Ajker Patrika

মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বের করে মসজিদে তালা দিল কর্তৃপক্ষ

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭: ৪৯
মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বের করে মসজিদে তালা দিল কর্তৃপক্ষ

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব শিয়ালদী নেছারীয়া মাদ্রাসার নির্মাণকাজ চলায় জায়গা স্বল্পতার কারণে সেখানকার শাহী জামে মসজিদে ৪টি শ্রেণির প্রায় ১০০ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চলছিল। কিন্তু কার্যক্রম চলাকালে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে মসজিদে তালা লাগিয়ে দিয়েছে মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের পূর্ব শিয়ালদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ও অভিভাবকেরাও পাল্টা আরেকটি তালা লাগিয়ে দেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মসজিদের বাইরে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছিলেন শিক্ষকেরা। তীব্র গরমে শিক্ষার্থীরা ঘামে ভিজে যাচ্ছে। বিষয়টি জানান পর সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও গ্রামবাসী তালা খুলে দেয়। মসজিদে তালা দিয়ে দেওয়ায় বাইরে অবস্থান করছিল শিক্ষার্থীরা। পূর্ব শিয়ালদী গ্রামের বাসিন্দা মো. খোকন শেখ বলেন, ‘আজ সকালে মসজিদ কমিটির লোকজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। এতে বাইরে পড়ালেখা চালাতে হচ্ছে। এটা মোটেও ঠিক করেনি।’ 

পূর্ব শিয়ালদী গ্রামের আরেক বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘হঠাৎ আজ সকালে মসজিদ কমিটির লোকজন ছাত্রছাত্রীদের বের করে দিয়ে মসজিদে তালা লাগিয়ে দেয়। কী কারণে তালা দিয়েছেন সেটা আমরা বলতে পারছি না। তবে আমরা মসজিদ কমিটির সঙ্গে কথা বলে তালা খোলার ব্যবস্থা করেছি।’ 

এ বিষয়ে পূর্ব শিয়ালদী নেছারীয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মো. সোলাইমান হাবিব কাসেমী বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো আমি আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মাদ্রাসায় এসে দেখি বাচ্চারা বাইরে। পরে বাচ্চারা জানায়, মসজিদে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। মসজিদ কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করেই তালা লাগিয়ে দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা মসজিদে আরেকটি তালা লাগিয়ে দেয়। আমাদের মাদ্রাসায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। দুই শ্রেণির ক্লাস দুটি কক্ষে হচ্ছে। আর চারটি ক্লাস মসজিদের ভেতরে হচ্ছে। প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে যাদের মসজিদের মধ্যেই পাঠদান করাতে হচ্ছে।’

পূর্ব শিয়ালদী শাহী জামে মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার মো. জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, ‘মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সিদ্ধান্তেই আমরা তালা লাগিয়েছি। গত দেড় বছর যাবৎ আমরা মাদ্রাসা কমিটিকে বলে আসছি যাতে তারা এখানে থেকে অন্য জায়গায় চলে যায়। কারণ মসজিদে টাইলস লাগানো হচ্ছে। মাদ্রাসার বাচ্চা ছেলেরা টাইলস তুলে ফেলে। এ জন্য আমরা সেখানে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে নিষেধ করেছি। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেনি। তারা শিক্ষার্থীদের মসজিদে পড়াচ্ছিল। তাই আজকে আমরা তালা মেরে দিয়েছি।’

জাহাঙ্গীর মাস্টার আরও বলেন, ‘মসজিদে দুইবার চুরি হয়েছিল। তাই আমরা সব সময় মসজিদ তালা মেরে রাখি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত