Ajker Patrika

আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পায়নি বরাদ্দের অর্থ 

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২: ১৩
আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পায়নি বরাদ্দের অর্থ 

যশোরের ঝিকরগাছায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গত এক বছরেও কোনো সংস্কার কাজ হয়নি।

২০২০ সালে ২১ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে উপজেলার অর্ধ শত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের জন্য সরকার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে টাকা বরাদ্দ দেওয়ার পরও গত এক বছরে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কার করা হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর দেখা যাচ্ছে এখনো সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর পাঠদান হচ্ছে খোলা জায়গায়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩০ টি মাদ্রাসা ও তিনটি কলেজের সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ চেয়ে তালিকা পাঠায়। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের জন্য সরকার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু বরাদ্দ দেওয়ার এক বছর পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার না হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান খোলা জায়গায় পাঠদান চলছে।

সরেজমিনে রোববার উপজেলার বাউসা আরএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নবম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠদান চলছে ছাউনিহীন ঘরে। করোনা মহামারি কাটিয়ে ওঠার পর বিদ্যালয় খোলা থেকে এভাবে চলছে পাঠদান।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শামীম রেজা নয়ন বলেন, অন্যান্য শ্রেণির যেদিন ক্লাস হয়, সেদিন খোলা চালের নিচে ক্লাস করতে হয়। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ক্লাসরুমের ছাউনি নাই। রোদে পুড়তে হচ্ছে আবার বৃষ্টি হলে ভিজতে হচ্ছে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল হক বলেন, আম্ফানের ফলে বিদ্যালয়ের সমস্ত টিন উড়ে গিয়ে ভবনটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিল। এরপর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর মেরামতের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও বরাদ্দের সে টাকা পাওয়া যায়নি। তাই বিদ্যালয় খোলার আগে তিনটি শ্রেণিকক্ষ কোনোরকম মেরামত করে ক্লাস শুরু করেছি।

ঘূর্ণিঝর আম্ফানে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থা। তারাও জানালেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান দুর্দশার কথা।
ঝিকরগাছা সরকারি এমএল মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান আজাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে প্রতিষ্ঠানের টিন শেডটি একেবারে ভেঙে যায়। এরপর টিন শেড সংস্কারের জন্য টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু সেটাও এক বছর পার হয়ে গেছে। বিদ্যালয় খোলার পর এখন অনেক সমস্যা হচ্ছে।

নিশ্চিন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারি বলেন, ২০২০ সালে ২১ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষের টিন উড়ে গিয়ে ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এএসএম জিল্লুর রশীদ বলেন, ২০২০ সালে ২১ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পরই আমরা উপজেলার ৫৮টি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠিয়েছিলাম। সে সময় ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের জন্য সরকার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

যশোরের শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ঝিকরগাছায় ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে। গত অর্থ বছরে কিছু টাকা এসেছিল তা, অন্য উপজেলায় ব্যয় করা হয়েছে। এবার টাকা আসলে ঝিকরগাছায় কাজ করা হবে। অন্যান্য কাজ চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল হক বলেন, বরাদ্দের টাকা না পাওয়ায় অনেক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সংস্কার করতে পারছে না। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো শিগগির বরাদ্দের টাকা নিয়ে সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মৌচাকে গাড়িতে লাশ: ২৫ লাখ টাকায় যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলে জাকিরকে শ্রীলঙ্কায় নিয়েছিল দালাল

যেভাবে শেখ হাসিনাকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছিল, স্বীকারোক্তিতে জানালেন মেজর সাদিকের স্ত্রী জাফরিন

পুলিশের এডিসিকে ছুরি মেরে পালিয়ে গেল ছিনতাইকারী

রিটার্ন না দিলে গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

উত্তরায় বকশীগঞ্জের সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত