Ajker Patrika

উপাচার্যের বিদায়ে জাবিতে ‘লজ্জার বিক্ষোভ’, শিক্ষকদের বাধা

জাবি প্রতিনিধি
উপাচার্যের বিদায়ে জাবিতে ‘লজ্জার বিক্ষোভ’, শিক্ষকদের বাধা

উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ‘লজ্জার বিক্ষোভ মিছিল’ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধরা উপাচার্য ভবনের দিকে অগ্রসর হলে অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অনুসারী শিক্ষকেরা বাধা দেন। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান আন্দোলনকারীরা। 

কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে শিক্ষকেরা অবস্থান ছেড়ে দিলে উপাচার্য ভবনের সামনে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল অতিক্রম করে। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন বিভাগের ছাত্ররা। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। তিনিই প্রথম শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা করেন। হত্যার অস্ত্র হিসেবে ‘কাঁঠাল’ নামক জাতীয় ফলের উল্লেখ করা হয়। তাই কাঁঠাল নিয়ে আমাদের ‘লজ্জার বিক্ষোভ মিছিল’। 

সমাবেশে ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, ‘আমরা উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামর বিরুদ্ধে ওঠা ‘দুর্নীতি’ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই। এই দাবিতে শান্তিপূর্ণ উপায়ে কর্মসূচি পালন করতে আসলেও তাঁর নির্লজ্জ অনুসারীরা বাধা দিয়েছে। জাবির শিক্ষার্থীরা এমন ‘দুর্নীতিবাজ’ ও ‘হামলাবাজ’ উপাচার্যকে আর দেখতে চায় না।’ 

আবু সাঈদ আরও বলেন, ‘অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আবারও তৃতীয় মেয়াদে উপাচার্য হওয়ার তদবির করছে। সে কারণে তাঁর সুবিধাভোগীরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দিয়েছে।’ 

জাবি সংসদ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাকিবুল হক রনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম একটি লজ্জার নাম। তিনি দুই কোটি টাকার দুর্নীতি ও শিক্ষার্থী মারধরের দায়ে অভিযুক্ত। এরপরেও তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে অগ্রগতি হয়নি। উপরন্তু সুবিধাভোগী চাটুকারি শিক্ষকদের সহযোগিতায় রানীর হালে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন তিনি। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জন্য লজ্জার বিষয়। তাই তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়া উদ্যাপনের উপলক্ষ নয়, বরং লজ্জার।’ 

এর আগে বিকেলে সাড়ে ৪টায় ক্যাম্পাসের পরিবহন চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, সাংস্কৃতিক জোট ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জমায়েত হন। সেখান থেকে ঝাড়ু ও কাঁঠাল হাতে ‘লজ্জার বিক্ষোভ মিছিল’ বের করে শিক্ষার্থীরা। 

উপাচার্য ভবনের দিকে যাওয়ার সময় উপাচার্যের অনুসারী শিক্ষকদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান আন্দোলনকারীরাএদিকে বাধাদানকারী শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খালিদ কুদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, অধ্যাপক হানিফ আলী, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হেল কাফি, অধ্যাপক মোহা মুজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন হলের প্রভোস্টবৃন্দ। 

এ ছাড়াও উপাচার্যপন্থী জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক শামছুল আলম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোস্তফা নাজমুল মানছুর, অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

বাধাদানের বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের সামনে যেতে চাইলে সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়। কেউ কোনো দুর্ব্যবহার করেনি। আন্দোলনকারীদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই।’ 

এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য এখানে এসেছিলাম। কাকতালীয় ভাবে তাঁদের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়। আমরা বাধা দিতে আসিনি। সামান্য কথা-কাটাকাটি হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব যেমন আমাদের। তেমনি শিক্ষক ও সহকর্মী হিসেবে অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের নিরাপত্তা দেওয়া প্রক্টরিয়াল বডির কর্তব্য। সে কারণে আমরা আগে থেকেই উপস্থিত ছিলাম।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কী লিখেছিলেন মাহফুজ আলম, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ডিলিট করলেন কেন

এবার ‘পাকিস্তানপন্থার’ বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলেন আসিফ মাহমুদ

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

বাহাত্তরের সংবিধান, জুলাই সনদ, প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা নিয়ে আইন উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

রাতে গ্রেপ্তারের পর দুপুরে মুক্ত, পরে আবার গ্রেপ্তার তামান্না

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত