Ajker Patrika

চোখে অ্যাসিড ঢেলে স্ত্রীকে অন্ধ করায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ

যশোর প্রতিনিধি
চোখে অ্যাসিড ঢেলে স্ত্রীকে অন্ধ করায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ

যশোরের মনিরামপুরে স্ত্রীর চোখে অ্যাসিড ঢেলে অন্ধ করে দেওয়ায় স্বামী কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার অ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি কামরুজ্জামানের বাড়ি মনিরামপুর উপজেলার বাঙালীপুর গ্রামে। তাঁকে কারাদণ্ডাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এম ইদ্রিস আলী, অতিরিক্ত পিপি আসাদুজ্জামান ও জি এম মুসা। 

মামলা থেকে জানা গেছে, ২০০৮ সালে মনিরামপুর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মৃত মনিরুদ্দিন দফাদারের মেয়ে রাজিয়া খাতুনের সঙ্গে মনিরুজ্জামানের পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় রাজিয়া এসএসসি পাস ছিলেন। স্বামীর সঙ্গে সংসার করাকালীন রাজিয়া এম এম কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করেন। এরপরে বাবার বাড়িতে স্বামী ও সন্তান রেখে শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের জন্য নিবন্ধন কোর্স এবং বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য কোচিং করতে ঢাকায় যান। 

 ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি রাজিয়া ঢাকা থেকে বাবার বাড়িতে আসেন। এ সময় নিবন্ধন ও বিসিএস কোচিং করতে রাজিয়াকে নিষেধ করেন কামরুজ্জামান। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। ২৩ জানুয়ারি রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে চোখের ড্রপে করে অ্যাসিড এনে রাজিয়ার চোখে দেন কামরুজ্জামান। রাজিয়ার চিৎকারে পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে কামরুজ্জামান পালিয়ে যান। 

মামলা থেকে আরও জানা গেছে, রাজিয়াকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাঁর চোখের অবস্থা আরও বেশি খারাপ হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু রাজিয়ার চোখে আর দৃষ্টি ফেরেনি। বর্তমানে রাজিয়া অন্ধ হয়ে বাবার বাড়িতেই আছেন। এই ঘটনায় রাজিয়ার ভাই আবু তাহের মনিরামপুর থানায় মামলা করেন। 

মামলার তদন্ত শেষে একই বছরের ৪ নভেম্বর মনিরামপুর থানার এসআই তোবারেক আলী আসামি কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আসামি কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাঁকে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। দণ্ড পাওয়া আসামি কামরুজ্জামানকে রায় ঘোষণা শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। 

এই বিষয়ে রাজিয়া খাতুন বলেছেন, ‘আমি এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। কারণ আমার চোখে অ্যাসিড দিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই পৃথিবীতে আমার একমাত্র সন্তানটিকেও আমি দেখতে পারি না। আমি আশা করেছিলাম আসামির মৃত্যুদণ্ড হবে। তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

টেলিটক এখন গলার কাঁটা পর্যায়ে চলে এসেছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

সিন্ধু পানিবণ্টন নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় পাকিস্তানের বড় জয়: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত