Ajker Patrika

কিডনি দিতে প্রস্তুত মা, কিন্তু নেই ট্রান্সপ্লান্টের টাকা

জুবাইদুল ইসলাম, শেরপুর
অসুস্থ ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন মা মনোয়ারা বেগম। ছবি: আজকের পত্রিকা
অসুস্থ ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন মা মনোয়ারা বেগম। ছবি: আজকের পত্রিকা

যে বয়সে দাপিয়ে চলাফেরা করার কথা, সে বয়সে হাসপাতাল ও বাড়ির বিছানায় শুয়ে শুয়ে দিন কাটছে ২২ বছর বয়সী তরুণ মো. কনি মিয়ার। তাঁর দুটি কিডনিই বিকল হয়ে পড়ায় সপ্তাহে দুটি ডায়ালাইসিস নিতে হচ্ছে। চিকিৎসক বলেছেন, দুটি কিডনিই পরিবর্তন করতে হবে, অন্তত দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি কিডনি পরিবর্তন করলে কোনোমতে বাঁচবেন তিনি। দরদি মা কিডনি দিতে তাৎক্ষণিক রাজি হয়েছেন। কিন্তু কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের অপারেশনের খরচ বহনের সামর্থ্য নেই হতদরিদ্র পরিবারের। তাই অনিশ্চিত অবস্থায় দিন কাটছে কনি মিয়ার। এ অবস্থায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা চেয়েছে কনির পরিবার।

শেরপুর শহরের চকপাঠক মহল্লার দিনমজুর আশ্রাব আলী ও মনোয়ারা বেগমের চার ছেলের মধ্যে কনি সবার ছোট। বাবা অসুস্থ এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় দশম শ্রেণির পর তাঁর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। ছোটবেলা থেকেই তিনি একটি চালের মিলে কাজ করে সংসারের হাল ধরেছিলেন। বাবার কোনো সম্পত্তি না থাকায় তাঁরা নানার বাড়িতে সামান্য ভিটেয় কোনোমতে বসবাস করে আসছিলেন।

হঠাৎ করেই কনির জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। কিছুদিন ধরে চোখে কম দেখায় স্থানীয় এক হাসপাতালে চোখ দেখাতে গিয়ে জানতে পারেন তার দুটি কিডনিই বিকল হয়ে গেছে। এরপর ময়মনসিংহ ও ঢাকায় পরীক্ষা করালেও একই ফল আসে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জরুরি ভিত্তিতে কিডনি প্রতিস্থাপন করা না গেলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। এই খবর শুনে পুরো পরিবারের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।

কনির চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। প্রতি সপ্তাহে ১০ হাজার টাকা খরচ করে তাঁকে ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে। আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে পাওয়া সামান্য সাহায্য দিয়ে কোনোমতে এই খরচ চলছে। বর্তমানে তিনি ঢাকার সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কনির কিডনি প্রতিস্থাপনে অপারেশন এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এই বিপুল পরিমাণ টাকা জোগাড় করা কনির পরিবারের পক্ষে অসম্ভব। কনির মা মনোয়ারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আপনারা একটু পাশে দাঁড়ালে আমি আমার ছেলেকে নিজের কিডনি দিতে পারব। আমার ছোট ছেলেটা নামাজি, সৎ আর নীতিবান। আপনারা আল্লাহর ওয়াস্তে আমার ছেলেকে সাহায্য করেন।’

কনির মামা, অটোরিকশাচালক মানিক মিয়া জানান, কনির বাবার কোনো জমিজমা নেই যে তা বিক্রি করে চিকিৎসার টাকা জোগাড় করবেন। কনির চিকিৎসার জন্য পরিবারের সব টাকা শেষ। সবাই মিলে সামান্য কিছু সাহায্য করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

এ ব্যাপারে শেরপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সরকার ক্যানসার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদ্‌রোগ ও থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত দুস্থ ও অসহায় রোগীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। কনি মিয়া যথাযথ নিয়ম মেনে আবেদন করলে এবং তিনি পাওয়ার যোগ্য হলে যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গোয়ালন্দে ‘নুরাল পাগলার’ লাশ তুলে পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধরা, আহত অর্ধশত

পবায় মাইকে স্লোগান দিয়ে খানকা ভাঙচুর, নীরব ছিল দুই গাড়ি পুলিশ

২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও গণঅধিকারকে নিষিদ্ধ করতে হবে: শামীম পাটোয়ারী

গোয়ালন্দে পিরের আস্তানায় হামলায় ১ জন নিহত, আশঙ্কাজনক ৫

ভূমিকম্পে হতাহত নারীদের উদ্ধার করেনি তালেবান কর্মীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত