Ajker Patrika

বিএনপি নেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা

­যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২২: ১৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চাঁদাবাজির অভিযোগে যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভা বিএনপির পদ স্থগিত হওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনিসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী মেহেদী হাসানের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা সুমি বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার মামলাটি করেছেন।

যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জুবাইদা রওশন আরা অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দিয়েছেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন নওয়াপাড়ার রমজান আলীর ছেলে সাকির আহমেদ, জয়নালের ছেলে কামরুজ্জামান মিঠু ও গোয়াখোলার খোকা মাস্টারের ছেলে সম্রাট।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মেহেদী হাসান নওয়াপাড়ায় প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাঁর একটি জমি বিক্রির সংবাদ জানতে পারেন আসামিরা। গত ৭ জুলাই জনি তাঁর অফিসে মেহেদী হাসানকে ডেকে নিয়ে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এদিন মেহেদী হাসান ধার করে ১ লাখ টাকা জনিকে দেন। পরে আবার মিঠু মোবাইল ফোনে কল করে মেহেদী হাসানকে দেখা করতে বলেন জনির অফিসে। মেহেদী রাতে জনির অফিসে গিয়ে দেখেন আসামিরা ছাড়াও অনেকে বসে আছেন সেখানে। তাৎক্ষণিক জনি তাঁকে জানান, জমি বিক্রি করে ৩০ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। এই টাকা তাঁকে দিতে হবে। এ সময় মেহেদী হাসান কথা বলতে চাইলে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।

এর মধ্যে আসামিরা মেহেদীকে মারধর ও খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে তিনটি ১০০ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এরপর আসামি মিঠু ও সম্রাট মোটরসাইকেলে মেহেদী হাসানকে বাড়ি নিয়ে এসে ৩০ লাখ টাকার চেক দাবি করেন। একপর্যায়ে আসামিরা একটি ৫০ হাজার টাকার স্বাক্ষরিত চেক এবং অপর দুটি অঙ্কের টাকার চেক স্বাক্ষরবিহীন নিয়ে দ্রুত চলে যান। তাঁরা ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে নেন।

পরদিন স্বাক্ষরবিহীন চেকে স্বাক্ষর করে দেওয়ার জন্য আসামিরা চাপ দেন। চেকে স্বাক্ষর করে না দিলে নওয়াপাড়ায় এলে খুন, জখম করা হবে বলে হুমকি দেন তাঁরা। এ সময় তাঁকে মারধরও করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় মেহেদীকে প্রথমে যশোর, পরে ঢাকায় নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে মেহেদী হাসানের পরিবারের সদস্যরা আসামিদের ভয়ে বাড়িছাড়া। পরে ১৩ আগস্ট মেহেদীর স্ত্রী আদালতে মামলা করেন।

এর আগে ৪ কোটি টাকা চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে হওয়া দুটি মামলায় গত শুক্রবার কারাগারে যান বিএনপির নেতা আসাদুজ্জামান জনি। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁকে খুলনা শহরের রোজ গার্ডেন হোটেল থেকে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় এক ব্যবসায়ীর স্ত্রীর করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জনিকে নিয়ে তাঁর মালিকানাধীন নওয়াপাড়া ইকোপার্ক, বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযানে চালায় যৌথ বাহিনী। এ সময় দেশীয় অস্ত্র, ছুরি, হাঁসুয়া ও বিভিন্ন ব্যাংকের বই এবং সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক জব্দ করা হয়।

আসাদুজ্জামান জনি নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে দলীয় বিশৃঙ্খলা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর তাঁর দলীয় পদ স্থগিত করা হয়। দলীয় পদ স্থগিত থাকলেও নওয়াপাড়ায় প্রভাবশালী ছিলেন আসাদুজ্জামান জনি। তাঁর ভয়ে তটস্থ ছিল সবাই। শিল্পনগরী নৌবন্দরের ব্যবসায়ীদের কাছে তিনি ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দাম্পত্য কলহের গুঞ্জন, মুখ খুললেন জাহিদ হাসান

গভর্নর আমাকে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার কে: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুল

‘হেল্প, হেল্প’ বলে চিৎকার—শিক্ষক এগিয়ে যেতেই গলায় ছুরি চালাল কিশোরী

‘আপত্তিকর’ ভিডিও: বিএফআইইউর প্রধান শাহীনুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালেন গভর্নর

ছাত্রীকে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ, গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে বিয়ে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত