Ajker Patrika

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন পঞ্চাশোর্ধ বেলায়েত

রাতুল মণ্ডল, শ্রীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ মে ২০২২, ১৮: ২৫
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন পঞ্চাশোর্ধ বেলায়েত

দরিদ্র পরিবারে জন্ম বেলায়েত শেখের। লেখাপড়া করার প্রবল মনোবল আর ইচ্ছে থাকলেও ছোট বেলা থেকে অসুস্থ বাবার সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল তাঁকে। কখনো দিনমজুর, কখনো হোটেল বয়, আবার কখনো গ্যারেজের টুকিটাকি কাজ করে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বৃদ্ধ বাবা ও অসুস্থ মায়ের সেবা করেছেন তিনি। এ জন্য লেখাপড়ার করার সুযোগ পাননি বেলায়েত শেখ। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেছেন বেলায়েত। আগামী ১১ জুন ওই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। 

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় বেলায়েত শেখের বাড়ি। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক তিনি। বড় ছেলে বিয়ে করে ব্যবসা করছেন। ছোট ছেলে শ্রীপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। একমাত্র মেয়েকে গাজীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ার সময় বিয়ে দেন বেলায়েত।

বেলায়েত শেখের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৩ সালে তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। সে সময় বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। পরে আর শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেননি। 

বেলায়েত শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভাবের কারণে আমি এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। পরে সংসারের হাল ধরেছি। সেই সঙ্গে ভাইদের পড়াশোনা করানোর চেষ্টা করেছি, সেটাও পারিনি। এরপর নিজের ছেলে ও মেয়েদের পড়াতে চেয়েছিলাম, সেখানেও ব্যর্থ হই। পরে ৫০ বছর বয়সে ২০১৭ সালে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নিজেই লেখাপড়া শুরু করি।’

 ২০১৯ সালে ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে এসএসসি পাস করেন বলে জানান তিনি। এরপর ২০২১ সালে রাজধানীর রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। একই বছর তার ছেলে এসএসসি পাস করে। এসএসসিতে জিপিএ ৪.৪৩ ও এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৫৮ পান বলে জানান বেলায়েত। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য শ্রীপুরের মাওনার একটি কোচিং সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করছেন তিনি। 

বেলায়েত বলেন, ‘২০১৭ সালে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করি। প্রথমদিকে একটু কঠিনই ছিল। কারণ সে সময় আমার কাছের মানুষজনও আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। তবে একটা সময় গিয়ে সেটা ঠিক হয়ে যায়। নিজেকে বয়স্ক ভাবি না, যুবক ভাবি। কিছু চুল পেকে গেছে। চুলে কলপ দিয়ে রাখি। কারণ কলপ দিয়ে না রাখলে এগুলোর জন্য নিজেকে বয়স্ক মনে হয়। আর তখন মনটা দুর্বল হয়ে যায়।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত