আমানুর রহমান রনি, ঢাকা
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সহযোগী হেজাজ বিন আলম ওরফে এজাজের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে মৃত্যুর আগে এজাজ জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ফাহিম আহম্মেদ নামে ভর্তি ছিলেন। এমনকি কাগজপত্রে তিনি তাঁর বাবার নাম-ঠিকানাও দিয়েছিলেন ভুল।
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ডিবি পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহতের শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ডিবি হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে ডিএমপি।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির জিগাতলার জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে গিয়ে এজাজের ভর্তি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের নথিতে দেখা গেছে, শুক্রবার রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি হন এজাজ। তবে তিনি ভর্তি ফরমে প্রকৃত নাম আড়াল করে ফাহিম আহম্মেদ নাম দেন। তাঁর সঙ্গে এ সময় এক ব্যক্তিও ছিলেন। তাঁকে তিনি বাবা পরিচয় দেন। বাবার নাম লেখেন কামরুল ইসলাম। ধানমন্ডি ৯/এ-এর একটি বাসা নম্বর দেওয়া হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বাসায় তিনি থাকেন না।
হাসপাতালের নথিতে আরও দেখা যায়, হাসপাতালটির কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ গোলাম ফাহাদ ভূঁইয়ার অধীনে তিনি ভর্তি হন। ভর্তির পর তাঁকে হাসপাতালটির ২০৩ নম্বর কেবিনে নেওয়া হয়। তাঁর চারটি পরীক্ষা করে কিডনি রোগের বিষয়ে নিশ্চিত হন চিকিৎসকেরা। এরপর তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। সে সময় পুলিশের ৩০-৪০ জন সদস্য ছিলেন।
হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক মো. মুরাদ হোসেন খান বলেন, ‘ডিবির সদস্যরা জ্যাকেট পরা ছিলেন। তাঁরা হাসপাতালে এসেই ২০৩ নম্বর কেবিনে কে ভর্তি, তাঁর বিষয়ে তথ্য চান। কেবিনে গিয়ে তাঁরা ওই রোগীকে দেখতে চান। এরপর ডিবি পুলিশ ডিউটি ডক্টরকে নিয়ে ওই কেবিনে যান। তাঁরা কিছু তথ্য যাচাই-বাছাই করেন। পরে ডিবির একজন অফিসার হাসপাতালের ডিউটি ডক্টরকে বলেন, এই রোগী ফাহিম আহম্মেদ না, তার নাম এজাজ। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। তাকে তাঁরা নিয়ে যেতে চান। এরপর হাসপাতাল থেকে ডিবি পুলিশ শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে তাঁকে নিয়ে যায়।’
মুরাদ হোসেন আরও বলেন, ‘এজাজের কিডনির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তাই আমরা দ্রুত তাঁর চিকিৎসা শুরু করি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে যখন নিয়ে যায়, তাতে আমাদের স্টাফরা বাধা দিতে পারেননি। কারণ, তাঁরা অনেক ডিবি সদস্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে যান।’
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে বের করে নেওয়ার পর এজাজকে সকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর নাম লেখা হয় এজাজ ওরফে ফাহিম আহম্মেদ। ভর্তি রসিদে ডিবির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ভর্তির আগে পথে দুই ঘণ্টা সময় কী হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, জিগাতলা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে ভোররাতে ২ ঘণ্টা সময় লাগার কথা নয়। এজাজের পরিবারের অভিযোগ, এই সময় এজাজকে মারধর করা হয়।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢামেক হাসপাতালে শনিবার ভোরে ভর্তির পর তাঁর ডায়ালাইসিস শুরু করা হয়। এরপর একই দিন রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে এজাজের মৃত্যু হয়।
এজাজের মৃত্যুর পর মোহাম্মদপুর থানার এসআই শেখ কাদের আহম্মেদ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, এজাজের ডান ও বাম ঊরুর পেছন দিকে নিতম্ব পর্যন্ত রক্তজমা কালশিটে দাগ আছে। পা সামান্য ফোলা। পায়ের পাতা ও আঙুল স্বাভাবিক। বুক ও পিঠের মাঝামাঝি পুরোনো দাগ। পিঠে রক্ত জমা কালচে দাগ আছে এবং দুই হাতে হ্যান্ডকাফ পরানোর দাগ রয়েছে।
নিহত এজাজের বাবা শাহ আলমের দাবি, জামিনে থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার মাঝরাতে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে এজাজকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পরে শনিবার ভোরে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে একই দিন রাত সাড়ে ৮টায় তিনি মারা যান। ওয়ারী জোনের একজন এডিসির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও করেন তিনি।
ডিবির সূত্র জানিয়েছে, ডিবির ওয়ারীর একাধিক টিম এজাজকে গ্রেপ্তারে ওই হাসপাতালে গিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে ডিবি কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
ডিবি ও মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, হেজাজ বিন আলম ওরফে এজাজ শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতি, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁকে ১১ মার্চ সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশে সোপর্দ করে। ১২ মার্চ তাঁকে আদালতে তোলে পুলিশ। অসুস্থতার কারণে তিনি আদালত থেকে জামিন পান। এরপর ১৪ মার্চ রাতে তিনি জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি হন। ডিবি তাঁকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে ঢামেক হাসপাতালে নিলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে ডিবি হেফাজতে এজাজের মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেছেন, ‘এজাজ ডিবি হেফাজতে মারা যায়নি। কিছুদিন আগে গ্রেপ্তারের পর জামিনে বের হন এজাজ। জামিন পাওয়ার পর আমরা তাঁকে নজরদারিতে রাখি। এরপর থেকে তিনি ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে রেফার করেন। গতকাল শনিবার ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যান এজাজ। যেহেতু তাঁর নামে মামলা রয়েছে, তাই ঢামেক হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশ উপস্থিত ছিল।’
সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর গত ১৫ আগস্ট শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হেলাল ও ইমনের সঙ্গে জামিনে মুক্তি পান এজাজ। মুক্তির পর থেকেই তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। কিছুদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ও কোপানোর ঘটনার মূল হোতা ছিলেন এজাজ। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও কলাবাগান এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেন তিনি।
শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও পিচ্চি হেলাল বর্তমানে পলাতক থাকায় তাঁদের সন্ত্রাসী গ্যাং এজাজের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছিল। এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী, এজাজের নেতৃত্বে ১২০ থেকে ১৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র সক্রিয় রয়েছে।
এজাজের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ ১২ থেকে ১৫টি মামলা রয়েছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সহযোগী হেজাজ বিন আলম ওরফে এজাজের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে মৃত্যুর আগে এজাজ জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ফাহিম আহম্মেদ নামে ভর্তি ছিলেন। এমনকি কাগজপত্রে তিনি তাঁর বাবার নাম-ঠিকানাও দিয়েছিলেন ভুল।
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ডিবি পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে নিহতের শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ডিবি হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে ডিএমপি।
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির জিগাতলার জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে গিয়ে এজাজের ভর্তি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের নথিতে দেখা গেছে, শুক্রবার রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে হাসপাতালে ভর্তি হন এজাজ। তবে তিনি ভর্তি ফরমে প্রকৃত নাম আড়াল করে ফাহিম আহম্মেদ নাম দেন। তাঁর সঙ্গে এ সময় এক ব্যক্তিও ছিলেন। তাঁকে তিনি বাবা পরিচয় দেন। বাবার নাম লেখেন কামরুল ইসলাম। ধানমন্ডি ৯/এ-এর একটি বাসা নম্বর দেওয়া হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বাসায় তিনি থাকেন না।
হাসপাতালের নথিতে আরও দেখা যায়, হাসপাতালটির কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ গোলাম ফাহাদ ভূঁইয়ার অধীনে তিনি ভর্তি হন। ভর্তির পর তাঁকে হাসপাতালটির ২০৩ নম্বর কেবিনে নেওয়া হয়। তাঁর চারটি পরীক্ষা করে কিডনি রোগের বিষয়ে নিশ্চিত হন চিকিৎসকেরা। এরপর তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। সে সময় পুলিশের ৩০-৪০ জন সদস্য ছিলেন।
হাসপাতালটির নির্বাহী পরিচালক মো. মুরাদ হোসেন খান বলেন, ‘ডিবির সদস্যরা জ্যাকেট পরা ছিলেন। তাঁরা হাসপাতালে এসেই ২০৩ নম্বর কেবিনে কে ভর্তি, তাঁর বিষয়ে তথ্য চান। কেবিনে গিয়ে তাঁরা ওই রোগীকে দেখতে চান। এরপর ডিবি পুলিশ ডিউটি ডক্টরকে নিয়ে ওই কেবিনে যান। তাঁরা কিছু তথ্য যাচাই-বাছাই করেন। পরে ডিবির একজন অফিসার হাসপাতালের ডিউটি ডক্টরকে বলেন, এই রোগী ফাহিম আহম্মেদ না, তার নাম এজাজ। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। তাকে তাঁরা নিয়ে যেতে চান। এরপর হাসপাতাল থেকে ডিবি পুলিশ শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে তাঁকে নিয়ে যায়।’
মুরাদ হোসেন আরও বলেন, ‘এজাজের কিডনির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তাই আমরা দ্রুত তাঁর চিকিৎসা শুরু করি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে যখন নিয়ে যায়, তাতে আমাদের স্টাফরা বাধা দিতে পারেননি। কারণ, তাঁরা অনেক ডিবি সদস্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে যান।’
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে বের করে নেওয়ার পর এজাজকে সকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর নাম লেখা হয় এজাজ ওরফে ফাহিম আহম্মেদ। ভর্তি রসিদে ডিবির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ভর্তির আগে পথে দুই ঘণ্টা সময় কী হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, জিগাতলা থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে ভোররাতে ২ ঘণ্টা সময় লাগার কথা নয়। এজাজের পরিবারের অভিযোগ, এই সময় এজাজকে মারধর করা হয়।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢামেক হাসপাতালে শনিবার ভোরে ভর্তির পর তাঁর ডায়ালাইসিস শুরু করা হয়। এরপর একই দিন রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে এজাজের মৃত্যু হয়।
এজাজের মৃত্যুর পর মোহাম্মদপুর থানার এসআই শেখ কাদের আহম্মেদ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, এজাজের ডান ও বাম ঊরুর পেছন দিকে নিতম্ব পর্যন্ত রক্তজমা কালশিটে দাগ আছে। পা সামান্য ফোলা। পায়ের পাতা ও আঙুল স্বাভাবিক। বুক ও পিঠের মাঝামাঝি পুরোনো দাগ। পিঠে রক্ত জমা কালচে দাগ আছে এবং দুই হাতে হ্যান্ডকাফ পরানোর দাগ রয়েছে।
নিহত এজাজের বাবা শাহ আলমের দাবি, জামিনে থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার মাঝরাতে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে এজাজকে ধরে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পরে শনিবার ভোরে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে একই দিন রাত সাড়ে ৮টায় তিনি মারা যান। ওয়ারী জোনের একজন এডিসির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও করেন তিনি।
ডিবির সূত্র জানিয়েছে, ডিবির ওয়ারীর একাধিক টিম এজাজকে গ্রেপ্তারে ওই হাসপাতালে গিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে ডিবি কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
ডিবি ও মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, হেজাজ বিন আলম ওরফে এজাজ শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সহযোগী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতি, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁকে ১১ মার্চ সেনাবাহিনী গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশে সোপর্দ করে। ১২ মার্চ তাঁকে আদালতে তোলে পুলিশ। অসুস্থতার কারণে তিনি আদালত থেকে জামিন পান। এরপর ১৪ মার্চ রাতে তিনি জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি হন। ডিবি তাঁকে হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে ঢামেক হাসপাতালে নিলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে ডিবি হেফাজতে এজাজের মৃত্যুর বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মোহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেছেন, ‘এজাজ ডিবি হেফাজতে মারা যায়নি। কিছুদিন আগে গ্রেপ্তারের পর জামিনে বের হন এজাজ। জামিন পাওয়ার পর আমরা তাঁকে নজরদারিতে রাখি। এরপর থেকে তিনি ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে রেফার করেন। গতকাল শনিবার ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে তাঁকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় মারা যান এজাজ। যেহেতু তাঁর নামে মামলা রয়েছে, তাই ঢামেক হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে থানা-পুলিশ ও ডিবি পুলিশ উপস্থিত ছিল।’
সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন কারাভোগের পর গত ১৫ আগস্ট শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম, পিচ্চি হেলাল ও ইমনের সঙ্গে জামিনে মুক্তি পান এজাজ। মুক্তির পর থেকেই তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। কিছুদিন আগে এলিফ্যান্ট রোডে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ও কোপানোর ঘটনার মূল হোতা ছিলেন এজাজ। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড ও কলাবাগান এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেন তিনি।
শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন ও পিচ্চি হেলাল বর্তমানে পলাতক থাকায় তাঁদের সন্ত্রাসী গ্যাং এজাজের নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছিল। এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী, এজাজের নেতৃত্বে ১২০ থেকে ১৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী চক্র সক্রিয় রয়েছে।
এজাজের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ ১২ থেকে ১৫টি মামলা রয়েছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট বাজারে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক মাস যেতে না যেতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের আরসিসি ঢালাই। এ ছাড়া সড়কটির সম্প্রসারণ জয়েন্টগুলোতে আঁকাবাঁকা ফাটল দেখা দিয়েছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে সংশ্লিষ্টরা তাড়াহুড়া করে বিটুমিন দিয়ে ফাটল বন্ধের চেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।
৬ ঘণ্টা আগেতিন পার্বত্য জেলার মধ্যে আগে থেকেই চিকিৎসাসেবায় পিছিয়ে খাগড়াছড়ি। তার ওপর বছরের পর বছর চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট থাকায় খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।
৬ ঘণ্টা আগেনেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় (২৪) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান...
৬ ঘণ্টা আগেরাজধানীর খিলগাঁওয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই আগুন নিভে গেছে। এতে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
৮ ঘণ্টা আগে