Ajker Patrika

সাম্য হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও ন্যায়বিচারের দাবিতে শিক্ষক-সহপাঠীদের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২০ মে ২০২৫, ১৫: ৪৩
আইইআর মূল ফটকের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আইইআর মূল ফটকের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শহীদ শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের দ্রুত ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাম্যের সহপাঠী এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ ২০ মে (মঙ্গলবার) বেলা ১২টার সময় আইইআর মূল ফটকের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

এ সময় লিখিত বক্তব্যে সাম্যের বন্ধু এস এম নাহিয়ান ইসলাম বলেন, শাহরিয়ার আলম সাম্য ২০১৮-১৯ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এ ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগে থেকেই তিনি বিভিন্ন যৌক্তিক দাবিতে দেশের হয়ে আন্দোলন করতেন। প্রশ্নফাঁস আন্দোলন থেকে শুরু করে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ছিলেন সাম্য।

নাহিয়ান আরও বলেন, ‘গত ১৩ মে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আমাদের বন্ধু শহীদ শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

সাম্যের বন্ধু আরও বলেন, ‘সাম্য সবার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। কিন্তু আমরা দুঃখজনকভাবে দেখতে পাচ্ছি, সাম্য হত্যাকাণ্ডের পর তাঁকে নিয়ে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলো বিভাজন ও নোংরা রাজনীতি করছে। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক দলাদলি আমাদের আশাহত করেছে। আমাদের প্রত্যাশা, সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ঐক্যবদ্ধ থাকবে।’

আরেকটি দুঃখজনক ব্যাপার হলো, ‘সাম্যকে নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের বাজে ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা হচ্ছে। তাঁর চরিত্র হননের চেষ্টা করা হচ্ছে। যে কুচক্রী মহল এই ঘৃণিত কাজ করছে, তাদের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছি। পাশাপাশি আইনের পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাম্যের বন্ধু মশিউর আমিন শুভ ৮ দফা দাবি ঘোষণা করেন—

১. শাহরিয়ার আলম সাম্যর হত্যাকারীদের সবাইকে দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে।

২. হত্যার আশপাশের এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।

৩. ঘটনার সময় স্থানীয়রা হত্যার সহযোগীদের আটকে পুলিশে সোপর্দ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়। যেসব পুলিশ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

৪. শাহবাগ থানার পাশেই যে অস্ত্র ও মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। শাহবাগ থানার আসামি ধরার ক্ষেত্রে স্পষ্ট গাফিলতির জবাবদিহি করতে হবে।

৫. সাম্য হত্যার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের গাফিলতি দৃশ্যমান। তাঁর জানাজার সময়ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চলেছে এবং পরের দিন অর্ধ দিবস শোক ঘোষণা করার প্রহসন করেছে। এই ধরনের প্রহসন ও গাফিলতি আমরা আর মেনে নিব না। প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে আরও তৎপর হতে হবে।

৬. ভিসি, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তদন্ত ও বিচারের নিয়মিত ফলোআপ দেওয়া এবং দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ তৎপর থাকতে হবে। সেখানে সাম্যর পরিবার, বন্ধু ও সহপাঠীদের যুক্ত রাখতে হবে।

৭. ‘সাম্যর বিচার নিশ্চিতকরণ কমিটি’ করতে হবে যাতে তদন্ত কর্মকর্তা, ভিসি, প্রক্টর, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর, শিক্ষক ও সহপাঠীদের প্রতিনিধি যুক্ত থাকতে হবে। আজকের মধ্যে এটা নিশ্চিত করতে হবে।

৮. সাম্যর বিচার নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানায়নি, আমাদের সঙ্গে এক হয়ে প্রতিবাদ করার তাদের আহ্বান জানাচ্ছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত