Ajker Patrika

আদালত পরিদর্শনে এসে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ নিষ্পত্তি করলেন বিচারপতি

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১: ৪৬
আদালত পরিদর্শনে এসে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ নিষ্পত্তি করলেন বিচারপতি

গাজীপুরের লিগ্যাল এইড অফিসে একটি দাম্পত্য কলহের অভিযোগ মীমাংসার সভা চলছিল। এ সময় আদালত পরিদর্শনে আসেন হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব। নিজেই উদ্যোগী হয়ে দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন বিচারপতি। আপস নিষ্পত্তির পর উভয় পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছে। বিচারকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন স্বামী। 

স্বজনেরা জানান, গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানার সাতাইশ শরীফ মার্কেট এলাকার জাকির হোসেন শুভর সঙ্গে ২০২০ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই এলাকার আরিফা আক্তার ফারহানার। তাঁদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। শুভ আগে প্রাইভেট কার চালাতেন, এখন বেকার। নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে কলহ হতো। আরিফা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক, নারী নির্যাতন ও ভরণপোষণ না দেওয়ার অভিযোগে ৪ সেপ্টেম্বর গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। 

আজ সোমবার ছিল ওই অভিযোগের বিষয়ে আপস নিষ্পত্তির জন্য আলোচনার তারিখ। সকালে উভয় পক্ষের অভিভাবকে এবং দুইজন প্রতিবেশী গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে উপস্থিত হন। এ সময় সেখানে আকস্মিকভাবে উপস্থিত হন বিচারপতি ফাতেমা নজীব। তিনি বিষয়টি জেনে নিজে উপস্থিত সবার বক্তব্য শুনে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন। 

গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসার (সহকারী জজ) সুমাইয়া রহমান জানান, গাজীপুর কোর্ট পরিদর্শনে এসেছিলেন বিচারপতি ফাতেমা নজীব। লিগ্যাল এইড অফিসে তিনি উপস্থিত থেকে স্বামী-স্ত্রী ও স্বজনদের বক্তব্য শুনে সবার সম্মতিতে সাতটি শর্তে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন। মীমাংসা সভায় মামলার বাদী ও বিবাদী আপস-মীমাংসার শর্ত মেনে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করা যাবে না; মিলেমিশে থাকতে হবে; ভরণপোষণ দিতে হবে; নিজেদের মধ্যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজেরা আলোচনা করে সমাধান করবে, না পারলে অভিভাবকদের জানাবে ইত্যাদি। 

এ সময় বিচারপতি ফাতেমা নজীব স্বামী ও স্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা ঠিকমতো চলবে, ভবিষ্যতে আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে সে জন্য উভয়ে সচেতন থাকবে। পারিবারিক বিরোধের ক্ষেত্রে আপস নিষ্পত্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব বিরোধে মোকদ্দমা দায়ের করার আগে আমাদের আপস মীমাংসার চেষ্টা করা উচিত। পারিবারিক সম্পর্কগুলো যেন ঠিক থাকে সে জন্য আপস মীমাংসার চেষ্টা না করেই মোকদ্দমা দায়ের কাম্য নয়। একটি সংসার ভেঙে গেলে সে সংসারের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যায়। তারা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না।’ 

এ সময় গাজীপুর লিগ্যাল এইড অফিসার (সহকারী জজ) সুমাইয়া রহমান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মো. শাহজাহান, বাদী-বিবাদীর আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিবাদী জাকির হোসেন শুভ বলেন, ‘বিচারপতির মাধ্যমে আমাদের পারিবারিক বিরোধ মীমাংসা হয়েছে, এতে আমি খুবই খুশি। আমার সংসার ঠিক হয়েছে, আমাদের সন্তানের ভবিষ্যৎ মঙ্গলের জন্য আমি সব শর্ত মেনে চলব।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত