Ajker Patrika

শৈলকুপায় নদীর জমি ও শত বছরের ঘাট দখল, থানায় মামলা

শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
শৈলকুপায় নদীর জমি ও শত বছরের ঘাট দখল, থানায় মামলা

ঝিনাইদহের শৈলকুপার কবিরপুর কুমার নদীর শত বছরের ঘাট ও ব্রিজের নিচে নদীর জায়গা দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে পৌর নায়েব তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার শৈলকুপা থানায় জমির মালিকানা দাবি করা দুজন মো. মহিউদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার ফিরোজীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত উভয়ই উপজেলার কবিরপুরের বাসিন্দা।

জানা যায়, সাধারণ মানুষের বিনোদনের জন্য ছিল ২৯.৫ শতকের সবুজ চত্বর। আর এই সবুজ চত্তরটুকু রড-সিমেন্টের খুঁটি, বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঘিরে দখলে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা বারবার বাধা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। রাতের আধারে জমি চাষ দিয়ে সেখানে লাগানো হয়েছে কলা গাছ। আবার এরপাশেও ২৪ শতক জমি দখল করা হয়েছে।

জমির মালিকানা দাবি করা ব্যক্তিরা বলছেন, এ জমি তারা কিনেছেন। বর্তমানে কোনো নদীর জায়গা দখল, কেনা-বেচা করা যাবে না মর্মে হাইকোর্টেরও নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না তারা। তবে সরকারী এই জমি কীভাবে ব্যক্তি মালিকানা হলো এই নিয়ে নানা মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১২৪ নম্বর কবিরপুর মৌজার সাবেক ৩৪৮,৩৮৮ ও ৪৩৫ নম্বর দাগের জমি বহু আগে থেকেই সরকারী রাস্তা। যার এসএ হাল দাগ নম্বর ১৪২০ ব্রিজের নিচে ২৯.৫০ শতক জমি। কবিরপুর মেইন রোড থেকে কুমার নদের পানি পর্যন্ত রাস্তার জমির নকশা রয়েছে। এসএ সাবেক দাগ ও নকশা অনুযায়ী রাস্তার জমির পাশের মালিকগন এসব সরকারী নদীর জায়গা ভোগদখল আবার কখনো কখনো সরকারের কাছ থেকে একসানা বন্দোবস্ত নিয়ে বিক্রিও করে দিচ্ছে লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে। আবার ব্যাক্তি মালিকানায় রেকর্ডও করে নিচ্ছেন। এসব নিয়ন্ত্রন করছে এলাকার ভূমিদস্যু মহল। চরের জায়গাতে কেউ কেটেছে পুকুর আবার কেউ বা মাটি কেটে বিক্রি বা সমতল বানিয়ে চাষও করছেন, দিচ্ছেন লীজ-বন্দকও। সরকারি জায়গাটুকু কীভাবে রাতারাতি দখল ও বিক্রি হয়ে গেল তা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে কবিরপুরের নতুন ব্রিজ ও চর এলাকার বাসিন্দাসহ সচেতন মহলে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কবিরপুরে নতুন ব্রিজের পাশে রয়েছে কয়েকশ বছরের ঐহিত্যবাহী একটি ঘাঁট। যেখানে কবিরপুর, নতুন ব্রিজ ও চর এলাকার শতশত মানুষ তাঁদের দৈনন্দিন কাজে-কর্মে এই ঘাট ব্যবহার করেন। আর এই ঘাটের সঙ্গেই ২৯ শতাংশ সরকারি জায়গা রয়েছে, যেটি ভিটার মতো উচু সবুজ চত্ত্বর। এখানে প্রতি বছর দুই ঈদ, পহেলা বৈশাখ, দুর্গাপূঁজাসহ নানা উৎসবে মেলা বসে। সার্কাস-থিয়েটার, নাট্য উৎসব সহ বৈশাখী মেলাও বসে। তবে শেকড়-সংস্কৃতির নানা বিনোদনের এই জায়গাটুকুও এখন চলে গেল ভুমিদস্যুদের কবলে। শুধু বড়দের উৎসবই নয় এখানে শিশুরা ঘুড়ি উড়িয়ে থাকে, হ্যান্ডবল, ভলিবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলা করে স্থানীয় শিশু, তরুন যুবকেরা। আর এবারের ঈদে এখানে কোনো অনুষ্ঠান করতে পারেনি স্থানীয়রা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসে নির্মল বিনোদনের জায়গা পায়নি নতুন ব্রিজ এলাকার তথা উপজেলা শহরের মানুষ। নদীর চরের এসব ছোট ছোট জায়গা ঘিরে শৈলকুপার নতুন ব্রিজ এখন মানুষের বিনোদনের একমাত্র স্পট, তবে সেটিও এখন বে-দখল হয়ে গেছে। ঈদের দুই সপ্তাহ আগে থেকে কবিরপুরের মহিউদ্দীন তাঁর লোকজন দিয়ে জায়গাটুকু ঘেরা দিয়ে দখলের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয়দের বাঁধার মুখে কিছুদিন থেমে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঈদের আগের রাতে রড-সিমেন্টের খুঁটি দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। 

কবিরপুরের স্থানীয় বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শত বছরের ঘাটের জায়গা ও নদীর জমি দখল করে নেওয়া হয়েছে। আমরা এসব জমি দখলমুক্ত চাই।

এ ব্যাপারে সাবেক মহিলা কাউন্সিলর কবিরপুরের বাসিন্দা রাশেদা খাতুন বলেন, ‘এই ঘাটে আমরা গোসলসহ নদীর পানি ব্যবহার ও ঘর-গৃহস্থলীর নানা কাজ করতাম। গত কয়েক বছর এসবের কিছুই করতে পারছেনা কেউ। বর্তমান এই জমি দখলের ফলে নদীতে ঠিকমত যেতে পারছি না। আমরা এই নদীর জমি দখলমুক্ত চাই।’

এদিকে ক্রয়সুত্রে চরের এই জমির মালিক দাবি করে সম্প্রতি সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দেন মোহাম্মদ মহিউদ্দীন নামের এক ব্যক্তি। পরে সদ্য বিদায়ী ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) পার্থ প্রতীম শীল সেই সাইনবোর্ড তুলে দেন এবং দুইদফায় জমিতে কোনো ধরনের দখল বা ঘেরা দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দেন। ইউএনও অফিস থেকেও লোকবল এসে জমিতে কোনো কিছু করা যাবে না বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে ফের রড-সিমেন্টের খুঁটি পুতে তা দখল করা হয়েছে।

উপজেলার কবিরপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ মহিউদ্দীন বলছেন, এটা ব্যাক্তি মালিকানার জায়গা, এই জায়গাটুকু তিনি কিনেছেন। ১৯৮০ সালের দিকে স্থায়ী বন্দোবস্ত দলিলে সরকারের কাছ থেকে কুমার নদের চরের এ জমি কেনেন নজরুল মন্ডল। সেই জমির ২৯,৫০ শতক ২০১৯ সালে কিনেছেন মহিউদ্দীন, যা মালিকানা সম্পত্তি বলে তাঁর দাবি।

শৈলকুপা ভুমি অফিসসহ স্থানীয় প্রশাসনের বাধার কথা স্বীকার করে মহিউদ্দিন বলেন, বাধা দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে পিটিশন দিয়েছেন এবং শোকজ করা হয়েছে। বৈধভাবে জমি ক্রয় করেছেন এবং মালিকানা হিসাবে ভোগদখল করতে পারবেন বলে দাবি করছেন মোহাম্মদ মহিউদ্দীন। 

নদীর জমির মালিকানা দাবি করা আরেক ব্যক্তি আব্দুস সাত্তার ফিরোজী বলেন, ‘আমরা বৈধ উপায়ে জমি ক্রয় করেছি। আমাদের জমিতে কোনো ক্রটি নেই। আমরা এই জমির বৈধ মালিক।’ 

এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, কোনোভাবেই নদীর জায়গা দখল করা যাবে না। এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানায় সরকারী সম্পত্তি জবরদখলের ঘটনায় মহিউদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার ফারাজি নামের ২ ব্যাক্তির বিরুদ্ধে গতকাল একটি মামলা হয়েছে। 

শৈলকুপায় সদ্য যোগদানকারী সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. বনি আমিন জানিয়েছেন, ‘পূর্বে এমন জমি নানাভাবে দখল, স্থাপনা নির্মাণ করতে দেখা গেলেও বর্তমানে হাইকোর্টের আদেশের পর নতুন করে এভাবে নদীর জমি দখল, ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। কুমার নদের নতুন ব্রিজ সংলগ্ন জমির বিষয় নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’ 

এ ব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, ‘নদীর জায়গা দখল করার কোনো সুযোগ নেই। যতবার তারা দখল নেওয়ার চেষ্টা করেছে ততবারই আমরা বাধা দিয়েছি। বর্তমান দখলদারদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে, দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।’ 

বিরোধপূর্ণ এই জমি নিয়ে যেকোনো মুহূর্তে এলাকায় সংঘর্ষ ও সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয়দের অনেকে জানিয়েছে। অতিসত্বর শত বছরের ঘাট, নদীর জমি দখলমুক্ত চাই এলাকাবাসী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে পিস্তল ঠেকিয়ে ডাকাতি, ৪৮ লাখ টাকার মালামাল লুট

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবি, এআই দিয়ে তৈরি

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এক দিনের ব্যবধানে আবারও সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের সাতকাহনিয়া গ্রামে বৃদ্ধ দম্পতির বাসায় প্রবেশ করে ডাকাতেরা নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৪৮ লাখ টাকার মালামাল লুট করে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আলম মিয়া বলেন, ‘আমরা দুই ভাই পরিবার নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করি। বিকেলে ঢাকায় চলে আসার পর রাতে আমার বাবা-মা বাসায় ছিলেন। ডাকাতেরা জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে এবং অস্ত্রের মুখে বাবা-মাকে জিম্মি করে নগদ তিন লাখ টাকা ও ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে।’

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ব্যবসায়ী আলম মিয়ার বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমে সাতজন ডাকাত প্রবেশ করে। পরে আরও ১৪-১৫ জন যোগ হয়। তারা কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে বিভিন্ন রুমে অবস্থান নেয় এবং আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে আলমারি ও শোকেসের তালা ভেঙে সব লুট করে নেয়।’

উল্লেখ্য, এর আগে গত রোববার রাতে উপজেলার বালুয়াকান্দি দক্ষিণপাড়া এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য ফজলুল হকের বাড়িতে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ ৫৪ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অবসরের এক যুগ পর কাস্টমস কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
অবসরের এক যুগ পর কাস্টমস কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা

চট্টগ্রামে অবসরে যাওয়ার প্রায় এক যুগ পর কাস্টমসের সাবেক এক সহকারী কমিশনার ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে তিন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) চট্টগ্রামের দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলা দুটি দায়ের করা হয়। দুটি মামলারই বাদী হলেন কার্যালয়টির সহকারী পরিচালক সায়েদ আলম।

দুর্নীতিতে অভিযুক্তরা হলেন কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনার আহসান হাবিব ও তাঁর স্ত্রী আসমা সুলতানা।

আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে ১ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৪ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৪১১ টাকার সম্পদ অর্জন এবং তা ভোগদখলের অভিযোগ আনে দুদক। অন্যদিকে আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৬৬ লাখ ২৪ হাজার ২৫০ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার বাসিন্দা আহসান হাবিব ১৯৮০ সালে কাস্টমসের একজন পরিদর্শক হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। ২০১২ সালে তিনি সহকারী কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৪ সালে তিনি ঢাকা দক্ষিণের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার হিসেবে অবসরে যান। তিনি চট্টগ্রামেও কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামের দুদক কার্যালয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী দাখিল করা হয়।

দুদক চট্টগ্রামের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একটি মামলায় কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ের সাবেক সহকারী কমিশনারকে আসামি করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক আইনের একই ধারায় আরেকটি মামলা হয়েছে সাবেক ওই কর্মকর্তার স্ত্রী আসমা সুলতানার বিরুদ্ধে। ওই মামলায় সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। অর্থাৎ অভিযুক্ত কাস্টমস কর্মকর্তা চাকরিরত অবস্থায় অসাধু উপায়ে অর্জিত টাকায় তাঁর স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জন ও তা ভোগদখলে রাখতে সহযোগিতা করেছেন।

সম্পদ বিবরণীতে আহসান হাবিব নিজ নামে মাত্র ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬১২ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৫০ হাজার টাকা অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। আর আসমা সুলতানা তাঁর নিজের নামে ২০ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকার স্থাবর সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করলেও কোনো অস্থাবর সম্পদ নেই বলে সম্পদ বিবরণীতে ঘোষণা দেন। তিনি নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করলেও দুদকের অনুসন্ধানে তাঁর ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মা-বাবার বিরোধ, ১০ বছরের শিশুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

ফরিদপুর প্রতিনিধি
নিবির মণ্ডল। ছবি: সংগৃহীত
নিবির মণ্ডল। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর সদর উপজেলার নিবির মণ্ডলের বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। এ বয়সে খেলাধুলা, মা-বাবার আদরে বড় হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু গত রোববার তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। শিশুটির স্বজনদের দাবি, মা-বাবার বিরোধের জেরে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে নিবির।

মৃত নিবির উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মোস্তফাডাঙ্গি গ্রামের মুরাদ মণ্ডলের (৪০) ছেলে। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। গত রোববার বসতঘরের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।

শিশুটির চাচা আজম মণ্ডল আজকের পত্রিকাকে জানান, আট বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমান তার বাবা মুরাদ মণ্ডল। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে মালদ্বীপ থেকে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে দেখেন, তার টাকাপয়সা কিছুই নেই। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ বাধে মুরাদের। পরে নিবিরসহ তিন সন্তানকে নিয়ে পাশের আদমপুর এলাকায় বাপের বাড়ি চলে যান তাঁর স্ত্রী।

আজম মণ্ডল জানান, দুই মাস আগে নিবির আবার তার বাবার কাছে চলে আসে। এরপর থেকে সে বাড়িতে বাবার সঙ্গেই থাকত। গত রোববার দুপুরে স্কুল থেকে ফিরে এসে নিবির দেখে, ঘরে খাবার নেই, ওর বাবাও মাঠে ছিল। পরে আরেক চাচাতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে নানাবাড়িতে যায়। সেই ভাতিজার বরাতে আজম মণ্ডল জানান, শিশুটি তার নানাবাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে খাবার চেয়েছিল। সেখানে তার মা তাকে বকাবকি করে। পরে বিকেলে ঘরে ফিরে নিবিরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তার বাবা। ছেলের মৃত্যুতে অচেতন হয়ে পড়া বাবা মুরাদ মণ্ডলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান আজম মণ্ডল।

শিশুটির পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল সোমবার দুপুরে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। বিকেলে দাফনের জন্য বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ছনেরটেক গোরস্তানে কবর খুঁড়তে যান প্রতিবেশীরা। এ কবরস্থানেই মোস্তফাডাঙ্গির মৃত বাসিন্দাদের দাফন করা হয়ে থাকে। তবে সেখানে গেলে কবর খুঁড়তে বাধা দেন ওই ইউনিয়নের বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।

প্রতিবেশী বাবুল মণ্ডল বলেন, ‘আমরা যখন খুঁড়তে যাই, তখন রফিক এসে বলে, এই কবরস্থানে গলায় দড়ি দেওয়া কোনো লাশ দাফন করা যাবে না, যার যার বাড়িতে গিয়ে কবর দাও। এসব বলে আমাদের অপমান করে পাঠায় দেয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির নেতা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই কবরস্থানে আজ পর্যন্ত কোনো গলায় দড়ি দেওয়া লাশ কবর দেওয়া হয়নি। এজন্য তাঁদের আমি বলছিলাম, কবরস্থানের সভাপতির সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাচ্ছি, কবর দিতে নিষেধ করি নাই। কিন্তু উনারা রাগ করে চলে গিয়ে অন্য জায়গা কবর দিছে।’

কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, ‘শিশুটির মা-বাবার বিভাজনের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। মা-বাবা একসঙ্গে থাকলে এমনটি নাও হতে পারত। তবে লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার বিষয়টি আমাদের কাছে কেউ জানায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

নীলফামারী প্রতিনিধি
চীনা হাসপাতালের নকশা। ছবি: সংগৃহীত
চীনা হাসপাতালের নকশা। ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে নীলফামারীতেই হচ্ছে চীন সরকারের উপহারের ১ হাজার শয্যার হাসপাতাল। গত ৩০ অক্টোবর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারি করা নোটিশে এ তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব ফাতিমা তুজ জোহরা ঠাকুর স্বাক্ষরিত ওই নোটিশ ‘অতীব জরুরি’ হিসেবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নোটিশের সূত্রমতে, নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের দারোয়ানী টেক্সটাইল মাঠে সাড়ে ২৫ একর জায়গার ওপর নির্মিত হবে চীনা হাসপাতাল। হাসপাতাল স্থাপনে ইতিমধ্যে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও বিভিন্ন স্থাপনার ব্যয় প্রাক্কলন তৈরি করতে বলা হয়েছে।

চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপনে নীলফামারী জেলাকে নির্বাচিত করায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। তাঁদের মতে, হাসপাতালটির ফলে এলাকার স্বাস্থ্যসেবার মান যেমন বাড়বে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াবে এই জেলা। উন্নত চিকিৎসা নিতে এখন আর দেশের বাইরে যেতে হবে না।

নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি সোহেল পারভেজ বলেন, ‘চীন সরকারের হাসপাতাল স্থাপন নিয়ে সরকারের সিলেকশন যথাযথ। দারোয়ানী মাঠ সব দিক থেকে এগিয়ে অন্যান্য জায়গাগুলোর চেয়ে। সব সুযোগ-সুবিধা পাবে হাসপাতালটি স্থাপনের ক্ষেত্রে। ব্যবসায়িকভাবে আরও সমৃদ্ধ হলো আমাদের জেলা।’

এ ব্যাপারে নীলফামারীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউজ্জামান বলেন, ‘চিঠিটি আমরা পেয়েছি। ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল স্থাপন বিষয়ে আমরা ডিজিটাল সার্ভে শুরু করেছি। গণপূর্ত বিভাগ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে।’

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান জানান, দারোয়ানী টেক্সটাইল এলাকায় ৬০ একরের বেশি সরকারি জায়গা রয়েছে। চীন সরকারের এক হাজার শয্যার হাসপাতাল স্থাপনে ২৫ একর জায়গা প্রয়োজন। ২৫ একর জায়গা হাসপাতালের জন্য দিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে হাসপাতাল স্থাপনে ব্যয় এবং ডিজাইনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা যায়, নীলফামারীতে হচ্ছে হাসপাতালটি।

প্রসঙ্গত, নিজ এলাকায় এই হাসপাতাল চেয়ে আন্দোলন হয়েছে রংপুরসহ কয়েকটি জেলায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত