ইলিয়াস আহমেদ, ময়মনসিংহ
ক্লাসে চারটি বেঞ্চে বসা মাত্র দুজন ছাত্রী। একজন শিক্ষক পড়াচ্ছেন তাদের। ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহ মহানগরীর গোলপুকুরপাড় এলাকার রাধা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির চিত্র এটি। গত বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে এমনটি দেখা যায়।
অন্য ক্লাসগুলোরও একই অবস্থা। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসে মোট পাওয়া যায় তিনজন ছাত্রী। ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাসে সর্বোচ্চ ছিল ৯ জন।
শিক্ষকেরা বলছেন, বাল্যবিবাহ, ভর্তির নীতিমালা না থাকা, প্রতিষ্ঠান জরাজীর্ণ হওয়ায় দিন দিন কমছে ছাত্রী। তবে বিদ্যালয়ের হারানো জৌলুশ ফিরিয়ে আনতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহের চেষ্টা করছেন বলে দাবি তাঁদের।
রাধা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মতো একই অবস্থা ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সিটি কলেজিয়েট স্কুল, ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত মৃত্যুঞ্জয় স্কুল, ১৯০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন, নাসিরাবাদ কলেজিয়েট স্কুলসহ ৮-১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
রাধা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আয়শা আক্তার আফরিন ও সাদিয়া জানায়, প্রতিদিন পাঁচ-ছয়জন ক্লাস করে। তবে বৃহস্পতিবার হওয়ায় অন্যরা আসেনি। এখনো পুরোপুরি বই না পাওয়ায় পড়াশোনায় মনোযোগ একটু কম। আর ক্লাসে ছাত্রী না থাকলে পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষা—কোনোটাই ঠিকমতো হয় না।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক খন্দকার ওয়াহিদ আদনান বলেন, বিদ্যালয়টির সুনাম ছিল একসময়। নানা কারণে ছাত্রী কমেছে, আজও কোনো কোনো ক্লাসে ছাত্রী নেই। এতে ব্যাহত হয় ক্লাস-পরীক্ষা। তবে ছাত্রী সংগ্রহের চেষ্টা করছেন তাঁরা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া নাসরিন জানান, এ বছর এখন পর্যন্ত নতুন ৩৫ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতেই ২৬ জন। তবে গত বছর ষষ্ঠ শ্রেণির ৫২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২ জন ঝরে গিয়ে সপ্তম শ্রেণিতে উঠেছে ৪০ জন, অষ্টমের ছয়জন কমে এখন নবম শ্রেণিতে আছে ৩০ জন এবং দশম শ্রেণিতে আছে ৩০ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আছে ৪৯ জন শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠানটিতে সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী ১৬৮ জন।
সুরাইয়া নাসরিন আরও বলেন, ‘ভুঁইফোড় ও অনুমোদনহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারণে আমাদের ছাত্রীসংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া আমাদের বিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করে, তারা গরিব হওয়ায় বাল্যবিবাহের দিকে ঝুঁকছে, এতে করে ক্লাস ফাঁকা হচ্ছে। অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে ছাত্রী বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
ময়মনসিংহ শহরের একসময়ের নামকরা বিদ্যাপীঠ মৃত্যুঞ্জয় স্কুল। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মতো বহু গুণী ব্যক্তিত্ব। আশির দশকে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৪৬২ জনে।
মৃত্যুঞ্জয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক রুকন উদ্দিন বলেন, ‘একসময় মৃত্যুঞ্জয় স্কুলের অনেক নাম-ডাক ছিল। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিকে এই অবস্থায় দেখে নিজেরও খারাপ লাগে। দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে শিক্ষার্থী বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে শিক্ষার্থী আনছি। এর ফলে শিক্ষার্থী কিছুটা বেড়েছে। তবে
সরকার যদি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির নীতিমালা করত, তাহলে আমাদের সংকট থাকত না।’
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী বলেন, শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী কমার অন্যতম কারণ হচ্ছে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারা। অনভিজ্ঞ শিক্ষকসহ তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়া। এ থেকে উত্তরণ পেতে হলে মানসম্মত পাঠদানের পাশাপাশি অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
সম্প্রতি ময়মনসিংহে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, ‘কোভিড, পরীক্ষাপদ্ধতি পরিবর্তন হওয়া, বছর শেষে যে পরীক্ষা হতো সেটি না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী কমছে। এ থেকে উত্তরণে কাজ করছে সরকার। পরীক্ষাপদ্ধতি আবার পরিবর্তন করা হয়েছে, তবে ঠিক আগের মতো হচ্ছে না। প্রথমত, ক্লাসে মূল্যায়ন, এ ছাড়া চার মাস পরপর মূল্যায়ন হবে। এতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসমুখী হবে।’
ক্লাসে চারটি বেঞ্চে বসা মাত্র দুজন ছাত্রী। একজন শিক্ষক পড়াচ্ছেন তাদের। ১৯২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ময়মনসিংহ মহানগরীর গোলপুকুরপাড় এলাকার রাধা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির চিত্র এটি। গত বৃহস্পতিবার সকালে গিয়ে এমনটি দেখা যায়।
অন্য ক্লাসগুলোরও একই অবস্থা। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসে মোট পাওয়া যায় তিনজন ছাত্রী। ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাসে সর্বোচ্চ ছিল ৯ জন।
শিক্ষকেরা বলছেন, বাল্যবিবাহ, ভর্তির নীতিমালা না থাকা, প্রতিষ্ঠান জরাজীর্ণ হওয়ায় দিন দিন কমছে ছাত্রী। তবে বিদ্যালয়ের হারানো জৌলুশ ফিরিয়ে আনতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহের চেষ্টা করছেন বলে দাবি তাঁদের।
রাধা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মতো একই অবস্থা ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সিটি কলেজিয়েট স্কুল, ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠিত মৃত্যুঞ্জয় স্কুল, ১৯০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এডওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন, নাসিরাবাদ কলেজিয়েট স্কুলসহ ৮-১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
রাধা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী আয়শা আক্তার আফরিন ও সাদিয়া জানায়, প্রতিদিন পাঁচ-ছয়জন ক্লাস করে। তবে বৃহস্পতিবার হওয়ায় অন্যরা আসেনি। এখনো পুরোপুরি বই না পাওয়ায় পড়াশোনায় মনোযোগ একটু কম। আর ক্লাসে ছাত্রী না থাকলে পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষা—কোনোটাই ঠিকমতো হয় না।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক খন্দকার ওয়াহিদ আদনান বলেন, বিদ্যালয়টির সুনাম ছিল একসময়। নানা কারণে ছাত্রী কমেছে, আজও কোনো কোনো ক্লাসে ছাত্রী নেই। এতে ব্যাহত হয় ক্লাস-পরীক্ষা। তবে ছাত্রী সংগ্রহের চেষ্টা করছেন তাঁরা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুরাইয়া নাসরিন জানান, এ বছর এখন পর্যন্ত নতুন ৩৫ জন ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিতেই ২৬ জন। তবে গত বছর ষষ্ঠ শ্রেণির ৫২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২ জন ঝরে গিয়ে সপ্তম শ্রেণিতে উঠেছে ৪০ জন, অষ্টমের ছয়জন কমে এখন নবম শ্রেণিতে আছে ৩০ জন এবং দশম শ্রেণিতে আছে ৩০ শিক্ষার্থী। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আছে ৪৯ জন শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠানটিতে সব মিলিয়ে শিক্ষার্থী ১৬৮ জন।
সুরাইয়া নাসরিন আরও বলেন, ‘ভুঁইফোড় ও অনুমোদনহীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারণে আমাদের ছাত্রীসংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া আমাদের বিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করে, তারা গরিব হওয়ায় বাল্যবিবাহের দিকে ঝুঁকছে, এতে করে ক্লাস ফাঁকা হচ্ছে। অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে ছাত্রী বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
ময়মনসিংহ শহরের একসময়ের নামকরা বিদ্যাপীঠ মৃত্যুঞ্জয় স্কুল। এই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছিলেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের মতো বহু গুণী ব্যক্তিত্ব। আশির দশকে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৪৬২ জনে।
মৃত্যুঞ্জয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক রুকন উদ্দিন বলেন, ‘একসময় মৃত্যুঞ্জয় স্কুলের অনেক নাম-ডাক ছিল। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিকে এই অবস্থায় দেখে নিজেরও খারাপ লাগে। দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে শিক্ষার্থী বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে শিক্ষার্থী আনছি। এর ফলে শিক্ষার্থী কিছুটা বেড়েছে। তবে
সরকার যদি প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির নীতিমালা করত, তাহলে আমাদের সংকট থাকত না।’
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী বলেন, শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থী কমার অন্যতম কারণ হচ্ছে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারা। অনভিজ্ঞ শিক্ষকসহ তথ্যপ্রযুক্তির যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়া। এ থেকে উত্তরণ পেতে হলে মানসম্মত পাঠদানের পাশাপাশি অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।
সম্প্রতি ময়মনসিংহে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, ‘কোভিড, পরীক্ষাপদ্ধতি পরিবর্তন হওয়া, বছর শেষে যে পরীক্ষা হতো সেটি না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী কমছে। এ থেকে উত্তরণে কাজ করছে সরকার। পরীক্ষাপদ্ধতি আবার পরিবর্তন করা হয়েছে, তবে ঠিক আগের মতো হচ্ছে না। প্রথমত, ক্লাসে মূল্যায়ন, এ ছাড়া চার মাস পরপর মূল্যায়ন হবে। এতে শিক্ষার্থীরা ক্লাসমুখী হবে।’
তামিম রাতে ইটেরপুল এলাকায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনটি মোটরসাইকেলে একদল দুর্বৃত্ত এসে তামিমের উপর হামলা চালায়। এ সময় তামিমকে দেশিয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
১১ মিনিট আগেবগুড়া ডিবি পুলিশের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক ইকবাল বাহার এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ’মতিন সরকারের বিরুদ্ধে ডজনখানেক হত্যা মামলা ছাড়াও অস্ত্র, মাদক আইনেও একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। জেলা ডিবির একটি টিম গোপন সংবাদে
২৫ মিনিট আগেবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বোরহানউদ্দিন উপজেলা শাখার সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দেউলা ইউনিয়ন শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো: রাকিব ব্যাপারি ও একই উপজেলার টবগী ইউনিয়ন শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: তুহিন ফরাজীকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সাংগঠন
২৭ মিনিট আগেশনিবার (২১ জুন) রাত পৌনে ১০টার দিকে জহুরপুর বেলপাড়া সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ওই বিজিবি সদস্যকে হস্তান্তর করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু।
৪৩ মিনিট আগে