Ajker Patrika

সারা পৃথিবীর মানুষ যা দেখে, বাংলাদেশের পুলিশ তা দেখে না: বেরোবি শিক্ষকেরা

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
সারা পৃথিবীর মানুষ যা দেখে, বাংলাদেশের পুলিশ তা দেখে না: বেরোবি শিক্ষকেরা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে আবু সাঈদসহ দেশের সকল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষকবৃন্দ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে তাঁরা ওই কর্মসূচি পালন করেন। 

শিক্ষকেরা আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের এফআইআর নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে জানান। 

ওই কর্মসূচিতে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আমরা একটা মামলার তথ্য বিবরণী (এফআইআর) দেখেছি। খুন করেছে পুলিশ, মামলা করেছে পুলিশ, তদন্ত করবে পুলিশ। আর এই পুলিশের চোখের মধ্যে ঠুলি পড়েছে। সারা পৃথিবীর মানুষ যা দেখে, বাংলাদেশের পুলিশ তা দেখে না। বাংলাদেশে অনেক প্রবীণ রাজনীতিক যারা চোখে দেখে না। আমরা যাব কোথায়, কার কাছে যাব? কার কাছে বিচার প্রত্যাশা করব? আবু সাঈদের মৃত্যু নির্মমভাবে হয়েছে। হাজার হাজার হাজার মানুষ দেখেছে, কোটি কোটি মানুষ দেখেছে। এই ভিডিও কোনো এডিট করার সুযোগ নেই। একাধিক টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করেছে।’ 

‘আবু সাঈদকে যখন তার মৃত ঘোষণা করা হয়েছে তখন বেলা তিনটা পাঁচ মিনিট, তখনো তো কোনো শিক্ষার্থী আন্দোলন নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে নাই। এফআইআর এমনভাবে লেখা হয়েছে পড়লে মনে হয় একই সময়ে সব ঘটনা ঘটেছে। এই সমস্ত কলা কৌশল, এই সমস্ত কুটচাল সবকিছু থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে অনুরোধ করি আপনাদের বাচ্চা আছে, আত্মীয়স্বজন আছে, এই দেশে আপনাদেরও দেশ। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগে কত গোলাগুলি হয়েছে, পুলিশ কত জীবন দিয়েছে। আর আপনারা কী সেগুলো স্মরণ করেন না?’

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকাআমরা শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘এই দায় আমাদের বহন করতে হবে, সুষ্ঠু সমাধানের পথ বের করতে হবে। তা না হলে আমরা যে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, সেটা কোনো সুস্থ বাংলাদেশ নয়, এটা একটি অসুস্থ বাংলাদেশ। আমরা এখন ঘুমাতে পারি না, আমাদের চোখে ঘুম নাই। ঘুমাতে গেলে হঠাৎ কানে বাজে, ‘পানি লাগবে পানি।’ মনের মধ্যে ভেসে ওঠে এক শিশুর একদিক থেকে গুলি ঢুকে আরেক দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। আমাদের চোখে বারবার ভেসে ওঠে শহীদ আবু সাঈদের সেই সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা। যে আবু সাঈদ পৃথিবীর মানুষকে পথ দেখিয়েছে, কীভাবে অস্ত্রের মুখে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আমরা সেই আবু সাঈদকে স্যালুট জানাই।’ 

আর যেন একটা মানুষেরও এভাবে মৃত্যু না হয় জানিয়ে অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘আমরা কী দেখেছি, যে পুলিশ আবু সাঈদকে গুলি করেছে, সেই পুলিশকে ধরা হয় নাই। আর কত প্রহসন? আমরা আর কত মিথ্যার পথে হাঁটতে থাকব? আমরা এই পথ হাঁটা বন্ধ করতে চাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এখানে একত্রিত হয়েছি আবু সাঈদসহ কোটা আন্দোলনের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিয়ে। আমরা সুষ্ঠু বিচার দেখতে চাই।’

পরিসংখ্যান বিভাগের প্রভাষক ফারজানা জান্নাত তোশি বলেন, ‘পুলিশ ক্যাম্পাস থেকে যেভাবে সাঈদকে হত্যা করেছে, এই ফুটেজ সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে। এটা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। যে পুলিশ গুলি করেছে, তার নাম, বাড়ির ঠিকানা সবই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পরও এতদিন আমরা তাঁর কোনো ইনেসেটিভ দেখিনি। বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের মৃত্যুর যে সূচনা হয়েছে, তা প্রথম সাঈদের মৃত্যু দিয়ে হয়েছে। যদি এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়, তাহলে বাকিগুলোর তো কোনো এভিডেন্স নাই। সেগুলোর বিচার হবে কীভাবে?’ এই শিক্ষক বলেন, ‘যদি আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয়, তাহলে দেশের একটা হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হবে না।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওমার ফারুক বলেন, ‘যে দেশে ঘরের শিশু নিরাপদ নয়, সেখানে বাংলাদেশের আমরা কেউই নিরাপদ নই। আমাদের নিরাপদের জন্য এই বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা দরকার। কোটা আন্দোলনকে ঘিরে এই বাংলাদেশে যে হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছে, সেই হত্যাকাণ্ডগুলোর যথাযথ বিচারের আওতায় নিয়ে আসাটা খুবই জরুরি। এই দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর আমরা আস্থা রাখতে চাই। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার তদন্তের ওপরে আমরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছি।’ এ কারণে এই হত্যাকাণ্ডগুলোর জন্য এই শিক্ষক জাতিসংঘের তদন্তের দাবি করেন। 

ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমাদের ছাত্র আবু সাঈদ মারা গেছেন, এখন তাকে রাজাকার বানানোর চেষ্টা চলছে। আমার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির ১৫ বছরের অভিজ্ঞতায় কখনো রাজাকার বা অন্য কোনো দলের মিছিল মিটিং দেখি নাই। আমার শুধু প্রশ্ন, এই ১৬ তারিখে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী রাজাকার হয়ে গেল।’ 

শুধু আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড তাই নয়, সারা দেশে যে নৃশংসতা হয়েছে বা গণহত্যা হয়েছে, এই গণহত্যার বিচার হওয়া দরকার মন্তব্য করে অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থী নিহত হলো, সারা পৃথিবীর লোকজন দেখেছে। বাংলাদেশের সব লোকজন দেখেছে। যেটি আসলে লুকানোর কোনো কারণ নেই। সেটাকে যদি এভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় তাহলে অন্য যেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ফুটেজ নাই, সাক্ষী নাই, তাহলে সেগুলোর কি হবে? পুলিশের ওপর কোনো আস্থা রাখতে পারছি না।’ তিনি সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য জাতিসংঘের অধীনে কমিশন গঠনের দাবি জানান। 

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হন। তার বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায়। এ ঘটনায় পরদিন ১৭ জুলাই পুলিশ একটি মামলা করে। মামলার বিবরণীতে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়। 

এদিকে রোববার (৪ আগস্ট) আবু সাঈদসহ রংপুরের ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে আসছেন বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি। এই তদন্ত কমিটি ৫ আগস্ট সোমবার সকাল ৯টায় রংপুর সার্কিট হাউজে আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের স্বাক্ষর গ্রহণ করবে, ওই সার্কিট হাউসে ৬ আগস্ট সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেম উদ্দীন মিলন ও মানিক মিয়া হত্যাকাণ্ডের এবং ৭ আগস্ট মেরাজুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল তাহের হত্যাকাণ্ডের স্বাক্ষর গ্রহণ করবে বলে রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সীতাকুণ্ডে বাসচাপায় পথচারী নারী নিহত

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম), প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় আফরোজা বেগম (৫৫) নামের এক নারী নিহত হয়েছেন।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পৌরসদরস্থ পন্থিছিলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত পথচারী নারী চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী হাজী ক্যাম্প এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে হাইওয়ে পুলিশ জানায়, ঢাকামুখী সৌদিয়া পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের পন্থিছিলা এলাকা অতিক্রমকালে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওই নারীকে চাপা দেয়। এতে বাসচাপায় পিষ্ট হয়ে ওই নারী গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুমিরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) জাকির রাব্বানী। তিনি জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে নিহত ওই নারীর মরদেহ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ শঙ্কামুক্ত, গুলিবিদ্ধ একজনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ২২
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী ও চান্দগাঁও) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একই সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে সরওয়ার বাবলা নামে আরেকজন নিহত হয়েছেন। শান্ত নামে এক বিএনপি কর্মীও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

হতাহত তিনজনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের এজিএম রাম প্রসাদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, তিনজনের মধ্যে সরওয়ার বাবলা মারা গেছেন। বাকি দুইজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে ঘটনাস্থলে গুলিতে লুটিয়ে পড়া সরওয়ার বাবলার একটি ছবি আজকের পত্রিকার সংগ্রহে এসেছে। বুধবার (০৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পাঁচলাইশের হামজার বাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান, মনোনয়ন পেয়ে হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ করছিলেন এরশাদ উল্লাহ। সময়টা ছিল মাগরিবের নামাজের পরপরই। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরশাদ উল্লাহর গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করে।

ঘটনাস্থলে এরশাদ উল্লাহর কাছাকাছি থাকা বিএনপি নেতা মো. ইসমাইল বলেন, ‘আমি এরশাদ ভাইয়ের খুব কাছেই ছিলাম। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা গুলি ছোড়া শুরু করে। হুড়োহুড়িতে আমি নিজেও পায়ে আঘাত পেয়েছি।’ বর্তমানে তিনিও এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ইসমাইল।

বিষয়টি জানতে বায়েজিদ থানারি ওসিকে বারবার ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

ফকিরহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে লোকজনের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় মুজিবুর রহমান শেখ (৪৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকালে মোড়লডাঙ্গা এলাকার একটি বাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের দাবি, মুজিবুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।

মুজিবুর উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের মোড়লডাঙ্গা গ্রামের গোলাপ শেখের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ সকালে মোড়লডাঙ্গায় নিজাম শেখের বাগানের একটি মেহগনিগাছে মুজিবুরের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবহিত করেন। খবর পেয়ে ফকিরহাট মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহের কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।

মৃতের ভাই জিল্লাল শেখ ও হাবি শেখের দাবি, তাঁদের ভাইকে কেউ পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। তাঁরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে কে বা কারা মুজিবুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। সকালে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।

ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজজাক মীর বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এলে সঠিকভাবে জানা যাবে আসলে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ইয়াছিনের সমর্থকদের বিক্ষোভ, অগ্রভাগে নারীরা

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লায় নারীদের নেতৃত্বে মিছিল করেন মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লা-৬ (সদর, সদর দক্ষিণ ও সিটি করপোরেশন) আসনে মনোনয়ন না পাওয়া বিএনপি নেতা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনের সমর্থকেরা নারীদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর ধর্মসাগরপাড়ে অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিলটি শুরু হয়।

নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূবালী চত্বরে মিছিল শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি করা হয়।

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইয়াছিনকে কুমিল্লা-৬ আসনে দলের প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন তাঁর অনুসারীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজকের মিছিলে প্রায় ৮ হাজার নারী অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনকারীরা ‘ইয়াছিন ভাইয়ের মনোনয়ন ফেরত চাই’, ‘৮-এর প্রার্থী ৬-এ কেন—মানিনা, মানব না’, ‘আমি কে, তুমি কে, ইয়াছিন ভাই, ইয়াছিন ভাই’, ‘জেল-জুলুম, কারাগারে ইয়াছিন ভাই’ স্লোগান দেন।

ইয়াছিনের সমর্থকেরা বলছেন, ইয়াছিন দীর্ঘদিন ধরে দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। সাবেক ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে তিনি নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর সহায়তায় নেতা-কর্মীরা আইনি সহায়তা, চিকিৎসা খরচ, পারিবারিক সহায়তা, ঈদ ও অন্যান্য বিশেষ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা পেয়েছেন। তিনি দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-হতাশা তৈরি হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীরা দাবি করেন, রাজনৈতিক অবদান ও তৃণমূলের সঙ্গে সংযুক্তি বিবেচনা করে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী বদলে হাজি ইয়াছিনকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত