Ajker Patrika

চলনবিলে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ, উৎসবের আমেজ

নাটোর প্রতিনিধি 
গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশায় নৌকা বাইচ। এসময় বিলে ছোট ছোট নৌকায় চড়ে দর্শনার্থীরা প্রতিযোগিতা দেখতে জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশায় নৌকা বাইচ। এসময় বিলে ছোট ছোট নৌকায় চড়ে দর্শনার্থীরা প্রতিযোগিতা দেখতে জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যের অন্যতম হচ্ছে নৌকাবাইচ। জীবনযাপনে আধুনিকতার সংস্পর্শে হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালির ঐতিহ্যের এই উৎসবটি। ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চলনবিল-অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল মনোমুগ্ধকর নৌকাবাইচ।

আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টায় নাটোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে চলনবিলের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশায় নৌকাবাইচ উৎসব শুরু হয়।

এদিন বিকেলে প্রতিযোগিতা শুরু হলেও নৌকাবাইচ দেখতে সকাল থেকেই জেলার দূরদূরান্ত থেকে আসতে থাকেন দর্শনার্থীরা। দুপুরে কানায় কানায় ভরে ওঠে গুরুদাসপুরের বিলশামুখী রাস্তাঘাট। সোনারতরি, উড়ন্ত বলাকা, আল-মদিনা, বাংলার বাঘের মতো বাহারি নামের নৌকা নিয়ে মাঝিরা দুরন্ত গতিতে বইঠা বেয়ে একে অপরকে অতিক্রমের লড়াই করেন। নৌকাগুলোর এই এগিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা দর্শক মনে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি করে।

আজ অনেকেই প্রিয়জন ও বন্ধুদের সঙ্গে নৌকাবাইচ উপভোগ করতে হাজির হন চলনবিলের বিলশাঘাটে। অনেকে পরিবার নিয়ে নৌকায় চড়ে উপভোগ করেন এ উৎসব। নৌকাবাইচ দেখতে বিলপাড়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন তরুণ-তরুণীরা। বৃদ্ধ আর শিশুরাও বাদ যাননি। ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে বিলপাড়ে বসেছে গ্রামীণ মেলা। দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনে শরিক হতে পেরে সবাই খুশি।

গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশায় নৌকাবাইচ। ছবি: আজকের পত্রিকা
গুরুদাসপুর উপজেলার বিলশায় নৌকাবাইচ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনোয়ারা বেগম নামের এক নারী জানান, নৌকাবাইচ উপলক্ষে স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে বাবারবাড়ি যোগেন্দ্রনগরে এসেছেন। তাঁর মতো এসেছেন বোন শেফালীও। এই নৌকাবাইচ উপলক্ষে তাঁদের বাসায় ভালো খাবার রান্না হয়েছে।

সিরাজুল ইসলাম নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আগে নৌকাবাইচ মানেই ছিল বিলশার বিলে নৌকার প্রতিযোগিতা। এখান থেকেই অন্য শাখানদী ও উপনদীগুলোতে নৌকাবাইচ শুরু হয়। প্রতিবছর এই নৌকাবাইচে আসা নৌকা ও দর্শকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

নৌকাবাইচের পৃষ্ঠপোষক নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, নির্মল বিনোদনের মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।

নৌকাবাইচে অংশ নেওয়া একটি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা
নৌকাবাইচে অংশ নেওয়া একটি দল। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন নিউ কৈবর্ত গতি একতা এক্সপ্রেসকে প্রথম পুরস্কার মোটরসাইকেল দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয় বাংলার বাঘ ও আল মদিনা এক্সপ্রেস। এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় ছোট-বড় ২১টি নৌকা অংশগ্রহণ করে। নৌকাবাইচ দেখতে প্রায় ৫০০ ছোট-বড় নৌকা বিলের বিভিন্ন প্রান্তে দর্শনার্থী নিয়ে অবস্থান করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত