Ajker Patrika

বহিরাগতের হামলার প্রতিবাদে বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাকৃবিতে শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে ‘রেড মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে চোখে লাল কাপড় বেঁধে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মৌন মিছিল করেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা পূর্বঘোষিত ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান। বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় ছয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করে প্রশাসন।

ভেটেরিনারি অনুষদ এবং পশুপালন অনুষদের ডিগ্রিকে একীভূত করে একটি কম্বাইন্ড ডিগ্রি দেওয়ার দাবিতে ২৫১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে গত রোববার দিনভর অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে বহিরাগতরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তালা ভেঙে শিক্ষকদের বের হতে সহযোগিতা করেন।

এরপর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই দিন রাতে অনির্দিষ্টকালের জন‍্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত‍্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হয়।

তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হল ত্যাগ না করে বহিরাগতদের হামলার বিচার, একক কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালু, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার দাবিতে আন্দোলনে নামেন। করা হয় রেলপথ অবরোধ, প্রশাসনিক ভবন, ব্যাংক এবং কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে দেওয়া হয় তালা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মঙ্গলবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার এবং এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আশ্বাসে বুধবার সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শহীদুল হক জানান, দাবির বিষয়ে শিক্ষার্থীরা লিখিত না দেওয়ায় সিন্ডিকেট সভা হয়নি। যার কারণে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ নির্দেশনা বহাল রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের হামলা, হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহার, কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুসহ ছয় দফা দাবিতে মৌন মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

পশুপালন অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘যৌক্তিক দাবি আদায় করতে গিয়ে বহিরাগতের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছি। যার জন্য স্যাররা দায়ী। যার ফলে এর বিচার হবে কি না শঙ্কিত। তাই চোখে লাল কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করছি। হামলার বিচারসহ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

আরেক শিক্ষার্থী ফারিসা হক নিঝুম বলেন, ‘আইন অন্ধ তাই চোখে কাপড় বেঁধে আন্দোলন করছি। হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

চলমান আন্দোলন ও সংকট সমাধান নিয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে মিডিয়ায় আমি আর আসতে চাই না।’

সহকারী দুজন প্রক্টর রয়েছেন তাঁরাই কথা বলবেন। সহকারী প্রক্টর সোনিয়া সোহেলী বলেন, ‘আজকে ছাত্ররা মিছিল-মিটিং করছে শুনেছি; মিছিল-মিটিং করা ঠিক হয়নি। গতকাল সিন্ডিকেট সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ছাত্রদের অসহযোগিতার কারণে সেটি হয়নি। আমরা সমাধানের পথে হাঁটছি। এখন ছাত্ররা আমাদের সঙ্গে বসতে চাচ্ছে। হয়তো আগামীকাল শুক্রবার বসার সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের দাবিদাওয়ার বিষয়গুলো লিখিত আকারে নিয়ে সিন্ডিকেট আহ্বান করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত