকে খবর দেন। খবর পেয়ে খাইরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে আসেন এবং তাঁকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

মৃত ব্যবসায়ীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানান, খাইরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তাঁদের ধারণা, চাতালে অবস্থান করার সময় তিনি স্ট্রোক অথবা সুগার (ডায়াবেটিস) কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

রহিমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান হান্নু জানান, খাইরুল ইসলাম সাবেক সুগার মিলে কর্মরত ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি অবসর নেন। অবসরের পর তিনি সিজনভিত্তিক ধান, গম ও ভুট্টার ব্যবসা করতেন। চেয়ারম্যান নিশ্চিত করেন, তিনি ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার উপপরিদর্শক এমদাদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছি। সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের শরীরে কোনো রকম আঘাত বা অস্বাভাবিক কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিদ্যুতায়িত হয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সেচযন্ত্র চালু করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের পশ্চিম বাছহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মৃত ব্যক্তিরা হলো মো. শহিদুল ইসলাম (৪০) ও তাঁর ছেলে মো. শিয়াব মিয়া (১৪)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সর্বানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জহুরুল ইসলাম। মৃত ব্যক্তিদের স্বজনদের বরাতে তিনি বলেন, ধানখেতে পানি দেওয়ার জন্য সকাল ১০টার দিকে বিদ্যুৎ-চালিত সেচযন্ত্র নিয়ে পুকুরপাড়ে যায় বাবা ও ছেলে। ঘণ্টাখানেক পরে শিয়াবের মা ওই পুকুরপাড়ে যান। তিনি সেখানে ছেলের লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। পরে স্থানীয় লোকজন এসে শিয়াবের লাশ বাড়িতে নেন। এর কিছুক্ষণ পরে শহিদুল ইসলামের খোঁজে পুকুরপাড়ে আবারও যান তাঁর স্বজনেরা। তখন তাঁর লাশও পুকুরে পাওয়া যায়।

সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘বিদ্যুৎচালিত সেচপাম্পে বিদ্যুতায়িত বাবা ও ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাসর রাত শেষে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩০
পিসনাইল গ্রামে যুবকের মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
পিসনাইল গ্রামে যুবকের মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসীর ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় জামাল ফকির (২৮) নামের নববিবাহিত এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিয়ে করে বউ নিয়ে আসেন জামাল ফকির। বাসর রাত শেষে আজ সকালে বসতবাড়ির আধা কিলোমিটার দূরে ফাঁকা মাঠে জামালের লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।

ওই নববধূ বলেন, ‘সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে চাই, দেখি দরজাটা বাইরে থেকে লাগানো। পরে কেউ দরজা খুলে দিলে দেখি, আমার স্বামী ঘরের বাইরে জমির মধ্যে পড়ে আছে।’

মৃত জামালের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, ‘আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।’

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ওই ছেলে বিয়ে করেন। আজ সকালে বাড়ির পাশে একটি বাঁশের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় পরিবার। ধারণা করা হচ্ছে, যুবক আত্মহত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চমেক হাসপাতালে এসি বিস্ফোরণ: দগ্ধ ৩ কর্মচারীর একে একে সবাই চলে গেলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ভবনে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) মেরামতের সময় বিস্ফোরণে দগ্ধ কর্মচারী মো. তানভীরও মারা গেছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে চমেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান।

তানভীর দুর্ঘটনার পর থেকে ১১ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ নিয়ে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত তিন কর্মচারীর সবাই একে একে মারা গেলেন।

তানভীর চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থানার ডিসি রোড এলাকায় থাকতেন। চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ১৩ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে চমেক হাসপাতালের একটি সাততলা ভবনের ছাদে এসি মেরামতের সময় সেটি বিস্ফোরিত হয়। এ সময় শওকত ওসমান নামের একজন কর্মচারী ছাদ থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যান। অপর দুজনের মধ্যে মিশকাত ও তানভীর ছাদে দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে পড়ে ছিলেন। পরে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তির চার ঘণ্টা পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথমে শওকত মারা যান। পরে ১৭ অক্টোবর মিশকাত ও আজ দুপুরে তানভীরও চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। তাঁরা গণপূর্ত বিভাগের অধীনে হাসপাতালের টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মচারীদের সবাই চট্টগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁদের বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত