Ajker Patrika

ট্রাক-পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে ঈদে ঘরমুখী মানুষ

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৩, ২২: ০৩
ট্রাক-পিকআপে ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে ঈদে ঘরমুখী মানুষ

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় সাড়ে চার শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েক লাখ শ্রমিক। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এরই মধ্যে বেশ কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছেন সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানা ছুটি ঘোষণার পরপরই নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। 

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে বাড়তে থাকে ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ। প্রচণ্ড গরমে উপেক্ষা করে ট্রাক, পিকআপ, এমনকি ড্রাম ট্রাকে করে ঝুঁকি নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরছে মানুষ। 

আজ ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ড মাওনা চৌরাস্তা, গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি, এমসি বাজার নয়নপুর এবং জৈনা বাজারে শত শত ঘরমুখী মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। বাস না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে জন্য রওনা হচ্ছে ট্রাক, পিকআপ এমনকি ড্রাম ট্রাকে। কোনো কোনো পণ্য পরিবহনে গাদাগাদি করে উঠে যাচ্ছে নারী-পুরুষ। 

কারখানা ছুটি ঘোষণার পরপরই নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকাঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় কথা হয় নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলা পোশাক কারখানার নারী শ্রমিক তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক হলো দুই সন্তান নিয়ে গ্রামে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। এখানে কোনো বাস দাঁড়াচ্ছে না। ট্রাক-পিকআপে ওঠার কোনো ব্যবস্থা নেই। অপেক্ষা করছি গাড়ির জন্য। রাস্তায় গণপরিবহন কম দেখা যাচ্ছে, যা আসছে সব গাড়িভর্তি।’ 

এমসি বাজার বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির অপেক্ষায় থাকা শ্রমিক নাজমুল ইসলাম জানান, শ্রীপুর উপজেলার মাওনা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। ফুলপুর উপজেলায় বাড়িতে বৃদ্ধা মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে একটু আগেভাগে রওনা হয়েছেন। কিন্তু রাস্তার সেই আগের গল্প পরিবহনসংকট। শত কষ্ট উপেক্ষা করে বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ করতে পারলে সব কষ্ট শেষ হয়ে যায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকে যাওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। 

ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের নয়নপুর এলাকায় পিকআপ উঠছিলেন একের পর এক যাত্রী। অনেকটাই গাদাগাদি করে বসা নারী-পুরুষ। তবুও উঠছেন তাঁরা। কথা হয় পিকআপচালক ফজলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, এক সপ্তাহ আগে ১০ জন লোক মিলে পিকআপ ভাড়া করেছেন। হালুয়াঘাটে যাবেন নিজ নিজ গন্তব্যে। তাঁদের ছেলেসন্তান তো নিতেই হবে। গাদাগাদি করে বসলেও কোনো সমস্যা নেই তাঁদের। অল্প ভাড়ায় ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক-পিকআপে চেপে নিজ নিজ গন্তব্য যাচ্ছে বলে জানান তাঁরা। 

ময়মনসিংহগামী পিকআপের যাত্রী শামসুল ইসলাম বলেন, ‘বাসের চাইতে কম ভাড়ায় পিকআপে যাতায়াত করা যায়। বাস যেখানে জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়া আদায় করছে, সেখানে পিকআপে পুরো পরিবার নিয়ে ২০০ টাকায় ময়মনসিংহ যাচ্ছি।’ 

প্রচণ্ড গরমে উপেক্ষা করে ট্রাক, পিকআপ, এমনকি ড্রাম ট্রাকে করে ঝুঁকি নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরছে মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকা মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কংকন কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে ট্রাক-পিকআপে যাত্রী পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবুও যাত্রীরা নিজ নিজ দায়িত্বে এসব পরিবহনে গন্তব্যে যাচ্ছে। আমাদের নজরে আসা মাত্রই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কে পণ্য পরিবহনে যাত্রী পরিবহনের দায়ে ১৪টি পরিবহনের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রীদের বাসে গন্তব্যে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারা বড় হলে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হবে: সেনাপ্রধান

‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সে মাপের অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি’

আবাসন কোম্পানির অনিয়ম অনুসন্ধানে গড়িমসি, দুদকের উপপরিচালক বরখাস্ত

অবশেষে ইকবালের পরিবারমুক্ত হলো প্রিমিয়ার ব্যাংক

বিপুল বকেয়া সত্ত্বেও ব্যবসা হারানোর ভয়ে বাংলাদেশ-নেপালে সম্প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত