Ajker Patrika

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে জমি অধিগ্রহণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ

খুবি প্রতিনিধি 
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) প্রস্তাবিত ২০৩ একর জমি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মৎস্য খামার ব্যবস্থাপকের কার্যালয় অধিগ্রহণে প্রশাসনের উদাসীনতা ও দীর্ঘসূত্রতার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

এ সময় আগামী সাত দিনের ভেতর জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে, এমন ঘোষণা না আসলে মৎস্য খামার ভেঙে ফেলার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জহুরুল তানভীর বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পাশাপাশি বড়, সুন্দর আবাসন থাকা দরকার। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবগুলোর কোনো বসার জায়গা নেই। বহিরাগতরা আসলে নিজেদের মনে হয় আমরা বহিরাগত। নতুন ডিসিপ্লিনগুলোতে কোনো আদর্শ ক্লাস রুম, চেয়ার-টেবিল নেই। বিগত দিনে দেখেছি অনেক প্রকল্প করতে অনেক বছর সময় নিয়েছে কিন্তু সেখানে কালজয়ী মুজিবের ম্যুরাল তৈরি করতে মাত্র চার দিন সময় নিয়েছে। তাই বলতে চায় প্রশাসন চাইলে সবকিছু পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণ একটি জরুরি বিষয় সেখানে প্রশাসন যদি আগামী সাত দিনের ভেতর এর ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হলে আমরা মৎস্য খামার ভেঙে ফেলব।’

মানববন্ধনে উপস্থিত চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আয়মান আহাদ বলেন, ‘বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দেশে বিদেশে অনেক সুনাম অর্জন করছে এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন র‍্যাঙ্কিংয়ে স্থান পাচ্ছে। কিন্তু দেশের মধ্যে অন্যতম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়তন অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে নতুন করে আর কোনো ভবন নির্মাণ করারও জায়গা নেই। অনেক ডিসিপ্লিনের গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত ফিল্ড নেই। এমতাবস্থায় প্রস্তাবিত ২০৩ একর জমি অধিগ্রহণ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন আর সম্ভব না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী সাজ্জাদ ইসলাম আজাদ বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণে আমরা যদি প্রশাসনের কাজে সন্তোষ হতে না পারি, তাহলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের আশায় বসে থাকবে না। সামনে আরও বড় কর্মসূচি আসবে। আমরা জানি কীভাবে আমাদের দাবি আদায় করতে হয়। শিক্ষার্থী বান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

পরবর্তীতে সেখানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত উপস্থিত হন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসন ছাত্রদের প্রশাসন। ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে প্রশাসনের কোনো বিরোধ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বজ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোর জন্য ভূমি অধিগ্রহণ বা যা করা প্রয়োজন, তা করবেন। আমরা ইতিমধ্যে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত আমাদের ক্যাম্পাসের উত্তর-পশ্চিম অংশে সব ধরনের নতুন স্থাপনা নির্মাণের অনুমতি স্থগিত করার অনুরোধ করেছি, যেন অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের জটিলতা কম হয়। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এ ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন এবং অতি শিগগিরই তিনি আমাদের পত্র মারফত এই ঘোষণা জানিয়ে দেবেন। এ ছাড়া ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে আপডেট তথ্য দিয়ে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করতে চেয়েছেন। উপাচার্য মহোদয় প্রথম মানববন্ধনের সব পেপার কাটিংসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের অতি শিগগির আলোচনা করতে যাচ্ছেন। আগামী রোববারের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে প্রিফিজিবিলিটি স্টাডি করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।’

ছাত্রবিষয়ক পরিচালক শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দপ্তর সমূহের সঙ্গে কথা বলে এই প্রিফিজিবিলিটি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করে একটি চূড়ান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। এসব প্রক্রিয়ায় তোমাদের সহযোগিতা আশা করছি এবং প্রশাসন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত