Ajker Patrika

নকলনবিশে নাকাল ক্রেতা-বিক্রেতা

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
নকলনবিশে নাকাল ক্রেতা-বিক্রেতা

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার মায়ামারি গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান সাজু। তিনি পাঁচটি দলিলের নকল তুলতে এসেছিলেন নিয়ামতপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে। দলিল নকলের জন্য তিনি শরণাপন্ন হন সেখানকার নকলনবিশ রাশেদুল হকের (রাসেল)। শাহজাহানের পাঁচটি দলিলের নকলের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন রাশেদুল। সরকার নির্ধারিত ফিয়ের বাইরে অতিরিক্ত টাকা দিতে না পারায় আর নকল তোলা হয়নি তাঁর। বাড়ি ফিরে গেছেন বিমুখ হয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়ামতপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে এমন ঘটনার শিকার শুধু সাজু নন, আরও অনেকেই। এ নিয়ে সম্প্রতি সাবরেজিস্ট্রার বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, বতর্মানে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশদের সিন্ডিকেটের কালো থাবায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা। সরকার নির্ধারিত ফি অমান্য করে নিজেদের খেয়ালখুশিমতো ফি নির্ধারণ করে তা আদায় করছেন নকলনবিশরা। দাবি অনুযায়ী টাকা না দিতে পারলে মিলছে না দলিলের নকল। এতে চরম বিড়ম্বনা ও ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে জমির ক্রেতা-বিক্রেতাদের।

অভিযোগ রয়েছে, দলিলের নকলপ্রতি নেওয়া হচ্ছে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। সাবরেজিস্ট্রারের নির্দেশে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে এ বিষয়ে সাবরেজিস্ট্রারের দাবি, তাঁর নির্দেশে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে—অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

নিয়ামতপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি বিধি মতে, দলিলের নকল নিতে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্ট্যাম্প শুল্ক, জি (এ), জি জি-র মাধ্যমে ৩০০ শব্দের ৩৬ টাকা হিসেবে দলিল ভেদে টাকা নেওয়ার কথা। কিন্তু এখানকার চিত্র ভিন্ন। নেওয়া হচ্ছে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত।

ভুক্তভোগী শাহজাহান সাজু জানান, তিনি পাঁচটি দলিলের নকলের জন্য আবেদন করেন নকলনবিশ রাশেদুল হকের (রাসেল) কাছে। এতে তিনি ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। কেন এত টাকা লাগবে জানতে চাইলে তিনি সেবাগ্রহীতাকে বলেন, ‘এর থেকে কম টাকা নেওয়া সম্ভব না। সাবরেজিস্ট্রার স্যারের নির্দেশ রয়েছে।’ নকলপ্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ঘটনায় সাবরেজিস্ট্রার বরাবর একটি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শাহজাহান সাজু।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নকলনবিশ বলেন, সাবরেজিস্ট্রারের নির্দেশে বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। এতে তাঁরাও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। বাড়তি অর্থ সাবরেজিস্ট্রারের পকেটে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন তাঁরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নকলনবিশ রাশেদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এভাবেই তো বরাবরই টাকা নেওয়া হয়। সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা টাকা নিই।’

সাবরেজিস্ট্রার শাকিল আহম্মেদ বলেন, ‘আমি নতুন মানুষ। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ অতিরিক্ত টাকা আদায় করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমার নির্দেশে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’ তিনি বলেন, ‘নকলপ্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জুলাই সনদে স্বাক্ষর নিয়ে শেষ মুহূর্তে এসে অনিশ্চয়তা, সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠক

ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ক্রিপ্টো কেলেঙ্কারি, ১৪ বিলিয়ন ডলারের কয়েন জব্দ

আসামি গ্রেপ্তারে র‍্যাবকে ভুল তথ্য, বগুড়া ডিবির ওসিসহ ৩ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ফ্রিজে রাখেন নজরুল: পুলিশ

৬ মাসের সংসার, ৭ দিনের চাকরি—মর্গে নিথর স্বামী-স্ত্রীর লাশ

এলাকার খবর
Loading...