Ajker Patrika

৪ দিন পর খুলেছে আনন্দ মোহন কলেজের হল, বিচার চান আহত শিক্ষকেরা 

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ৪৪
৪ দিন পর খুলেছে আনন্দ মোহন কলেজের হল, বিচার চান আহত শিক্ষকেরা 

কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের বিবাদে চার দিন বন্ধ থাকার পর আজ আনন্দ মোহন কলেজের হল খুলেছে। গতকাল সোমবার দিনভর কয়েক দফা মিটিং শেষে রাত ৯টার দিকে আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। হল খোলায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে বিবাদে না জড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, দু-একজন করে শিক্ষার্থী হলে আসছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই উচ্ছ্বসিত আবার অনেকের মধ্যে রয়েছে হতাশা ও ক্ষোভ। অন্যদিকে হল খোলার সিদ্ধান্তে স্বাগত জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।

জসিম উদ্দিন হলের ছাত্র আরিফুল ইসলাম বলেন, `ছাত্রলীগের বিবাদের কারণে পাঁচটা দিন আমাদের খুব ভোগান্তির মধ্যে কাটাতে হয়েছে। আমি বাড়িতে না গিয়ে বন্ধুর বাসায় ছিলাম। আজ সকালে হলে এসেছি। আমার বাকি বন্ধুরা অনেকে গ্রাম থেকে আসছে। সবার জন্য একটু কষ্ট হলেও এখন চাইব পরিবেশটা যেন শান্ত থাকে।'

শেখ হাসিনা ছাত্রীনিবাসের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জেসমিন নাহার বলেন, `হল বন্ধ হওয়ায় যাবতীয় আসবাবপত্র নিয়ে বাড়িতে চলে গিয়েছিলাম। রাতে হল খোলার সিদ্ধান্ত হওয়ায় সকালেই চলে এসেছি। কারণ কয়েক দিন পর ফাইনাল পরীক্ষা, তাই পড়াশোনায় মনোযোগী হতে চাই। হল খোলাতে খুব ভালো হয়েছে। রাজনীতি নয়, আমাদের উদ্দেশ্য পড়াশোনা। তাই কর্তৃপক্ষ পরিবেশটা শান্ত রাখবে এটাই প্রত্যাশা করছি।'

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসেন বলেন, `শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে দ্রুত হল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাঁদের সহযোগিতা করতে চাই। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আমাদের যে নির্দেশনা দেবে, আমরা সেইভাবে চলব। আমরা মনে করি আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের ইউনিটটি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ঘোষণা অনুযায়ী জেলা ছাত্রলীগের অন্তর্ভুক্ত থাকবে।'

জসিম উদ্দিন হলের হল সুপার ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, `গত শনিবার ছাত্রলীগের বিবাদে আমি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্বপন কুমার দাশ ককটেল ও ইটের আঘাতে আহত হন। এ বিষয়ে ঘটনার পরদিন কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে বিচার করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এ ঘটনার বিচার হোক আমরাও তা চাই।'

আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ বলেন, গতকাল সোমবার কয়েক দফা স্থানীয় প্রশাসন এবং কলেজ স্টিয়ারিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে রাতে শর্তসাপেক্ষে হল খোলার সিদ্ধান্ত হয়। ছেলেমেয়েরা পরিচয়পত্র ছাড়া হলের ভেতরে ও বাইরে যেতে পারবে না।

দুজন শিক্ষক আহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে অধ্যক্ষ আরও বলেন, `পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়েছে। যাদের কারণে শিক্ষকেরা আহত হয়েছে, তাদের বিচার হোক। এ নিয়ে আমার ওপর চাপও আছে।'

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ছাত্রলীগের বিবাদে শিক্ষক আহত হওয়ার ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। কারও নাম উল্লেখ না থাকায় অপরাধীদের শনাক্ত করা একটু কঠিন হচ্ছে। তবে দোষীদের আইনের আওতায় আনার জন্য সব দিক থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে আনন্দ মোহন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ইউনিটটি জেলা ছাত্রলীগের অন্তর্গত ইউনিট হিসেবে বিবেচিত হবে বলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে মহানগর ছাত্রলীগের অনুসারীরা আন্দোলনে নামেন। পরদিন শনিবার দিনভর কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা, ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে দুই শিক্ষকসহ কয়েকজন আহত হন। উত্তেজনার মুখে ওই দিন সন্ধ্যার দিকে কলেজের হল বন্ধের নির্দেশনা দেয় কর্তৃপক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কথিত গোয়েন্দা এনায়েতকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান এক পুলিশ কর্মকর্তা, প্রাডো গাড়িও দেন তাঁকে

জনপ্রশাসনের ১৭ কর্মকর্তাকে বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে বদলি

৯ পুলিশ পরিদর্শক বাধ্যতামূলক অবসরে

গণবিক্ষোভ আতঙ্কে মোদি সরকার, ১৯৭৪-পরবর্তী সব আন্দোলন নিয়ে গবেষণার নির্দেশ

হতাশায় শেষ হচ্ছে ইলিশের মৌসুম, আসছে নিষেধাজ্ঞা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত