Ajker Patrika

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকে ভারাক্রান্ত বকশীগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা

এমকে দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর)
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪, ১৭: ৩১
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকে ভারাক্রান্ত বকশীগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা

জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় অন্তত তিন ডজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে দাপ্তরিক কাজ চালানো হচ্ছে। এমনিতেই এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষকসংকট। এর মধ্যে একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়ায় এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এতে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসনিক কাজেও বাড়ছে জটিলতা।

উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব বিদ্যালয়ের বেশির ভাগেই তিনজন করে শিক্ষক রয়েছেন। সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে ওইসব বিদ্যালয় চালানো হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে প্রায়ই নানা দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে মাত্র দুজন সহকারী শিক্ষক দিয়েই পাঠদান কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা ছুটিতে থাকলে সেদিনের পাঠদান প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। 

এ ছাড়া সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করায় তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে মানতে চান না। অনেক ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বেরও সৃষ্টি হচ্ছে। 

মদনের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘প্রায় ১৬ বছর যাবৎ এখানে প্রধান শিক্ষক নেই। চারজন শিক্ষক দিয়ে চলছে। মাসে অন্তত ১০ কর্মদিবস উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে অথবা কোনো সভায় যোগ দিতে আমাকে উপজেলা সদরে যেতে হয়। তখন তিনজন শিক্ষক দিয়েই প্রাক্প্রাথমিকসহ ছয়টি শ্রেণির শিক্ষার্থীর পাঠদান কার্যক্রম চালানো হয়। এতে শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে পড়ানো যায় না। একই সঙ্গে দাপ্তরিক কাজেও সমস্যা হচ্ছে।’ 

একই অবস্থা সুবাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক নেই ২০১১ সাল থেকে। ১৪০ শিক্ষার্থীর এই বিদ্যালয়টিতে আমিসহ তিনজন শিক্ষক রয়েছি। আমাকে মাসে ৮ থেকে ৯ দিন দাপ্তরিক কাজের জন্য উপজেলা সদরে যেতে হয়। অপর দুজন শিক্ষককে সবগুলো ক্লাস নিতে হয়। এতে ঠিকমতো ক্লাস নেওয়া যায় না এবং শিক্ষার মান দুর্বল হচ্ছে। বিষয়গুলো শিক্ষা কর্মকর্তাকে বারবার জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।’

সাজিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মিজান মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে। সহকারী শিক্ষকও নেই পর্যাপ্ত। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। 

সুবাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাজমা বেগম বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাঝেমধ্যে অফিশিয়াল কাজে উপজেলা সদরে যান। এ সময় এক শিক্ষককে অনেকগুলো ক্লাস নিতে হয়। এতে ঠিকমতো হচ্ছে না লেখাপড়া।’ 

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বকশীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও পলাশতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খন্দকার মো. আতাবুজ্জামান হেলাল বলেন, শিক্ষকসংকটের কারণেই মূলত সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে শিক্ষার গুণগত মানের উন্নতি করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বকশীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ৩৬টি বিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে। নানা জটিলতার কারণে পদোন্নতি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সমস্যাটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। যেসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে, তাঁদের একটি তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। 

শিক্ষকসংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুর রউফ তালুকদার।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অহনা জিন্নাত বলেন, বেশ কিছু সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ অথবা পদোন্নতি হলেই বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে। এটা সময় সাপেক্ষ। 

সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘শিক্ষক সংকটের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা রাখি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামিনে মুক্তি পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারা অপরাধে জড়ালে কঠোর ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জামিনে মুক্তি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যদি কোনো অপরাধে জড়ান, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রটানো গুজব প্রতিহত করতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর যদি তারা কোনো অপকর্ম করে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু জামিন দেওয়া তো আমাদের হাতে নেই। আদালত হলো স্বাধীন, তাঁরা তাদের জামিন দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু জামিন দেওয়ার পরে সে যদি কোনো অপরাধ করে, তাহলে তাকে আমরা আইনের আওতায় আনব।’

নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করে উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যমের ভূমিকা প্রশংসনীয়। আপনাদের লেখালেখির কারণে গুজব অনেক কমেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যে মিথ্যা রটনা রটায়, এসব প্রতিরোধের মেইন মাধ্যম হচ্ছেন আপনারা। আপনারা যদি সত্যি কথা পত্রিকায় লেখেন; যদি আপনারা বলেন যে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যেটা রটনা করা হয়েছে, সেটি মিথ্যা; তাহলে বেশি কার্যকর হয়।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা এটি করে যাচ্ছেন। আমি আশা করব ভবিষ্যতেও করবেন। আপনারা যাঁরা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় আছেন, আপনারা যদি সত্যি ঘটনাটা প্রচার করেন, তবে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’

উপদেষ্টা বলেন, গাজীপুর একটি শিল্পনগরী। এখানে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা ঘটে, মাদকেরও ব্যাপকতা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে আলোচনা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে বলা হয়েছে নির্বাচন যেন ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ও উৎসবমুখর হয়। নির্বাচনে কোনো ধরনের হুমকি নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগের ঢাকা কর্মসূচি প্রতিহত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচনের ক্ষেত্রে কতগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে জনগণ। জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে, সেই সময় অনেকে অনেক কিছু চিন্তা করলেও কিছু করতে পারবে না। তারপর আছে যাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তাঁরা; তাঁদেরও অনেক কাজ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য। তারপর রয়েছে নির্বাচন কমিশন; তাদের একটা বড় ধরনের কাজ রয়ে গেছে। তারপর আছে আমাদের প্রশাসন; তাদেরও বড় ধরনের একটি কাজ রয়েছে। তারপর আরেকটা আছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী; তাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করতে জনগণ, প্রার্থী, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী—সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে কোনো বাধা থাকবে না।’

গাজীপুরে পুলিশের ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি সত্য, এখানে পুলিশের সংখ্যা কম। ইতিমধ্যে কিছু অতিরিক্ত পুলিশ দেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও সদস্য যোগ করা হবে।

পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা অনেক কিছু বলবে। দুষ্কৃতকারীরা যাতে কোনো ধরনের কার্যক্রম চালাতে না পারে, সে জন্য আমরা যত ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন নেব। এ জন্য আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. নাফিসা আরেফিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। এ ছাড়াও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল হাসান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার মো. জাহিদুল হাসান, গাজীপুর সেনাক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান, গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী যাবের সাদেক এবং জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যমুনা ও সচিবালয় এলাকায় সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫১
যমুনা ও সচিবালয় এলাকায় সমাবেশ নিষিদ্ধ করে ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তি

প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও সচিবালয় এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত, মানববন্ধন, ধর্মঘটসহ শোভাযাত্রা আবারও নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

আজ বুধবার দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা জারি করা হয়।

‎বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অধ্যাদেশ, ১৯৭৬-এর ২৯ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে ৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

‎ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও এর সংলগ্ন এলাকা, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকা, কারওয়ান বাজার, মৎস্য ভবন, অফিসার্স ক্লাব ও মিন্টো রোড-সংলগ্ন এলাকায় কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট বা শোভাযাত্রা করা যাবে না।

‎নিরাপত্তাজনিত কারণে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হবিগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে আদালতে হাজির স্বামী

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করা রাজন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করা রাজন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

হবিগঞ্জের মাধবপুরে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যা করে আদালতে গিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন স্বামী। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। এর আগে একই দিন সকালে অভিযুক্ত স্বামী রাজন আদালতে গিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। নিহত নারী শাপলা আক্তার (২৫)। নবীগঞ্জ উপজেলার সাতাহাইল এলাকার রাজন মিয়ার স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসার কাজে মাধবপুর থানার করড়া গ্রামে বসবাস করছিলেন ওই দম্পতি।

পুলিশ জানায়, মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের করড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন রাজন মিয়া ও শাপলা আক্তার দম্পতি। দাম্পত্য জীবনে পরকীয়া সন্দেহ ও পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এর জেরে গত সোমবার রাতে রাজন মিয়া তাঁর স্ত্রী শাপলা আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ পাশের একটি বালুর স্তূপে লুকিয়ে রাখেন।

পরদিন সকালে মঙ্গলবার রাজন নিজেই আদালতে উপস্থিত হয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। আদালত তাৎক্ষণিকভাবে রাজনের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মাধবপুর থানা-পুলিশকে ঘটনাস্থলে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে সন্ধ্যায় মাধবপুর থানা-পুলিশ করড়া গ্রামের ওই বালুর স্তূপ থেকে শাপলা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর রাজন মিয়াকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে মাধবপুর থানার ওসি শহিদ উল্ল্যা বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নাহিদ ইসলামের

প্রতিনিধি, (সিদ্ধিরগঞ্জ) নারায়ণগঞ্জ
আজ সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির প্রধান নাহিদ ইসলাম। ছবি: আজকের পত্রিকা

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিন ভাই মৃত্যুর কয়েক দিন আগে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন। এতেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা “জুলাই যোদ্ধাদের” সবারই নিরাপত্তা সংকট রয়েছে।’

বুধবার (৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় জুলাই যোদ্ধা সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি ওই সব মানুষের (জুলাই যোদ্ধা) পাশে আছে। তবে শুধু আমরাই নই, সরকার এবং সকল রাজনৈতিক দলের এই দায়িত্ব কাঁধে নিতে হবে। কারণ, এই মানুষগুলোর লড়াইয়ের ফলেই আমরা সফল হয়েছি এবং ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করেছি।’

নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী আহত জুলাই যোদ্ধাদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব এই অন্তর্বর্তী সরকারের থাকা সত্ত্বেও তারা সঠিকভাবে তা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্যই এখনো লাশের সারি বাড়ছে, মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এবং শহীদের সংখ্যাও। গাজী সালাউদ্দিন ভাইও তাঁদের একজন। আমরা তাঁকে হারিয়েছি।’

নাহিদ ইসলাম সরকারের প্রতি দৃঢ় আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের যেসব আহত যোদ্ধা রয়েছেন, যাঁরা এখনো কাতরাচ্ছেন, তাঁদের সর্বাত্মক দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা যেন নিশ্চিত করা হয়, শুধু সাময়িক চিকিৎসা নয়।’

নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে আহত ও শহীদদের ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির প্রধান বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের (আহত যোদ্ধা) যে স্বাস্থ্য সুবিধার কথা বলা হয়েছে, সেটা নিয়েও অনেক অভিযোগ আছে।’

নির্বাচন সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি যে আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি এবং আমাদের লক্ষ্য ৩০০ আসন। তবে গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় খালেদা জিয়ার সম্মানে আমরা তাঁর কোনো আসনে প্রার্থী দেব না। এ ছাড়া আমরা সকল আসনেই শাপলা কলি মার্কার প্রার্থী দেব। আমরা বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান করেছি যে যারা গডফাদারগিরি করে, তারাই নির্বাচনে দাঁড়ায়—এই সংস্কৃতিকে আমরা চ্যালেঞ্জ করতে চাই। একজন এলাকার সাধারণ মানুষ, গ্রহণযোগ্য মানুষ, যাকে মানুষ কাছে পাবে এবং শিক্ষকদের আমরা জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই।’

বক্তব্য শেষে নাহিদ ইসলাম গাজী সালাউদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল-আমীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি তুহিন খান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত