Ajker Patrika

ঈদে ভালোমন্দ খেতে সমিতি করেছেন তাঁরা

প্রতিনিধি
ঈদে ভালোমন্দ খেতে সমিতি করেছেন তাঁরা

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ): সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে পেটেভাতে হওয়াই কঠিন। তার ওপর দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ। প্রতি ঈদে নতুন পোশাক, তেল, চিনি, সেমাই কিনতে পারেন না কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নগরপাড়ার দিনমজুর বাবু মিয়া। আবার ঈদের দিন একটু ভালোমন্দ খেতে চায় সন্তানরা। কিন্তু সাধ্যে কুলায় না তার।

গত ঈদুল ফিতরে সন্তানের বায়না পূরণ করতে না পেরে এবার উপজেলার 'গোশত সমিতি'র সদস্য হয়েছেন বাবু মিয়া। রূপগঞ্জের এমন কয়েকশ দরিদ্র পরিবার 'গোশত সমিতি'তে যোগ দিয়েছে। এই সমিতির কল্যাণে ঈদে সবার ঘরে রান্না হয় গরুর মাংস।

২০১৭ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার খামারপাড় এলাকায় তরুণ ফয়সাল মিয়া প্রথমে এ উদ্যোগ নেন। ২৫ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে গোশত সমিতি। প্রতি সপ্তাহে সদস্যরা চাঁদা দেন ১০০ টাকা। বছরে জমা হয় ৫ হাজার ২০০ টাকা। ঈদুল ফিতরের আগের দিন প্রত্যেক সদস্য পান ১২ কেজি করে মাংস।

দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই সমিতি। পাড়ায় মহলায় গড়ে উঠতে থাকে 'গরীবের গোশত সমিতি'। শুধু খামারপাড় এলাকাতেই বর্তমানে ছয়টি সমিতি রয়েছে। এছাড়া নগরপাড়া, দেইলপাড়া, কামশাইর, বরুণা, বরালুসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সমিতি গড়ে উঠেছে। এবার ঈদুল ফিতরের ঈদকে উপলক্ষ্য করে রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দেড়শ সমিতি গড়ে উঠেছে। যদিও করোনার কারণে এবার সমিতির সংখ্যা কম বলে জানা গেছে। গত বছর ছিল প্রায় ২০০ সমিতি। একেক সমিতির সদস্য ৪০ থেকে ৬০ জন।

জানা গেছে, সারা বছর সঞ্চয় করা টাকা দিয়ে ঈদের আগে গরু কিনে জবাই করা হয়। এরপর মাংস ভাগ করে নেন সমিতির সদস্যরা। গরুর চামড়া বিক্রির টাকা পরের বছরের জন্য সমিতির তহবিলে জমা দেওয়া হয়। ফলে মাংস কিনতে গরিব পরিবারগুলোতে টাকা সংগ্রহের বাড়তি চাপ পড়ে না। সামান্য সাহায্যের জন্য অবস্থাপন্নদের দিকেও চেয়ে থাকতে হয় না।

খামারপাড়া গ্রামের একটি সমিতির সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। ঈদে পোলাপানগো কাপড়-চোপড় কিইন্না টেকা শেষ অইয়া যায়। কোনোমতে তেল-সেমাই কিনি। আবার গোশত কিনুম কেমনে? যহন জানলাম সমিতি অইছে। তহন থেইক্যা সমিতিতে নাম লেহাই। অহন ঈদের আগে ১২ কেজি গোশত পামু।

মূল উদ্যোক্তা ফয়সাল আহমেদ জানান, বছর ঘুরে সমিতিতে জমা হয় ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে গরু কিনে জবাই করে সমিতির সদস্যদের মধ্যে মাংস ভাগ করে দেওয়া হয়। তাদের এলাকাতেই এ ধরনের অন্তত ছয়টি সমিতি রয়েছে। উপজেলার প্রতিটি গ্রামেই রয়েছে এই গোশত সমিতি। শবে কদরের দিন থেকে শুরু হয় সমিতির গরু জবাইয়ের কাজ। চলে ঈদের দিন পর্যন্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিজের প্রস্রাব পান করে ‘আশিকি’ অভিনেত্রী অনু আগারওয়াল বললেন, ‘আহা অমৃত’

মে. জে. ফজলুরের সেভেন সিস্টার্স দখলের মন্তব্য সমর্থন করে না সরকার: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে স্টারলিংকের প্রস্তাবিত কার্যক্রমের বিস্তারিত চায় ভারত

গায়ে কেরোসিন ঢেলে কলেজছাত্রীর আত্মহনন, পলাতক ইমাম গ্রেপ্তার

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বিধিনিষেধের মূল্য গুনছেন ব্যবসায়ীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত