Ajker Patrika

প্রকল্পের টাকা ‘খেয়ে ফেলতে’ সুব্রতকে হত্যা করা হয়েছে, দাবি পরিবারের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকল্পের টাকা ‘খেয়ে ফেলতে’ সুব্রতকে হত্যা করা হয়েছে, দাবি পরিবারের

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংস্কার প্রকল্পের বরাদ্দ ছিল ৬০০ কোটি টাকা। এ কাজে বেঁচে যাওয়া টাকা অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে ‘খেয়ে ফেলতে’ চেয়েছিলেন কয়েকজন কর্মকর্তা। কিন্তু প্রকল্পের প্রকৌশলী সুব্রত সাহা এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হত্যার শিকার হন তিনি।

আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি করেন চুয়েটের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। এ সময় সুব্রত সাহার পরিবার ও বন্ধুরাও উপস্থিত ছিলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুব্রত সাহার বন্ধু রিয়াসাত সুমন বলেন, ‘ঘটনার দুই মাস অতিবাহিত হতে চলছে। এখনো মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষ একেক সময় একেক ধরনের মনগড়া বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, হোটেলের ১১ তলার ছাদ থেকে পড়ে প্রকৌশলী সুব্রত আত্মহত্যা করেছেন। কখনো তারা বলছে, সুব্রত মানসিক রোগী ছিলেন, নিয়মিত মানসিক চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কখনো বলছে, শেয়ার বাজারের লোকসানের কারণে মানসিক বিপর্যস্ত ছিলেন। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে হোটেল কর্তৃপক্ষের এসব দাবির কোনো সত্যতা আমরা পাইনি।’ 

রিয়াসাত সুমন আরও বলেন, ‘হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল একটি আন্তর্জাতিক চেইন হোটেল। এই হোটেলের সংস্কারের জন্য ৬০০ কোটি টাকা বাজেট এসেছিল। সুব্রত সাহা বিভিন্ন সময় আমাদের বলেছেন, হোটেলের প্লানিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুর রহিম ও বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আজিজার রহমান মিলে এ অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছিলেন। এ জন্য তারা বাজেটের অতিরিক্ত বিল তৈরি করে সেই বিলে সুব্রত সাহাকে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু এতে সুব্রত রাজি ছিলেন না। এর জের ধরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’ তাঁর দাবি, কর্মক্ষেত্রে এসব হয়রানির কথা তিনি তাঁর স্ত্রীকেও বিভিন্ন সময় বলেছিলেন। 

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘ঘটনার দুই মাস অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেনি। এক মাস আগে সুব্রত সাহার স্ত্রী নূপুর সাহার সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। কিন্তু তারপরে মামলা আর কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা চাই তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক।’ 

সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত সুব্রত সাহার স্ত্রী নূপুর সাহা বলেন, ‘ঘটনার পর মামলা হয়েছে। শুরুতে তদন্ত কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করলেও এখন আর এই ঘটনা নিয়ে কোনো তদন্ত হচ্ছে না। এক মাস আগে ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র মেয়ে নিয়ে আর্থিক কষ্টে আছি। হোটেল কর্তৃপক্ষও আমাদের পাওনা টাকা এখনো বুঝিয়ে দেয়নি।’ 

চলতি বছর ২৫ মে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল চত্বর থেকে সংস্কার প্রকল্পের প্রকৌশলী সুব্রতর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত