Ajker Patrika

জাপানি মায়ের জিম্মায় শিশু, ইমরানের আপিল নিয়ে শুনানি ১৬ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১: ০৯
জাপানি মায়ের জিম্মায় শিশু, ইমরানের আপিল নিয়ে শুনানি ১৬ ফেব্রুয়ারি

গত ২৯ জানুয়ারি পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান মায়ের জিম্মায় দুই শিশু থাকবে বলে রায় দেন। পরদিন শিশুদের মায়ের জিম্মায় দেওয়ার জন্য ডিক্রি দেন। গতকাল বুধবার ঢাকা জেলা জজ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন বাবা ইমরান শরীফ। বিচারক এ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া ১৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন।

পারিবারিক আদালত ভ্রান্ত ধারণার ওপর ভিত্তি করে শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনাকে তাদের মা নাকানো এরিকোর জিম্মায় দিয়েছেন বলে আপিলে উল্লেখ করেছেন ইমরান শরীফ।

আজ বৃহস্পতিবার ইমরান শরীফের আইনজীবী নুরুল ইসলাম মিলন আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানান।

ইমরান শরীফের আপিলে উল্লেখ করা হয়, পারিবারিক আদালত আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এবং বাস্তব অবস্থা বিবেচনা না করে রায় দিয়েছেন। শিশুরা যেখানে বাবার কাছে থাকতে চায়, সেখানে আদালত বাস্তবতা বিবেচনা না করে রায় দিয়েছেন।

আপিলে আরও বলা হয়, শিশুদের বাবা ইমরান শরীফের কাছ থেকে মা নাকানো এরিকোর হেফাজত মানসিক ও শারীরিকভাবে নিরাপদ। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ, শিশুরা তাদের বাবার কাছে থাকতে পছন্দ করে। সুতরাং, বাবাই দুই সন্তানের জিম্মাদার হবেন।

এর আগে পারিবারিক আদালতের রায়ে বলা হয়, দুই শিশু জাপানে বড় হচ্ছিল। তারা জাপানি সংস্কৃতির সঙ্গে বেড়ে উঠেছে। সেখানেই তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বলে আদালত মনে করেন। তাই তাদের নিয়ে বাংলাদেশে বসবাস করবেন তার বাবা এই দাবি বাদীর প্রতিকূলে নিষ্পত্তি করা হলো। দুই শিশুর মা একজন চিকিৎসক। সন্তানদের মানুষ করার দায়িত্ব তার। তিনি আর্থিক অস্বচ্ছলতায় ভুগছেন বাদীর এই অভিযোগ তাঁর বিপক্ষে নিষ্পত্তি করা হলো। বাদী ইমরান শরীফ একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজে তাঁকে প্রায়ই দেশের বাইরে যাতায়াত করতে হয়। বাংলাদেশের দুই সন্তানকে রেখে বাদী দেশ-বিদেশে যান। আদালত মনে করেন দুই শিশুর জন্য এটা নিরাপদ নয়। শিশুদের দাদি ৭৫ বছর বয়স্ক। তিনি নিজেই নিজের দেখাশোনা করতে অপারগ। এ ক্ষেত্রে শিশুরাও তাঁর কাছে নিরাপদ নয়। আদালত মনে করেন, শিশুদের শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তার জন্য মা অধিক নিরাপদ।

কাজেই বাবার দুই শিশুর হেফাজত দাবি করা আদালত তাঁর প্রতিকূলে নিষ্পত্তি করলেন। এসব বিবেচনায় আদালত বাদীর মামলা খারিজ করেন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে এরিকো নাকানোর স্বামী ইমরান জাপান থেকে দেশে আসেন। এরপর মেয়েদের অভিভাবক দাবি করে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন। একই বছরের ১৮ জুলাই বাংলাদেশে আসেন এরিকো। তাদের ফিরে পেতে ১৯ আগস্ট হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। পরে আদালতের নির্দেশে শিশু দুটিকে তেজগাঁওয়ে পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয় কিছুদিন। সব পক্ষের শুনানি নিয়ে ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট গুলশানের ফ্ল্যাটে মায়ের হেফাজতে শিশুদের রাখার আদেশ দেন। কিন্তু এই দেশেই সন্তানদের নিয়ে থাকতে হবে বলে হাইকোর্ট বলেন।

ইমরান শরীফ আদালতকে জানান, স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যাওয়ায় তিনি মেয়েদের নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি বাংলাদেশেই বসবাস করবেন। তাঁর শিশুসন্তানদের অভিভাবক হিসেবে তিনি এই মামলা দায়ের করেছেন। যেহেতু মা ভিনদেশি, তাই তিনি একমাত্র অভিভাবক।

এই আদালতে মামলা চলাকালীন তাঁর সাবেক স্ত্রী বাংলাদেশে এসে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্টও মেয়েদের বাংলাদেশে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, দুই সন্তান নিয়ে জাপানে পালানোর চেষ্টার অভিযোগে জাপানি নারী নাকানো এরিকোর বিরুদ্ধে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হয় গত ২৯ ডিসেম্বর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত