Ajker Patrika

অভয়নগরে আজও দেখা মেলে দুই-একটি ধানের গোলা

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
অভয়নগরে আজও দেখা মেলে দুই-একটি ধানের গোলা

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় এখনো কিছু এলাকায় ধানের গোলা চোখে পড়ে যেগুলো পূর্বপুরুষের স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছেন কৃষকেরা। গ্রামগঞ্জে এক সময় অবস্থা সম্পন্ন কৃষকের বাড়িতে শোভা পেত এ ধানের গোলা। যাদের জমির পরিমাণ একটু বেশি তাঁরা ধান সংরক্ষণের জন্য এ গোলা ব্যবহার করতেন।

জানা যায়, গ্রামবাংলার সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা খুবই উপযোগী। ধানের মৌসুমে ধান কেটে শুকিয়ে গোলায় রাখা হতো। আবার প্রয়োজনের সময় গোলা থেকে ধান বের করে পুনরায় রোদে শুকিয়ে ধান ভাঙানো হয়। অথচ বর্তমানে অনেকটাই হারিয়ে যেতে বসেছে এই ধানের গোলা। তবুও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বাড়ির উঠানে এখনো কেউ কেউ এই ধানের গোলা রেখে দিয়েছেন। এসব ধানের গোলায় ১০০ থেকে ২০০ মণ ধান সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। অভয়নগর উপজেলার নাউলী এলাকায় এখনো চোখে পড়ে এসব ধানের গোলা।

এ বিষয়ে উপজেলার নাউলী গ্রামের আরাফাত শেখ বলেন, এক সময়ে নামকরা গেরস্ত বলতে মাঠ ভরা সোনালি ফসলের খেত, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর কৃষকের গোলা ভরা ধানকেই বোঝাতো। কিন্তু এসব এখন যেন প্রবাদ বাক্যে পরিণত হয়েছে। হারিয়ে গেছে গেরস্তের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা। তবুও আমরা পূর্ব-পুরুষদের ব্যবহৃত সেই ধানের গোলা স্মৃতি স্বরূপ সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। 

আরাফাত শেখ আরও বলেন, আমি ও আমার চাচাতো ভাইয়ের দুইটা ধানের গোলা রয়েছে। সেই গোলাগুলো এখনো ভালো আছে। গোলাতে ধান সংরক্ষণ করছেন। অবশ্য এখন আর আগের মতো কেউ ধান রাখে না। বস্তায় করে গোডাউন অথবা ঘরের মধ্যে রেখে দেওয়া হয়। 

অভয়নগর উপজেলার বাসুয়াড়ী গ্রামের লতিফ শেখ বলেন, প্রথমে বাঁশ-কঞ্চি দিয়ে গোল আকৃতির কাঠামো তৈরি করা হতো। এঁটেল মাটির কাঁদা তৈরি করে ভেতরে ও বাইরে আস্তরণ লাগিয়ে ওপরে টিনের চালা দিয়ে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা হতো এই ধানের গোলা। ধানের গোলা বসানো হতো উঁচুতে। বেশ ওপরে রাখা হতো প্রবেশপথ। যাতে চোর-ডাকাতেরা ধান নিতে না পারে। ধানের গোলা অনেক উঁচুতে হওয়ায় ক্ষতি করতে পারত না ইঁদুরও। গোলায় শুকানো ভেজা ধানের চাল হতো শক্ত। কৃষকের কাছে এটিই ছিল ধান রাখার আদর্শ পন্থা। 

চলিশিয়া ইউনিয়নের বাগদা এলাকার কৃষক লেয়াকত পূর্বপুরুষের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বাড়ির উঠানে একটি বড় ধানের গোলা রেখেছেন। সেগুলোতে এখনো ধান সংরক্ষণ করেন তিনি। 

এ নিয়ে লেয়াকত বলেন, গোলাটি আমাদের পরিবারের ঐতিহ্য বহন করে। দাদার আমল থেকে দেখে এসেছি এ গোলা। তাই ধান রাখার পাশাপাশি ঐতিহ্য রক্ষায় এখনো এটি রেখে দিয়েছি। যশোর জেলা জুড়ে কৃষকের ঘরে ঘরে একসময় গোলায় ধান রাখা হতো। এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না সেই গোলা। বিলুপ্তির পথে গোলার সেই ঐতিহ্য। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

মানবিক করিডর না ভূরাজনৈতিক কৌশল? সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতায় উদ্বেগ

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

‘কলেমা পড়ে বিয়ে’ করা স্ত্রীর ঘরে গিয়ে মধ্যরাতে ঘেরাও পুলিশ কনস্টেবল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত