Ajker Patrika

বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালান করত র‍্যাবের গোয়েন্দা, রিমান্ড শেষে কারাগারে

নুরুল আমিন হাসান, ঢাকা
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৯: ৫৫
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

দীর্ঘদিন ধরে র‍্যাবের গোয়েন্দা পরিচয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন সার্জেন্ট মিজানুর রহমান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সৌদি আরব থেকে বিজি-৩৪০ ফ্লাইটে গত বুধবার (১৯ মার্চ) রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার জনাব আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম। ওই সময় প্রবাসী জাহাঙ্গীর ইমিগ্রেশনে যাওয়ার সময় রাতের শিফটে ডিউটিরত মিজানুর রহমান গোয়েন্দা পরিচয়ে কোনো অবৈধ মালপত্র আছে কি না, জানতে চান। তখন জাহাঙ্গীর জানান, তাঁর কাছে একটি স্বর্ণের বার আছে। ওই সময় গোয়েন্দা মিজান স্বর্ণের বারটি তাঁর কাছে দিয়ে দেওয়ার জন্য বলেন জাহাঙ্গীরকে এবং কিছু টাকা দিলে বারটি বিমানবন্দরের বাইরে বের করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন।

এদিকে গোয়েন্দা সংস্থার লোক হওয়ায় সহজে বিশ্বাস করে ওই প্রবাসী যাত্রী মিজানকে কাস্টম পার করার জন্য দিয়ে দেন। পরে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস পার করে স্বর্ণের বারের আশায় দীর্ঘক্ষণ বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষা করেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু কোনো সাড়া না পেয়ে বিষয়টি এভিয়েশন সিকিউরিটিকে (এভসেক) জানান তিনি।

অতঃপর সিসিটিভির ফুটেজ শনাক্ত করে র‍্যাবের গোয়েন্দা মিজানকে শনাক্ত করে অফিসে ডেকে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে বারটি প্রবাসী যাত্রীকে ফেরত দিতে বলা হয়। পরে এভসেকের সামনে বারটি প্রবাসীকে ফেরত দিলে সেটি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী ডিএম করে। অপরদিকে র‍্যাবের ওই গোয়েন্দাকে র‍্যাব-১ হেফাজতে দেওয়া হয়।

এদিকে র‍্যাবের বিশ্বস্ত সূত্র আজকের পত্রিকা'কে জানায়, র‍্যাব-১ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর দেহ তল্লাশি করে পরিহিত কালো রঙের ব্লেজারের ডান পকেটে থাকা মোবাইল কাভারের ভেতর থেকে কালো রঙের স্কচ টেপে মোড়ানো অবস্থায় ৮টি এবং জামার বুকপকেট থেকে ২টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। জব্দ করা স্বর্ণের বারগুলোর প্রতিটির গায়ে ইংরেজিতে NAIF, 10 TOLAS FINE GOLD, 999.9 লেখা রয়েছে। দশটি বারের ওজন ১০০ তোলা এবং এর বাজারমূল্য ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এ ছাড়া তাঁর কাছ থেকে দুটি অপো মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে এসব স্বর্ণের বারের বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি মিজান। পরে ২০ মার্চ শেষ রাতে এসব বার ও মোবাইল ফোন জব্দ করে র‍্যাব। সেই সঙ্গে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মিজান জানান, স্বর্ণ চোরাচালানিদের বিদেশ থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে দেশে স্বর্ণের বার আনার কাজে দীর্ঘদিন ধরে সহযোগিতা করে আসছিলেন।

এ ঘটনায় র‍্যাব গোয়েন্দা শাখার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. মুশফিকুর রহমান বাদী হয়ে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানায় সার্জেন্ট মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালানের অভিযোগে মামলা দেন। সেই সঙ্গে মিজানুর রহমানকে উত্তরা পূর্ব থানা-পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া সেনাবাহিনীর ওই সার্জেন্ট র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন। তিনি রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার আশুরহাট গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে। তিনি যশোর সেনানিবাসের ১৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট র‍্যাব সদর দপ্তরের প্রেষণে কর্মরত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মুশফিকুর রহমান সোমবার (২৪ মার্চ) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি তো সরকারি চাকরি করি। সিভিলিয়ান না। সেও (আসামি) চাকরি করে। এ জন্য এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না।’

অপরদিকে ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ওসি মুহাম্মদ শামীম আহমেদ একই দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে মামলার পর রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে আজ তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

কত দিন ধরে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত এবং চক্রের কতজন রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘একটি একটি বিশাল সিন্ডিকেট। আমরা মাত্র তিন দিন জিজ্ঞাসাবাদ করতে পেরেছি। কিন্তু বিস্তারিত জানতে হলে আরও অনেক সময় প্রয়োজন। তদন্তের স্বার্থে এখন বিস্তারিত কিছুই বলা যাবে না।’

অপরদিকে চোরাচালান ও চক্রের বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উত্তরা পূর্ব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বখতিয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে একই কথা বলেন। তিনি জানান, সার্জেন্ট মিজানকে রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হলে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া সার্জেন্টের বরাত দিয়ে থানা-পুলিশের একটি বিশ্বস্ত সূত্র আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছে, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সেনাবাহিনীতে কর্মরত সার্জেন্ট মিজান। আর কয়েক বছর পর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ শঙ্কামুক্ত, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সরওয়ার বাবলা নামে আরেকজন নিহত হয়েছেন। শান্ত নামে এক বিএনপি কর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হতাহত তিনজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের এজিএম রাম প্রসাদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনজনের মধ্যে সরওয়ার বাবলা মারা গেছেন। বাকি দুইজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে ঘটনাস্থলে গুলিতে লুটিয়ে পড়া সরওয়ার বাবলার একটি ছবি আজকের পত্রিকার সংগ্রহে এসেছে। বুধবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাঁচলাইশের হামজার বাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, মনোনয়ন পেয়ে হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন এরশাদ উল্লাহ। সময়টা ছিল মাগরিবের নামাজের পরপরই। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরশাদ উল্লাহর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করে।

ঘটনাস্থলে এরশাদ উল্লাহর কাছাকাছি থাকা বিএনপি নেতা মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমি এরশাদ ভাইয়ের খুব কাছেই ছিলাম। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়া শুরু করে। হুড়োহুড়িতে আমি নিজেও পায়ে আঘাত পেয়েছি।’ বর্তমানে তিনিও এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ইসমাইল।

বিষয়টি জানতে বায়েজিদ থানারি ওসিকে বারবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় মুজিবুর রহমান শেখ (৪৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে মোড়লডাঙ্গা এলাকার একটি বাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

মুজিবুর উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের মোড়লডাঙ্গা গ্রামের গোলাপ শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ সকালে মোড়লডাঙ্গায় নিজাম শেখের বাগানের একটি মেহগনিগাছে মুজিবুরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে ফকিরহাট মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।

মৃতের ভাই জিল্লাল শেখ ও হাবি শেখের দাবি, তাঁদের ভাইকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। তাঁরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কে বা কারা মুজিবুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজজাক মীর বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এলে সঠিকভাবে জানা যাবে আসলে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ইয়াছিনের সমর্থকদের বিক্ষোভ, অগ্রভাগে নারীরা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা নারীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ধর্মসাগরপাড়ে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয়।

নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূবালী চত্বরে মিছিল শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করা হয়।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইয়াছিনকে কুমিল্লা-৬ আসনে দলের প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন তাঁর অনুসারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজকের মিছিলে প্রায় ৮ হাজার নারী অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা ‘ইয়াছিন ভাইয়ের মনোনয়ন ফেরত চাই’, ‘৮-এর প্রার্থী ৬-এ কেন—মানিনা, মানব না’, ‘আমি কে, তুমি কে, ইয়াছিন ভাই, ইয়াছিন ভাই’, ‘জেল-জুলুম, কারাগারে ইয়াছিন ভাই’ স্লোগান দেন।

ইয়াছিনের সমর্থকেরা বলছেন, ইয়াছিন দীর্ঘদিন ধরে দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। সাবেক ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিনি নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সহায়তায় নেতা-কর্মীরা আইনি সহায়তা, চিকিৎসা খরচ, পারিবারিক সহায়তা, ঈদ ও অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা তৈরি হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, রাজনৈতিক অবদান ও তৃণমূলের সঙ্গে সংযুক্তি বিবেচনা করে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলে হাজি ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকা কলা ঘুষ নেওয়া সেই কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত

­যশোর প্রতিনিধি
পাকা কলা, আলমগীর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
পাকা কলা, আলমগীর হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

কাজ করে দেওয়ার কথা বলে পাকা কলা ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করা যশোর জেলা পরিষদের উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

জানা গেছে, জেলা পরিষদের জমি ইজারার নামে উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগের বিষয়ে গত ২৬ অক্টোবর যশোর শিল্পকলা একাডেমিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানি হয়। গণশুনানিতে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করলেও পাকা কলা ঘুষ নেওয়ার কথা স্বীকার করেন আলমগীর হোসেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী। দুদক কমিশনারের নির্দেশনার ১০ দিন পর আজ আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

জেলা পরিষদের আদেশে বলা হয়, গত ২৬ অক্টোবর যশোরে দুদকের গণশুনানিতে রুস্তম আলীসহ আরও চার ব্যক্তির জমি ইজারা প্রদানসংক্রান্ত যশোর জিলা পরিষদে কর্মরত উচ্চমান সহকারী মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক গণশুনানি অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন ও কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবার আজিজী যশোর জেলা পরিষদে কর্মরত উচ্চমান সহকারী মো. আলমগীর হোসেনকে অন্যত্র বদলিসহ সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশনা দেন। স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে এই দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন বলেন, উচ্চমান সহকারী আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হবে। মামলার তদন্তে প্রমাণিত হলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক ছুটিতে থাকায় আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করতে দেরি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত