জাহিদ হাসান, যশোর

‘ভাগনে হালকা লিকার, চিনি কমায়ে একটা চা দাও।’ চা-দোকানিকে ফরমাশ জানিয়ে বাঁশের তৈরি বেঞ্চিতে বসে পড়লেন চল্লিশোর্ধ্ব এক ক্রেতা। বিড়বিড় করে তিনি আবার বললেন, ‘শীতে তো কাবু করে ফেলতেছে। কাল তো ভোট। কিডা যে পাস করবেনে। সবাই নৌকার লোক হইলেও এবার সব ভোট নৌকায় পড়বে না। অনেক হিসাব-নিকাশ হবেনে ভোটে।’ একটু দূরের বেঞ্চে নজরুল ইসলাম নামের এক যুবক বলে উঠলেন, ‘ভোটের মাঠে এবার খেলা জমবে। আগের মতো কেউ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারবে না। নৌকার সঙ্গে ঈগলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। যদি ইলেকশন ফেয়ার হয়, তাহলে মিরাকলও ঘটতে পারে। মনে হচ্ছে, এবারে নির্বাচন পুরো জমে যাবেনে।’
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ‘সাহেব আলী টি স্টোরে’ এভাবেই শুরু হয় নির্বাচনী আলোচনা। তাতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন। অবসরের এ আলোচনার ফাঁকে পৌষের কুয়াশা ভেদ করে মিষ্টি রোদ উঠে বেলা বাড়তে থাকে। সকাল গড়িয়ে রোদ চড়তে থাকে, তবু যেন নির্বাচনী আলোচনার শেষ নেই। চা আড্ডার মূল বিষয়, আগামীকাল রোববারের নির্বাচন। কারও মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুণগান, আবার কারও মুখে নৌকার সুনাম।
চায়ের দোকানে কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোর সদর-৩ আসনে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী টানা দুবারের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। উপজেলার আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ তাঁর সঙ্গে নেই। ফলে এবারের নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নাবিল।
নৌকার এই প্রার্থীকে এবার চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন নাবিলের প্রথম ও দ্বিতীয়বারের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। মোহিত একসময় যশোর জেলার রাজনীতিতে পরস্পরবিরোধী দুটি বলয়ের একটির নেতা এমপি কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গেই ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এখনো তিনি সে বলয়েই সক্রিয়।
দীর্ঘদিন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও মোহিতের ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি পরিচিতি রয়েছে। সেসব কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিজের ঈগল প্রতীকের সমর্থনে তিনি সঙ্গে পেয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানও তাঁর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঈগলের সমর্থন দেখে সাধারণ ভোটাররা ঈগলের জয়ই দেখছেন। তবে আবার এ আসনে নৌকা প্রতীক ফ্যাক্ট হতে পারে। অনেক ভোটার আবার প্রতীকেই মূল্যায়ন করছেন।
সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের মো. তৌহিদুজ্জামান, তূণমূল বিএনপি মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শেখ নুরুজ্জামানও লড়ছেন।
দেয়াড়া গ্রামের কৃষক ও মুদিদোকানি তোফায়েল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এখানে জমজমাট হবে। তবে সাধারণ ভোটার যাঁরা আছেন, তাঁদের মনে ভয়ও আছে। ভোট নিয়ে নৌকার সঙ্গে ঈগলের কোনো সংঘর্ষ হয় কি না, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত। কারণ, নৌকা কোনোভাবেই আসন হারাতে চাইবে না।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে ৩২ জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। এর মধ্যে যশোর-২ ও ৪ বাদে বাকি চারটি আসনে নৌকা বনাম স্বতন্ত্রের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।
হালি পূরণ করবেন আফিল, নাকি লিটনের প্রথম
যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ আফিল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন ও জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তবে আসনটিতে লড়াই হতে পারে নৌকার সঙ্গে ট্রাকের। নৌকার আফিলকে ছাড় দিতে নারাজ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র লিটন। ভোটাররা বলছেন, ‘আফিল টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। এর আগে মাত্র একবারই তাঁকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। নিজের প্রথম নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে মাত্র পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। এরপরের দুই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন সুস্পষ্ট ব্যবধানে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আক্তারুজ্জামান শুধু খাতা-কলমেই আছেন।’
এর আগে কয়েকটি নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন প্রায় একতরফা ভোট করার সুযোগ লাভ করলেও এবার ট্রাক প্রতীকের লিটন সেই সুযোগটি দিচ্ছেন না বলেই মনে করে শার্শাবাসী। অবশ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় অংশ শেখ আফিলের পক্ষে থেকে নিরলস কাজ করেছেন। লিটনের সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরাও চষে বেড়িয়েছেন মাঠঘাট।
নির্ভার তৌহিদুজ্জামান তুহিন?
ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলা নিয়ে যশোর-২ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হলেন ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান (সংবাদ সম্মেলন করে সম্প্রতি সরে দাঁড়িয়েছেন)। রাজনীতির মাঠে একেবারেই নতুন ডা. তুহিন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় জয়ের ব্যাপারে প্রথম দিকে কঠিন হলেও বর্তমানে নির্ভার তিনি। কেননা, দলীয় প্রতীকই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি সাবেক এমপি মনিরুলের বিপক্ষে বড় একটি অংশ নৌকাকে সমর্থন দেওয়া এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম হাবিব নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় তুহিনের জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে।
আসনটির অন্য তিনজন প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আব্দুল আওয়াল এবং বিএনএফের শামছুল হক ভোটারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। তৌহিদুজ্জামান তুহিনের এখন একমাত্র মাথাব্যথার কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনির। সে কারণে তিনি ভোটের মাঠে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি দলীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায়ও মনোনিবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। নির্বাচনী বক্তব্যেও বিষয়টির আভাস পাওয়া গেছে। নিয়ম মেনে রোগীর সেবা করা এই প্রার্থী এবার কোনো নিয়মের ঘেরাটোপে আর থাকতে পারছেন না। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই যেন তাঁর কাছে কাজের সময়ে পরিণত হয়েছে। ভুলে গেছেন নাওয়া-খাওয়া। ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
যশোর-৪ আসনে নিশ্চিত জয়ী নৌকার বাবুল
বাঘারপাড়া-অভয়নগর উপজেলা ও সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৪ আসন। এখানে ভোটের মাঠে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। যদিও এনামুল দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে যতটা না প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন; তার চেয়ে বেশি ঘুরেছেন আদালতের বারান্দাতে। রিটার্নিং কর্মকর্তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপের অভিযোগ তুলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ কুমার রায়।
টানা চার ধাপে আদালতে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পান বাবুল। তবে স্বজন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ায় সর্বস্তরের মানুষ তাঁর পক্ষে মাঠে ছিলেন। তাঁর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিৎ রায়। রণজিতের অনিয়ম ও নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নের প্রভাবে বাবুলকে সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী করবে নেতা-কর্মীরা এমন আভাস মিলেছে। এ ছাড়া প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির লে. ক. (অব.) এম শাব্বির আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মণ্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী ও জাতীয় পার্টির (জাপা) জহুরুল হক। ইতিমধ্যে বর্তমান নির্বাচন পরিবেশের সমালোচনা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সুকৃতি কুমার মণ্ডল। তবে এ আসনে এবার ভোটের মাঠে জায়গা করে নিতে শক্ত লড়াইয়ে রয়েছেন জাপা প্রার্থী জহুরুল হক।
কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে প্রতিমন্ত্রী স্বপন
যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বর্তমানসহ পরপর দুবারের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এবারও নৌকা নিয়ে ভোটের ময়দানে থাকা এই বর্ষীয়ান নেতা দিন-রাত চষে বেড়িয়েছেন সংসদীয় আসনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সময়ে করা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা। আহ্বান জানিয়েছেন অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দিতে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি এস এম ইয়াকুব আলী বড় ফ্যাক্টর।
ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াকুব আলীও কম যাচ্ছেন না। ভোটারদের কাছে তিনি বলছেন, ‘শাসক নয়, সেবক হতে চাই।’ দীর্ঘ সময় নানা সেবামূলক কাজের মাধ্যমে মনিরামপুরের মানুষের কাছে এস এম ইয়াকুব আলী আগে থেকেই পরিচিত। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি নিজেকে আরও বেশি সক্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির এম এ হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা নুরুল্লাহ আব্বাসি এবং তৃণমূল বিএনপির মেজর বনিকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনাই শোনা যায়নি। তারপরও নিজ নিজ দলের সমালোচনা করে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির এম এ হালিম ও তৃণমূল বিএনপির বনি।
কী হবে কেশবপুরে
কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৬ আসন। এই আসনের বর্তমান এমপি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি এবারও এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন এবং পদত্যাগী জেলা পরিষদের সদস্য আজিজুল ইসলাম। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জি এম হাসান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি তেমন একটা আলোচনায় নেই। যশোর-৬ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে শাহীন চাকলাদারের নৌকার সঙ্গে আমির হোসেনের কাঁচি।
এই আসনের সাবেক এমপি ইসমাত আরা সাদেক দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। পরে তিনি প্রথমে গণশিক্ষা ও পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনোনয়ন লাভে তৎপর হলেও ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে শাহীন চাকলাদারের। দলীয় নেতা-কর্মীরা এককাট্টা হয়ে গত নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করতে মাঠে ছিলেন। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তা সহজে মেনে নিতে পারেনি দলের একটি বড় অংশ। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এইচ এম আমির হোসেন ও আজিজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছেন। তাতে জমে ওঠে যশোর-৬ আসনের নির্বাচন।
স্থানীয় এমপি চাই—এমন স্লোগান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠ চষলেও বিচলিত হননি শাহীন চাকলাদার। তিনিও সমানতালে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জোরালোভাবে। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি তিনি যশোর থেকেও নেতা-কর্মীদের তাঁর নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় করে তুলেছেন। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে এবার তিনি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যশোরের চারটি আসনে ভোটের মাঠকে উৎসবমুখর আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি বুথে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন এবং নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।

‘ভাগনে হালকা লিকার, চিনি কমায়ে একটা চা দাও।’ চা-দোকানিকে ফরমাশ জানিয়ে বাঁশের তৈরি বেঞ্চিতে বসে পড়লেন চল্লিশোর্ধ্ব এক ক্রেতা। বিড়বিড় করে তিনি আবার বললেন, ‘শীতে তো কাবু করে ফেলতেছে। কাল তো ভোট। কিডা যে পাস করবেনে। সবাই নৌকার লোক হইলেও এবার সব ভোট নৌকায় পড়বে না। অনেক হিসাব-নিকাশ হবেনে ভোটে।’ একটু দূরের বেঞ্চে নজরুল ইসলাম নামের এক যুবক বলে উঠলেন, ‘ভোটের মাঠে এবার খেলা জমবে। আগের মতো কেউ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারবে না। নৌকার সঙ্গে ঈগলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। যদি ইলেকশন ফেয়ার হয়, তাহলে মিরাকলও ঘটতে পারে। মনে হচ্ছে, এবারে নির্বাচন পুরো জমে যাবেনে।’
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ‘সাহেব আলী টি স্টোরে’ এভাবেই শুরু হয় নির্বাচনী আলোচনা। তাতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন। অবসরের এ আলোচনার ফাঁকে পৌষের কুয়াশা ভেদ করে মিষ্টি রোদ উঠে বেলা বাড়তে থাকে। সকাল গড়িয়ে রোদ চড়তে থাকে, তবু যেন নির্বাচনী আলোচনার শেষ নেই। চা আড্ডার মূল বিষয়, আগামীকাল রোববারের নির্বাচন। কারও মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুণগান, আবার কারও মুখে নৌকার সুনাম।
চায়ের দোকানে কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোর সদর-৩ আসনে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী টানা দুবারের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। উপজেলার আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ তাঁর সঙ্গে নেই। ফলে এবারের নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নাবিল।
নৌকার এই প্রার্থীকে এবার চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন নাবিলের প্রথম ও দ্বিতীয়বারের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। মোহিত একসময় যশোর জেলার রাজনীতিতে পরস্পরবিরোধী দুটি বলয়ের একটির নেতা এমপি কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গেই ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এখনো তিনি সে বলয়েই সক্রিয়।
দীর্ঘদিন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও মোহিতের ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি পরিচিতি রয়েছে। সেসব কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিজের ঈগল প্রতীকের সমর্থনে তিনি সঙ্গে পেয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানও তাঁর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঈগলের সমর্থন দেখে সাধারণ ভোটাররা ঈগলের জয়ই দেখছেন। তবে আবার এ আসনে নৌকা প্রতীক ফ্যাক্ট হতে পারে। অনেক ভোটার আবার প্রতীকেই মূল্যায়ন করছেন।
সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের মো. তৌহিদুজ্জামান, তূণমূল বিএনপি মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শেখ নুরুজ্জামানও লড়ছেন।
দেয়াড়া গ্রামের কৃষক ও মুদিদোকানি তোফায়েল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এখানে জমজমাট হবে। তবে সাধারণ ভোটার যাঁরা আছেন, তাঁদের মনে ভয়ও আছে। ভোট নিয়ে নৌকার সঙ্গে ঈগলের কোনো সংঘর্ষ হয় কি না, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত। কারণ, নৌকা কোনোভাবেই আসন হারাতে চাইবে না।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে ৩২ জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। এর মধ্যে যশোর-২ ও ৪ বাদে বাকি চারটি আসনে নৌকা বনাম স্বতন্ত্রের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।
হালি পূরণ করবেন আফিল, নাকি লিটনের প্রথম
যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ আফিল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন ও জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তবে আসনটিতে লড়াই হতে পারে নৌকার সঙ্গে ট্রাকের। নৌকার আফিলকে ছাড় দিতে নারাজ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র লিটন। ভোটাররা বলছেন, ‘আফিল টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। এর আগে মাত্র একবারই তাঁকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। নিজের প্রথম নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে মাত্র পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। এরপরের দুই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন সুস্পষ্ট ব্যবধানে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আক্তারুজ্জামান শুধু খাতা-কলমেই আছেন।’
এর আগে কয়েকটি নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন প্রায় একতরফা ভোট করার সুযোগ লাভ করলেও এবার ট্রাক প্রতীকের লিটন সেই সুযোগটি দিচ্ছেন না বলেই মনে করে শার্শাবাসী। অবশ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় অংশ শেখ আফিলের পক্ষে থেকে নিরলস কাজ করেছেন। লিটনের সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরাও চষে বেড়িয়েছেন মাঠঘাট।
নির্ভার তৌহিদুজ্জামান তুহিন?
ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলা নিয়ে যশোর-২ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হলেন ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান (সংবাদ সম্মেলন করে সম্প্রতি সরে দাঁড়িয়েছেন)। রাজনীতির মাঠে একেবারেই নতুন ডা. তুহিন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় জয়ের ব্যাপারে প্রথম দিকে কঠিন হলেও বর্তমানে নির্ভার তিনি। কেননা, দলীয় প্রতীকই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি সাবেক এমপি মনিরুলের বিপক্ষে বড় একটি অংশ নৌকাকে সমর্থন দেওয়া এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম হাবিব নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় তুহিনের জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে।
আসনটির অন্য তিনজন প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আব্দুল আওয়াল এবং বিএনএফের শামছুল হক ভোটারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। তৌহিদুজ্জামান তুহিনের এখন একমাত্র মাথাব্যথার কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনির। সে কারণে তিনি ভোটের মাঠে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি দলীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায়ও মনোনিবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। নির্বাচনী বক্তব্যেও বিষয়টির আভাস পাওয়া গেছে। নিয়ম মেনে রোগীর সেবা করা এই প্রার্থী এবার কোনো নিয়মের ঘেরাটোপে আর থাকতে পারছেন না। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই যেন তাঁর কাছে কাজের সময়ে পরিণত হয়েছে। ভুলে গেছেন নাওয়া-খাওয়া। ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
যশোর-৪ আসনে নিশ্চিত জয়ী নৌকার বাবুল
বাঘারপাড়া-অভয়নগর উপজেলা ও সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৪ আসন। এখানে ভোটের মাঠে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। যদিও এনামুল দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে যতটা না প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন; তার চেয়ে বেশি ঘুরেছেন আদালতের বারান্দাতে। রিটার্নিং কর্মকর্তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপের অভিযোগ তুলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ কুমার রায়।
টানা চার ধাপে আদালতে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পান বাবুল। তবে স্বজন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ায় সর্বস্তরের মানুষ তাঁর পক্ষে মাঠে ছিলেন। তাঁর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিৎ রায়। রণজিতের অনিয়ম ও নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নের প্রভাবে বাবুলকে সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী করবে নেতা-কর্মীরা এমন আভাস মিলেছে। এ ছাড়া প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির লে. ক. (অব.) এম শাব্বির আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মণ্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী ও জাতীয় পার্টির (জাপা) জহুরুল হক। ইতিমধ্যে বর্তমান নির্বাচন পরিবেশের সমালোচনা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সুকৃতি কুমার মণ্ডল। তবে এ আসনে এবার ভোটের মাঠে জায়গা করে নিতে শক্ত লড়াইয়ে রয়েছেন জাপা প্রার্থী জহুরুল হক।
কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে প্রতিমন্ত্রী স্বপন
যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বর্তমানসহ পরপর দুবারের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এবারও নৌকা নিয়ে ভোটের ময়দানে থাকা এই বর্ষীয়ান নেতা দিন-রাত চষে বেড়িয়েছেন সংসদীয় আসনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সময়ে করা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা। আহ্বান জানিয়েছেন অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দিতে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি এস এম ইয়াকুব আলী বড় ফ্যাক্টর।
ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াকুব আলীও কম যাচ্ছেন না। ভোটারদের কাছে তিনি বলছেন, ‘শাসক নয়, সেবক হতে চাই।’ দীর্ঘ সময় নানা সেবামূলক কাজের মাধ্যমে মনিরামপুরের মানুষের কাছে এস এম ইয়াকুব আলী আগে থেকেই পরিচিত। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি নিজেকে আরও বেশি সক্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির এম এ হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা নুরুল্লাহ আব্বাসি এবং তৃণমূল বিএনপির মেজর বনিকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনাই শোনা যায়নি। তারপরও নিজ নিজ দলের সমালোচনা করে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির এম এ হালিম ও তৃণমূল বিএনপির বনি।
কী হবে কেশবপুরে
কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৬ আসন। এই আসনের বর্তমান এমপি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি এবারও এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন এবং পদত্যাগী জেলা পরিষদের সদস্য আজিজুল ইসলাম। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জি এম হাসান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি তেমন একটা আলোচনায় নেই। যশোর-৬ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে শাহীন চাকলাদারের নৌকার সঙ্গে আমির হোসেনের কাঁচি।
এই আসনের সাবেক এমপি ইসমাত আরা সাদেক দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। পরে তিনি প্রথমে গণশিক্ষা ও পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনোনয়ন লাভে তৎপর হলেও ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে শাহীন চাকলাদারের। দলীয় নেতা-কর্মীরা এককাট্টা হয়ে গত নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করতে মাঠে ছিলেন। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তা সহজে মেনে নিতে পারেনি দলের একটি বড় অংশ। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এইচ এম আমির হোসেন ও আজিজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছেন। তাতে জমে ওঠে যশোর-৬ আসনের নির্বাচন।
স্থানীয় এমপি চাই—এমন স্লোগান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠ চষলেও বিচলিত হননি শাহীন চাকলাদার। তিনিও সমানতালে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জোরালোভাবে। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি তিনি যশোর থেকেও নেতা-কর্মীদের তাঁর নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় করে তুলেছেন। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে এবার তিনি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যশোরের চারটি আসনে ভোটের মাঠকে উৎসবমুখর আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি বুথে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন এবং নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।
জাহিদ হাসান, যশোর

‘ভাগনে হালকা লিকার, চিনি কমায়ে একটা চা দাও।’ চা-দোকানিকে ফরমাশ জানিয়ে বাঁশের তৈরি বেঞ্চিতে বসে পড়লেন চল্লিশোর্ধ্ব এক ক্রেতা। বিড়বিড় করে তিনি আবার বললেন, ‘শীতে তো কাবু করে ফেলতেছে। কাল তো ভোট। কিডা যে পাস করবেনে। সবাই নৌকার লোক হইলেও এবার সব ভোট নৌকায় পড়বে না। অনেক হিসাব-নিকাশ হবেনে ভোটে।’ একটু দূরের বেঞ্চে নজরুল ইসলাম নামের এক যুবক বলে উঠলেন, ‘ভোটের মাঠে এবার খেলা জমবে। আগের মতো কেউ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারবে না। নৌকার সঙ্গে ঈগলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। যদি ইলেকশন ফেয়ার হয়, তাহলে মিরাকলও ঘটতে পারে। মনে হচ্ছে, এবারে নির্বাচন পুরো জমে যাবেনে।’
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ‘সাহেব আলী টি স্টোরে’ এভাবেই শুরু হয় নির্বাচনী আলোচনা। তাতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন। অবসরের এ আলোচনার ফাঁকে পৌষের কুয়াশা ভেদ করে মিষ্টি রোদ উঠে বেলা বাড়তে থাকে। সকাল গড়িয়ে রোদ চড়তে থাকে, তবু যেন নির্বাচনী আলোচনার শেষ নেই। চা আড্ডার মূল বিষয়, আগামীকাল রোববারের নির্বাচন। কারও মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুণগান, আবার কারও মুখে নৌকার সুনাম।
চায়ের দোকানে কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোর সদর-৩ আসনে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী টানা দুবারের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। উপজেলার আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ তাঁর সঙ্গে নেই। ফলে এবারের নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নাবিল।
নৌকার এই প্রার্থীকে এবার চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন নাবিলের প্রথম ও দ্বিতীয়বারের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। মোহিত একসময় যশোর জেলার রাজনীতিতে পরস্পরবিরোধী দুটি বলয়ের একটির নেতা এমপি কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গেই ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এখনো তিনি সে বলয়েই সক্রিয়।
দীর্ঘদিন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও মোহিতের ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি পরিচিতি রয়েছে। সেসব কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিজের ঈগল প্রতীকের সমর্থনে তিনি সঙ্গে পেয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানও তাঁর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঈগলের সমর্থন দেখে সাধারণ ভোটাররা ঈগলের জয়ই দেখছেন। তবে আবার এ আসনে নৌকা প্রতীক ফ্যাক্ট হতে পারে। অনেক ভোটার আবার প্রতীকেই মূল্যায়ন করছেন।
সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের মো. তৌহিদুজ্জামান, তূণমূল বিএনপি মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শেখ নুরুজ্জামানও লড়ছেন।
দেয়াড়া গ্রামের কৃষক ও মুদিদোকানি তোফায়েল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এখানে জমজমাট হবে। তবে সাধারণ ভোটার যাঁরা আছেন, তাঁদের মনে ভয়ও আছে। ভোট নিয়ে নৌকার সঙ্গে ঈগলের কোনো সংঘর্ষ হয় কি না, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত। কারণ, নৌকা কোনোভাবেই আসন হারাতে চাইবে না।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে ৩২ জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। এর মধ্যে যশোর-২ ও ৪ বাদে বাকি চারটি আসনে নৌকা বনাম স্বতন্ত্রের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।
হালি পূরণ করবেন আফিল, নাকি লিটনের প্রথম
যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ আফিল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন ও জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তবে আসনটিতে লড়াই হতে পারে নৌকার সঙ্গে ট্রাকের। নৌকার আফিলকে ছাড় দিতে নারাজ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র লিটন। ভোটাররা বলছেন, ‘আফিল টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। এর আগে মাত্র একবারই তাঁকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। নিজের প্রথম নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে মাত্র পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। এরপরের দুই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন সুস্পষ্ট ব্যবধানে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আক্তারুজ্জামান শুধু খাতা-কলমেই আছেন।’
এর আগে কয়েকটি নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন প্রায় একতরফা ভোট করার সুযোগ লাভ করলেও এবার ট্রাক প্রতীকের লিটন সেই সুযোগটি দিচ্ছেন না বলেই মনে করে শার্শাবাসী। অবশ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় অংশ শেখ আফিলের পক্ষে থেকে নিরলস কাজ করেছেন। লিটনের সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরাও চষে বেড়িয়েছেন মাঠঘাট।
নির্ভার তৌহিদুজ্জামান তুহিন?
ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলা নিয়ে যশোর-২ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হলেন ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান (সংবাদ সম্মেলন করে সম্প্রতি সরে দাঁড়িয়েছেন)। রাজনীতির মাঠে একেবারেই নতুন ডা. তুহিন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় জয়ের ব্যাপারে প্রথম দিকে কঠিন হলেও বর্তমানে নির্ভার তিনি। কেননা, দলীয় প্রতীকই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি সাবেক এমপি মনিরুলের বিপক্ষে বড় একটি অংশ নৌকাকে সমর্থন দেওয়া এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম হাবিব নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় তুহিনের জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে।
আসনটির অন্য তিনজন প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আব্দুল আওয়াল এবং বিএনএফের শামছুল হক ভোটারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। তৌহিদুজ্জামান তুহিনের এখন একমাত্র মাথাব্যথার কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনির। সে কারণে তিনি ভোটের মাঠে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি দলীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায়ও মনোনিবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। নির্বাচনী বক্তব্যেও বিষয়টির আভাস পাওয়া গেছে। নিয়ম মেনে রোগীর সেবা করা এই প্রার্থী এবার কোনো নিয়মের ঘেরাটোপে আর থাকতে পারছেন না। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই যেন তাঁর কাছে কাজের সময়ে পরিণত হয়েছে। ভুলে গেছেন নাওয়া-খাওয়া। ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
যশোর-৪ আসনে নিশ্চিত জয়ী নৌকার বাবুল
বাঘারপাড়া-অভয়নগর উপজেলা ও সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৪ আসন। এখানে ভোটের মাঠে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। যদিও এনামুল দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে যতটা না প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন; তার চেয়ে বেশি ঘুরেছেন আদালতের বারান্দাতে। রিটার্নিং কর্মকর্তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপের অভিযোগ তুলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ কুমার রায়।
টানা চার ধাপে আদালতে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পান বাবুল। তবে স্বজন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ায় সর্বস্তরের মানুষ তাঁর পক্ষে মাঠে ছিলেন। তাঁর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিৎ রায়। রণজিতের অনিয়ম ও নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নের প্রভাবে বাবুলকে সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী করবে নেতা-কর্মীরা এমন আভাস মিলেছে। এ ছাড়া প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির লে. ক. (অব.) এম শাব্বির আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মণ্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী ও জাতীয় পার্টির (জাপা) জহুরুল হক। ইতিমধ্যে বর্তমান নির্বাচন পরিবেশের সমালোচনা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সুকৃতি কুমার মণ্ডল। তবে এ আসনে এবার ভোটের মাঠে জায়গা করে নিতে শক্ত লড়াইয়ে রয়েছেন জাপা প্রার্থী জহুরুল হক।
কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে প্রতিমন্ত্রী স্বপন
যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বর্তমানসহ পরপর দুবারের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এবারও নৌকা নিয়ে ভোটের ময়দানে থাকা এই বর্ষীয়ান নেতা দিন-রাত চষে বেড়িয়েছেন সংসদীয় আসনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সময়ে করা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা। আহ্বান জানিয়েছেন অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দিতে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি এস এম ইয়াকুব আলী বড় ফ্যাক্টর।
ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াকুব আলীও কম যাচ্ছেন না। ভোটারদের কাছে তিনি বলছেন, ‘শাসক নয়, সেবক হতে চাই।’ দীর্ঘ সময় নানা সেবামূলক কাজের মাধ্যমে মনিরামপুরের মানুষের কাছে এস এম ইয়াকুব আলী আগে থেকেই পরিচিত। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি নিজেকে আরও বেশি সক্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির এম এ হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা নুরুল্লাহ আব্বাসি এবং তৃণমূল বিএনপির মেজর বনিকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনাই শোনা যায়নি। তারপরও নিজ নিজ দলের সমালোচনা করে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির এম এ হালিম ও তৃণমূল বিএনপির বনি।
কী হবে কেশবপুরে
কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৬ আসন। এই আসনের বর্তমান এমপি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি এবারও এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন এবং পদত্যাগী জেলা পরিষদের সদস্য আজিজুল ইসলাম। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জি এম হাসান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি তেমন একটা আলোচনায় নেই। যশোর-৬ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে শাহীন চাকলাদারের নৌকার সঙ্গে আমির হোসেনের কাঁচি।
এই আসনের সাবেক এমপি ইসমাত আরা সাদেক দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। পরে তিনি প্রথমে গণশিক্ষা ও পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনোনয়ন লাভে তৎপর হলেও ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে শাহীন চাকলাদারের। দলীয় নেতা-কর্মীরা এককাট্টা হয়ে গত নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করতে মাঠে ছিলেন। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তা সহজে মেনে নিতে পারেনি দলের একটি বড় অংশ। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এইচ এম আমির হোসেন ও আজিজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছেন। তাতে জমে ওঠে যশোর-৬ আসনের নির্বাচন।
স্থানীয় এমপি চাই—এমন স্লোগান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠ চষলেও বিচলিত হননি শাহীন চাকলাদার। তিনিও সমানতালে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জোরালোভাবে। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি তিনি যশোর থেকেও নেতা-কর্মীদের তাঁর নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় করে তুলেছেন। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে এবার তিনি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যশোরের চারটি আসনে ভোটের মাঠকে উৎসবমুখর আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি বুথে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন এবং নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।

‘ভাগনে হালকা লিকার, চিনি কমায়ে একটা চা দাও।’ চা-দোকানিকে ফরমাশ জানিয়ে বাঁশের তৈরি বেঞ্চিতে বসে পড়লেন চল্লিশোর্ধ্ব এক ক্রেতা। বিড়বিড় করে তিনি আবার বললেন, ‘শীতে তো কাবু করে ফেলতেছে। কাল তো ভোট। কিডা যে পাস করবেনে। সবাই নৌকার লোক হইলেও এবার সব ভোট নৌকায় পড়বে না। অনেক হিসাব-নিকাশ হবেনে ভোটে।’ একটু দূরের বেঞ্চে নজরুল ইসলাম নামের এক যুবক বলে উঠলেন, ‘ভোটের মাঠে এবার খেলা জমবে। আগের মতো কেউ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে পারবে না। নৌকার সঙ্গে ঈগলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে প্রতিটি কেন্দ্রে। যদি ইলেকশন ফেয়ার হয়, তাহলে মিরাকলও ঘটতে পারে। মনে হচ্ছে, এবারে নির্বাচন পুরো জমে যাবেনে।’
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের ‘সাহেব আলী টি স্টোরে’ এভাবেই শুরু হয় নির্বাচনী আলোচনা। তাতে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকজন। অবসরের এ আলোচনার ফাঁকে পৌষের কুয়াশা ভেদ করে মিষ্টি রোদ উঠে বেলা বাড়তে থাকে। সকাল গড়িয়ে রোদ চড়তে থাকে, তবু যেন নির্বাচনী আলোচনার শেষ নেই। চা আড্ডার মূল বিষয়, আগামীকাল রোববারের নির্বাচন। কারও মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থীর গুণগান, আবার কারও মুখে নৌকার সুনাম।
চায়ের দোকানে কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোর সদর-৩ আসনে ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী টানা দুবারের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। উপজেলার আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ তাঁর সঙ্গে নেই। ফলে এবারের নির্বাচনে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন নাবিল।
নৌকার এই প্রার্থীকে এবার চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন নাবিলের প্রথম ও দ্বিতীয়বারের নির্বাচনী প্রধান সমন্বয়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। মোহিত একসময় যশোর জেলার রাজনীতিতে পরস্পরবিরোধী দুটি বলয়ের একটির নেতা এমপি কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গেই ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এখনো তিনি সে বলয়েই সক্রিয়।
দীর্ঘদিন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবেও মোহিতের ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি পরিচিতি রয়েছে। সেসব কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী ময়দান চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিজের ঈগল প্রতীকের সমর্থনে তিনি সঙ্গে পেয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানও তাঁর সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঈগলের সমর্থন দেখে সাধারণ ভোটাররা ঈগলের জয়ই দেখছেন। তবে আবার এ আসনে নৌকা প্রতীক ফ্যাক্ট হতে পারে। অনেক ভোটার আবার প্রতীকেই মূল্যায়ন করছেন।
সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের মো. তৌহিদুজ্জামান, তূণমূল বিএনপি মো. কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শেখ নুরুজ্জামানও লড়ছেন।
দেয়াড়া গ্রামের কৃষক ও মুদিদোকানি তোফায়েল হোসেনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এখানে জমজমাট হবে। তবে সাধারণ ভোটার যাঁরা আছেন, তাঁদের মনে ভয়ও আছে। ভোট নিয়ে নৌকার সঙ্গে ঈগলের কোনো সংঘর্ষ হয় কি না, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত। কারণ, নৌকা কোনোভাবেই আসন হারাতে চাইবে না।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে ৩২ জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। এর মধ্যে যশোর-২ ও ৪ বাদে বাকি চারটি আসনে নৌকা বনাম স্বতন্ত্রের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।
হালি পূরণ করবেন আফিল, নাকি লিটনের প্রথম
যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ আফিল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটন ও জাতীয় পার্টির আক্তারুজ্জামান ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তবে আসনটিতে লড়াই হতে পারে নৌকার সঙ্গে ট্রাকের। নৌকার আফিলকে ছাড় দিতে নারাজ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র লিটন। ভোটাররা বলছেন, ‘আফিল টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। এর আগে মাত্র একবারই তাঁকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। নিজের প্রথম নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে মাত্র পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন। এরপরের দুই নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেছেন সুস্পষ্ট ব্যবধানে। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল আলম লিটন। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আক্তারুজ্জামান শুধু খাতা-কলমেই আছেন।’
এর আগে কয়েকটি নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন প্রায় একতরফা ভোট করার সুযোগ লাভ করলেও এবার ট্রাক প্রতীকের লিটন সেই সুযোগটি দিচ্ছেন না বলেই মনে করে শার্শাবাসী। অবশ্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের বড় অংশ শেখ আফিলের পক্ষে থেকে নিরলস কাজ করেছেন। লিটনের সঙ্গে যাঁরা আছেন, তাঁরাও চষে বেড়িয়েছেন মাঠঘাট।
নির্ভার তৌহিদুজ্জামান তুহিন?
ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলা নিয়ে যশোর-২ আসন। এই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হলেন ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম হাবিবুর রহমান (সংবাদ সম্মেলন করে সম্প্রতি সরে দাঁড়িয়েছেন)। রাজনীতির মাঠে একেবারেই নতুন ডা. তুহিন দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় জয়ের ব্যাপারে প্রথম দিকে কঠিন হলেও বর্তমানে নির্ভার তিনি। কেননা, দলীয় প্রতীকই তাঁর বিজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি সাবেক এমপি মনিরুলের বিপক্ষে বড় একটি অংশ নৌকাকে সমর্থন দেওয়া এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম হাবিব নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় তুহিনের জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে।
আসনটির অন্য তিনজন প্রার্থী জাতীয় পার্টির ফিরোজ শাহ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আব্দুল আওয়াল এবং বিএনএফের শামছুল হক ভোটারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেননি। তৌহিদুজ্জামান তুহিনের এখন একমাত্র মাথাব্যথার কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনির। সে কারণে তিনি ভোটের মাঠে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি দলীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠায়ও মনোনিবেশ করতে বাধ্য হচ্ছেন। নির্বাচনী বক্তব্যেও বিষয়টির আভাস পাওয়া গেছে। নিয়ম মেনে রোগীর সেবা করা এই প্রার্থী এবার কোনো নিয়মের ঘেরাটোপে আর থাকতে পারছেন না। প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই যেন তাঁর কাছে কাজের সময়ে পরিণত হয়েছে। ভুলে গেছেন নাওয়া-খাওয়া। ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে।
যশোর-৪ আসনে নিশ্চিত জয়ী নৌকার বাবুল
বাঘারপাড়া-অভয়নগর উপজেলা ও সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন নিয়ে যশোর-৪ আসন। এখানে ভোটের মাঠে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। যদিও এনামুল দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে যতটা না প্রচারণায় ব্যস্ত ছিলেন; তার চেয়ে বেশি ঘুরেছেন আদালতের বারান্দাতে। রিটার্নিং কর্মকর্তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হকের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপের অভিযোগ তুলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী সুকৃতি কুমার মণ্ডল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রণজিৎ কুমার রায়।
টানা চার ধাপে আদালতে আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পান বাবুল। তবে স্বজন ও ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত হওয়ায় সর্বস্তরের মানুষ তাঁর পক্ষে মাঠে ছিলেন। তাঁর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিৎ রায়। রণজিতের অনিয়ম ও নেতা-কর্মীদের অবমূল্যায়নের প্রভাবে বাবুলকে সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী করবে নেতা-কর্মীরা এমন আভাস মিলেছে। এ ছাড়া প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির লে. ক. (অব.) এম শাব্বির আহমেদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মণ্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী ও জাতীয় পার্টির (জাপা) জহুরুল হক। ইতিমধ্যে বর্তমান নির্বাচন পরিবেশের সমালোচনা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সুকৃতি কুমার মণ্ডল। তবে এ আসনে এবার ভোটের মাঠে জায়গা করে নিতে শক্ত লড়াইয়ে রয়েছেন জাপা প্রার্থী জহুরুল হক।
কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে প্রতিমন্ত্রী স্বপন
যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বর্তমানসহ পরপর দুবারের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। এবারও নৌকা নিয়ে ভোটের ময়দানে থাকা এই বর্ষীয়ান নেতা দিন-রাত চষে বেড়িয়েছেন সংসদীয় আসনের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। ভোটারদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সময়ে করা কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা। আহ্বান জানিয়েছেন অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সমাপ্ত করার সুযোগ দিতে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি এস এম ইয়াকুব আলী বড় ফ্যাক্টর।
ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াকুব আলীও কম যাচ্ছেন না। ভোটারদের কাছে তিনি বলছেন, ‘শাসক নয়, সেবক হতে চাই।’ দীর্ঘ সময় নানা সেবামূলক কাজের মাধ্যমে মনিরামপুরের মানুষের কাছে এস এম ইয়াকুব আলী আগে থেকেই পরিচিত। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি নিজেকে আরও বেশি সক্রিয় পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। এই আসনে জাতীয় পার্টির এম এ হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা নুরুল্লাহ আব্বাসি এবং তৃণমূল বিএনপির মেজর বনিকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে তেমন কোনো আলোচনাই শোনা যায়নি। তারপরও নিজ নিজ দলের সমালোচনা করে শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির এম এ হালিম ও তৃণমূল বিএনপির বনি।
কী হবে কেশবপুরে
কেশবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত যশোর-৬ আসন। এই আসনের বর্তমান এমপি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি এবারও এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আমির হোসেন এবং পদত্যাগী জেলা পরিষদের সদস্য আজিজুল ইসলাম। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে জি এম হাসান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তিনি তেমন একটা আলোচনায় নেই। যশোর-৬ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে শাহীন চাকলাদারের নৌকার সঙ্গে আমির হোসেনের কাঁচি।
এই আসনের সাবেক এমপি ইসমাত আরা সাদেক দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। পরে তিনি প্রথমে গণশিক্ষা ও পরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। ইসমাত আরা সাদেকের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মনোনয়ন লাভে তৎপর হলেও ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে শাহীন চাকলাদারের। দলীয় নেতা-কর্মীরা এককাট্টা হয়ে গত নির্বাচনে তাঁকে জয়ী করতে মাঠে ছিলেন। এবার তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তা সহজে মেনে নিতে পারেনি দলের একটি বড় অংশ। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এইচ এম আমির হোসেন ও আজিজুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছেন। তাতে জমে ওঠে যশোর-৬ আসনের নির্বাচন।
স্থানীয় এমপি চাই—এমন স্লোগান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠ চষলেও বিচলিত হননি শাহীন চাকলাদার। তিনিও সমানতালে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জোরালোভাবে। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি তিনি যশোর থেকেও নেতা-কর্মীদের তাঁর নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় করে তুলেছেন। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে এবার তিনি দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যশোরের চারটি আসনে ভোটের মাঠকে উৎসবমুখর আর প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি বুথে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন এবং নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।

পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
১১ মিনিট আগে
বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।
৩৩ মিনিট আগে
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
৪৪ মিনিট আগে
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি প্রতিযোগীদের হাতে ইয়েস কার্ড, ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেন। এ সময় মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘পিএইচপির আয়োজনে ‘‘পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিভার সন্ধানে’’ প্রতিযোগিতা। বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়াতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রমজান মাস ধরে আমাদের আয়োজকেরা হাফেজে কোরআনদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। গত ১৭ বছর ধরে চলে আসা এই অনুষ্ঠান দেশে ধারাবাহিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’
কোরআনের আলো অনুষ্ঠানকে চলমান রাখার ঘোষণা দিয়ে মোহাম্মদ মহসিন বলেন, পিএইচপি কেয়ামত পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে থাকবে। তিনি বলেন, যারা কুফরি করে এবং মানুষকে সত্যের পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে, আল্লাহ তাদের দুনিয়ায় শাস্তি দেবেন এবং আখিরাতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন—এটিই হচ্ছে মহান আল্লাহর ঘোষণা। প্রত্যেকের জীবনকে পবিত্র কোরআনের আলোয় জীবন গঠন করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান পরিচালক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘সারা দেশের হাজার হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাই করে টিভি অনুষ্ঠানের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। সেখান থেকে মাত্র চারজনকে বাছাই করা অনেক কঠিন কাজ। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা পৌঁছাই।’ অডিশনে উপস্থিত ছিলেন কোরআনের আলো ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মুফতি মোহম্মদ মহিউদ্দিন, অর্থ সচিব হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া, ক্বারী মাওলানা জহিরুল ইসলাম, হাফেজ আবদুল্লাহ আল জায়েদ, পিএইচপি পরিবারের মিডিয়া অ্যাডভাইজার দিলশাদ আহমেদসহ পিএইচপি পরিবার ও আয়োজকেরা।

পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি প্রতিযোগীদের হাতে ইয়েস কার্ড, ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেন। এ সময় মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘পিএইচপির আয়োজনে ‘‘পিএইচপি কোরআনের আলো প্রতিভার সন্ধানে’’ প্রতিযোগিতা। বিশ্বজুড়ে কোরআনের আলো ছড়াতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। রমজান মাস ধরে আমাদের আয়োজকেরা হাফেজে কোরআনদের নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। গত ১৭ বছর ধরে চলে আসা এই অনুষ্ঠান দেশে ধারাবাহিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।’
কোরআনের আলো অনুষ্ঠানকে চলমান রাখার ঘোষণা দিয়ে মোহাম্মদ মহসিন বলেন, পিএইচপি কেয়ামত পর্যন্ত এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে থাকবে। তিনি বলেন, যারা কুফরি করে এবং মানুষকে সত্যের পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে, আল্লাহ তাদের দুনিয়ায় শাস্তি দেবেন এবং আখিরাতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন—এটিই হচ্ছে মহান আল্লাহর ঘোষণা। প্রত্যেকের জীবনকে পবিত্র কোরআনের আলোয় জীবন গঠন করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির অনুষ্ঠান পরিচালক সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘সারা দেশের হাজার হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাই করে টিভি অনুষ্ঠানের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। সেখান থেকে মাত্র চারজনকে বাছাই করা অনেক কঠিন কাজ। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে চূড়ান্ত পর্যায়ে আমরা পৌঁছাই।’ অডিশনে উপস্থিত ছিলেন কোরআনের আলো ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মুফতি মোহম্মদ মহিউদ্দিন, অর্থ সচিব হাফেজ মোহাম্মদ জাকারিয়া, ক্বারী মাওলানা জহিরুল ইসলাম, হাফেজ আবদুল্লাহ আল জায়েদ, পিএইচপি পরিবারের মিডিয়া অ্যাডভাইজার দিলশাদ আহমেদসহ পিএইচপি পরিবার ও আয়োজকেরা।

সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন, তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।
৩৩ মিনিট আগে
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
৪৪ মিনিট আগে
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেমাদারীপুর প্রতিনিধি

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।
লাভলু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধের কারণে এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকেরা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর অংশে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় পর সড়ক অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।
লাভলু জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চর গোলচত্বরে তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধের কারণে এক্সপ্রেসওয়ের উভয় পাশে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর সমর্থকেরা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শিবচর অংশে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ সময় পর সড়ক অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন, তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
১১ মিনিট আগে
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
৪৪ মিনিট আগে
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেকুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী কান্দিরপাড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দলীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন।
ময়নামতি হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার মজুমদার রাত পৌনে ১২টার দিকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হাজী ইয়াছিনের সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলছি। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বলে তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছি।’

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, পাড়া-মহল্লা থেকে হাজারো নেতা-কর্মী কান্দিরপাড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেন।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দলীয় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানান এবং প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন।
ময়নামতি হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বাহার মজুমদার রাত পৌনে ১২টার দিকে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নবঞ্চিত হাজী ইয়াছিনের সমর্থকেরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। এতে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলছি। যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা বলে তাঁদের মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করছি।’

সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন, তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
১১ মিনিট আগে
বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।
৩৩ মিনিট আগে
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
২ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নেন সোহরাব সমর্থকেরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।
এ ছাড়াও সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন।
এ সময় তাঁরা বলেন, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে আবার মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এর আগে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।
এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।
জানতে চাইলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সদ্য সদর আসনের মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর গেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নেন সোহরাব সমর্থকেরা। এ সময় তাঁরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।
এ ছাড়াও সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষ্মীপুর এলাকায় আগুন জ্বালিয়ে সমর্থকেরা বিক্ষোভ করেছেন।
এ সময় তাঁরা বলেন, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিনকে আবার মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এর আগে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। কুষ্টিয়ার চারটি আসনে সম্ভাব্য চূড়ান্ত প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।
এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।
জানতে চাইলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সদ্য সদর আসনের মনোনীত প্রার্থী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

সব মিলিয়ে কাজী নাবিল আহমেদ এবার যে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়েছেন, তা তাঁর নির্বাচনী প্রক্রিয়াই বলে দিচ্ছে। তিনিও ছুটেছেন দিন-রাত। গিয়েছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এই আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মারুফ হাসান কাজল, জাতীয় পার্টির মাহবুব আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সুমন কুমার রায়, খেলাফত আন্দোলনের
০৬ জানুয়ারি ২০২৪
পিএইচপি ফ্যামিলির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহসিন বলেছেন, পিএইচপি কোরআনের আলো বিশ্বজুড়ে আলো ছড়াচ্ছে। আজ সোমবার (৩ নভেম্বর) জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে দিনব্যাপী পিএইচপি কোরআনের আলো চট্টগ্রাম বিভাগের অডিশন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
১১ মিনিট আগে
বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন ওরফে লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা।
৩৩ মিনিট আগে
রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্দিরপাড়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পর বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আলেখারচর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
৪৪ মিনিট আগে