Ajker Patrika

ধনু নদে স্পিডবোটডুবি: আরও দুজনের লাশ উদ্ধার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলায় ধনু নদে বিয়েবাড়ির স্পিডবোটডুবির ঘটনায় আরও দুজনের লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। আজ রোববার ধনু নদের চরপাড়া এলাকায় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ভাসমান অবস্থায় লায়লা আক্তার (৭) ও শিরিন আক্তারের (১৮) লাশ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গত শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে ঊষামণি (৫) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।

স্পিডবোটডুবির ঘটনায় নিখোঁজ চারজনের মধ্যে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি একজনের সন্ধান এখনো মেলেনি। গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের পাঁচহাট চরপাড়া এলাকায় ধনু নদে স্পিডবোটডুবির ঘটনা ঘটে।

এদিকে স্পিডবোটডুবিতে বেঁচে ফেরা লোকজন অভিযোগ করেছেন, ধাক্কা লাগায় অন্য নৌকার লোকজন চালকের সঙ্গে ঝগড়া করে তাঁদের স্পিডবোটটি ডুবিয়ে দেয়। এতে উপজেলার আন্ধাইর গ্রামের মোফায়েল মিয়ার মেয়ে ঊষামণি (৫), একই গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে মোছা. লাইলা আক্তার (৭), সামছু মিয়ার মেয়ে সামিয়া (১১) ও নবাব মিয়ার মেয়ে মোছা শিরিন (১৮) পানিতে তলিয়ে যান।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা এবং উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার আন্ধাইর গ্রামের নবাব মিয়ার ছেলে রানা মিয়ার বিয়ে উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা থেকে একটি স্পিডবোট ভাড়া করে আনা হয়। স্পিডবোটে চড়ে বরসহ বরযাত্রীদের ইটনা উপজেলার মৃগা গ্রামে কনের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। বরযাত্রী রওনা হওয়ার আগমুহূর্তে বিয়েবাড়ির ১২ জন স্পিডবোটটি নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য হাওরে ঘুরতে যান। এ সময় ধনু নদে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাল্কহেডকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় কাছে থাকা জেলেদের নৌকার সঙ্গে স্পিডবোটটির ধাক্কা লাগে। তখন নৌকার জেলেরা দ্রুত স্পিডবোটে উঠে এসে চালকের সঙ্গে ঝগড়া বাধায়। হুড়োহুড়ির একপর্যায়ে স্পিডবোটটি উল্টে যায়। এতে ওই চারজন নিখোঁজ এবং তিনজন আহত হন। বাকিরা সাঁতার কেটে রক্ষা পান।

ওই স্পিডবোটডুবিতে বেঁচে ফেরা আন্ধাইর গ্রামের ইয়াসমিন ও ময়না আক্তার বলেন, ‘আমাদের স্পিডবোটটি একটি নৌকার সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন ওই নৌকায় থাকা লোকজন তর্কাতর্কির পর স্পিডবোটে উঠে চালককে মারধর করে। একপর্যায়ে স্পিডবোটটি ডুবিয়ে দেয়। তখন সবাই সাঁতরে তীরে উঠলেও চারজন নদে ডুবে নিখোঁজ হয়।’ তাঁরা ওই নৌকার লোকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

খালিয়াজুরির ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এ কাদের বলেন, আজ সকাল পর্যন্ত তিনজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বাকি একজনের সন্ধান এখনো মেলেনি। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও স্থানীয় লোকজন নিখোঁজের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে। এদিকে উদ্ধার হওয়া তিনজনের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘স্পিডবোট ডুবিয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ করেছেন বেঁচে ফেরা লোকজন, সে বিষয়ে তদন্ত হবে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত