Ajker Patrika

সৈয়দ পরিবার অপদস্থ হইলে হাততালি দিব মুরুব্বি, কাকে ইঙ্গিত করলেন সৈয়দ নজরুলের ভাতিজা

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ 
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬: ০৯
সৈয়দ পরিবার অপদস্থ হইলে হাততালি দিব মুরুব্বি, কাকে ইঙ্গিত করলেন সৈয়দ নজরুলের ভাতিজা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে এবারের নির্বাচন ঘিরে সৈয়দ নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা একে অপরের প্রতি বিষোদ্‌গার করছেন নির্বাচনী প্রচারসভায়। একই পরিবারের সদস্যরা যেভাবে একে অপরের প্রতি বিষোদ্‌গার করছেন, তাতে ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে নির্বাচনী পরিবেশ। এতে উদ্বিগ্ন সাধারণ ভোটাররা। তাঁদের আশঙ্কা, এই বিষোদ্‌গার গড়াতে পারে সহিংসতায়।

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। তাঁর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে লড়ছেন বড় ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম। এই আসনে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন তাদের চাচাতো ভাই ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু। তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সমর্থন দিয়েছেন সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামকে।

সর্বশেষ গতকাল বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের নির্বাচনী প্রচারসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘আমার ছেলেরা ঈগল প্রতীকের পোস্টার লাগাইছে, সবগুলো পোস্টার ছিঁড়া ফালাইছে। পোস্টারের মধ্যে আগুন লাগাইয়া দিছে।’

সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘আমি এইডা বিশ্বাসই করি না যে, বইন (সৈয়দা লিপি) হইয়া ভাইয়ের (সৈয়দ সাফায়েত) পোস্টারে আগুন লাগাইয়া দিছে। এরা চায় কিশোরগঞ্জে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হউক। এরা চায় কিশোরগঞ্জে মারামারি-খুনোখুনির অবস্থা তৈরি হউক।’

সৈয়দ পরিবারের এই নেতা আরও বলেন, ‘অপ্রীতিকর ঘটনা যে ঘটাইতে চায়, এইটার পেছনেও ষড়যন্ত্র আছে। সেই ষড়যন্ত্রডা হইল, যদি কিশোরগঞ্জে মারামারি হানাহানি হইয়া একটা জীবন ঝইরা যায়, তাহলে মামলা হইব।’ এ সময় তিনি প্রশ্ন রাখেন, এই মামলার আসামি কে হবে? তিনি নিজেই জবাব দিয়ে বলেন, ‘সৈয়দ পরিবারের মেজর জেনারেল সাফায়েতুল ইসলাম আর সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু।’ 

কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মামলা তো আর এক পক্ষে হয় না। আরেকটা মামলা হইব। হেইডার আসামি হইব লিপি, রুপা, শরীফ আর মঞ্জু। পত্রপত্রিকায় উঠব। নেত্রী দেখব যে, ভাইয়ে-বইনে মারামারি লাইগা খুনোখুনি লাগাইয়া দিছে। এইডা একটা ষড়যন্ত্র। এই যে মারামারি-হানাহানি আর খুনের মামলার আসামি বানাইয়া দিলে, লাভডা কার হইব এইডা কন? হাততালি কেডা দিব? মুরুব্বি হাততালিডা দিব।’ 

এই মুরুব্বি কে—এ বিষয়ে সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সরাসরি উত্তর দেননি। তিনি বলেন, বিষয়টি আপনারা বুঝে নিন। 

উল্লেখ্য, এই আসনে সাবেক রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদের মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। পরে তিনি সমর্থন জানান সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপিকে। তুহিন সমর্থন দেওয়ার পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। প্রকাশ্যে চলে আসে সৈয়দ পরিবারের দ্বন্দ্ব। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী তখন সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামকে সমর্থন জানান চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু। 

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে জেলা শহরের রেলস্টেশন এলাকায় নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী সভায় সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন তাঁরই চার ভাই-বোন। ওই সভায় সাফায়েতুল ইসলাম অস্ত্র আর টাকা নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন—এমন অভিযোগ তোলেন তাঁর ছোট ভাই ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অধ্যাপক সৈয়দ শরীফুল ইসলাম। 

সৈয়দ শরীফুল ইসলাম বড় ভাইকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তাঁরা অস্ত্র আর টাকার গরম দেখাচ্ছে। আমরা নেমেছি আদর্শ নিয়ে। আমরা সততার সঙ্গে রোজগার করে খাচ্ছি।’ ভোটারদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তাঁরা পয়সা দেবে, আপনারা নেবেন। আর ভোটটা দেবেন নৌকায়।’ এ সময় সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামকে ‘দলছুট’ আখ্যা দিয়ে শরীফুল বলেন, ‘আমরা চার ভাইবোন একসঙ্গে আছি। ছোট বোন লিপির পক্ষে কাজ করছি।’ 

উল্লেখ্য প্রয়াত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছয় সন্তান। তাঁর চার ছেলে—সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, সৈয়দ শরিফুল ইসলাম ও সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম এবং দুই মেয়ে সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি, সৈয়দা রাফিয়া নূর। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু ও সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলামকে ইঙ্গিত করে সৈয়দা রাফিয়া নূর রুপা বলেন, ‘দুই ভাই মিলে হুলুস্থুল লাগিয়ে দিয়েছেন। পাগল ঈগল নিয়ে এসেছে। সঙ্গে আছে কিছু ছাগল। ঈগল প্রথমে ছাগলগুলোকে খাবে।’ এ সময় তিনি তাঁর দুই ভাইয়ের কর্মকাণ্ডের জন্য সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

ভাই-বোনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়ে সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা নৌকার বিরুদ্ধে না। আমার কাছে বইঠা আছে, আমি জানি নৌকা কীভাবে চালাইতে হয়। সৈয়দ আশরাফ মারা যাওয়ার পর তাঁর সব প্রকল্প বন্ধ হয়ে গেছে। আমার একটাই কাজ; সৈয়দ নজরুল, সৈয়দ ওয়াহেদুল ও সৈয়দ আশরাফের অসম্পূর্ণ কাজগুলো সম্পন্ন করতে চাই।’ উল্লেখ্য, সৈয়দ ওয়াহেদুল ইসলাম সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাই।

এদিকে সৈয়দ পরিবারের দ্বন্দ্বের ফায়দা তুলতে চান জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী চিকিৎসক মো. আব্দুল হাই। তিনি ভাই-বোনের দ্বন্দ্বকে ভোটারদের সামনে তুলে ধরে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের জনগণ একটা ভীতির মধ্যে আছে যে, তাঁরা (ক্ষমতায়) এলে কী হবে! এখনই এই অবস্থা।’

কিশোরগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১২ জন। যাচাইবাছাই, আপিল ও প্রত্যাহারের পর ভোটের লড়াইয়ে টিকে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম (ঈগল), বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির মোবারক হোসেন (ডাব), জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আবদুল হাই (লাঙল), ইসলামী ঐক্যজোটের মো. আশরাফ উদ্দিন (মিনার), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. আব্দুল আউয়াল (ছড়ি) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির মো. আনোয়ারুল কিবরিয়া (আম)। এই আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১৫ হাজার ৫১১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬১ হাজার ৪১৩ জন ও নারী ভোটার ২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬ জন।

ভাইবোনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজীপুরে রাস্তা আটকে চলাচল করা পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম বরখাস্ত

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
ড. নাজমুল করিম খান। ছবি: আজকের পত্রিকা
ড. নাজমুল করিম খান। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) সাবেক কমিশনার নাজমুল করিম খানকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। গতকাল রোববার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নাজমুল করিমকে জনস্বার্থে সরকারি কাজ থেকে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন হওয়ায় সরকারি চাকরি আইনের ৩৯ (১) ধারা অনুযায়ী তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।

নাজমুল করিমকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে তা জানানো হয়নি।

তবে রাস্তা বন্ধ করে এই পুলিশ কর্মকর্তার অফিসে যাতায়াত নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ১ সেপ্টেম্বর জিএমপি কমিশনার পদ থেকে প্রত্যাহার করে তাঁকে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

সরকারি চাকরি আইনের ৩৯ (১) ধারার বিধান অনুযায়ী কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করা হলে বা বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হলে তাঁকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা যায়।

নাজমুল করিমকে বিরুদ্ধে এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা প্রজ্ঞাপনে তা জানানো হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীতে গুলিতে নিহত মামুন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের প্রধান সহযোগী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫২
ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া
ছবি ভিডিও থেকে নেওয়া

পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে সকালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তারিক সাইফ মামুন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে জানা যায়, মামুনের বাবার নাম এস এম ইকবাল। তাঁর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার মোবারক কলোনি এলাকায়।

ওই ব্যক্তি পেশায় ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী। তবে পুলিশ বলছে, ওই ব্যক্তি চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ বিভাগ) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, ‘গুলিতে নিহত ব্যক্তিটি শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন। তিনি কোনো ব্যবসায়ী নন। তিনি ইমন-মামুন গ্রুপের মামুন।’

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ঢালিউড নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ভাই সাইদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলায় ঢাকার আন্ডারগ্রাউন্ড সন্ত্রাসী গ্রুপ ইমন-মামুন জড়িত। এই গ্রুপের ইমন বর্তমানে পলাতক। মামুন আজ মামলায় হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন।

ঘটনার বর্ণনায় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনে গোলাগুলি হয়। গুলির শব্দ শুনে হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে এসে তিনি এক ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভেতরে আনা হয়। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেলে নিহতের পূর্বপরিচিত দাবি করা জনৈক ফাইজুল হক অপু জানান, সকালে তারিক সাইফ মামুনের ফোন নম্বর থেকে তাঁকে কল করে ঘটনাটি জানানো হয়। এরপর তিনি ঢাকা মেডিকেলে এসে পরিচয় শনাক্ত করেন।

ঢামেকে মামুনের স্ত্রী দীপা জানান, মিরপুরে মামুনের গার্মেন্টস ব্যবসা রয়েছে। দুই মেয়েকে নিয়ে আফতাবনগরের এফ-ব্লকে থাকেন তাঁরা। তিনি আরও জানান, দুই দিন পর আজ সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মামুন। জজকোর্টে একটি মামলার হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। এরপরই ফোনে তাঁর মৃত্যুর খবর আসে।

দীপা বলেন, ‘কারা আমার স্বামীকে খুন করছে জানি না।’ এ সময় ‘ইমন’ নামে এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইমন ছাড়া কেউ এই কাজ করে নাই। কয়েক দিন আগে ইমনই লোক দিয়ে মামুনকে মারধর করেছিল।’

তবে ইমনের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলতে তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হননি দীপা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়া মানেই দেশের সর্বনাশ: মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৮
আজ সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে নির্বাচনকে বানচাল করে দেওয়ার এবং পিছিয়ে দেওয়ার যে চক্রান্ত চলছে, তা সফল হলে দেশের সর্বনাশ হবে। এই সংকটময় মুহূর্তে একটি নির্বাচিত সরকার খুব জরুরি। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আর কালক্ষেপণ না করে দ্রুত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টায় ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ঠাকুরগাঁও জেলা ইউনিট কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর করিম সভায় সভাপতিত্ব করেন।

বিএনপি মহাসচিব জানান, তাঁর দল অন্তর্বর্তী সরকারকে সম্মান করে ও শ্রদ্ধা করে এবং আশা করে যে তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) অতি দ্রুত আর কোনো কাল বিলম্ব না করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ব্যবস্থা করবেন। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন।

তিনি বলেন, ’একটা কথা মনে রাখতে হবে দেশটা আমাদের, এই মাটি আমাদের। এই মানুষগুলো আমাদের।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে পরিকল্পিতভাবে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যারা একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল, সেই চক্রই এখন ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে দেশটাকে ’গ্রাস করার চেষ্টা’ করছে। এ সময় তিনি সব ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানান।

মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে একটা চেষ্টা করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে ঘুরিয়ে দেওয়ার। বলা হচ্ছে—’৭১-এ হয় নাই, আমরা কিছুই করি নাই। দেশটার জন্য আমরা কোনো অবদানই রাখিনি। এখন যারা ’২৪-এ করেছে তারাই সব করেছে—এই রকম একটা ধারণা দিচ্ছে।’

তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘দীর্ঘ ৯ মাস যারা যুদ্ধ করেছি, পরিবার-পরিজনের কোনো খবর নিতে পারিনি... সেই দিনটাকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে—সেটাকে কি ভুলিয়ে দেওয়া যায়?’ মুক্তিযোদ্ধারা ’না’ বললে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমার জন্মটাকে কি আমি ভুলতে পারি?’

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, একটি মহল দেশের স্বাধীনতা ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তিনি বলেন, ’আজকে সুপরিকল্পিতভাবে একটি চক্র, একটি মহল, যারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যোগসাজশ করে এ দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল, তাদের পরিবারকে হত্যা করেছিল, তাদের মেয়েদের তুলে দিয়েছিল পাক বাহিনীর হাতে। তাদের সঙ্গে কি এ দেশের মানুষ আপস করতে পারে?’

তাঁর এই বক্তব্যের সমর্থনে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা ’না’ সূচক মন্তব্য করেন। এ সময় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্লোগান দেন, ’একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার। রাজাকার, আলবদর হুঁশিয়ার সাবধান।’

মির্জা ফখরুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এসব কথা বলতে চাই না, কিন্তু যারা দেশটাকে গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে, গ্রাস করার চেষ্টা করতেছে’, তাদের রুখতে আজ বিভেদের চেতনাকে সামনে আনতে হবে।

তিনি জানান, তাঁদের দল ক্ষমতায় থাকাকালে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় তৈরি করেছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধার ভাতা শুরু করেছিলেন। তিনি হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাজধানীতে স্কুলে যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কা, প্রতিবন্ধী শিশুর মৃত্যু

ঢামেক প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর বনশ্রীতে ট্রাক ধাক্কায় আরাফ আফতাহী (৮) নামে এক প্রতিবন্ধী শিশু মারা গেছে। আজ সোমবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

মুমূর্ষু অবস্থায় আরাফ আফতাহীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আরাফের বাবা ইঞ্জিনিয়ার আজহারুল ইসলাম জানান, তাদের বাসা বনশ্রী জি ব্লকে। বাসার বিপরীতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের একটি স্কুলে পড়ত আরাফ। সকালে তাদের বাসার আয়া সোনিয়া আরাফকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগতির একটি ট্রাক আরাফকে ধাক্কা দেয়। এতে আরাফ রাস্তায় পড়ে গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরাজি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে আনার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত