Ajker Patrika

গোপনে বিয়ে করে ফেঁসে গেলেন যুবক, দেড় লাখ টাকায় মীমাংসা

প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ মে ২০২১, ১৫: ৩৪
গোপনে বিয়ে করে ফেঁসে গেলেন যুবক, দেড় লাখ টাকায় মীমাংসা

কুমারখালী (কুষ্টিয়া): সপ্তাহখানেক আগে প্রেমিকাকে না জানিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছেন যুবক। এই গোপন বিয়ের খবর পেয়ে যান প্রেমিকা। ঢাকা থেকে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন তিনি। বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন। প্রেমিকের বাড়িতে টানা তিন দিনের অনশন শেষে দেড় লাখ টাকায় বিষয়টি রফাদফা করেন স্থানীয় মাতবররা। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোতমোড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রেমিক সবুজ ওই গ্রামের দিনমজুর শহিদের ছেলে এবং প্রেমিকা একই গ্রামের মেয়ে।

সবুজ ও তার প্রেমিকার পরিবারসহ একাধিক সূত্র জানায়, দুজনে একই স্কুল একই ক্লাসে পড়তেন। বর্তমানে তারা ঢাকায় চাকরি করেন। প্রায় তিন বছর আগে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর ২৪ মে সবুজ প্রেমিকাকে না জানিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সবুজ ঢাকা চলে যান। বিয়ের খবর পেয়ে ২৬ মে সন্ধ্যায় প্রেমিকের বাড়ির প্রধান গেটে অবস্থান নেন প্রেমিকা। অবস্থানকালে তিনি সবুজের পরিবার ও অন্যদের তাদের প্রেমের ঘটনা খুলে বলেন এবং বিয়ের দাবি জানান।

সবুজের পরিবার বিষয়টি মেনে না নিয়ে মেয়ের পরিবারকে খবর দেয়। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, মাতবর ও পুলিশ ক্যাম্পে। খবর পেয়ে জনপ্রতিনিধি, মাতবর, দুই পরিবারের সদস্যরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রথম দিন কোনো সমাধান হয়নি। এভাবে কেটে যায় আরও দুদিন। পরে শুক্রবার গভীর রাতে দুই পরিবারের সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মাতবররা একটি সালিসি বৈঠক করেন। বৈঠকে সবুজের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে জরিমানার টাকাসহ মেয়েকে নিয়ে যায় তার পরিবার।

অনশনরত অবস্থায় ওই প্রেমিকা বলেন, একসঙ্গে পড়তাম আমি আর সবুজ। বর্তমানে দুজনই ঢাকায় থাকি। আমি গার্মেন্টস আর সবুজ ইলেকট্রিকের কাজ করেন। আমাদের প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিয়ের কথা বলে সবুজ আমার কাছ থেকে অনেক টাকা–পয়সা নেন। একপর্যায়ে আমাদের মাঝে শারীরিক সম্পর্ক হয়। তিনি আরও বলেন, আমার সঙ্গে প্রেম করে আমাকে না জানিয়ে সবুজ অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। বিয়ের এমন খবর পেয়ে সবুজকে বিয়ের দাবিতে অনশন করছি। দাবি না মানলে অনশন চলতে থাকবে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে ওই এলাকায় ইউপি সদস্য (মেম্বর) আব্দুল মোমিন বলেন, গত বুধবার বিয়ের দাবিতে সবুজের বাড়িতে অবস্থান করে মেয়েটি। বিষয়টি মেয়ের পরিবারকে জানানো হলেও তারা কর্ণপাত করেনি। ফলে অনশন চলতে থাকে। টানা তিন দিন পর শুক্রবার গভীর রাতে দুই পরিবার এক সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করে নেয়। তিনি আরও বলেন, ছেলে পক্ষকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার পঞ্চাশ হাজার টাকা নগদ ও বাকি টাকার চেক মেয়ের বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সবুজের কাছের এক বন্ধু বলেন, মেয়েটির সঙ্গে সবুজের আগে প্রেম ছিল। সবুজের বিয়ের কথা শুনে হঠাৎ মেয়েটি বাড়িতে চলে আসে। তিনি আরও বলেন, টানা তিন দিন পর ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় মিটমাট হয়।

ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আশিকুর রহমান সাবান ফোনে বলেন, বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি দেড় লাখ টাকায় মিটমাট হয়েছে।

কুমারখালী থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, বিয়ের দাবিতে অনশনের কথা জেনেছি। বিষয়টি সামাজিক এবং প্রেমের ঘটনাস্থল আমার এলাকার বাইরে। তাই পরিবারকে পরামর্শ দিয়েছি। তবে টাকা দিয়ে মিটমাট হওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। আমার জানা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত