Ajker Patrika

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ: ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা, নিষিদ্ধের দাবি শিক্ষার্থীদের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্ররাজনীতির নিষিদ্ধের মধ্যে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। আজ মঙ্গলবার কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্ররাজনীতির নিষিদ্ধের মধ্যে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। আজ মঙ্গলবার কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (এফইসি) ছাত্ররাজনীতির নিষিদ্ধের মধ্যে নতুন করে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করায় অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে ক্যাম্পাসজুড়ে। কলেজটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান পাওয়া শিক্ষার্থীদের অবাঞ্ছিত এবং বহিষ্কারেরও দাবি তুলেছেন।

এসব দাবিতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। তিন দিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা। এসব কর্মসূচি চলাকালে ছাত্রদলের নেতারা বহিরাগতদের নিয়ে মহড়া দিয়ে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, ১ মার্চ কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের কলেজ শাখার পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে সভাপতি পদে রয়েছেন কলেজটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের মো. রাসেল এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন একই বর্ষের মো. আব্দুল আউয়াল। এ ছাড়া সহসভাপতি ইব্রাহিম খলিল, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আসিফ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক এডিসন চাকমা রয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ওই বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেওয়ার।

এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২০ আগস্ট কলেজের একাডেমিক কাম প্রশাসনিক কাউন্সিল সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে নোটিশ জারি করেন তৎকালীন অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান। ওই নোটিশে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যকলাপ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।

এমন নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে নতুন করে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের খবর শুনে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কমিটির ঘোষণার পর থেকেই তাঁরা নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কাজী সুরাইয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, তিন দিন আগে আমাদের ক্যাম্পাসের কিছু ছাত্র ছাত্রদলের কমিটি গঠন করেছেন। কমিটি ঘোষণার পর থেকে বহিরাগতরা এসে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করে তুলেছেন। তাঁরা পুরো ক্যাম্পাসে এসে মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছেন। মেয়েদের হলের সামনেও তাঁরা আড্ডা দিচ্ছেন। এর পরিত্রাণ কোথায়? যদি ক্যাম্পাসে আবারও সেই রাজনীতি ঢুকে পড়ে তাহলে আমরা কেন ৫ আগস্ট করলাম?

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্ররাজনীতির নিষিদ্ধের মধ্যে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্ররাজনীতির নিষিদ্ধের মধ্যে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এই শিক্ষার্থী আরও দাবি করে বলেন, যাঁরা ছাত্রদল গঠন করেছেন তাঁদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হোক এবং হল থেকে বহিষ্কার করা হোক। ক্যাম্পাসে কোনো ছাত্ররাজনীতি চলবে না।

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নাজমুল হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থী কলেজ প্রশাসনকে উদ্দেশ করে বলেন, নিষিদ্ধের পরও যাঁরা যাঁরা কমিটি নিয়ে এসেছেন তাঁদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। অবিলম্বে ছাত্রদলের কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে ক্যাম্পাসকে রাজনীতি মুক্ত করতে হবে।

জানতে চাইলে সদ্য ঘোষিত কলেজটির ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাসেল বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদলের নেতারা যখন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন তখন আমরা সাধারণ ছাত্ররা কেন রাজনীতি করতে পারব না? আমাদের ক্যাম্পাসের তিনজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলা শাখার কমিটিতে রয়েছেন। তাঁরা যেহেতু রাজনীতি শুরু করেছেন, শিক্ষার্থীরাও রাজনীতি করবেন।’

রাসেল আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে যাঁরা অবস্থান কর্মসূচি করছেন, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছাত্রলীগের দোসর। বৈষম্যবিরোধী কমিটির তিনজন এবং শিবির ও আওয়ামী লীগের দোসররা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করে তুলেছেন। এ ছাড়া বহিরাগতদের নিয়ে কোনো মহড়ার ঘটনা ঘটেনি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে কলেজের অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি তা ধরেননি। পরে অধ্যক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে প্রোগ্রামার রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে জরুরিভাবে একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং চলছে। আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলছি। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত শেষে নোটিশে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত