Ajker Patrika

বিভাগীয় কমিশনারের সামনেই হট্টগোল, ওএমএসের ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ নগরের তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে আজ বুধবার দুপুরে ওএমএসের ডিলার নিয়োগের লটারি কার্যক্রমের আয়োজন করে খাদ্য বিভাগ। সেখানে বিভাগীয় কমিশনারের সামনে আবেদনকারীরা হট্টগোল করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ময়মনসিংহ নগরের তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে আজ বুধবার দুপুরে ওএমএসের ডিলার নিয়োগের লটারি কার্যক্রমের আয়োজন করে খাদ্য বিভাগ। সেখানে বিভাগীয় কমিশনারের সামনে আবেদনকারীরা হট্টগোল করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে হট্টগোলের কারণে ময়মনসিংহ মহানগরীতে ওএমএসের ডিলার নিয়োগের লটারি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। সরকারের ভর্তুকিমূল্যে খোলাবাজারে বিক্রির খাদ্যপণ্যের পরিবেশক হওয়ার জন্য বিএনপি-সমর্থিত আবেদনকারীরা এই হট্টগোল করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ বুধবার বেলা ১টার দিকে আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক কার্যালয় নগরের তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে ওএমএসের ডিলার নিয়োগের লটারি কার্যক্রমের আয়োজন করে। এতে অংশগ্রহণকারীরা দুপুর ১২টা থেকেই টাউন হলে জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১টার দিকে মঞ্চে বিভাগীয় কমিশনার, আঞ্চলিক খাদ্যনিয়ন্ত্রক, জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রকসহ অন্য সরকারি কর্মকর্তারা এলে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিয়ে হট্টগোল শুরু করেন বিএনপি-সমর্থিত আবেদনকারীরা।

সরকারি কর্মকর্তারা লটারির নামে কৌশলে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন—এমন অভিযোগ তুলে তাঁরা বেলা ২টা পর্যন্ত মিলনায়তনের ভেতর ও বাইরে হট্টগোল করেন। এ সময় বিভাগীয় কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তারা হট্টগোলকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাতে তাঁরা শান্ত না হওয়ায় লটারি কার্যক্রম স্থগিত করেন।

ওএমএসের ডিলার হওয়ার জন্য আবেদনকারী মাহমুদা আক্তার মলি নামের বিএনপির এক নেত্রী বলেন, ‘ডিলার নিয়োগে বিগত সময় আমরা কোনো লটারি প্রক্রিয়া দেখিনি। এ বছর কেন লটারির ব্যবস্থা করা হয়েছে, আমরা এর জবাব চাই। লটারির ব্যবস্থা করায় আওয়ামী লীগের দোসর ও তাদের স্বজনেরা একাধিক আবেদন করেছে। এতে তাদেরই পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এমন লটারি চাই না।’

মহানগর বিএনপি নেতা টুটুল ওয়াহিদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের সময় যারা খাদ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতেন, তাঁরাই লটারির আয়োজন করেছেন। এতে বিষয়টি স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগের দোসরেরাই সুযোগ পাবে। এটা প্রশাসনের একটি কৌশল। তাই আমরা হট্টগোল করলে লটারি কার্যক্রম স্থগিত হয়।’

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আব্দুল কাদের বলেন, ‘হট্টগোলের কারণে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পুরোনো ডিলার যাঁরা আছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরা পণ্য বিক্রি করবেন না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

পণ্য বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হবে কি না–এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল কাদের বলেন, ‘দ্রুত বিষয়টি সমাধান করে নতুন ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দেশের অন্যান্য বিভাগে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হয়েছে। সবশেষ আমরা স্বচ্ছভাবে ডিলার নিয়োগের জন্য লটারির আয়োজন করেছি। এর আগে আওয়ামী লীগের কোনো দোসর যেন আবেদন করতে না পারে, সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু যখন লটারি কার্যক্রম শুরু করব, তখন আবেদনকারীরা হট্টগোল শুরু করেন। তাঁদের থামানোর চেষ্টা করলেও থামেননি। তাই কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছি।’

জানা গেছে, ময়মনসিংহ নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ওএমএস ডিলার ছিলেন ৫৩ জন। ৫ আগস্টের পর অনুপস্থিত ১৬ জনের ডিলারের নিয়োগ বাতিল করা হয়। ৩৭ জন ডিলার দিয়ে ওএমএসের কার্যক্রম চলছে।

প্রভা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক শওকত আলী বলেন, ‘৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে সরকারি চাল, আটা বিক্রি করে আসছি। আমি কোনো দলের সঙ্গে জড়িত নই। কিন্তু আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বর্তমান প্রশাসন আমাদের বাদ দিয়ে লটারির মাধ্যমে নতুন ডিলার নিয়োগের পাঁয়তারা করছে। আমাদের কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। এতে সুবিধাভোগীরা ভোগান্তির মধ্যে পড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফকিরহাটে বাসের চাপায় পথচারী শিশু নিহত

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাটে রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী বাসের চাপায় মো. সামিরুল ইসলাম (১১) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। খুলনা-মোংলা মহাসড়কের কাটাখালী এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সামিরুল ইসলাম কুমিল্লার হোমনা এলাকার মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে। সে তার বাবার সঙ্গে কাটাখালীতে একটি ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে কাজ করত। সেই সুবাদে তারা কাটাখালী এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছিল।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, রোববার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সামিরুল ইসলাম বাসা থেকে কাজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। কাটাখালী এলাকায় এসে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী সেতু পরিবহন নামের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উত্তম পাল জানান, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। 

কাটাখালী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাফর আহম্মেদ বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘাতক বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক ও সহযোগী পালিয়ে গেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাগরে বিকল ট্রলার নিয়ে ভাসছিলেন ১৩ জেলে, উদ্ধার করল নৌবাহিনী

কক্সবাজার প্রতিনিধি
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধার করা ১৩ জেলে। ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে বিকল হয়ে ভাসতে থাকা একটি ট্রলারসহ ১৩ জেলেকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। আজ রোববার সকালে নৌবাহিনীর এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শনিবার বিকেলে বঙ্গোপসাগরে টহলের সময় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা শহীদ মহিবুল্লাহ’ একটি মাছ ধরার ট্রলার ভাসতে দেখে উদ্ধারে নামে। কুতুবদিয়া দ্বীপের লাইট হাউস থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে গভীর সমুদ্রে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়। ট্রলারে থাকা জেলেরা নৌবাহিনীর জাহাজ দেখতে পেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আলো ও হাত দিয়ে সংকেত প্রদর্শন করেন। এ সময় নৌবাহিনীর জাহাজটি সংকেত দেখে বিপদগ্রস্ত জেলে ও ট্রলারের কাছে ছুটে যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে নৌবাহিনীর সদস্যরা ট্রলারসহ জেলেদের উদ্ধার করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, উদ্ধারের পরপরই জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার ও বিশুদ্ধ পানি দেওয়া হয়। পরে জেলেদের ও ট্রলারটি নিরাপদে তীরে এনে পরিবার ও মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জেলেরা জানিয়েছেন, ৬ নভেম্বর থেকে ট্রলারটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে মাঝসমুদ্রে ভাসতে থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাটোরে পদ্মার চরে বিশেষ অভিযানে আটক ২০, বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

নাটোর প্রতিনিধি 
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আটক ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চল—চর জাজিরা, চর লালপুর এবং চর দিয়ার বাহাদুরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ সাঁড়াশি অভিযানে ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

শনিবার দিবাগত রাত থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ, র‍্যাব, ডিবি এবং এপিবিএনের চার শতাধিক সদস্য যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করেন।

আটক ২০ জনের মধ্যে দুজন হ্যাকার, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং ছয়টি ওয়ারেন্টের আসামি রয়েছেন। এ ছাড়াও আটক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হত্যা মামলার আসামি এবং দুজন চিহ্নিত মাদক কারবারি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম জানান, চর দিয়ার বাহাদুরপুরের বালুমহালের ছাউনি থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র (দেশীয় তৈরি ওয়ান-শুটারগান ও একটি রিভলবার) উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ছাড়াও উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ছয়টি বড় ড্যাগার, ২২টি হাঁসুয়া, চারটি চাকু ও ছোরা, দুটি চাপাতি।

উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা
উদ্ধার করা অস্ত্র। ছবি: আজকের পত্রিকা

অভিযানস্থল থেকে একটি টিউবওয়েল এবং অনেকগুলো বালু বিক্রির রসিদ জব্দ করা হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, লালপুর উপজেলার চরাঞ্চলে এবং পদ্মা নদীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশের এই বিশেষ অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎বিআরটি প্রকল্পের সেতুর নিচে যুবকের মরদেহ

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীতে উড়ালসেতুর নিচে অজ্ঞাতনামা (৩০) এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ‎রোববার সকাল ৯টার দিকে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের উড়ালসেতুর টঙ্গী স্টেশন রোড অংশের নিচে মরদেহটির সন্ধান মেলে।

‎থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন।

‎স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন বিআরটি প্রকল্পের উড়ালসেতুর ৬৮ নম্বর পিলারের পাশে ওই যুবকের মরদেহটি দেখতে পায়। পুলিশকে খবর পাঠালে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এই যুবককে দুর্বৃত্তরা অন্য কোথাও হত্যা করে মরদেহটি সেতুর নিচে ফেলে গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

‎টঙ্গী পশ্চিম থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদের ভাষ্য, যুবকের পরিচয় শনাক্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যদের খবর পাঠানো হয়েছে। আঙুলের ছাপ নিয়ে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত