Ajker Patrika

সেতুর বদলে পুকুর কেটেছেন ঠিকাদার, চলাচলে দুর্ভোগ

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
সেতুর বদলে পুকুর কেটেছেন ঠিকাদার, চলাচলে দুর্ভোগ

পাকা সড়কের জরাজীর্ণ বক্স সেতু ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করার কথা ছিল। কিন্তু এর পরিবর্তে একটা পুকুর কেটেছেন ঠিকাদার। সেখানে নেই কোন সাইবোর্ড। নেই দুর্ঘটনা প্রতিরোধক ব্যবস্থা। তবুও প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলছে হাজারো যানবহন ও সাধারণ মানুষ।

এই চিত্র কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি বাজার থেকে বাঁশগ্রাম বাজার সড়কের কাঁচিকাটা নামক সেতু এলাকায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রায় এক বছর আগে ভাঙা হয়। এরপর সড়কের ওপরেই রাখা হয় সেতুর নির্মাণসামগ্রী পাথর ও লোহার রড। কিন্তু মাত্র ৬০ দিন মেয়াদী কাজ ১১ মাসেও শুরু হয়নি। ঠিকাদার বা প্রকৌশলীর কার্যালয়েরও কেউ খোঁজ নেননি। এ ছাড়া পাকা সড়কে পুকুর কাটলেও বিকল্প সড়ক নির্মাণ করেননি ঠিকাদার। বিকল্প সড়কের কথা বললেই নানান হুমকি দিতেন ঠিকাদার। পরে স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মাণ করা হয় বিকল্প সড়ক।

সরেজমিনে কাঁচিকাটা সেতু নামক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুর একপাশে সড়কের ওপর নির্মাণসামগ্রী পড়ে আছে। সেখানে নেই কোন নির্মাণাধীন কাজের সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড। নেই দুর্ঘটনা প্রতিরোধক ব্যবস্থা। এ ছাড়া খুঁজে পাওয়া যায়নি ঠিকাদার, শ্রমিক বা প্রকৌশলী কার্যালয়ের কাউকে।

উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে সূত্রে জানা গেছে, ওই স্থানে তিন মিটার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের বক্স সেতুর (কালভার্ট) অনুমোদন দেয় এলজিইডি। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৮ লক্ষ ১২ হাজার টাকা।

সেতুর বদলে পুকুর কেটেছেন ঠিকাদার, চলাচলে দুর্ভোগঅটোগাড়ি চালক আব্দুল হালিম বলেন, ব্রিজ করার নামে এই সড়কে তিনটি পুকুর ছিল। একটির কাজ শেষ হয়েছে। একটির কাজ চলছে। কিন্তু কাঁচিকাটা সেতুর নির্মাণ কাজ একবছরেও দেখিনি। দ্রুত সেতু নির্মাণ করা দরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দা বলেন, ‘সেতু ভাঙার সময় বিকল্প রাস্তা নির্মাণের কথা বলায় ঠিকাদার নানা হুমকি দিয়েছিল। পুকুর কাটার কিছুদিন পর শ্রমিকেরা চলে যায়। পরে স্থানীয়রাই বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করে। তারপরও এখানে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।’

এ ব্যাপারে জানতে একাধিকবার মোবাইলে কল দেওয়া হলেও কাঁচিকাটা সেতু নির্মাণের ঠিকাদার নজরুল ইসলাম ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে চাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান তুষার বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক ও সেতুটি। কিন্তু সেখানে সেতুর নামে পুকুর কাটা হয়েছে। সেতু না থাকায় স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্ন হচ্ছে। প্রকৌশলী অফিসকে গুরুত্বসহকারে বিষয়টি দেখা উচিৎ।’

উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে জেলা প্রকৌশলী পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনের সময় ঠিকাদার ছিল। তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে। মালামাল ফেলা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত