Ajker Patrika

বাড়তি আলুর বস্তা এখন কৃষকের বোঝা

  • দেশজুড়ে হিমাগারে জায়গা হচ্ছে না আলু রাখার
  • সরকারি মূল্যে আলু রাখতে নারাজ হিমাগারমালিক
  • অর্ধেক দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক
সাইফুল মাসুম, ঢাকা 
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের কৃষক আওলাদ হোসেন এ বছর সাত বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। খুব ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ নিয়ে বিপদে পড়েছেন তিনি। উপজেলার নেপচুন কোল্ডস্টোরেজের সামনে দুই দিন অপেক্ষা করেও ২০০ বস্তা আলু রাখতে পারেননি। হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের জায়গা শতভাগ পূর্ণ হয়ে গেছে। ভালো ফলনের ‘বাড়তি আলু’ এখন যেন বোঝা হয়ে চেপেছে আওলাদ হোসেনের ওপর।

অন্যতম শীর্ষ আলু উৎপাদনের জেলা মুন্সিগঞ্জে এবার ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। জেলায় আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার আছে ১০টি, যার সবগুলোই এখন ভর্তি। মুন্সিগঞ্জের স্থানীয়দের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গের আলুতে হিমাগারগুলো ভরা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেপচুন কোল্ডস্টোরেজের ম্যানেজার রুহুল আমিন বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা উত্তরবঙ্গ থেকে আলু এনে মজুত করেন। এতে আমাদের কী করার আছে?’

যেসব জেলায় উৎপাদন বেশি হয়েছে, সবখানেই সংরক্ষণের সমস্যা। বিপদে পড়ে কৃষক উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক দামে পর্যন্ত আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, আলু সংরক্ষণের এ সমস্যা নিরসনে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি। এ বিষয়ে মত জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক নাসির-উদ-দৌলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমরা হিমাগারে আলু সংরক্ষণের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমরা চাই, তা হিমাগারমালিকেরা অনুসরণ করুক। তবে জনবলসংকটের কারণে ঠিকমতো তদারকি সম্ভব হয় না।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংসের তথ্য অনুসারে, ২০২৪-২৫ রবি মৌসুমে ৪ লাখ ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু চাষ হয়েছে অনেকটাই বেশি, ৫ লাখ ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে।

উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ১৩ লাখ টন থাকলেও হয়েছে প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ টন। প্রসঙ্গত, দেশে বার্ষিক আলুর চাহিদা ৯০ লাখ টনের কিছু বেশি।

হিমাগারসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে আলু সংরক্ষণের জন্য প্রায় ৪০০ হিমাগার রয়েছে। এগুলোতে আলু সংরক্ষণের সক্ষমতা ৩৫ লাখ টন।

এবার সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে রংপুর জেলায়, ৬৬ হাজার হেক্টর জমিতে। সেখানে হিমাগার-সংকট চরমে। দুই একর জমিতে আলু চাষ করেছেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সরকারপাড়া গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম। তাঁর বাড়ির দুই কিলোমিটারের মধ্যে দুটি হিমাগার থাকলেও সেখানে জায়গার সংকটে আলু সংরক্ষণ করতে পারেননি। বাধ্য হয়ে লোকসানে বিক্রি করেছেন। আক্ষেপ করে সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘আলুতে কেজিপ্রতি ২০ টাকা উৎপাদন খরচ হয়েছে। সেই আলু ১২-১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। অগ্রিম বুকিং দিতে পারি নাই বলে বাড়ির কাছেই দুটি কোল্ডস্টোরেজ থাকলেও আলু সংরক্ষণ করতে পারি নাই।’

তারাগঞ্জের সিনহা হিমাগারের সামনে বস্তা স্তূপ করে রাখার পাঁচ দিন পর উৎপাদিত আলুর মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ সংরক্ষণ করতে পেরেছেন কৃষক নাহিদুজ্জামান। উপজেলার ব্রাদার্স কোল্ডস্টোরেজের ব্যবস্থাপক লোকমান খান বলেন, ‘আমাদের হিমাগার ভরে গেছে। আর আলু নিচ্ছি না বলে এলাকায় মাইকিংও করছি। কিন্তু তারপরও প্রতিদিন লোকে আলু নিয়ে এসে ফেরত যাচ্ছে। আমরা সরকার-নির্ধারিত দামেই আলু সংরক্ষণ করছি।’

আলু সংরক্ষণের সরকার-নির্ধারিত দাম নিয়ে হিমাগারগুলোর আপত্তি রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এ বছর প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণের দাম ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে দিয়েছে। বগুড়া সদরের ঘোলাগাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, মৌখিকভাবে তাঁকে হিমাগার থেকে বলা হয়েছে, কেজিপ্রতি ৮ টাকা দিতে হবে।

উৎপাদনে দেশে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বগুড়া জেলায় এবার আলু চাষ হয়েছে প্রায় ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে।

হিমাগার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্যে আলু সংরক্ষণ করলে হিমাগারমালিকেরা প্রতি কেজিতে দেড় টাকা লোকসানে পড়বেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রতি কেজি আলু সংরক্ষণে খরচ হয় ৮ টাকার ওপরে। লস হলেও সরকারের নির্ধারিত দামে আলু রাখতে বাধ্য হচ্ছি। নইলে হয়তো মব সৃষ্টি করে হিমাগারে হামলা করবে। রংপুর, ঠাকুরগাঁওয়ে হিমাগার ভাঙচুর হয়েছে। রাজশাহীতে বিক্ষোভ হয়েছে।’

আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বলেন, আলু হিমাগারে রাখার সময় দরদাম ঠিক করা হয় না। হিমাগার থেকে আলু বের করার সময় দাম মেটাতে হয়। তবে কোনো কোনো হিমাগার কর্তৃপক্ষ অগ্রিম ভাড়া নিয়ে নেয়।

হিমাগারভাড়াসহ সার্বিক বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে সাবেক কৃষিসচিব আনোয়ার ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়ে ঠিকমতো নজরদারি না করলে নির্দেশনা কাজ করবে না। হিমাগার মালিকদের সুবিধা-অসুবিধার দিকেও সরকারের খেয়াল রাখতে হবে। আলু রপ্তানির বিষয়ে মনোযোগ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে রপ্তানিতে প্রণোদনা বাড়িয়ে দিতে হবে।

{প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন আজকের পত্রিকার রংপুর, বগুড়া, সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) ও বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি}

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুক্রবার ঢাকা ইপিজেড ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
শুক্রবার ঢাকা ইপিজেড ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ

ঢাকা ইপিজেড, আশুলিয়া, নবীনগর ও গাজীপুরের আংশিক এলাকায় আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আশুলিয়া জোনের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খালেদ খন্দকার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সেকশন-৩-এর আওতায় পাইপলাইন স্থানান্তর ও নির্মাণকাজ সম্পাদনের জন্য সাময়িক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে শনিবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৭টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে ইপিজেডের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারসহ নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের উভয় পাশে সব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকতে পারে।

যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না:

ঢাকা ইপিজেড, গাজীপুরের কাশিমপুর, সারদাগঞ্জ, হাজী মার্কেট, শ্রীপুর, কবিরপুর, বাড়ইপাড়া, চন্দ্রা, আশুলিয়ার নবীনগর, সাভার ক্যান্টনমেন্ট, কাঠগড়া, জিরাবো, গাজীরচট, নয়াপাড়া, দেওয়ান ইদ্রিস সড়কের উভয় পাশের এলাকা, নয়ারহাট, বলিভদ্র, পল্লীবিদ্যুৎ, ডেণ্ডাবর, ভাদাইল, লতিফপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের চাপ কম থাকতে পারে।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করা হবে। সাময়িক এই অসুবিধার জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং গ্রাহকদের সহযোগিতা কামনা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় দুর্বৃত্তের গুলিতে যুবক নিহত

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনার পূর্ব রূপসায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সোহেল হাওলাদার (২৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ৩ নম্বর নৈহাটি ইউনিয়নের রহিমনগর গ্রামের মানিক সরদারের বালুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল ওই গ্রামের বাসিন্দা রুস্তুম হাওলাদারের ছেলে।

রূপসা থানার এসআই নাজমুল এলাকাবাসীর বরাতে জানান, সোহেল হাওলাদার দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। কয়েক দিন আগে প্রবাস থেকে দেশে ফেরেন। রাতে বাড়ির পাশে মাঠে অবস্থান করছিলেন। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাঁকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। একটি গুলি বুকের বাম পাশে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ হেফাজতে নেয় পুলিশ। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে এসআই নাজমুল সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেননি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ক্ষমতায় গিয়ে আবার উল্টাপাল্টা করলে ছাড় দেব না: জামায়াত আমির

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
সিলেটে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

ক্ষমতায় গিয়ে আবার উল্টাপাল্টা কিছু করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট মহানগর জামায়াতের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শফিকুর রহমান বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘তারা সরকারে যাওয়ার পরে আবার যদি সেই পুরোনো কায়দায় উল্টাপাল্টা কিছু করা হয়, প্রথমে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বলব, এগুলো ছেড়ে দেন। যদি সংশোধন হন, আমরা খুশি হব, অভিনন্দন জানাব। যদি সংশোধন না হন, তাহলে আগেও যেমন জীবন বাজি রেখে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, আগামীতেও কাউকে ছাড় দেব না।’

জামায়াত আমির বলেন, ‘তারা নির্বাচিত হলে জামায়াত ছাড়া সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবে। আমরা মহান আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি, আল্লাহ যদি তাঁর মেহেরবানিতে জনগণের ভালোবাসায় আমাদের নির্বাচিত করেন, আমরা তাদেরও সঙ্গে নিয়ে দেশ গঠন করব।

‘আর যদি কোনো কারণে আল্লাহ আমাদের বিরোধী দলে বসান, তাদের আশ্বস্ত করছি, প্রতিটি মানবিক ও ভালো কাজে আমরা অবশ্যই তাদের কর্মী হয়ে কাজ করব। আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। সবাই মিলে আমরা দেশ গড়ব, এ কাজে আমরা তাদের সহযোগিতা করব।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের ঐতিহাসিক রাতে আমরা সকল ব্যথা ঝেড়ে ফেলেছিলাম। পায়ের নিচে ফেলে দিয়েছিলাম। মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে দায়িত্ব নিয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দ ও নেতা-কর্মীদের বলেছিলাম, আমরা ব্যক্তিগতভাবে কারও ওপর প্রতিশোধ নেব না। প্রতিশোধ প্রতিহিংসার জন্ম দেয়, সমাজকে ধ্বংস করে।

‘আমরা পারতাম, সেই রাতে যদি শুধু বলে দিতাম, যে যার ক্ষতি করেছে, তার সঙ্গে একটু মোলাকাত করে আসুন, বাংলাদেশ একটা বধ্যভূমিতে পরিণত হয়ে যেত। আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রায় বলতেন, তাঁদের পতন হলে দলের ৫ লাখ লোককে হত্যা করা হবে। ওই রকম কিছুই হয়নি। আওয়ামী লীগ দায়িত্বজ্ঞানহীন হলেও জাতি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘জাতিকে আর দল-ধর্মের ভিত্তিতে টুকরা করা হবে না। সবাই মিলে বাংলাদেশ। মেজরিটি–মাইনরিটি না, একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। অসৎ রাজনীতিবিদেরা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পুলিশকে দলীয় কর্মীর মতো ব্যবহার করেছে।

‘সমাজের সর্বত্রই ইঁদুর বসে আছে, তারা উন্নয়নের দড়িগুলো কেটে দিচ্ছে। নির্বাচনের আগে প্রচার করে রাজনীতি ইবাদত, নির্বাচিত হওয়ার পর ইবাদতের খাজনা আদায় করা শুরু করে।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশে দৃশ্যমান অনেক পরিবর্তন হলেও রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেননি। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার যদি কায়েম হয়, দুর্নীতির জট কেটে যাবে।

‘কেননা, আমাদের স্বার্থের ব্যাপারে সবার আগে বাংলাদেশ। নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের ভোটের অধিকারের বিষয়ে অনেক বাধা ছিল। অনেক রাজনৈতিক দলও বলেছে, প্রবাসীরা আবার কিসের ভোট দেবে? আমরা বলেছি না, তারা আমাদের অঙ্গ, অংশ। আমরা দেশ গড়ার সুযোগ পেলে সংখ্যা অনুযায়ী তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে, ইনশা আল্লাহ।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে একজন থেকে ২০০ জন এমপি নির্বাচিত হলেও সরকারি সুবিধা গ্রহণ করবে না জামায়াত। সরকার গঠন করলে আমরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা নিব না, যেটা আমাদের জন্য অপরিহার্য। দলটির কেউ কোনো ধরনের অপকর্মে জড়াবে না। যাঁরা অপকর্মে যাবেন, তাঁদের হাত চেপে রাখা হবে।’

মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, জামায়াত নেতা প্রফেসর ফজলুর রহমান, জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, মহানগর সেক্রেটারি শাহজাহান আলী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন ড. নুরুল ইসলাম বাবুল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মেট্রো স্টেশনের নিচে ট্রাফিক পুলিশ চায় ডিএমটিসিএল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

মেট্রো স্টেশনের নিচতলায় ট্রাফিক পুলিশ চেয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। স্টেশনের নিচতলায় ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) কাছে চিঠি দিয়েছে কোম্পানিটি।

গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিটি ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের (ট্রাফিক) কাছে পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ডিএমটিসিএল একটি ‘ক’ শ্রেণির কেপিআই তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান। ২০২৫ সালের ১ জুলাই অনুষ্ঠিত সংস্থার মাসিক নিরাপত্তা সমন্বয় সভায় মেট্রোরেল স্টেশনগুলোর নিচতলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চিঠিতে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে—স্টেশনের নিচতলায় যাত্রীদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। যানজট নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু পার্কিং ব্যবস্থা বজায় রাখা। নিরাপত্তা মান বৃদ্ধি ও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি প্রতিরোধ করা। যাত্রীদের নিরাপদে ওঠানামা ও জরুরি অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। অবৈধ দখল রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এমতাবস্থায় ডিএমটিসিএলের আওতাধীন মেট্রোরেল লাইন-৬-এর ১৬টি স্টেশনের নিচে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত