Ajker Patrika

ঢামেকে শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে মেডিকেল স্টাফদের সঙ্গে স্বজনদের সংঘর্ষ, গুরুতর আহত ট্রলিম্যান

ঢামেক প্রতিবেদক
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চার বছরের শিশু সাফওয়ান। দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিল কিডনি রোগে। চলছিল বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা। শুক্রবার সন্ধ্যায় হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি হয়। স্বজনেরা দ্রুত তাকে মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়। তবে চিকিৎসক জানান, সাফওয়ান আর বেঁচে নেই। কিন্তু মানছিলেন না স্বজনেরা। তাঁদের দাবি, সঠিক চিকিৎসা না দেওয়ায় শিশুটি হাসপাতালেই মারা গেছে। এ নিয়ে চিকিৎসক-নার্সদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাধে স্বজনদের। একপর্যায়ে তা গড়ায় সংঘর্ষে। এতে ঢামেকের জরুরি বিভাগের ট্রলিম্যান জুয়েল (২৫) মারধরের শিকার হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢামেকেই ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে মেডিকেল স্টাফরাও শিশুর স্বজনদের মারধর করে পুলিশে দিয়েছে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালের ২য় তলায় ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।

২১০ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বরত আনসার সদস্য আব্দুল্লাহ জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক শিশুকে নিয়ে আসে। চিকিৎসক দেখে মৃত বলে জরুরি বিভাগে পাঠিয়ে দেয়। এ সময় রোগীর স্বজনেরা চিকিৎসকের ওপর ক্ষেপে যায় এবং মারধর করতে উদ্যত হয়। পরে সেখান থেকে জরুরি বিভাগ এসে ‘ভুল চিকিৎসায় রোগীকে মেরে ফেলা হয়েছে’ বলে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।

জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত আনসার সদস্য সাকিব বলেন, ‘জরুরি বিভাগ দিয়ে শিশুটিকে বের করার সময় মৃতের কাগজ চাওয়া হয়। তখন রোগীর স্বজনেরা আমাকে মারতে তেড়ে আসে। এ সময় ট্রলিম্যান জুয়েল এগিয়ে আসলে প্রায় ১৫-২০ জন মিলে তাঁকে মারধর করে। মারতে মারতে জরুরি বিভাগের সামনে থেকে নতুন ভবনের সামনে নিয়ে যায়। এ সময় হাসপাতালের অন্যান্য স্টাফরা তাকে উদ্ধার করে।’

সাফওয়ানের ফুফু সিমরান বলেন, তাঁদের বাসা বংশাল সাত রওজা বাংলাদেশ মাঠ এলাকায়। সাফওয়ান দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল। আজকে সন্ধ্যার দিকে বাসায় হঠাৎ তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। পরে দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।

সিমরান অভিযোগ করে বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাদের বাচ্চার কোনো চিকিৎসা দেয়নি। এ জন্য আমাদের বাচ্চা মারা গেছে। এ ছাড়া বাচ্চার বাবা সামির ও তার বন্ধু সোয়েব হোসেনকে মারধর করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২১০ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো কথা বলেননি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্লাটুন কমান্ডার মো. সেলিম মিয়া জানান, এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ২১০ নম্বর ওয়ার্ডের দরজা ভাঙচুর করে এবং দায়িত্বরত নার্স-চিকিৎসকদের মারতে যায়। এরপর জরুরি বিভাগের এক দায়িত্বরত আনসার সদস্যকে মারতে যায় শিশুটির স্বজনেরা। এ সময় এক ট্রলিম্যান এগিয়ে আসলে তাকে বেধড়ক মেরে আহত করে।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, রাতে হাসপাতালে শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক ট্রলিম্যানকে মারধর করে রোগীর স্বজনেরা। এ সময় উত্তেজিত হয়ে অন্যান্য স্টাফরা রোগীর দুই স্বজনকে মারধর করে আটকে রাখে। পরে তাদেরকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। হাসপাতালে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হাসপাতালের পরিবেশ শান্ত আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি ফেরত চান ট্রাম্প, লক্ষ্য চীনের পারমাণবিক স্থাপনা

মাঝ আকাশে হাত ভাঙল বিমানের কেবিন ক্রুর, অঙ্গহানির আশঙ্কা

বাংলাদেশ ভ্রমণে উচ্চমাত্রার সতর্কতা জারি করল কানাডা

এরদোয়ানকে খলিফা উমর (রা.)-এর সঙ্গে খ্রিষ্টানদের চুক্তিপত্রের প্রতিলিপি উপহার দিলেন জেরুজালেমের পাদরি

রাজশাহীতে পিস্তল হাতে ভাইরাল ছাত্রলীগ নেতা, পুলিশের দাবি—নজরে আসেনি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত