Ajker Patrika

খুতবায় সরকারবিরোধী কথা বলার অভিযোগে ইমামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি
খুতবায় সরকারবিরোধী কথা বলার অভিযোগে ইমামের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

জুমার খুতবায় সরকারবিরোধী আলোচনা করার অভিযোগে ইমামের চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেংগুয়া বাজার জামে মসজিদের ইমাম লাল মিয়া মুন্সী এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন। গত শুক্রবার মহাদান ইউনিয়নের সেংগুয়া বাজার জামে মসজিদে জুমা নামাজ শেষে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। মঙ্গলবারও সেগুলো বন্ধ দেখা গেছে। 

জানা যায়, উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের সেংগুয়া বাজার জামে মসজিদের নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম চাঁন মুন্সী ও খাদেম দুলাল শেখ। গত শুক্রবার জুমার নামাজে মুসল্লিরা মসজিদে আসেন। এ সময় আরেক মসজিদের ইমাম লাল মিয়া মুন্সী বাংলায় বয়ান শুরু করেন। বয়ানে তিনি বলেন, নামাজ পড়তে হলে নামাজের মতো নামাজ পড়তে হয়। নামাজের স্থানে ছবি থাকলে নামাজ হয় না। তাই স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, অফিস, আদালতে কোনো ছবি রাখা যাবে না। ছবি রাখা বেদাত। 

খুতবা চলাকালীন মসজিদের নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম চাঁন মুন্সী উপস্থিত ছিলেন। মুসল্লিদের মধ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও ছিলেন। নামাজ শেষে ইমাম লাল মুন্সীর খুতবাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। হঠাৎ করে একজন ইমাম এসে স্কুল, কলেজ, অফিস-আদালতে ছবি রাখা নিয়ে কেন আপত্তি জানাচ্ছেন এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়। যেখানে সংবিধান অনুযায়ী অফিস-আদালতে বঙ্গবন্ধুর ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি রাখা বাধ্যতামূলক। বঙ্গবন্ধুর ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরানোর জন্যই কৌশলে এমন খুতবা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নেতাকর্মীরা। তাঁরা বলেন, এমন বক্তব্য সরাসরি সরকারবিরোধী। 

এ অভিযোগ তুলে মহাদান ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ আলী ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মহনসহ স্থানীয় নেতারা ওই ইমামের চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন। 

এ ব্যাপারে ইমাম লাল মুন্সী বলেন, ওই মসজিদের ইমাম চাঁন মুন্সী তাঁর বড় ভাই। সেংগুয়া বাজারে তাঁর চারটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। তিনটা দোকান ভাড়া ও একটি তাঁর নিজের ফার্মেসি। তিনি খুতবা দেওয়ার সময় নামাজের স্থানে ছবি রাখা যাবে না, ছবি থাকলে নামাজ হবে না-এমন বক্তব্য দিয়েছেন। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতা জাবেদ আলী, আমিনুল ইসলাম মহনের নেতৃত্বে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ আলী ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মহন বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে মসজিদে এসে খুতবা দেওয়ার নামে দেশ ও সরকার বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছেন ওই ইমাম। অফিস আদালতে বঙ্গবন্ধুর ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি থাকে। অফিস-আদালত থেকে তাঁদের ছবি সরানোর ঈঙ্গিত দিচ্ছেন ওই ইমাম। তাঁর বক্তব্য দেশবিরোধী। এ কারণে তাঁর ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। লাল মুন্সীর পরিবারের লোকজন জামাত-বিএনপির সর্মথক বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা। 

নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম চাঁন মুন্সী জানান, লাল মুন্সী তাঁর ছোট ভাই। লাল মুন্সী অন্য একটি মসজিদে ইমামতি করেন। গত শুক্রবার এ মসজিদে নামাজ পড়তে এলে খুতবা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। খুতবায় তিনি ছবি নিয়ে বক্তব্য দেন বলে স্বীকার করেন চাঁন মিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত