Ajker Patrika

বনশ্রীতে নারীকে হেনস্তা: প্রধান অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যাচেষ্টা মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অভিযুক্ত জিশানের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানায় রয়েছে হত্যাচেষ্টা মামলা। ছবি: সংগৃহীত
অভিযুক্ত জিশানের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানায় রয়েছে হত্যাচেষ্টা মামলা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর রামপুরার বনশ্রীতে নারী সাংবাদিককে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সোয়েব রহমান জিশানসহ (২৫) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৩। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই বিভিন্ন থানায় হত্যাচেষ্টা, মারামারি ও লুটপাটের মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা গত বুধবার রাতে বনশ্রীর ই-ব্লকের ৩ নম্বর সড়কের একটি জুসের দোকানের সামনে ওই নারী, তাঁর ছোট ভাই ও বন্ধুকে মব সৃষ্টি করে মারধর করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই নারী সাংবাদিক ঘটনার রাতেই সোয়েব রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় মামলা করেন। জিশানসহ তিনজনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও শাহী জুস কর্নারের কর্মচারী লিটন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘটনার সময় আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি দোকানে বসে জুস খাচ্ছিলেন। তখন এক তরুণী সেখানে আসেন। তিনি অর্ডার দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন। একসময় দোকানে আগে থেকে বসে থাকা বয়স্ক লোকটির সঙ্গে তরুণীর কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। তরুণী অভিযোগ করেন, ওই ব্যক্তি তাঁর দিকে খারাপ চোখে তাকিয়েছেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলার সময় দোকানের সামনের সড়কে এলাকার তিন-চারজন তরুণ ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ওই তরুণীর বাইরে অপেক্ষমাণ ছোট ভাই ও বন্ধুর সঙ্গে তর্ক বাধে। কর্মচারী লিটন বলেন, কিছু সময় পর দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়।

জুস কর্নারের বিপরীত পাশের এক হকার বলেন, দোকানে বসে থাকা বয়স্ক ব্যক্তি তরুণীর পোশাক নিয়ে বারবার কথা বলছিলেন। এতে মেয়েটি রেগে যান। হকারের ভাষ্য, দোকানের বাইরে থাকা এলাকার কয়েক তরুণ মধ্যবয়সী লোকটির পক্ষ নিয়ে তরুণীর সঙ্গে ঝগড়া করছিলেন। একপর্যায়ে ওই তরুণেরা তরুণী, তাঁর ছোট ভাই ও বন্ধুকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন। দুয়েকজন বয়স্ক মানুষ ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি।

পরে মারধরের শিকার ওই তরুণী, তাঁর ছোট ভাই ও বন্ধু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন বলে জানা গেছে।

হেনস্তার শিকার তরুণী মামলায় উল্লেখ করেছেন, বারবার তাকানো নিয়ে প্রতিবাদ করায় দোকানের ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে চেচামেচি শুরু করেন। এরপর দোকানে আরও দুজন লোক ঢুকে তাদের উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। তাঁরা তাঁদের তিনজনের পথরোধ করেন এবং একপর্যায়ে মারধর করেন। তরুণীর অভিযোগ, উত্ত্যক্তকারীরা তাঁদের বাসা কোথায় জানতে চান এবং ধর্ষণের হুমকি দেন।

তরুণী মামলা করার পর বুধবার রাতে র‍্যাব-৩-এর সদস্যরা মেরাদিয়া থেকে প্রথমে সোয়েব রহমান জিশানকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেইলি রোড থেকে রাইসুল ইসলাম (২১) এবং শ্যামপুরের গেন্ডারিয়া থেকে কাউসার হোসেনকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের সবাইকে রামপুরা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান আকন্দ বলেছেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের শুক্রবার (আজ) আদালতে নেওয়া হবে।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কিছু স্বজন ও পরিচিতজন দিনভর ঘটনাস্থলে অবস্থান নেন। দেখা গেছে, কোনো গণমাধ্যমকর্মী ও কৌতূহলী ব্যক্তি সেখানে গেলে তাঁরা হেনস্তার শিকার তরুণীর বিরুদ্ধে কথা বলেন। অভিযুক্ত সোয়েব রহমান জিশানের এক বন্ধুর মা তাঁদের একজন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই মেয়ে মুরব্বিদের সঙ্গে তর্ক করেছে। সে কেন তর্ক করল? মুরব্বিরা তাকালে কী হয়?’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তরুণীর ছবি ও ভিডিও দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে কিছু লোক।

গ্রেপ্তার জিশানের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালে মোরেলগঞ্জ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করা হয়েছিল। গ্রেপ্তার কাউসারের গ্রামের বাড়ি বরিশালের কোতোয়ালিতে। তাঁর বিরুদ্ধেও কোতোয়ালি থানায় মারামারি ও লুটপাটের মামলা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত