Ajker Patrika

অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে রোগীর মূত্রথলি ও ভুঁড়ি কেটে দেওয়ার অভিযোগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
মহেশপুরের ঘুঘরি বাজারে আল আরাফাহ নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ছবি: আজকের পত্রিকা
মহেশপুরের ঘুঘরি বাজারে আল আরাফাহ নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঝিনাইদহের মহেশপুরে ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের সময় স্বপ্না খাতুন (২৫) নামের এক রোগীর মূত্রথলি ও ভুঁড়ি কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। ১৭ সেপ্টেম্বর মহেশপুরের ঘুঘরি বাজারে আল আরাফাহ নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে যশোরের জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন রোগী।

ভুক্তভোগী স্বপ্না খাতুন মহেশপুরের রঘুনাথপুর গ্রামের সোহেল রানার স্ত্রী।

রোগীর স্বজনেরা জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন স্বপ্না। কিন্তু অপারেশনের সময় রোগীর মূত্রথলি কেটে ফেলেন চিকিৎসক। এমনকি ওই নারীর ভুঁড়িতে বেশ কয়েকটি ছিদ্র করে ফেলা হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়। একপর্যায়ে রক্ত ও প্রশ্রাব পেটের ভেতরে জমতে শুরু করলে রোগীর অবস্থা শোচনীয় হয়ে যায়। পরে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রোগীকে যশোরের একটি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন স্বজনেরা। সেখানে আইসিইউতে রয়েছেন স্বপ্না খাতুন।

এদিকে স্বপ্না খাতুনের ভাই মনসুর হোসেন মিয়াজি বলেন, ‘ভুয়া ডাক্তার এনে অপারেশন করিয়ে আমার বোনকে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক। আমরা রোগীকে যশোরের একটি হাসপাতালে আইসিইউতে রেখেছি। সিজারিয়ান অপারেশনের আগে করা আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টটাও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে না। যশোরের হাসপাতাল থেকে রিপোর্টটা চাচ্ছে। এসব নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কথা বলতে গেলে তারা হুমকি-ধমকি দিচ্ছে আমাদের।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ক্লিনিকের একজন নার্স বলেন, ‘আমরা অল্প বেতনে চাকরি করি। এখানে অপারেশনের জন্য যেসব ডাক্তার আনা হয়, তাদের সম্পর্কে মানুষের অনেক ক্ষোভ, কিন্তু কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘুঘরি বাজারের স্থানীয় কয়েক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক কাজল ভুঁইয়া প্রভাব খাটিয়ে মানুষকে চিকিৎসার নামে হয়রানি করে আসছেন। আল আরাফাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এর আগেও ভুল চিকিৎসায় মানুষের ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে।’

অভিযোগের ব্যাপারে আল আরাফাহ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক কাজল ভুঁইয়া বলেন, ‘দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে। আমরা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। রোগী আমার প্রতিবেশী, তারা যা পারে করুক। আপনারা সাংবাদিক এ বিষয়ে মাথা ঘামাবেন না।’

ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন আছে কি না এবং স্বপ্না খাতুনের অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসকের পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে কাজল ভুঁইয়া বলেন, ‘অনুমোদন আছে। চিকিৎসকের নাম সোহেল রানা। তিনি কোটচাঁদপুর উপজেলা হাসপাতালের ডাক্তার।’

তবে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খবর নিয়ে জানা গেছে, সেখানে সোহেল রানা নামের কোনো চিকিৎসক নেই। পরে এ ব্যাপারে ক্লিনিক মালিককে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার কে, কোথায় চাকরি করেন, সেটা দিয়ে আপনাদের কাজ কী। আমি সবকিছু দেখছি কী করা যায়।’

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক। ঘটনাস্থলে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে ওই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের হাতে ইসরায়েলের ‘কয়েক লাখ পৃষ্ঠার’ গোপন নথি, পারমাণবিক স্থাপনার ছবি প্রকাশ

আ.লীগের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত

ভারত–চীন সীমান্তের শীতল লাদাখ জেন–জি আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ কেন

ভারতের কাছে হারের পর বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন রুবেল

চীনা নেতৃত্বাধীন বৃহত্তম বাণিজ্য জোট আরসিইপিতে যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত