জাহিদ হাসান, যশোর

দেশের অন্যতম বড় বিদ্যাপীঠ যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে শিক্ষকতা করছেন হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীর। হামিদুল সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আর শাহজাহান ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। শিক্ষকতার গণ্ডির বাইরে তরুণ এই দুই শিক্ষক নিজ গুণে হাজারো শিক্ষার্থীর কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছেন।
হামিদুল হক শাহীন ১৯৯৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০১ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম শ্রেণি ও সম্মিলিত মেধাতালিকায় নবম স্থান অধিকার করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান স্নাতক (প্রথম শ্রেণি) ও স্নাতকোত্তর (প্রথম শ্রেণি) সম্পন্ন করেন। এমএ ইন এডুকেশন উইথ মেরিট (ইউনিভার্সিটি অন নটিংহ্যাম, মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস); বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টারে (বিডিপিসি) ট্রেনিং অফিসার হিসেবে যোগদান; এরপর গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতার পর ৩১তম বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
তরুণ এই শিক্ষক ২০১৩ সালে যশোর এমএম কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। যে সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসবিমুখ হয়ে যাচ্ছেন, হামিদুল হক শাহীনের সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার কারণে আবারও ক্লাসমুখী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষকের ভাষ্য, ‘একজন শিক্ষকের কাজ যতটুকু না পড়ানো, তার চেয়ে বেশি হলো কীভাবে পড়তে হয় তা শেখানো। যতটা না পিটিয়ে মানুষ করা, তার চেয়ে মানুষ কীভাবে হতে হয় সেই মূল্যবোধ জাগ্রত করা। পাঠদান প্রক্রিয়াকে আনন্দদান করে তুলতে পারা। পাঠদানকে গল্পের ভেতরে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো। আর এই তিনটা শিখন প্রক্রিয়ার কারণেই শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হন বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।
শ্রেণিকক্ষে একাডেমিক পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগান হামিদুল হক শাহীন। শুধু শ্রেণিকক্ষে অনুপ্রেরণা নয়, তাঁর কল্যাণে তরুণেরা গড়ে তুলেছেন ‘আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই সংস্থার মাধ্যমে উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন তাঁরা। তাতে নিজেদের উপার্জনের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নেও তাঁরা ভূমিকা রাখছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, হামিদুল হক শাহীন শিক্ষকতা জীবনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কিছু করার অনুমতি পাননি। পরে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ২০১৩ সালে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইডিয়া নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গত এক দশকে শত শত সুবিধাবঞ্চিত শিশুর মধ্যে খাবার ও পোশাক বিতরণ করেছেন। এ ছাড়া রোজার মাসে তাঁরা শীতল পানি সরবরাহ, মসজিদে অজুখানা বানিয়ে দেওয়াসহ নানারকম সমাজসেবামূলক কাজ করেন।
এ ছাড়া প্রতি শুক্রবার অসহায় ভবঘুরেদের জন্য মিডডে মিলের ব্যবস্থা করছেন। প্রকল্পটি সম্প্রতি এই কাজের শততম পর্ব পার করেছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে তৈরি আইডিয়া পিঠা পার্কের পণ্য এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পিঠার কারখানা স্থাপন ও কাজের জন্য শিক্ষক শাহীন যশোর শহরের খড়কী শাহ আব্দুল করিম রোডে নিজের একটি জায়গা (৫ দশমিক ৮ শতাংশ) ছেলেমেয়েদের দিয়ে দিয়েছেন। ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর ওই বাড়িতেই পিঠা পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। পিঠা পার্কে পাটিসাপটা, পাকান, পুলি, ভাপা, চিতইসহ দেশীয় দেড় শতাধিক রকমের পিঠা তৈরি করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, পিঠা পার্ক থেকে অর্জিত লভ্যাংশ শুধু সদস্যরাই নেন না, এর একটা অংশ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ব্যয় করা হয়। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষা, বিসিএস শিক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নামমাত্র টাকা নেওয়া হয়, সেটাও নেন না হামিদুল। এসব টাকা ব্যয় করা হয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে।
মল্লিকা আফরোজ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক শিক্ষাই দেন না, কর্মমুখী শিক্ষাও দেন।’
হামিদুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার শিক্ষকেরাই জুগিয়েছেন। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমন কয়েকজন শিক্ষককে আমি পেয়েছি, যাঁরা আমাকে সব সময় সমৃদ্ধির পথে, ভালো একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে উৎসাহী করেছেন। সেসব শিক্ষকের অনুপ্রেরণাতেই আমি আজ শিক্ষক। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে বিশ্বাস করি বলেই পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দিই।’
অপর শিক্ষক শাহজাহান কবীর ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক ও ২০০৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালে নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস থেকে মাস্টার্স ইন এডুকেশন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগে যোগদান করেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের তিনি আনন্দ দেন সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। পাঠদানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি করতে তিনি বিভিন্ন কুইজ ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন। ইতিহাস বিষয়টি সবার কাছে পৌঁছে দিতে কলেজে গড়ে তুলেছেন ‘ইতিহাস ক্লাব’। গ্রুপভিত্তিক গল্পের মধ্য দিয়ে পাঠদানকে শিক্ষার্থীদের উপভোগ করান তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশমান এই যুগে বই পড়ার প্রবণতা আমাদের সমাজে কমে আসছে। কিশোর ও তরুণেরা ডিজিটাল মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষা ও পাসনির্ভর হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের বাইরে তেমন কোনো বই পড়ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে শাহজাহান শিক্ষকতার পাশাপাশি বই পড়ার আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ নামে সংগঠন গড়ে তুলেছেন। নিজ কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও শহরের বিভিন্ন কলেজ, স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই সংগঠনের সদস্য।
‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ কার্যক্রমের সদস্যরা নিজেরা বই পড়ার পাশাপাশি মূলত এখানে নিখাদ বন্ধুত্ব, নির্মল আনন্দ, সৌন্দর্য সৃজনের চর্চা করে থাকেন। এ ছাড়া নিজেদের পাশাপাশি অন্যকে বই পড়ানোর জন্য ‘বইয়ের বন্ধু’ নামে ‘ফ্রি বুক হোম ডেলিভারি সার্ভিস’ চালু করেছেন শাহজাহান। নিয়মিত পাঠচক্রে বই আলোচনার পাশাপাশি থাকে গান, কবিতা আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতা পাঠসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থিত সবাই পাঠচক্রে পূর্বনির্ধারিত বইয়ের ওপর পাঠ প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ পান। কোনো কোনো বইয়ের জন্য প্রধান আলোচকও রাখা হয়। বইটির ওপর বিশদ আলোচনার পাশাপাশি প্রধান আলোচক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
পাঠচক্রের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন, জাতীয় দিবস উদ্যাপন, রবীন্দ্র-নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপনের মতো নানা আয়োজন করে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’। প্রতি আসরে চা-নাশতার ব্যবস্থা রাখা হয়। সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে কোনো চাঁদা নেওয়া হয় না। চাকরির বেতনের টাকা বাঁচিয়েই বই কেনা ও নাশতার খরচ জোগান শাহজাহান কবীর। সদস্যরা এক বছরে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ বই থেকে নির্বাচিত ৪৮ থেকে ৫২টি বই পড়ার সুযোগ পান। শুরু থেকেই পাঠচক্রের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন শাহজাহান কবীর।
পারিবারিকভাবে শিক্ষক পরিবারে বেড়ে ওঠার অনুপ্রেরণাতেই তিনি শিক্ষক পেশায় এসেছেন। ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পাঠচক্রটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে শাহজাহান কবীর বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার একটি সুস্থ-সুন্দর পাঠকসমাজ গড়ে তোলা। একটা সুস্থ, মানবিক ও মননশীল সমাজ গঠনের জন্য বই পড়ার অভ্যাস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
এই দুই গুণী শিক্ষকের বিষয়ে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন বলেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীরের কার্যক্রম বেশ প্রশংসিত। তাঁরা দুজনই শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় তাদের কর্মপরিধির কারণে। তাঁরা দুজনই শিক্ষকদের মডেল।
এ বিষয়ে যশোরের প্রবীণ শিক্ষাবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন পাঠক কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষের বাইরে শাহজাহান কবীর মানুষকে বই পড়ানোর চেষ্টা করছেন। ক্লাসেও পড়ার বাইরে নতুন নতুন বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করছেন। অন্যদিকে হামিদুল হক ছেলেমেয়েদের আত্মনির্ভর করতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছেন। তাঁরা আধুনিক শিক্ষকদের মডেল। তাঁরা কোচিংয়ের দিকে অগ্রসর হননি। তাঁরা মানুষকে আলোকিত করা, ভালো পথের দিশা দেওয়ার ব্রত নিয়েছেন। তাঁরা অর্থের পেছনে ঘোরেন না। তাঁদের কারণে শিক্ষার্থীরা আলোকিত হচ্ছেন।

দেশের অন্যতম বড় বিদ্যাপীঠ যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে শিক্ষকতা করছেন হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীর। হামিদুল সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আর শাহজাহান ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। শিক্ষকতার গণ্ডির বাইরে তরুণ এই দুই শিক্ষক নিজ গুণে হাজারো শিক্ষার্থীর কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছেন।
হামিদুল হক শাহীন ১৯৯৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০১ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম শ্রেণি ও সম্মিলিত মেধাতালিকায় নবম স্থান অধিকার করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান স্নাতক (প্রথম শ্রেণি) ও স্নাতকোত্তর (প্রথম শ্রেণি) সম্পন্ন করেন। এমএ ইন এডুকেশন উইথ মেরিট (ইউনিভার্সিটি অন নটিংহ্যাম, মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস); বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টারে (বিডিপিসি) ট্রেনিং অফিসার হিসেবে যোগদান; এরপর গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতার পর ৩১তম বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
তরুণ এই শিক্ষক ২০১৩ সালে যশোর এমএম কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। যে সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসবিমুখ হয়ে যাচ্ছেন, হামিদুল হক শাহীনের সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার কারণে আবারও ক্লাসমুখী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষকের ভাষ্য, ‘একজন শিক্ষকের কাজ যতটুকু না পড়ানো, তার চেয়ে বেশি হলো কীভাবে পড়তে হয় তা শেখানো। যতটা না পিটিয়ে মানুষ করা, তার চেয়ে মানুষ কীভাবে হতে হয় সেই মূল্যবোধ জাগ্রত করা। পাঠদান প্রক্রিয়াকে আনন্দদান করে তুলতে পারা। পাঠদানকে গল্পের ভেতরে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো। আর এই তিনটা শিখন প্রক্রিয়ার কারণেই শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হন বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।
শ্রেণিকক্ষে একাডেমিক পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগান হামিদুল হক শাহীন। শুধু শ্রেণিকক্ষে অনুপ্রেরণা নয়, তাঁর কল্যাণে তরুণেরা গড়ে তুলেছেন ‘আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই সংস্থার মাধ্যমে উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন তাঁরা। তাতে নিজেদের উপার্জনের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নেও তাঁরা ভূমিকা রাখছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, হামিদুল হক শাহীন শিক্ষকতা জীবনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কিছু করার অনুমতি পাননি। পরে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ২০১৩ সালে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইডিয়া নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গত এক দশকে শত শত সুবিধাবঞ্চিত শিশুর মধ্যে খাবার ও পোশাক বিতরণ করেছেন। এ ছাড়া রোজার মাসে তাঁরা শীতল পানি সরবরাহ, মসজিদে অজুখানা বানিয়ে দেওয়াসহ নানারকম সমাজসেবামূলক কাজ করেন।
এ ছাড়া প্রতি শুক্রবার অসহায় ভবঘুরেদের জন্য মিডডে মিলের ব্যবস্থা করছেন। প্রকল্পটি সম্প্রতি এই কাজের শততম পর্ব পার করেছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে তৈরি আইডিয়া পিঠা পার্কের পণ্য এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পিঠার কারখানা স্থাপন ও কাজের জন্য শিক্ষক শাহীন যশোর শহরের খড়কী শাহ আব্দুল করিম রোডে নিজের একটি জায়গা (৫ দশমিক ৮ শতাংশ) ছেলেমেয়েদের দিয়ে দিয়েছেন। ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর ওই বাড়িতেই পিঠা পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। পিঠা পার্কে পাটিসাপটা, পাকান, পুলি, ভাপা, চিতইসহ দেশীয় দেড় শতাধিক রকমের পিঠা তৈরি করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, পিঠা পার্ক থেকে অর্জিত লভ্যাংশ শুধু সদস্যরাই নেন না, এর একটা অংশ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ব্যয় করা হয়। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষা, বিসিএস শিক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নামমাত্র টাকা নেওয়া হয়, সেটাও নেন না হামিদুল। এসব টাকা ব্যয় করা হয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে।
মল্লিকা আফরোজ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক শিক্ষাই দেন না, কর্মমুখী শিক্ষাও দেন।’
হামিদুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার শিক্ষকেরাই জুগিয়েছেন। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমন কয়েকজন শিক্ষককে আমি পেয়েছি, যাঁরা আমাকে সব সময় সমৃদ্ধির পথে, ভালো একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে উৎসাহী করেছেন। সেসব শিক্ষকের অনুপ্রেরণাতেই আমি আজ শিক্ষক। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে বিশ্বাস করি বলেই পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দিই।’
অপর শিক্ষক শাহজাহান কবীর ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক ও ২০০৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালে নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস থেকে মাস্টার্স ইন এডুকেশন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগে যোগদান করেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের তিনি আনন্দ দেন সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। পাঠদানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি করতে তিনি বিভিন্ন কুইজ ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন। ইতিহাস বিষয়টি সবার কাছে পৌঁছে দিতে কলেজে গড়ে তুলেছেন ‘ইতিহাস ক্লাব’। গ্রুপভিত্তিক গল্পের মধ্য দিয়ে পাঠদানকে শিক্ষার্থীদের উপভোগ করান তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশমান এই যুগে বই পড়ার প্রবণতা আমাদের সমাজে কমে আসছে। কিশোর ও তরুণেরা ডিজিটাল মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষা ও পাসনির্ভর হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের বাইরে তেমন কোনো বই পড়ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে শাহজাহান শিক্ষকতার পাশাপাশি বই পড়ার আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ নামে সংগঠন গড়ে তুলেছেন। নিজ কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও শহরের বিভিন্ন কলেজ, স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই সংগঠনের সদস্য।
‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ কার্যক্রমের সদস্যরা নিজেরা বই পড়ার পাশাপাশি মূলত এখানে নিখাদ বন্ধুত্ব, নির্মল আনন্দ, সৌন্দর্য সৃজনের চর্চা করে থাকেন। এ ছাড়া নিজেদের পাশাপাশি অন্যকে বই পড়ানোর জন্য ‘বইয়ের বন্ধু’ নামে ‘ফ্রি বুক হোম ডেলিভারি সার্ভিস’ চালু করেছেন শাহজাহান। নিয়মিত পাঠচক্রে বই আলোচনার পাশাপাশি থাকে গান, কবিতা আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতা পাঠসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থিত সবাই পাঠচক্রে পূর্বনির্ধারিত বইয়ের ওপর পাঠ প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ পান। কোনো কোনো বইয়ের জন্য প্রধান আলোচকও রাখা হয়। বইটির ওপর বিশদ আলোচনার পাশাপাশি প্রধান আলোচক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
পাঠচক্রের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন, জাতীয় দিবস উদ্যাপন, রবীন্দ্র-নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপনের মতো নানা আয়োজন করে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’। প্রতি আসরে চা-নাশতার ব্যবস্থা রাখা হয়। সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে কোনো চাঁদা নেওয়া হয় না। চাকরির বেতনের টাকা বাঁচিয়েই বই কেনা ও নাশতার খরচ জোগান শাহজাহান কবীর। সদস্যরা এক বছরে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ বই থেকে নির্বাচিত ৪৮ থেকে ৫২টি বই পড়ার সুযোগ পান। শুরু থেকেই পাঠচক্রের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন শাহজাহান কবীর।
পারিবারিকভাবে শিক্ষক পরিবারে বেড়ে ওঠার অনুপ্রেরণাতেই তিনি শিক্ষক পেশায় এসেছেন। ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পাঠচক্রটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে শাহজাহান কবীর বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার একটি সুস্থ-সুন্দর পাঠকসমাজ গড়ে তোলা। একটা সুস্থ, মানবিক ও মননশীল সমাজ গঠনের জন্য বই পড়ার অভ্যাস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
এই দুই গুণী শিক্ষকের বিষয়ে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন বলেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীরের কার্যক্রম বেশ প্রশংসিত। তাঁরা দুজনই শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় তাদের কর্মপরিধির কারণে। তাঁরা দুজনই শিক্ষকদের মডেল।
এ বিষয়ে যশোরের প্রবীণ শিক্ষাবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন পাঠক কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষের বাইরে শাহজাহান কবীর মানুষকে বই পড়ানোর চেষ্টা করছেন। ক্লাসেও পড়ার বাইরে নতুন নতুন বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করছেন। অন্যদিকে হামিদুল হক ছেলেমেয়েদের আত্মনির্ভর করতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছেন। তাঁরা আধুনিক শিক্ষকদের মডেল। তাঁরা কোচিংয়ের দিকে অগ্রসর হননি। তাঁরা মানুষকে আলোকিত করা, ভালো পথের দিশা দেওয়ার ব্রত নিয়েছেন। তাঁরা অর্থের পেছনে ঘোরেন না। তাঁদের কারণে শিক্ষার্থীরা আলোকিত হচ্ছেন।
জাহিদ হাসান, যশোর

দেশের অন্যতম বড় বিদ্যাপীঠ যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে শিক্ষকতা করছেন হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীর। হামিদুল সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আর শাহজাহান ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। শিক্ষকতার গণ্ডির বাইরে তরুণ এই দুই শিক্ষক নিজ গুণে হাজারো শিক্ষার্থীর কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছেন।
হামিদুল হক শাহীন ১৯৯৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০১ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম শ্রেণি ও সম্মিলিত মেধাতালিকায় নবম স্থান অধিকার করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান স্নাতক (প্রথম শ্রেণি) ও স্নাতকোত্তর (প্রথম শ্রেণি) সম্পন্ন করেন। এমএ ইন এডুকেশন উইথ মেরিট (ইউনিভার্সিটি অন নটিংহ্যাম, মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস); বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টারে (বিডিপিসি) ট্রেনিং অফিসার হিসেবে যোগদান; এরপর গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতার পর ৩১তম বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
তরুণ এই শিক্ষক ২০১৩ সালে যশোর এমএম কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। যে সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসবিমুখ হয়ে যাচ্ছেন, হামিদুল হক শাহীনের সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার কারণে আবারও ক্লাসমুখী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষকের ভাষ্য, ‘একজন শিক্ষকের কাজ যতটুকু না পড়ানো, তার চেয়ে বেশি হলো কীভাবে পড়তে হয় তা শেখানো। যতটা না পিটিয়ে মানুষ করা, তার চেয়ে মানুষ কীভাবে হতে হয় সেই মূল্যবোধ জাগ্রত করা। পাঠদান প্রক্রিয়াকে আনন্দদান করে তুলতে পারা। পাঠদানকে গল্পের ভেতরে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো। আর এই তিনটা শিখন প্রক্রিয়ার কারণেই শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হন বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।
শ্রেণিকক্ষে একাডেমিক পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগান হামিদুল হক শাহীন। শুধু শ্রেণিকক্ষে অনুপ্রেরণা নয়, তাঁর কল্যাণে তরুণেরা গড়ে তুলেছেন ‘আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই সংস্থার মাধ্যমে উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন তাঁরা। তাতে নিজেদের উপার্জনের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নেও তাঁরা ভূমিকা রাখছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, হামিদুল হক শাহীন শিক্ষকতা জীবনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কিছু করার অনুমতি পাননি। পরে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ২০১৩ সালে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইডিয়া নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গত এক দশকে শত শত সুবিধাবঞ্চিত শিশুর মধ্যে খাবার ও পোশাক বিতরণ করেছেন। এ ছাড়া রোজার মাসে তাঁরা শীতল পানি সরবরাহ, মসজিদে অজুখানা বানিয়ে দেওয়াসহ নানারকম সমাজসেবামূলক কাজ করেন।
এ ছাড়া প্রতি শুক্রবার অসহায় ভবঘুরেদের জন্য মিডডে মিলের ব্যবস্থা করছেন। প্রকল্পটি সম্প্রতি এই কাজের শততম পর্ব পার করেছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে তৈরি আইডিয়া পিঠা পার্কের পণ্য এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পিঠার কারখানা স্থাপন ও কাজের জন্য শিক্ষক শাহীন যশোর শহরের খড়কী শাহ আব্দুল করিম রোডে নিজের একটি জায়গা (৫ দশমিক ৮ শতাংশ) ছেলেমেয়েদের দিয়ে দিয়েছেন। ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর ওই বাড়িতেই পিঠা পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। পিঠা পার্কে পাটিসাপটা, পাকান, পুলি, ভাপা, চিতইসহ দেশীয় দেড় শতাধিক রকমের পিঠা তৈরি করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, পিঠা পার্ক থেকে অর্জিত লভ্যাংশ শুধু সদস্যরাই নেন না, এর একটা অংশ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ব্যয় করা হয়। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষা, বিসিএস শিক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নামমাত্র টাকা নেওয়া হয়, সেটাও নেন না হামিদুল। এসব টাকা ব্যয় করা হয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে।
মল্লিকা আফরোজ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক শিক্ষাই দেন না, কর্মমুখী শিক্ষাও দেন।’
হামিদুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার শিক্ষকেরাই জুগিয়েছেন। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমন কয়েকজন শিক্ষককে আমি পেয়েছি, যাঁরা আমাকে সব সময় সমৃদ্ধির পথে, ভালো একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে উৎসাহী করেছেন। সেসব শিক্ষকের অনুপ্রেরণাতেই আমি আজ শিক্ষক। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে বিশ্বাস করি বলেই পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দিই।’
অপর শিক্ষক শাহজাহান কবীর ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক ও ২০০৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালে নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস থেকে মাস্টার্স ইন এডুকেশন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগে যোগদান করেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের তিনি আনন্দ দেন সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। পাঠদানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি করতে তিনি বিভিন্ন কুইজ ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন। ইতিহাস বিষয়টি সবার কাছে পৌঁছে দিতে কলেজে গড়ে তুলেছেন ‘ইতিহাস ক্লাব’। গ্রুপভিত্তিক গল্পের মধ্য দিয়ে পাঠদানকে শিক্ষার্থীদের উপভোগ করান তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশমান এই যুগে বই পড়ার প্রবণতা আমাদের সমাজে কমে আসছে। কিশোর ও তরুণেরা ডিজিটাল মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষা ও পাসনির্ভর হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের বাইরে তেমন কোনো বই পড়ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে শাহজাহান শিক্ষকতার পাশাপাশি বই পড়ার আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ নামে সংগঠন গড়ে তুলেছেন। নিজ কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও শহরের বিভিন্ন কলেজ, স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই সংগঠনের সদস্য।
‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ কার্যক্রমের সদস্যরা নিজেরা বই পড়ার পাশাপাশি মূলত এখানে নিখাদ বন্ধুত্ব, নির্মল আনন্দ, সৌন্দর্য সৃজনের চর্চা করে থাকেন। এ ছাড়া নিজেদের পাশাপাশি অন্যকে বই পড়ানোর জন্য ‘বইয়ের বন্ধু’ নামে ‘ফ্রি বুক হোম ডেলিভারি সার্ভিস’ চালু করেছেন শাহজাহান। নিয়মিত পাঠচক্রে বই আলোচনার পাশাপাশি থাকে গান, কবিতা আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতা পাঠসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থিত সবাই পাঠচক্রে পূর্বনির্ধারিত বইয়ের ওপর পাঠ প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ পান। কোনো কোনো বইয়ের জন্য প্রধান আলোচকও রাখা হয়। বইটির ওপর বিশদ আলোচনার পাশাপাশি প্রধান আলোচক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
পাঠচক্রের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন, জাতীয় দিবস উদ্যাপন, রবীন্দ্র-নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপনের মতো নানা আয়োজন করে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’। প্রতি আসরে চা-নাশতার ব্যবস্থা রাখা হয়। সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে কোনো চাঁদা নেওয়া হয় না। চাকরির বেতনের টাকা বাঁচিয়েই বই কেনা ও নাশতার খরচ জোগান শাহজাহান কবীর। সদস্যরা এক বছরে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ বই থেকে নির্বাচিত ৪৮ থেকে ৫২টি বই পড়ার সুযোগ পান। শুরু থেকেই পাঠচক্রের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন শাহজাহান কবীর।
পারিবারিকভাবে শিক্ষক পরিবারে বেড়ে ওঠার অনুপ্রেরণাতেই তিনি শিক্ষক পেশায় এসেছেন। ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পাঠচক্রটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে শাহজাহান কবীর বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার একটি সুস্থ-সুন্দর পাঠকসমাজ গড়ে তোলা। একটা সুস্থ, মানবিক ও মননশীল সমাজ গঠনের জন্য বই পড়ার অভ্যাস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
এই দুই গুণী শিক্ষকের বিষয়ে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন বলেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীরের কার্যক্রম বেশ প্রশংসিত। তাঁরা দুজনই শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় তাদের কর্মপরিধির কারণে। তাঁরা দুজনই শিক্ষকদের মডেল।
এ বিষয়ে যশোরের প্রবীণ শিক্ষাবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন পাঠক কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষের বাইরে শাহজাহান কবীর মানুষকে বই পড়ানোর চেষ্টা করছেন। ক্লাসেও পড়ার বাইরে নতুন নতুন বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করছেন। অন্যদিকে হামিদুল হক ছেলেমেয়েদের আত্মনির্ভর করতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছেন। তাঁরা আধুনিক শিক্ষকদের মডেল। তাঁরা কোচিংয়ের দিকে অগ্রসর হননি। তাঁরা মানুষকে আলোকিত করা, ভালো পথের দিশা দেওয়ার ব্রত নিয়েছেন। তাঁরা অর্থের পেছনে ঘোরেন না। তাঁদের কারণে শিক্ষার্থীরা আলোকিত হচ্ছেন।

দেশের অন্যতম বড় বিদ্যাপীঠ যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে শিক্ষকতা করছেন হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীর। হামিদুল সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আর শাহজাহান ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। শিক্ষকতার গণ্ডির বাইরে তরুণ এই দুই শিক্ষক নিজ গুণে হাজারো শিক্ষার্থীর কাছে আদর্শ হয়ে উঠেছেন।
হামিদুল হক শাহীন ১৯৯৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে যশোর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি, ২০০১ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম শ্রেণি ও সম্মিলিত মেধাতালিকায় নবম স্থান অধিকার করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান স্নাতক (প্রথম শ্রেণি) ও স্নাতকোত্তর (প্রথম শ্রেণি) সম্পন্ন করেন। এমএ ইন এডুকেশন উইথ মেরিট (ইউনিভার্সিটি অন নটিংহ্যাম, মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস); বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টারে (বিডিপিসি) ট্রেনিং অফিসার হিসেবে যোগদান; এরপর গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতার পর ৩১তম বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
তরুণ এই শিক্ষক ২০১৩ সালে যশোর এমএম কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। যে সময়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসবিমুখ হয়ে যাচ্ছেন, হামিদুল হক শাহীনের সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার কারণে আবারও ক্লাসমুখী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষকের ভাষ্য, ‘একজন শিক্ষকের কাজ যতটুকু না পড়ানো, তার চেয়ে বেশি হলো কীভাবে পড়তে হয় তা শেখানো। যতটা না পিটিয়ে মানুষ করা, তার চেয়ে মানুষ কীভাবে হতে হয় সেই মূল্যবোধ জাগ্রত করা। পাঠদান প্রক্রিয়াকে আনন্দদান করে তুলতে পারা। পাঠদানকে গল্পের ভেতরে নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ানো। আর এই তিনটা শিখন প্রক্রিয়ার কারণেই শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হন বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন।
শ্রেণিকক্ষে একাডেমিক পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগান হামিদুল হক শাহীন। শুধু শ্রেণিকক্ষে অনুপ্রেরণা নয়, তাঁর কল্যাণে তরুণেরা গড়ে তুলেছেন ‘আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই সংস্থার মাধ্যমে উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন তাঁরা। তাতে নিজেদের উপার্জনের পাশাপাশি এলাকার উন্নয়নেও তাঁরা ভূমিকা রাখছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, হামিদুল হক শাহীন শিক্ষকতা জীবনের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কিছু করার অনুমতি পাননি। পরে কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে ২০১৩ সালে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইডিয়া নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গত এক দশকে শত শত সুবিধাবঞ্চিত শিশুর মধ্যে খাবার ও পোশাক বিতরণ করেছেন। এ ছাড়া রোজার মাসে তাঁরা শীতল পানি সরবরাহ, মসজিদে অজুখানা বানিয়ে দেওয়াসহ নানারকম সমাজসেবামূলক কাজ করেন।
এ ছাড়া প্রতি শুক্রবার অসহায় ভবঘুরেদের জন্য মিডডে মিলের ব্যবস্থা করছেন। প্রকল্পটি সম্প্রতি এই কাজের শততম পর্ব পার করেছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে তৈরি আইডিয়া পিঠা পার্কের পণ্য এখন দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পিঠার কারখানা স্থাপন ও কাজের জন্য শিক্ষক শাহীন যশোর শহরের খড়কী শাহ আব্দুল করিম রোডে নিজের একটি জায়গা (৫ দশমিক ৮ শতাংশ) ছেলেমেয়েদের দিয়ে দিয়েছেন। ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর ওই বাড়িতেই পিঠা পার্ক স্থাপন করা হয়েছে। পিঠা পার্কে পাটিসাপটা, পাকান, পুলি, ভাপা, চিতইসহ দেশীয় দেড় শতাধিক রকমের পিঠা তৈরি করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, পিঠা পার্ক থেকে অর্জিত লভ্যাংশ শুধু সদস্যরাই নেন না, এর একটা অংশ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য ব্যয় করা হয়। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষা, বিসিএস শিক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নামমাত্র টাকা নেওয়া হয়, সেটাও নেন না হামিদুল। এসব টাকা ব্যয় করা হয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে।
মল্লিকা আফরোজ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক শিক্ষাই দেন না, কর্মমুখী শিক্ষাও দেন।’
হামিদুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার শিক্ষকেরাই জুগিয়েছেন। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমন কয়েকজন শিক্ষককে আমি পেয়েছি, যাঁরা আমাকে সব সময় সমৃদ্ধির পথে, ভালো একজন মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে উৎসাহী করেছেন। সেসব শিক্ষকের অনুপ্রেরণাতেই আমি আজ শিক্ষক। কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থাকে বিশ্বাস করি বলেই পাঠদানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেদের মতো কিছু করার অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দিই।’
অপর শিক্ষক শাহজাহান কবীর ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক ও ২০০৯ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ২০১৯ সালে নটিংহ্যাম ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া ক্যাম্পাস থেকে মাস্টার্স ইন এডুকেশন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ইতিহাস বিভাগে যোগদান করেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে শিক্ষার্থীদের তিনি আনন্দ দেন সৃজনশীল পাঠদান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। পাঠদানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি করতে তিনি বিভিন্ন কুইজ ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করেন। ইতিহাস বিষয়টি সবার কাছে পৌঁছে দিতে কলেজে গড়ে তুলেছেন ‘ইতিহাস ক্লাব’। গ্রুপভিত্তিক গল্পের মধ্য দিয়ে পাঠদানকে শিক্ষার্থীদের উপভোগ করান তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তির দ্রুত বিকাশমান এই যুগে বই পড়ার প্রবণতা আমাদের সমাজে কমে আসছে। কিশোর ও তরুণেরা ডিজিটাল মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষা ও পাসনির্ভর হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের বাইরে তেমন কোনো বই পড়ছেন না। এমন পরিস্থিতিতে শাহজাহান শিক্ষকতার পাশাপাশি বই পড়ার আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ নামে সংগঠন গড়ে তুলেছেন। নিজ কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও শহরের বিভিন্ন কলেজ, স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই সংগঠনের সদস্য।
‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’ কার্যক্রমের সদস্যরা নিজেরা বই পড়ার পাশাপাশি মূলত এখানে নিখাদ বন্ধুত্ব, নির্মল আনন্দ, সৌন্দর্য সৃজনের চর্চা করে থাকেন। এ ছাড়া নিজেদের পাশাপাশি অন্যকে বই পড়ানোর জন্য ‘বইয়ের বন্ধু’ নামে ‘ফ্রি বুক হোম ডেলিভারি সার্ভিস’ চালু করেছেন শাহজাহান। নিয়মিত পাঠচক্রে বই আলোচনার পাশাপাশি থাকে গান, কবিতা আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতা পাঠসহ নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থিত সবাই পাঠচক্রে পূর্বনির্ধারিত বইয়ের ওপর পাঠ প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ পান। কোনো কোনো বইয়ের জন্য প্রধান আলোচকও রাখা হয়। বইটির ওপর বিশদ আলোচনার পাশাপাশি প্রধান আলোচক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
পাঠচক্রের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন, জাতীয় দিবস উদ্যাপন, রবীন্দ্র-নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপনের মতো নানা আয়োজন করে ‘সপ্তাহে একটি বই পড়ি’। প্রতি আসরে চা-নাশতার ব্যবস্থা রাখা হয়। সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে কোনো চাঁদা নেওয়া হয় না। চাকরির বেতনের টাকা বাঁচিয়েই বই কেনা ও নাশতার খরচ জোগান শাহজাহান কবীর। সদস্যরা এক বছরে বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ বই থেকে নির্বাচিত ৪৮ থেকে ৫২টি বই পড়ার সুযোগ পান। শুরু থেকেই পাঠচক্রের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন শাহজাহান কবীর।
পারিবারিকভাবে শিক্ষক পরিবারে বেড়ে ওঠার অনুপ্রেরণাতেই তিনি শিক্ষক পেশায় এসেছেন। ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পাঠচক্রটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে শাহজাহান কবীর বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার একটি সুস্থ-সুন্দর পাঠকসমাজ গড়ে তোলা। একটা সুস্থ, মানবিক ও মননশীল সমাজ গঠনের জন্য বই পড়ার অভ্যাস অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
এই দুই গুণী শিক্ষকের বিষয়ে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন বলেন, শিক্ষকতার পাশাপাশি হামিদুল হক শাহীন ও শাহজাহান কবীরের কার্যক্রম বেশ প্রশংসিত। তাঁরা দুজনই শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় তাদের কর্মপরিধির কারণে। তাঁরা দুজনই শিক্ষকদের মডেল।
এ বিষয়ে যশোরের প্রবীণ শিক্ষাবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন পাঠক কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষের বাইরে শাহজাহান কবীর মানুষকে বই পড়ানোর চেষ্টা করছেন। ক্লাসেও পড়ার বাইরে নতুন নতুন বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করছেন। অন্যদিকে হামিদুল হক ছেলেমেয়েদের আত্মনির্ভর করতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছেন। তাঁরা আধুনিক শিক্ষকদের মডেল। তাঁরা কোচিংয়ের দিকে অগ্রসর হননি। তাঁরা মানুষকে আলোকিত করা, ভালো পথের দিশা দেওয়ার ব্রত নিয়েছেন। তাঁরা অর্থের পেছনে ঘোরেন না। তাঁদের কারণে শিক্ষার্থীরা আলোকিত হচ্ছেন।

রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
২ ঘণ্টা আগে
বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।
২ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
২ ঘণ্টা আগেউত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি

রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই ইউসুফ আলী রেদওয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দক্ষিণখান থেকে মাসুম ও ফাহিম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এজাহারের অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ‘মূল হোতা’ উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। নেপথ্যে রয়েছে, জুলাই রেভেলস অফিসটি দখল। জানা গেছে, উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের জুলাই রেভেলসের বর্তমান অফিসটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেটি নিয়ন্ত্রণ করত সন্ত্রাসী আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। তিনি দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলতাফ ও তাঁর নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। এই সুযোগে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন। পরে ওই অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি টাঙিয়ে জুলাই রেভেলস নামের একটি সংগঠন করা হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ উত্তরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যে আসেন। সেই সঙ্গে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে গড়া জুলাই রেভেলসের অফিসটি খালি করে দিতে বলেন। কিন্তু রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন এতে নারাজ ছিল; যা নিয়ে আলতাফ ও রেদওয়ানের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরেই আলতাফ ও তাঁর সহযোগীরা রেদওয়ানকে কুপিয়ে জখম করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোর্শেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে এক কক্ষের অফিসটি ছিল শ্রমিক লীগের। শ্রমিক লীগের সেই অফিস দখল করে জুলাই রেভেলসের কার্যালয় করা হয়েছে। এদিকে শ্রমিক লীগের আলতাফ বিএনপির লোকজনের সঙ্গে মিল দিয়ে প্রকাশ্যে এসে ওই অফিস ফেরত চেয়েছিল। কিন্তু জুলাই রেভেলসের সদস্যরা সেটি না দেওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
ওসি আরও জানান, আহত রেদওয়ান বাদী হয়ে আলতাফকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাসুম ও ফাহিমও এজাহারভুক্ত আসামি।

রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের পাবলিক কলেজ-সংলগ্ন জুলাই রেভেলসের অফিসে সংগঠনটির প্রস্তাবিত সহসংগঠক ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও সদস্য মো. ইয়াসিনকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই ইউসুফ আলী রেদওয়ান বাদী হয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
এ বিষয়ে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় দক্ষিণখান থেকে মাসুম ও ফাহিম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং এজাহারের অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলাই রেভেলসের সদস্যদের ওপর হামলার ‘মূল হোতা’ উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও শীর্ষ সন্ত্রাসী আলতাফ হোসেন ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। নেপথ্যে রয়েছে, জুলাই রেভেলস অফিসটি দখল। জানা গেছে, উত্তরা ৮ নম্বর সেক্টরের জুলাই রেভেলসের বর্তমান অফিসটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে উত্তরা পূর্ব থানা শ্রমিক লীগের অফিস ছিল। সেটি নিয়ন্ত্রণ করত সন্ত্রাসী আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ। তিনি দক্ষিণখানের ফায়দাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে।
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলতাফ ও তাঁর নেতা-কর্মীরা পালিয়ে যান। এই সুযোগে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে ইউসুফ আলী রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন। পরে ওই অফিসে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি টাঙিয়ে জুলাই রেভেলস নামের একটি সংগঠন করা হয়।
জানা যায়, সম্প্রতি আলতাফ ওরফে ঠোঁটকাটা আলতাফ উত্তরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রকাশ্যে আসেন। সেই সঙ্গে শ্রমিক লীগের অফিসটি দখল করে গড়া জুলাই রেভেলসের অফিসটি খালি করে দিতে বলেন। কিন্তু রেদওয়ান ও তাঁর সংগঠনের লোকজন এতে নারাজ ছিল; যা নিয়ে আলতাফ ও রেদওয়ানের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। এর জের ধরেই আলতাফ ও তাঁর সহযোগীরা রেদওয়ানকে কুপিয়ে জখম করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোর্শেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগে এক কক্ষের অফিসটি ছিল শ্রমিক লীগের। শ্রমিক লীগের সেই অফিস দখল করে জুলাই রেভেলসের কার্যালয় করা হয়েছে। এদিকে শ্রমিক লীগের আলতাফ বিএনপির লোকজনের সঙ্গে মিল দিয়ে প্রকাশ্যে এসে ওই অফিস ফেরত চেয়েছিল। কিন্তু জুলাই রেভেলসের সদস্যরা সেটি না দেওয়ায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
ওসি আরও জানান, আহত রেদওয়ান বাদী হয়ে আলতাফকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাসুম ও ফাহিমও এজাহারভুক্ত আসামি।

শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
০৫ অক্টোবর ২০২৩
সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
২ ঘণ্টা আগে
বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।
২ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
২ ঘণ্টা আগেচুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম।
জানা গেছে, সদর উপজেলার পাঁচমাইল এলাকার এক বিএডিসির সারের ডিলার অবৈধ উপায়ে আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর এলাকার তাওহীদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে ডিএপি ১১ বস্তা ও এমওপি ৯ বস্তা সার বিক্রি করেন।
বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জরিমানা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় বিএডিসি সার ডিলার মডার্ন অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইকবাল বিশ্বাসকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে সার কেনার অপরাধে ক্রেতা তাওহীদ হোসেনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান।

সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম।
জানা গেছে, সদর উপজেলার পাঁচমাইল এলাকার এক বিএডিসির সারের ডিলার অবৈধ উপায়ে আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর এলাকার তাওহীদ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে ডিএপি ১১ বস্তা ও এমওপি ৯ বস্তা সার বিক্রি করেন।
বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইসলাম দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের জরিমানা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় বিএডিসি সার ডিলার মডার্ন অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইকবাল বিশ্বাসকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে অবৈধ উপায়ে সার কেনার অপরাধে ক্রেতা তাওহীদ হোসেনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনিছুর রহমান।

শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
০৫ অক্টোবর ২০২৩
রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে
বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।
২ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। এর আগে দুপুরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হন নাসরিন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফুল দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। সেই ইস্যুতে বিএনপির নেত্রী নাসরিন থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
জানা গেছে, অভিযোগে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনের কথা বলা হয়েছে। এদের অধিকাংশই ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মী।
জানতে চাইলে বিএনপির নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিন জানান, তাঁর ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি রোববার রাত ৯টার দিকে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাদের নাম তিনি প্রকাশও করেছেন।
নাসরিনের অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-৫ (মহানগর-সদর) আসনের মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীরা তাঁর ওপর হামলা করেছে।
এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানান, রোববার দুপুরে ফুল দিয়ে তাঁরা যখন যাচ্ছেন, তখন বাইরে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নাসরিনের ঝামেলা হয়েছে। তবে কী হয়েছে জানেন না।

বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দেন। এর আগে দুপুরে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হন নাসরিন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন উল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ফুল দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। সেই ইস্যুতে বিএনপির নেত্রী নাসরিন থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
জানা গেছে, অভিযোগে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০০ জনের কথা বলা হয়েছে। এদের অধিকাংশই ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির নেতা-কর্মী।
জানতে চাইলে বিএনপির নেত্রী আফরোজা খানম নাসরিন জানান, তাঁর ওপর যারা হামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তিনি রোববার রাত ৯টার দিকে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তাদের নাম তিনি প্রকাশও করেছেন।
নাসরিনের অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বরিশাল-৫ (মহানগর-সদর) আসনের মনোনীত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারীরা তাঁর ওপর হামলা করেছে।
এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানান, রোববার দুপুরে ফুল দিয়ে তাঁরা যখন যাচ্ছেন, তখন বাইরে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নাসরিনের ঝামেলা হয়েছে। তবে কী হয়েছে জানেন না।

শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
০৫ অক্টোবর ২০২৩
রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
২ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
২ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, তাঁর শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়া।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, সামিয়া ও শিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত শুক্রবার হাদিকে গুলির ঘটনার আগে ও পরে ফয়সালের সঙ্গে তাঁদের ফোনে ঘন ঘন যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে এ ঘটনায় র্যাব মোট চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডে নেয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে করা গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশায় থাকা ওসমান হাদি। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের স্ত্রীসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে এক বার্তায় জানিয়েছে পুলিশের বিশেষ এই ইউনিট।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ফয়সালের স্ত্রী সামিয়া, তাঁর শ্যালক শিপু ও বান্ধবী মারিয়া।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, সামিয়া ও শিপুকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং মারিয়াকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত শুক্রবার হাদিকে গুলির ঘটনার আগে ও পরে ফয়সালের সঙ্গে তাঁদের ফোনে ঘন ঘন যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে এ ঘটনায় র্যাব মোট চারজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গুলির সময় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ তিন দিনের রিমান্ডে নেয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে করা গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশায় থাকা ওসমান হাদি। তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে। আগামীকাল সোমবার দুপুরে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হবে।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে এ সিদ্ধান্ত নেন। পরে প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেছে। আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আগামীকাল দুপুরে ওসমান হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, চিকিৎসক দল ও ভ্রমণসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের অ্যাকসিডেন্ট ইমার্জেন্সি বিভাগে তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির চিকিৎসাসংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তাঁর চিকিৎসাপ্রক্রিয়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন ড. ইউনূস।
ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

শিক্ষাঙ্গনের পাশাপাশি সামাজিক অঙ্গনেও সমান পরিচিত এই দুই শিক্ষক। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ জোগানোর সব শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হন তাঁরা। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁদের কথা শোনেন।
০৫ অক্টোবর ২০২৩
রাজধানীর উত্তরায় ‘অফিস দখল’কে কেন্দ্র করে জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. মাসুম ও ফাহিম খান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দক্ষিণখান ফায়দাবাদ এলাকা থেকে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি সার অবৈধভাবে বিক্রির অপরাধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় এক ডিলারকে ৫০ হাজার টাকা ও ক্রেতাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
২ ঘণ্টা আগে
বরিশালে শহীদ বেদিতে ফুল দেওয়া নিয়ে হামলার ঘটনায় ২ শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন।
২ ঘণ্টা আগে