Ajker Patrika

স্ত্রীকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ মে ২০২২, ১৭: ২৪
স্ত্রীকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক

স্ত্রীকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ঘরের মেঝেতে রেখে দরজায় শিকল লাগিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। রোববার মধ্যরাতে পুলিশ সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরের যমুনা নদীর তীরের বাসিন্দা ছবিলার রহমানের বাড়ির ভাড়া বাসা থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আজ সোমবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। 

নিহত ব্যক্তির নাম রোজিনা খাতুন (৩৩)। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার বাজারগ্রাম রহিমপুরের শেখ আবু রায়হানের মেয়ে ও ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের (৩৩) স্ত্রী। তাঁদের দুটি সন্তান রয়েছে। 

এ বিষয়ে নিহত ব্যক্তির ভাই আবু হাসান জানান, তাঁর বোন রোজিনা খাতুনের সঙ্গে ২০০৭ সালে একই উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের শেখ রবিউল ইসলামের বিয়ে হয়। খুশী ও হাসি নামে তাঁদের দুটি মেয়ে থাকাকালীন বোন ও ভগ্নিপতির মধ্যে আড়াই বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ওই সময় থেকে রোজিনা তাঁদের বাড়িতে থেকে বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও ছাত্রাবাসে কাজ করে নিজের খরচ চালাতেন। খুশী রঘুরামপুর কলেজিয়েট স্কুলে নবম শ্রেণিতে ও হাসি ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। মায়ের টানে হাসি তাদের বাড়িতে মাঝে মাঝে এলেও খুশী আসত না। 

আবু হাসান আরও জানান, মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্রে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরের মোহনপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে বাসচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে রোজিনার বিয়ে হয় দেড় বছর আগে। বিয়ের পর থেকে তাঁরা যশোর জেলার ঝিকরগাছায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। উপার্জন ভালো না করায় সংসারে অভাব ঘিরে তাঁর বোন রোজিনা বাপের বাড়িতে ফিরে আসেন পাঁচ মাস আগে। কয়েক দিন পর শফিকুলও তাঁদের বাড়িতে এসে উপজেলা পরিষদের সামনে যমুনা নদীর চর ভরাটি জমির বাসিন্দা ছবিলার রহমানের বাড়ি ভাড়া নেন। এ সময় রোজিনা অন্যের বাসায় ও ছাত্রাবাসে রান্না করতেন। অপরিচিত জায়গায় শফিকুলের দিনমজুরের কাজও জুটত না। সংসারে অভাব নিয়ে রোজিনা ও শফিকুলের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে তাঁরা জানতে পারেন। গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোবাইল ফোনে ছবিলার রহমানের বাড়ির একজন ভাড়াটে আম ব্যবসায়ী আব্দুর রব তাঁকে মোবাইল ফোনে জানান যে রোজিনাকে সকাল থেকে তাঁরা বের হতে দেখেননি। দেখা যায়নি শফিকুলকেও। শনিবার রাতে ঝড়বৃষ্টির সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল গন্ডগোলের আওয়াজ তারা পেয়েছিলেন। গভীর রাতে পুলিশ ও ইউপি সদস্য খায়রুল ইসলামের সহায়তায় তাঁরা দরজার শিকল খুলে রোজিনাকে মেঝের ওপর মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। রোজিনার গলায় দড়ি দিয়ে টান দেওয়ার মতো দাগ রয়েছে। মুখমণ্ডলেও আঘাতের চিহ্ন আছে। ধারণা করা হচ্ছে সাংসারিক বিরোধের কারণে নাক ও মুখ চেপে ধরে গলায় ঝোলানো মাদুলির নাইলনের সুতা (কার) দিয়ে শফিকুল তাঁর বোনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। পরে শফিকুল মরদেহ ঘরের মধ্যে ফেলে রেখে দরজায় শিকল লাগিয়ে পালিয়ে গেছেন। 

ছবিলার রহমান জানান, মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকা ভাড়ায় পাঁচ মাস ধরে রোজিনা ও শফিকুল তাঁর বাসায় থাকতেন। 

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘রোববার রাত ১১টার দিকে রোজিনার মরদেহ তাঁর ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। সাধারণ ডায়েরি করে সোমবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভাবের কারণে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে রোজিনাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ মেঝেতে ফেলে শফিকুল পালিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’ এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই আবু হাসান বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ওসি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চিৎকার শুনে ছুটে আসা স্থানীয়রা ধর্ষণের শিকার নারীকেই মারধর করে

বিমানবন্দরের প্রকল্পে ‘অসম’ চুক্তি, স্বার্থের সংঘাতে জড়িয়েছেন ঢাকায় ইউএই রাষ্ট্রদূত

বন্ধুর সঙ্গে স্ত্রীর গোপন সম্পর্ক, ধর্ষণের অভিযোগ স্বামীর

তালগাছ কেটে শতাধিক বাবুইছানা হত্যা: প্রধান আসামি মোবারেক গ্রেপ্তার

এনবিআর আন্দোলনের ৬ নেতার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামছে দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত