Ajker Patrika

কারাগারেই ভালো ছিলাম: বিয়ে করে মামলায় জড়ানো জল্লাদ শাহজাহান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪, ২১: ০৯
কারাগারেই ভালো ছিলাম: বিয়ে করে মামলায় জড়ানো জল্লাদ শাহজাহান

কারাগারে ৪৪ বছর বন্দী থেকে বাইরে এসে নানা প্রতারণায় পড়ে মনে হচ্ছে কারাগারেই ভালো ছিলাম। কারাগারের বাইরের জীবন এত জটিল কেন? জীবন এত কঠিন হবে জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জেল-পরবর্তী জীবনের অভিজ্ঞতা ও নানা প্রতারণার ঘটনা জানাতে এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান।

শাহজাহান বলেন, ‘জীবন এত কঠিন হবে জানলে কারাগারেই থেকে যেতাম। জেল থেকে বের হয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছি। সাথী আক্তার নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে প্রতারিত হয়েছি। সে আমার সব টাকা আত্মসাৎ করে উল্টো আমার নামে মামলা দিয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে প্রতারণার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এত প্রতারক বাংলাদেশে হয়েছে। কারাগারের বাইরের লোকের সম্পর্কে এমন ধারণা ছিল না। ২৩ বছর বয়সে জেলে গিয়ে, ৪৪ বছর কারাভোগ শেষে অন্য রকম এক দেশ দেখছি।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জল্লাদ শাহজাহান বলেন, ‘বেঁচে থাকার জন্য যা দরকার তা পাচ্ছি না। আমার দায়িত্ব নেওয়ার মতো কেউ নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী ও বিত্তবানদের কাছে অনুরোধ, আমার থাকার ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিন।’

অর্থনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরে শাহজাহান বলেন, ‘আয়-রোজগার, অর্থের জোগানদাতা, থাকার জায়গা—কোনোটাই আমার নেই। কারাভোগ শেষে যেখানেই যাচ্ছি প্রতারণার খপ্পরে পড়ছি।

‘গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিয়ে করে সেখানেও সর্বস্বান্ত হয়েছি। বিয়ের কাবিন ৫ লাখ টাকা হলেও আমার কাছে থাকা ১০ লাখ টাকা স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে আমার স্ত্রী সাথী আক্তার ফাতেমা ৫৩ দিনের মাথায় পালিয়ে গেছে। আমার নামে যৌতুকের মামলা দিয়েছে। আমি থানায় মামলা দিতে গেলে আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে।

‘পরে আইনজীবীর সহযোগিতায় গতকাল রোববার আদালাতে আমার স্ত্রী, শাশুড়িসহ ছয়জনের নামে মামলা দিয়েছি।’

জেল থেকে বের হওয়ার পরের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শাহজাহান আরও বলেন, ‘প্রথমে আমার ভাগিনা অটোরিকশা কিনে দেবে বলে টাকা মেরে দেয়। এরপর একটা চায়ের দোকান দিই। সেখানে কাজ করা একটি ছেলে ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যায়। এখন উভয় সংকটে জীবন যাপন করছি। একদিকে অর্থনৈতিক সংকট, অন্যদিকে একজন নারীর প্রতারণা ও যৌতুকের মামলা।’

জল্লাদ শাহজাহান বলেন, ‘কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে আমাকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া বিভিন্নজনের কাছ থেকে পাওয়া মোট ১৮ লাখ টাকা ছিল। এসব হারিয়ে এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি।

‘কীভাবে বাঁচব, জীবন কীভাবে চলবে, কোথায় থাকব—কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন খেয়ে না খেয়ে অনাহারে আমার জীবন চলছে। এভাবে চলতে থাকলে আমার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

শাহজাহান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অপরাধীদের ফাঁসি দেওয়ার পুরস্কার হিসেবে আমাকে একটি আবাসন ও জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত যেন চলতে পারি; সেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যেন করে দেন। আমার অসহয়াত্বের অবসান চাই। আমাকে বাঁচান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাকা দিয়ে নারীর চাবুকের ঘা খাচ্ছিলেন পুরুষ, দুজন গ্রেপ্তার

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে পাকিস্তানের ভাগ্যনিয়ন্তা সেনাপ্রধান জেনারেল মুনির

প্রবাসীর রেমিট্যান্সের অর্থ আত্মসাৎ, নারী ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

পাকিস্তানে কীভাবে হামলা চালাতে পারে ভারত, ইতিহাস যা বলছে

আইসিএক্স বাদ দিলে ঝুঁকিতে পড়বে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব, বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত