Ajker Patrika

সবজি বিক্রির আড়ালে ডাকাতির পরিকল্পনা, কাজ শেষে আত্মগোপন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৫ মে ২০২২, ১৫: ৩৯
সবজি বিক্রির আড়ালে ডাকাতির পরিকল্পনা, কাজ শেষে আত্মগোপন

কোথাও ডাকাতির আগে সেই স্থানে ফল বা সবজি বিক্রেতার ছদ্মবেশে এলাকা ও বাসা রেকি করে ডাকাতির পরিকল্পনা করতেন মো. শহিদুল মোল্লা (৪১)। তেমনি এক জায়গায় ডাকাতি শেষে আত্মগোপন করতেন অন্য কোনো স্থানে গিয়ে। এক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং ডাকাতি ও অস্ত্র আইনের আটটি মামলার আসামি দক্ষিণাঞ্চলের ডাকাত সর্দার শহিদুল। 

আজ বুধবার দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর এসব তথ্য জানান। 

সম্প্রতি ঢাকা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, খুলনা, বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনার মূল হোতা শহিদুল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, এই চক্রের সদস্যরা ডাকাতির সময় বা পরে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন হাজতবাস করেন। জামিনে বেরিয়ে পুনরায় দল গঠন করেন ও নতুন উদ্যমে ডাকাতি শুরু করেন। অনেকে আবার বড় ধরনের ডাকাতি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বহু দূরের এলাকায় অবস্থান করে সাময়িকভাবে নতুন পেশা বেছে নেন। তাঁদের কেউ কেউ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পুনরায় হাজির না হয়ে আত্মগোপনে চলে যান। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অপেক্ষায় বছরের পর বছর মুলতবি থাকে। 

সিআইডির এই বিশেষ পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ ধরনের ডাকাত চক্রের সদস্যদের শনাক্ত ও তাঁদের কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে অনুসন্ধান করে আসছিল সিআইডি। এরই ধারাবাহিকতায় একাধিক ডাকাত সদস্যকে শনাক্ত করা হয়। এলআইসি শাখার একটি দল অভিযান পরিচালনা করে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরা থেকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের সর্দার ও আট মামলার এজাহারনামীয় ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. শহিদুল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। 

পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার শহিদুল তাঁর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ সদস্যের একটি সুসংগঠিত ডাকাত দল রয়েছে বলে জানিয়েছেন। তিনি দল নিয়ে বরিশালের উজিরপুর, বিমানবন্দর থানা, গৌরনদী, মাদারীপুরের কালকিনীসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতির প্রস্তুতি, দুটি অস্ত্র আইনে মামলা, দুটি চুরি, একটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও একটি অন্যান্য ধারার আইনের মামলা রয়েছে। ৭টি মামলায় তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে যান। এই সময়ে তিনি রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মৌসুমী ফল ও সবজি বিক্রেতার বেশ ধরে বসবাস করে আসছিলেন। পাশাপাশি ডাকাতি জন্য এলাকা ও বিভিন্ন বাসা রেকি করেন। 

গ্রেপ্তার শহিদুলের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, আদালত থেকে সাতটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। বরিশাল অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে উজিরপুর থানায় দায়ের করা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করেন, যা তামিলের অপেক্ষায় মুলতবি রয়েছে। 

এসএসপি মুক্তা ধর আরও বলেন, গ্রেপ্তার শহিদুল আন্তজেলা ডাকাত দলের সর্দার। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাঁর নামে নিজস্ব ডাকাত বাহিনী রয়েছে। তিনি ২০১০ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রী ডাকাতি করে আসছিলেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত