Ajker Patrika

অভয়নগর বন্দরে শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

প্রতিনিধি, অভয়নগর (যশোর)
অভয়নগর বন্দরে শ্রমিকদের মানবেতর জীবন

শিল্প, বাণিজ্য ও বন্দর নগরী খ্যাত অভয়নগরের নওয়াপাড়া। এখানে নৌ, সড়ক ও রেলপথের সুন্দর যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় ব্যবসা বান্ধব শহর হিসেবে গড়ে উঠেছে নওয়াপাড়া। সারা দেশের অন্যতম ব্যবসায়ী মোকাম হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারিতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মহীন হয়ে পড়েছে বন্দর শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবকিছু বন্ধ থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন অভয়নগর বন্দরের শ্রমিকেরা। অনেকেই কাজ পাওয়ার আশা নিয়ে বসে আছেন। এ ছাড়া ব্যবসায়িক সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকায় স্থবির অবস্থায় পড়ে আছে পুরো নওয়াপাড়া এলাকা। 

নওয়াপাড়া বন্দরের শ্রমিক নেতারা বলেছেন, সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারণে নৌ-বন্দরের সকল ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ফলে বন্দরের নৌযানসহ সকল সেক্টরের শ্রমিকেরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এতে করে পরিবার পরিজন নিয়ে শ্রমিকেরা অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। 

উপজেলার শংকরপাশা গ্রামের ঘাট শ্রমিক নওশের আলী শেখ বলেন, ‘দেশে লকডাউন হওয়ায় বাজারে সব ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। এর ফলে নদীতে কোন জাহাজ লোড-আনলোড হচ্ছে না। গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়িতে বসে আছি। কীভাবে সংসার চলবে ভেবে পাচ্ছি না।' 

লকডাউনে সবকিছু বন্ধ থাকায় অনেকটা ফাঁকা অভয়নগর বন্দরউপজেলার ধোপাদি গ্রামের আছর মোল্যা বলেন, `আমি দিন আনি দিন খাই। বাড়িতে দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্ত্রী মিলে পাঁচজনের সংসার। লকডাউনের কারণে কোন কাজ না থাকায় বাড়িতে বসে আছি। সরকারিভাবে কোন সহযোগিতাও পাইনি। এবার হয়তো না খেয়ে মারা যেতে হবে।' 

এই বিষয়ে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা নিয়ামুল হক রিকো বলেন, অভয়নগরসহ আশপাশের উপজেলার হতদরিদ্র নিম্ন আয়ের প্রায় ২০ হাজার পুরুষ ও নারী শ্রমিক জীবিকার তাগিদে এ বন্দরে কাজ করেন। চলমান লকডাউনে নৌ-বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছেন। 

নওয়াপাড়া হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফাল্গুন মন্ডল বলেন, `চলমান লকডাউনে স্বল্প পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষি কাজে ব্যবহৃত পণ্য লোড-আনলোড করা হচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ শ্রমিক বেকার অবস্থায় বাড়িতে বসে আছে। কিন্তু এই পর্যন্ত সরকার পক্ষ থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা পাওয়া যাইনি।' 

যশোর জেলা ট্রাক ট্যাংকলরি কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রবিন অধিকারী ব্যাচা বলেন, `আমাদের ইউনিয়নে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক জীবিকার তাগিদে এ বন্দরে কাজ করে থাকেন। অথচ লকডাউনের কারণে পণ্য লোড-আনলোড কার্যক্রম এখন বন্ধ। এতে করে অভয়নগরে পরিবহন খাতের শ্রমিকরাও বেকার হয়ে পড়েছে।' এ ছাড়া তিনি শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা রক্ষায় করোনা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুর রহমান বলেন, `অভয়নগর উপজেলায় খাবারের অভাবে কেউ অভুক্ত থাকবে না। কারওর খাবারের প্রয়োজন হলে আমাদের জানালে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেবে উপজেলা প্রশাসন।' 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

নির্দেশনা মানেননি পাইলট, মদিনা-ঢাকা ফ্লাইটকে নামতে হলো সিলেটে

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত