Ajker Patrika

খাজনা আদায়ের রসিদ নেই মনিরামপুরের কোনো ভূমি অফিসে

আনোয়ার হোসেন
খাজনা আদায়ের রসিদ নেই মনিরামপুরের কোনো ভূমি অফিসে

মনিরামপুর (যশোর): বসতবাড়ি ও ধানি জমিসহ ৭৮ শতক জমির মালিক যশোরের মনিরামপুরের মাহমুদকাটি গ্রামের আলী আকবর। ২০০৬ সালে জমির খাজনা দিয়েছিলেন। নতুন করে আবার বকেয়া খাজনা পরিশোধ করে অনলাইনে খাজনা পরিশোধের জন্য নিবন্ধন করবেন তিনি। তাই আজ মঙ্গলবার প্রস্তুতি নিয়েছেন খেদাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাবেন বলে। তখন খবর পান ভূমি অফিসে খাজনা পরিশোধের রসিদ নেই।

রঘুনাথপুর গ্রামের নূর আলম মিন্টু এক আত্মীয়র জন্য জমির দাখিলা কাটাতে সম্প্রতি লোক পাঠিয়েছেন একই ভূমি অফিসে। রসিদ না থাকায় তাকে ফেরত আসতে হয়েছে। রসিদ সংকটে জমির খাজনা পরিশোধ করতে পারেননি চালুয়াহাটি ইউপির লক্ষ্মণপুর গ্রামের শামছুল আলম। শুধু আলী আকবর, মিন্টু বা শামছুল আলম নন; খাজনা রসিদ না থাকায় ভূমি অফিসে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন মনিরামপুর উপজেলার হাজার হাজার জমির মালিক।

সরকারি হিসেবে গ্রাম পর্যায়ে বসতভিটার জন্য শতকপ্রতি বছরে ১০ টাকা, বাগানের জন্য দুই টাকা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৪০ টাকা করে খাজনা নির্ধারিত। ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমি খাজনামুক্ত থাকলেও অন্য জমির মতো বিক্রীত কৃষিজমি রেজিস্ট্রি করতে হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সঙ্গে দাখিলার কাগজ সংযুক্ত করতে হয়। এ ছাড়া জমির নামজারি ও ব্যাংক লোনের জন্য খাজনা পরিশোধের রসিদ প্রয়োজন হয়। তখন জমির মালিকেরা খাজনা পরিশোধ করতে ভূমি অফিসের দ্বারস্থ হন। নিত্য ভিড় লেগে থাকে ভূমি অফিসগুলোতে। কয়ে কমাস ধরে ভূমি অফিসগুলোতে কর পরিশোধের রসিদ না থাকায় জমির মালিকেরা বারবার ভূমি অফিসে গিয়েও খাজনা পরিশোধ করতে পারছেন না। ফলে বিপাকে রয়েছেন এই উপজেলার জমির মালিকেরা।

ভুক্তভোগী শামছুল আলম বলেন, বিপদে পড়ে জমি বিক্রি করেছি। কিন্তু খাজনা দিতে না পারায় ওই জমির দলিল করে দিতে পারছি না।

কবে ভূমি অফিসে খাজনা আদায়ের রসিদ বই আসবে তার জবাব জানা নেই কারও। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে তেমনটিই জানা গেছে।

এদিকে অনলাইনে জমির খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলাব্যাপি প্রচারণা চালাচ্ছে উপজেলা ভূমি অফিস। জমির মালিকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নিজ নিজ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে আহ্বান করা হচ্ছে। তবে খাজনা আদায়ের রসিদ না থাকায় জমির মালিকগণ বকেয়া খাজনা পরিশোধ করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না।

খেদাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব আব্দুস সাত্তার বলেন, ১৫ দিন ধরে খাজনা রসিদ নেই। অনেকে এসে ফিরে যাচ্ছেন। খাজনা আদায় করতে পারছি না। অফিসে বারবার জানিয়েও রসিদ বই পাচ্ছি না।

রোহিতা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান লিপটন বলেন, এক মাস ধরে খাজনার রসিদ নেই। প্রতিদিন দু-একজন অফিসে এসে ফিরে যাচ্ছেন।

চালুয়াহাটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শফিক উদ্দীন বলেন, খাজনা রসিদ শেষ। বারবার অফিসে আবেদন করছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত খাজনা রসিদ পাইনি।

মনিরামপুর উপজেলা ভূমি অফিসের নাজীর ফিরোজা আক্তার খাজনা আদায়ের রসিদ বই বিতরণ ও সংগ্রহ করেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে ১৩টি ভূমি অফিস আছে। প্রতি অফিসে ১০০ পৃষ্ঠার মাসে তিনটি করে বই লাগে। সেই হিসেবে ৩৫ থেকে ৪০টি বইয়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা বরাবর ২০ থেকে ৩০টা বই পাই। গত এক মাস ধরে কোনো বই পাচ্ছি না। যশোর জেলা অফিসেও বই নেই। কবে বই পাব জানি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভিসা ছাড়া পাকিস্তান সফরের চুক্তি হতে পারে শিগগির

স্ত্রীকে হতে হবে নোরা ফাতেহির মতো, না খাইয়ে রেখে তিন ঘণ্টা করে ব্যায়াম করান স্বামী

বাংলাদেশসহ এশিয়ার ৫ দেশে সফর বাতিল করলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনি

বাংলা বলায় কলকাতার মার্কেটে ছুরি, বন্দুকের বাঁট ও হকিস্টিক নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুর, আবারও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, পুলিশের টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত