সাকিবের পক্ষে আনন্দমিছিল করায় আ. লীগ নেতাকে হাতুড়িপেটা করার অভিযোগ

মাগুরা শ্রীপুর উপজেলায় ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সমর্থনে আনন্দ মিছিল করায় এক আওয়ামী লীগ নেতার ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার লাঙ্গলবাঁধ বাজারে এ হামলা হয়। আহত গোলাম মোরশেদ টুকু (৪৫) গয়েশপুর ইউনিয়নের বড় উদাস গ্রামের কেরামত আলীর ছেলে ও গয়েশপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম–সাধারণ সম্পাদক।

আহত এ আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমানে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে সন্ধ্যার দিকে শ্রীপুর থেকে এনে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হালিম টুকু ভাইকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন। টুকু সামনেরবার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন, সেই আশঙ্কায় আনন্দ মিছিলের অজুহাতে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাকিব আল হাসান মনোনয়ন পেলে গত ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় আনন্দ মিছিল করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোরশেদ টুকু। এ সময় তাঁর নেতৃত্বে গয়েশপুর ইউনিয়নের ১,২, ৩ নং ওয়ার্ডে আনন্দ মিছিল হয়। মিছিল করার কারণে পরে হালিম চেয়ারম্যানের অনুসারীরা টুকুকে হুমকি দেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হালিম বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছি। এলাকা থেকে ফোনে আমাকে জানিয়েছে, আমাদের ছেলেপেলে নাকি টুকুর ওপরে হামলা করেছে। অবশ্যই এটা অপরাধ। আইনিভাবে এর বিচার করা হবে।’

আহত আওয়ামী লীগ নেতা টুকু সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছেন চেয়ারম্যানের সমর্থক গ্রুপের প্রায় ৮ / ১০ জন। তিনি মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিকদের বলেন, শ্রীপুর লাঙ্গলবাঁধ বাজার এলাকার কৃষি ব্যাংক থেকে বের হলে তাঁর ওপর হামলা হয়। হামলাকারীরা তাঁর ডান এবং বাম পায়ে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে। ঘাড়ে ও পিঠে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। ডান পায়ে কুড়াল দিয়ে আঘাত করেছে তারা।

তবে চেয়ারম্যানের অভিযুক্ত সমর্থকেরা বলছেন, আওয়ামী লীগ নেতার টুকুর এ অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। তাঁরা বলছেন মিছিলের জন্য নয়, অন্য কোনো কারণে বিরোধ থাকতে পারে।

এ প্রসঙ্গে শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম বলেন, ‘টুকুর ওপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা রয়েছে। অবশ্যই এদের আইনি আওতায় আনা উচিত।’

শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি শুনেছি তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে এবং সে মাগুরা সদর হাসপাতালে আছে।’

টুকুর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে মাগুরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক কৃষ্ণ দাস বিশ্বাস বলেন, ‘তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। কয়েকটি পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, ‘শুনেছি দুর্বৃত্তরা টুকু নামের এক ব্যক্তির ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’