Ajker Patrika

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে খুলনায় বাঁধ ভেঙে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ মে ২০২৪, ১৩: ১২
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে খুলনায় বাঁধ ভেঙে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার উপকূলীয় এলাকা কয়রা ও দাকোপ উপজেলায় বাঁধ ভেঙে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ওই এলাকার অসংখ্য মাছের ঘের ভেসে গেছে। এ ছাড়া ভেঙে গেছে কয়েক শ কাঁচা ঘরবাড়ি। 

গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে খুলনায় ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া শুরু হয়, যা সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ রিপোর্ট ণেখা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তবে সোমবার বেলা ১১টার পর কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। ভারী বৃষ্টির কারণে নগরীতে যান চলাচল ছিল কম। 

খুলনার কয়রা উপজেলার ৩টি জায়গার বাঁধ ভেঙে অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে ভেসে গেছে শতাধিক চিংড়িঘের, ভেঙে গেছে কয়েক শ কাঁচা ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। এ ছাড়া রাতজুড়ে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা ও পাউবো সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে জোয়ারের প্রচণ্ড চাপে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোনা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেলাল গাজীর বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে গেছে। 

স্থানীয়রা জানান, বাঁধের দুর্বল অংশের ওই তিন স্থানে প্রায় ১৫০ মিটার ভেঙে নদীর নোনাপানিতে প্লাবিত হয়েছে এলাকা। এ ছাড়া বাঁধের নিচু কয়েকটি জায়গা ছাপিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এসব জায়গায় এলাকার মানুষ রাতভর মেরামতকাজ চালিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেনি। 

মহারাজপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, রোববার রাতের জোয়ারের চাপে ইউনিয়নের দশহালিয়া এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার বাঁধ ভেঙে কপোতাক্ষ নদের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে অন্তত দুটি গ্রাম ও কয়েক শ চিংড়িঘের তলিয়ে গেছে। 

মহেশ্বরীপুরের ইউপি চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ শিকারি বলেন, ইউনিয়নের সিংহেরকোণা এলাকায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া নয়ানি এলাকার বাঁধের নিচু জায়গা ছাপিয়ে সারা রাত পানি ঢুকেছে। এতে অন্তত সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য চিংড়িঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ঝড়ের তাণ্ডব ও ভারী বৃষ্টিতে কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে শতাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আছের আলী জানান, তাঁর ইউনিয়নের মাটিয়াভাঙ্গা এলাকায় রাতের জোয়ারে বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এতে পাঁচ-সাতটি গ্রামে নদীর পানি ঢুকেছে। এ ছাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় নিচু বাঁধ ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করেছে এলাকায়। 

কয়রায় ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ। ছবি: সংগৃহীতপাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কসংকেত পাওয়ার পর থেকে স্থানীয় মানুষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করা হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েকটি স্থানে বাঁধ সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবার দুপুরের জোয়ারের আগে তা মেরামতের চেষ্টা চলছে। 

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম তারিক উজ জামান বলেন, কয়েকটি স্থানে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে খুলনার দাকোপ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার শিবসা ও ঢাকী নদীর বাঁধ ভেঙে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা তলিয়ে যায়। 

তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ক্ষিতীশ গোলদার বলেন, বাঁধের পাঁচটি পয়েন্ট ভেঙে এখন পানি ঢুকছে। কামিনীবাসিয়া গ্রামের ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় পুরোটা লোনাপানি ঢুকে তলিয়ে গেছে। এলাকাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারের আওতাভুক্ত। 

তিনি জানান, এত উঁচু জোয়ার আগে দেখেননি। ঢাকি ও শিবসা নদীর মোহনায় কামিনীবাসিয়া পুরাতন পুলিশ ক্যাম্প-সংলগ্ন ওই এলাকায় বেড়িবাঁধের অংশ খুব বেশি দুর্বল ছিল না। তবে বেশ কিছুটা নিচু হওয়ায় জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ ছাপিয়ে ভেতরে ঢোকে। এরপর বেড়িবাঁধের পাঁচটি পয়েন্ট ভেঙে যায়। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে খুলনা মহানগরীর নিম্নাঞ্চল। এ ছাড়া ঝড়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য গাছ উপড়ে পড়েছে। সড়কের দুই পাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড ভেঙে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। 

খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ আমিরুল আজাদ জানান, সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। বর্তমানে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা আবহাওয়া এমনই থাকবে। 

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে খুলনা মহানগরীর নিম্নাঞ্চল। ছবি: আজকের পত্রিকাসোমবার ভোরে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের ওপরে ও পাশে দোকানের সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড উঠে গেছে। অনেক সাইনবোর্ড রাস্তার ওপরে পড়ে আছে। সড়কের পাশে প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। 

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে নগরীর লবণচরা, টুটপাড়া, মহিরবাড়ী খালপাড়, শিপইয়ার্ড সড়ক, রূপসা, চানমারী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এখনো ওই সব সড়কে পানি রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। 

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের-২ (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, কয়রা ও দাকোপ এলাকার ভেঙে যাওয়া বাঁধ প্রাথমিকভাবে মেরামত করা হয়েছে। এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে রাত থেকেই কাজ করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনার উপপরিচালক মামুন মাহমুদ বলেন, যেসব এলাকায় ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। 

খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন জানান, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করতে কয়েক দিন সময় লাগবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রচুর পরিমাণ, চিড়া, মুড়ি, গুড়, পানিসহ শুকনা খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিয়ের দেড় মাসের মাথায় সড়কে ঝরল প্রবাসীর প্রাণ

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাজমুল হাসান (২৮) নামের এক প্রবাসী যুবক নিহত হয়েছেন। আজ রোববার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় উপজেলার বেগমাবাদ এলাকায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নাজমুল উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে।

নিহত যুবকের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ বেলা সাড়ে ৩টায় কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন নাজমুল। বেগমাবাদ এলাকায় এলে একটি পিকআপ ভ্যান তাঁর মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে চলন্ত একটি কাভার্ড ভ্যানের নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

নিহত যুবকের ফুফাতো ভাই ফারুক হোসেন জানান, নাজমুল হাসান কুয়েতে কাজ করেন। প্রায় তিন মাস আগে ছুটিতে দেশে ফেরেন। দেড় মাস আগে বিয়ে করেন তিনি। ১৫ দিন পর তাঁর বিদেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। আজ ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট বাজার থেকে একটি টি-শার্ট কিনে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নাজমুল।

নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম বুক চাপড়ে বলেন, ‘ছেলেকে বিয়ে করিয়ে খুব আনন্দে ছিলাম। আনন্দটা বেশি দিন টিকল না।’

এ বিষয়ে মীরপুর হাইওয়ে পুলিশের এসআই আনিসুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেল পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর সড়কে যানজট হয়। বিকেল সোয়া ৫টা থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা হামলা ও গুলি, নিহত ১

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আইটি গেটসংলগ্ন বিএনপির স্থানীয় কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এমদাদুল হক (৫৫) নামের এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫)। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আজ রোববার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অফিসে বসে ছিলেন।

এ সময় দুর্বৃত্তরা হঠাৎ অফিসে থাকা মামুন শেখকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

প্রথম গুলি মিস হয়ে পাশে থাকা এমদাদুল হকের শরীরে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এরপর সন্ত্রাসীরা আরও গুলি চালালে মামুন শেখ গুলিবিদ্ধ হন। তখন দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা গুরুতর আহত মামুনকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যাচ্ছি। একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’

যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ফুলবাড়ী গেটে ছিলাম। শুনেছি, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় মুগডালে ক্ষতিকর রং, ৪ দোকানিকে লাখ টাকা জরিমানা

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুগডালে ক্ষতিকর রঙের উপস্থিতি পাওয়ায় বগুড়ায় চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ রোববার শহরের ডালপট্টিতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে এই জরিমানা করা হয়।

অভিযানে শহরের ডালপট্টি এলাকার একাধিক দোকানে মুগডালে ক্ষতিকারক রং আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। অভিযানে চারটি দোকানের মুগডালে ক্ষতিকারক রঙের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

যদিও দোকানিরা বলছেন, তাঁরা প্রত্যেকে এই ডালগুলো রাজশাহীর বানেশ্বর থেকে কিনেছেন। এগুলোর মধ্যে রংমিশ্রিত থাকে তা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোই ভালো বলতে পারবে। তাঁরা পাইকারি এনে সেভাবেই আবার বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আজ রোববার আকস্মিক অভিযানে সব ব্যবসায়ীদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়ার পাশাপাশি দুই দোকানকে ৩০ হাজার করে এবং আরও দুই দোকানকে ২০ হাজার করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পাশাপাশি আজ সন্ধ্যার মধ্যে যাঁদের কাছে রংমিশ্রিত ডাল রয়েছে, সেসব বস্তা নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ী নেতারা ডালের বস্তাগুলো একত্র করে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারককে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।’

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, মুগডালে যে রঙের উপস্থিতি তাঁরা অভিযানে পেয়েছেন, তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেসব অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোজ্যপণ্যে ভেজাল কিংবা ক্ষতিকারক এমন রং ব্যবহারের প্রচেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অভিযানে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছাসহ জেলা পুলিশের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিশোরগঞ্জের বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পেলেন আজকের পত্রিকার সাজন আহম্মেদ পাপন

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপনের হাতে। ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয় আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপনের হাতে। ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড (সংবাদপত্র) পেলেন আজকের পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাজন আহম্মেদ পাপন। চলতি বছর আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত ‘১৪ বছর ধরে অনির্বাচিত কমিটি, অচল কিশোরগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গন’ প্রতিবেদনের জন্য তিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে শহরের রথখোলা এলাকায় এক অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে চার ক্যাটাগরিতে চারজনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব।

পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্য তিনজন হলেন অনলাইন ক্যাটাগরিতে তাসলিমা আক্তার মিতু, মাল্টিমিডিয়ায় রাকিবুল হাসান রোকেল ও টেলিভিশনে রুমন চক্রবর্তী।

কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির রমজান আলী, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি আলমগীর হোসাইন তালুকদার, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান, উপাধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. একরাম আহসান জুয়েল, হয়বতনগর আনওয়ারুল উলুম (এইউ) কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজিজুল হক, পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মুআ লতিফ, কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসিম খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত