Ajker Patrika

খুলনায় চরমপন্থী দলের সদস্যকে কুপিয়ে জখম

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনার ফুলতলায় চরমপন্থী দলের এক সদস্যকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বেজেরডাঙ্গা রেলস্টেশন রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তির নাম ফারুখ মোল্লা। তিনি উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও পয়গ্রামের হাসেন মোল্লার ছেলে। দুর্বৃত্তরা দুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফারুককে আহত করে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ফুলতলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আহত অবস্থায় ফারুককে রাস্তার এক পাশে পড়ে থাকতে দেখি। পরে তাঁকে একটি ভ্যানে করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি দেখে সেখানকার চিকিৎসক তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দুই পায়ে আঘাত করেছে।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আহত ফারুখ চরমপন্থী দলের সদস্য। পুলিশের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। এ ছাড়া ফারুখ ওই এলাকার একটি গ্যাংয়ের প্রধান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি

ককটেল আগুনে বাড়ল উদ্বেগ

  • রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আট জায়গায় ১৩ ককটেল বিস্ফোরণ, তিন বাসে আগুন।
  • মানিকগঞ্জে স্কুলবাসে ও নেত্রকোনায় এনসিপি নেতার বাড়ির ফটকে আগুন।
  • বিস্ফোরণ-আগুনে হতাহত হয়নি কেউ। সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করেছে পুলিশ।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়। এর মাঝেই গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত
সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকায় বিভিন্ন স্থানে গাড়িতে তল্লাশিও চালানো হয়। এর মাঝেই গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও এই সময়ে ঘটেছে নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর রশি-টানাটানি, অস্থিরতা চলছে। এর মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন আবার ঢাকা লকডাউনের হুমকি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। সব মিলিয়ে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ককটেল-আগুনের ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ-আতঙ্ক আরও বাড়ল।

পরিস্থিতি যে উদ্বেগের, তা মনে করছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমও। তিনি গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চোরাগোপ্তা হামলা হলে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকে।’

রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে পরিস্থিতি একটু উন্নত হতো মন্তব্য করে আইজিপি আরও বলেন, ‘কিন্তু দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য নেই। তারপরও পুলিশ চেষ্টা করছে, যেসব জায়গায় ত্রুটি রয়েছে সেগুলো ঠিক করার। আগামী আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাব। কারণ, জনপ্রতিনিধি ও জনগণই বড় শক্তি।’

ককটেল বিস্ফোরণ

গতকাল ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ধানমন্ডি, খিলগাঁও এবং বাংলামোটর এলাকায় ১৩টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এগুলোর মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সীমানার মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ছাড়া ভোরের আলো ফোটার আগেই দুটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সব জায়গাতেই মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে আসা ব্যক্তিরা ককটেল ছোড়ে এবং বাসে আগুন দেয়। তাদের মোটরসাইকেলের নম্বরপ্লেটগুলো কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। তবে এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের অভ্যর্থনাকেন্দ্রের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রথমটি রাত ২টা ২৬ মিনিটে এবং অপরটি ভোররাত ৩টা ৫৫ মিনিটে বিস্ফোরিত হয়। দুটি ককটেল অভ্যর্থনাকেন্দ্রের সামনে বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবনেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।

গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, ককটেল বিস্ফোরণের পর গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভবনের সামনের ফুটপাতে ও প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই দেখা যায়, তিনজন নিরাপত্তাকর্মী এবং একজন কর্মকর্তা বসে আছেন। সামনেই অভ্যর্থনাকক্ষ। কাচের দরজার অভ্যর্থনাকক্ষের প্রবেশমুখে লালচে ককটেল বিস্ফোরণের দাগের নমুনা এবং বিস্ফোরিত অংশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছেন।

গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আল হেলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারীরা দুটি মোটরসাইকেলে করে মিরপুর ১০ নম্বরের দিক থেকে আসে। এরপর ভবনের সামনে মোটরবাইক থামিয়ে পেছনে বসা হেলমেট পরা ব্যক্তি সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে ককটেল ছুরে মেরে মিরপুর ১ নম্বরের দিকে পালিয়ে যায়। এরপর আরেকটি মোটরসাইকেলে করে প্রায় এক ঘণ্টা পর আরও দুজন একই কায়দায় এসে ককটেল ছুড়ে চলে যায়। ঘটনার পর আলামত ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, হামলাকারীদের মাথায় হেলমেট ছিল। চেহারা বোঝা যায়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুজনকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে হামলার পর সকাল ৭টার দিকে মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা এবং বীজবিস্তার ফাউন্ডেশনের সামনের সড়কে ও সীমানার ভেতরে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। দুজন হেলমেট পরে মোটরসাইকেলে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বলে জানিয়েছেন প্রবর্তনার নিরাপত্তাকর্মী মো. মোস্তফা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, প্রবর্তনার সামনের সড়ক ও ভবনের ভেতরে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

এ ছাড়া গতকাল ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের মাইডাস সেন্টারের সামনে দুটি এবং ৯/এ সড়কে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সকাল পৌনে সাতটা থেকে সাতটার মধ্যে এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। দুটি জায়গাতেই মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে এসে ককটেল ছোড়া হয়।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা বলেন, সকাল পৌনে সাতটার দিকে মাইডাস সেন্টারের সামনে একটি মোটরসাইকেলে করে দু-তিনজন এসে দুটি ককটেল ছোড়ে এবং বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সকাল সাতটার দিকে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনেও একইভাবে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশে শাহ আলী মার্কেটের সামনে পরপর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময়ে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপরও একটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে পুলিশ।

মিরপুর মডেল থানার কর্মকর্তারা জানান, ফুটওভারব্রিজের ওপর থেকে কেউ ককটেল নিক্ষেপ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

আর রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানী বাংলামোটর এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে আরও একটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।

তিনটি বাসে আগুন

ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ছাড়াও গতকাল ভোরে রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় যাত্রীবাহী দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাশেদ বিন খালেদ বলেন, ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলশানের শাহজাদপুর এলাকায় যাত্রীবাহী ভিক্টর পরিবহনে এবং মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সকাল সোয়া ছয়টার দিকে যাত্রীবাহী আকাশ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুর সড়কে ল্যাবএইডের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে বাস থেকে বের হয়ে যায় তারা।

রাজধানীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রাতদিন পুলিশের টহলে থাকে বলে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তবে একযোগে রাজধানীর ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এসব ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি তারা।

ঢাকার বাইরে দুই জায়গায় আগুন

রাজধানীর বাইরে দুই জায়গায় নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথুলী এলাকায় মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া গতকাল নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগের বাড়ির ফটকে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

পুলিশের নজরদারি জোরদার

এসব নাশকতার ঘটনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির কারণে সারা দেশে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মাঠপর্যায়ের সব ইউনিটকে বাড়তি নিরাপত্তা, টহল ও নজরদারি জোরদারের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে মাঠে থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সরকারি স্থাপনা, পরিবহন টার্মিনাল, দলীয় কার্যালয় ও কৌশলগত মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বসানো হয়েছে নতুন চেকপোস্ট। সাইবার ইউনিটকেও সক্রিয় করা হয়েছে; যাতে সামাজিক মাধ্যমে গুজব, উসকানি বা অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঢাকা শহরের হোস্টেল, মেস, বাসাবাড়ি এবং আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালানো হবে। ঝটিকা মিছিল কিংবা আকস্মিক সমাবেশ দেখলে তাৎক্ষণিক ছত্রভঙ্গ এবং অংশগ্রহণকারীদের আটক করার নির্দেশনা রয়েছে। গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে দেওয়া হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এবার এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে এই বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থলে আরও একটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। রাত প্রায় ১১টা ১০ মিনিটের দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

তবে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ বা কার্যালয়-সংশ্লিষ্ট কেউ বিস্ফোরণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি।

রাজধানীতে গত কয়েক ঘণ্টায় একাধিক স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রাতে মিরপুরের শাহ আলী মার্কেটের সামনে পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময় ধানমন্ডি ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশের শাহ আলী মার্কেটের সামনে এসব বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময় খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপরেও একটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়।

দিনজুড়ে রাজধানীর আরও কয়েকটি এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত চারটি স্থানে সাতটি বিস্ফোরণের ঘটনা নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এগুলোর মধ্যে মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনার সামনে এবং ভেতরে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ হয়। ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারের সামনে দুটি এবং ধানমন্ডি ৯/এ এলাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে আরও দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

এ ছাড়া গতকাল ভোর হতেই রাজধানীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে শাহজাদপুরে ভিক্টর পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। সকাল সোয়া ৬টার দিকে মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কাছে আকাশ পরিবহনের আরেকটি বাসেও আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

রাজধানীতে ধারাবাহিক ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের এসব ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নগরজুড়ে টহল জোরদার করেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনা, মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্য নিহত

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নওগাঁর বদলগাছীতে ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্য রায়হান (৩২) নিহত হয়েছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার কেশাইল গ্রামের শ্যালুকুড়ি ব্রিজের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। এক সুখী পরিবারের হাসি মুহূর্তেই নিভে গেল।

থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিমালা গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে রায়হান ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে থানায় কর্মরত ছিলেন। কিছুদিনের ছুটি কাটাতে তিনি স্ত্রী মিম্মা ও চার বছরের শিশুপুত্র আব্দুর রহমানকে নিয়ে নিজ গ্রামে এসেছিলেন। আজ দুপুরে মোটরসাইকেলযোগে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে আক্কেলপুর যাচ্ছিলেন। পথে কেশাইল শ্যালুকুড়ি ব্রিজের কাছাকাছি পৌঁছালে এক ট্রাককে ওভারটেক করতে গিয়ে সামনে থাকা একটি ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে রায়হান ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়হান মারা যান।

দুর্ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী মিম্মা ও চার বছরের শিশুসন্তান আব্দুর রহমানও গুরুতর আহত হয়। তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নবগঠিত আসন বাতিল, গাজীপুরবাসী হতাশ

গাজীপুর প্রতিনিধি
নবগঠিত আসন বাতিল, গাজীপুরবাসী হতাশ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের আসন পাঁচটি থেকে বাড়িয়ে ছয়টি নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল, তা অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত। ফলে পাঁচটি সংসদীয় আসনই থাকবে গাজীপুরে। এ ঘটনায় বৃহত্তর টঙ্গীসহ ওই এলাকায় রাজনৈতিক হতাশা দেখা দিয়েছে।

হতাশা প্রকাশ করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা, প্রবীণ রাজনীতিক ও সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, গাজীপুর-৬ আসনটি নাগরিক ও ভোটারদের জন্য নতুন সম্ভাবনার সূচনা করতে পারত। কিন্তু আজকের রায়ে সেই সম্ভাবনা ব্যর্থ হলো।

হাসান সরকারের চাচাতো ভাই মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমরা আপিল করব এবং গাজীপুর-৬ আসন পুনর্বহাল করব। সবাইকে ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করছি। জয় আমাদেরই হবে, ইনশা আল্লাহ।’

জামায়াতে ইসলামীর গাজীপুর-৬ আসনের মনোনীত প্রার্থী ড. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘গাজীপুর-৬ আসনটি গাজীপুরবাসীর আশা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ছিল। টঙ্গী, গাছা ও হায়দারাবাদের মানুষ এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না। আমি আশা করি, নির্বাচন কমিশন আপিলসহ আইনি পদক্ষেপ নেবে। আমরা সবাই মিলেই গাজীপুর-৬ আসনের জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করব, ইনশা আল্লাহ।’

গাজীপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘গাজীপুর একটি জনবহুল শিল্পাঞ্চল। এখানে ছয়টি আসন থাকা গণতান্ত্রিক ভারসাম্যের জন্য জরুরি ছিল। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত ছিল জনগণভিত্তিক ও যৌক্তিক। আমরা চাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিষয়টি সমাধান করা হোক।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাজহারুল আলম বলেন,‘গাজীপুরে পাঁচটি আসন বহাল থাকলে এটি দেশের অন্যতম বড় বৈষম্যের উদাহরণ হবে। বাসন মেট্রো থানা ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক ও মানবিক বিবেচনায় গাজীপুর সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কালিয়াকৈরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না। আশা করি, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবেন।’

গাজীপুর নাগরিক ফোরামের সভাপতি মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, গাজীপুরের জনসংখ্যা ও প্রশাসনিক বাস্তবতা বিবেচনায় ছয়টি আসনই যৌক্তিক ছিল। নতুন আসন বাতিল হলে নাগরিক অংশগ্রহণ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা ব্যাহত হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গাজীপুর-২-এ আগেভাগে প্রার্থী ঘোষণা এবং গাজীপুর-৬ বাতিলে আমরা দুদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। টঙ্গী, গাছা ও পুবাইল এলাকার মানুষ এখন না প্রার্থী পাচ্ছে, না এমপি পাচ্ছে—এটা চরম হতাশার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত